বিভিন্ন সময়ে হ্যাকাররা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে
আক্রমণ করে এবং সেখান থেকে বিভিন্ন তথ্য
চুরি করে নিয়ে যায়। কখনও কখনও আবার চুরি করা
এসব তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করে দেয়। তবে
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবশ্য এমনটি ঘটে না।
কিন্তু কথা হল ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি থেকে
শুরু করে বিভিন্ন চুরি করা তথ্য দিয়ে হ্যাকাররা
আসলে কি
করে?
এক কথায় বললে, হ্যাকাররা এই তথ্যগুলো বেচে
দেয় সাইবার ক্রিমিনালদের কালোবাজারে। এ
বছরের শুরুতে প্রকাশিত আমেরিকান গবেষণা
প্রতিষ্ঠান ‘র্যান্ড’ কর্পোরেশনের এক রিপোর্টে
বলা
হয়েছে, হ্যাকারদের বাজারটি খুবই সূক্ষ্মভাবে
সাজানো। আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে হ্যাকার
মার্কেটে ব্যবসা অবৈধ মাদক ব্যবসার থেকেও
বেশী লাভজনক। হ্যাকাররা তাদের চুরি করা
ডাটাগুলো অবৈধ কেনাবেচার সাইটে মোটা
টাকায় বেচে দেয়। আর এখানেই তাদের কাজ
শেষ।
শুধু ক্রেডিট কার্ড এর তথ্য চুরি বা অন্যের পরিচয়
হ্যাক করে কোন কিছু বাগিয়ে নেওয়ার দিন

আসলে শেষ। আপনার অনলাইনে পোস্ট করা ছবি
বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া
ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে টাকা কামানোর পদ্ধতিও
হ্যাকাররা বের করে ফেলেছে। হ্যাকাররা
‘লিঙ্কড ইন’ আর ‘ই-হারমনি’
থেকে অনেক অনেক পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে,
যেটা তাদের ‘রেইনবো টেবিল’ হালনাগাদ করতে
সাহায্য করে। এই টেবিলগুলো হল বিশাল এক তথ্য
সম্ভার,
যেটা হ্যাকারদের বিভিন্ন পাসওয়ার্ড হ্যাক
করার জন্য ডিজিটাল চাবির মত কাজ করে।
র্যান্ড এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ড চুরি
করা থেকে এখন একটা টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক
করা বেশি লাভজনক।
আমাদের মেডিক্যাল রিপোর্টগুলোও আজকাল
নিরাপদ না। রয়টার্স কে দেয়া সাক্ষাতকারে
‘ফিশ ল্যাব’-এর থ্রেট ইন্টেলিজেন্স বিভাগের
পরিচালক ডন জ্যাকসন জানান, তিনি হ্যাকার
এক্সচেঞ্জগুলোতে নজরদারি করে দেখতে
পেয়েছেন যে সাইবার অপরাধীরা যেকোন
ক্রেডিট কার্ডের
তথ্য চুরি করা থেকে, যে কারো মেডিক্যাল
রিপোর্ট চুরি করে প্রায় দশগুণ বেশি টাকা আয়
করছে। নাম,
জন্মতারিখ, পলিসি নাম্বার সংগ্রহ করে
হ্যাকাররা ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন মেডিকেল
সামগ্রী ক্রয় করে, এরপর আবার বিক্রি করে
লাভবান হয়। এছাড়া অন্যের তথ্য ব্যবহার করে
ইনস্যুরেন্সের টাকাও দাবি করে থাকে।
র্যান্ডের প্রতিবেদন থেকে আরও দেখা যায়,
হ্যাকারদের এ কালোবাজার পণ্যের দিক দিয়ে
দিন দিন আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে উঠছে। বিভিন্ন
ধরনের
তথ্যের পসরা সাজিয়ে বসছে তারা প্রতিদিন।
হ্যাকারদের এ বাজারটি বিস্ময়করভাবে
প্রতিযোগিতামূলক আর সন্দেহাতীতভাবে
লাভজনক। র্যান্ডের ধারনা, সামাজিক
যোগাযোগ
মাধ্যমগুলোর বিস্ফোরণ আর মুঠোফোন
ডিভাইসগুলো শুধু গুগল আর ইউটিউবে চুরি, আর
কেনা-বেচার সাহায্যমূলক তথ্যের চাহিদাই
বাড়াবে।

Find me on fb

Leave a Reply