______________________________
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য। আল্লাহ দরূদ ও সালাম
পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর; আর তাঁর বংশধর, তাঁর
সাহাবীগণ এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা সুন্দরভাবে তাঁদের
অনুসরণ করবে তাদের উপর (আমিন)।
দুয়া মানেই যে ওযু করে নামায পড়ে দুই হাত তুলে
চাইতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। হ্যা, দুই
হাত তুলে দুয়া করা ভালো। তবে আপনি
যেকোনো সময় ওঠতে বসতে, কোথাও
যেতে যেতে দুয়া করতে পারেন। এইভাবে দুয়া
ও যিকিরের মাধ্যমে আমাদের অবসর সময়গুলো
কাজে লাগানোর চেষ্টা করা উচিত। আল্লাহ
আমাদের তোওফিক দান করুন, আমিন।
নিচের এই দুয়াগুলো হাত তুলে বা হাত না তুলে,
যেকোন মুনাজাতে, ফরয, সুন্নত বা নফল
যেকোন নামাযের যেকোন সিজদাতে, নামাযে
আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ পড়ার পরে সালাম ফেরানোর
আগে দুয়া মাসুরা হিসেবে, যেকোনো সময়েই
পড়া যাবে। দুয়াগুলো ফরয নামাযের ভেতরে
আরবীতে পড়তে হবে, আরবীতে না পারলে
নফল-সুন্নত নামাযের সিজদাতে, সালাম ফেরানোর
পূর্বে বা নামাযের বাইরে আরবী বা বাংলা,
যেকোন ভাষাতেই দুয়াগুলো পড়া যাবে।
দিনে রাতে যে কোনো সময় আমল করার জন্য
‘হিসনুল মুসলিম’ বইয়ের সবগুলো দুয়াই সহীহ, আর
দাম মাত্র ৫০ টাকা। ছোট্ট এই বইটা পকেটে
রেখে দেওয়া যায়, রাস্তায়, জার্নিতে, বাস স্ট্যান্ডে
অপেক্ষায় বা যে কোনো অবসব সময়ে বের
করে দুয়াগুলো শিখে বা পড়ে সময়টা নষ্ট না করে
কাজে লাগানোর জন্য।
বিঃদ্রঃ যারা অলসতা বশত বা ইমানের দুর্বলতার কারণে
আরবী মুখস্থ করতে চান না বা পারেন না, তারা
অন্তত বাংলাটা মুখস্থ করে রাখতে পারেন এবং
মুনাজাতের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের শেখানো গুরুত্বপূর্ণ এই জিনিসগুলো
আল্লাহর কাছে চাইতে পারেন।
______________________________
১. সবচাইতে কম কথায় সবচাইতে বেশি কল্যান
প্রার্থনা করার দুয়াঃ
এই দুয়াটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব
বেশি বেশি করতেন।
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ
দো‘আ হতঃ
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍٰﺗِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَّﻓِﻲ ﺍﻟْﺎٰﺧِﺮَﺓِ ﺣَﺴَـﻨَﺔً ﻭَّﻗِﻨَﺎ
ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
উচ্চারণঃ রব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হা’সানাতাওঁ-ওয়াফিল আ-
খিরাতি হা’সানাতাওঁ ওয়া-ক্বিনা আ’যাবান্নার।
অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়ার
জীবনে কল্যাণ দান করো এবং পরকালের
জীবনেও কল্যাণ দান করো। আর তুমি
আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে বাঁচাও। সুরা
আল-বাক্বারাহঃ ২০১।
কেউ যদি অন্য কোন দুয়া না জানেন আর
যেকোন কল্যানের জন্য দুয়া করতে চান,
অন্তরে সেই জিনিস পাওয়ার জন্য নিয়ত রেখে এই
দুয়া পড়লেও হবে।
______________________________
২. পাপ থেকে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য দুয়াঃ
আমাদের আদি পিতা আদম (আঃ) ও মা হা’ওয়্যা (আঃ)
আল্লাহর নিষেধ অমান্য করলে ক্ষমা প্রার্থনা ও
তোওবা করার জন্য স্বয়ং আল্লাহ তাআ’লা তাদের
দুইজনকে এই দুয়াটি শিখিয়ে দিয়েছিলেন। এই দুয়ার
মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআ’লা
তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। আমাদের উচিত
তাদের মতো আমাদের পাপ থেকে ক্ষমা
প্রার্থনার জন্য নিয়মিত এই দুয়া বেশি করা।
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻇَﻠَﻤْﻨَﺎ ﺃَﻧﻔُﺴَﻨَﺎ ﻭَﺇِﻥ ﻟَّﻢْ ﺗَﻐْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﺗَﺮْﺣَﻤْﻨَﺎ ﻟَﻨَﻜُﻮﻧَﻦَّ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳﻦَ
উচ্চারণঃ রাব্বানা যোয়ালামনা আং-ফুসানা ওয়া-ইল্লাম তাগ-
ফিরলানা, ওয়াতার্ হা’মনা লানা কুনান্না মিনাল খাসিরিন।
অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের
প্রতি যুলুম করেছি, অতএব আপনি যদি আমদেরকে
ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন
তাহলে নিশ্চয়ই আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত
হব। সুরা আল-আ’রাফঃ ২৩।
______________________________
৩. পিতা-মাতার জন্য দুয়াঃ
জীবিত বা মৃত পিতা মাতা দুইজনের জন্য এই দুয়া বেশি
করতে হবেঃ
ﺭَّﺏِّ ﺍﺭْﺣَﻤْﻬُﻤَﺎ ﻛَﻤَﺎ ﺭَﺑَّﻴَﺎﻧِﻲ ﺻَﻐِﻴﺮًﺍ
উচ্চারণঃ রাব্বির হা’ম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা।
অর্থঃ হে আমাদের পালনর্তা! আপনি আমার পিতা-মাতার
প্রতি তেমনি দয়া করুন যেইরকম দয়া তারা আমাকে শিশু
অবস্থায় করেছিল।
মৃত মানুষ জীবিত মানুষের দুয়া দ্বারা উপকৃত হয়, তাই
পিতা-মাতার জন্য এই দুয়া করে তাদের উপকার করা
সম্ভব। সেইজন্য দুয়া কবুলের সময়গুলোতে
যেমন সিজদার সময় এই দুয়া বেশি পড়া উচিত।
______________________________
৪. ছোট্ট কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দুয়াঃ
আল্লাহ যখন কারো ভালো করতে চান তখন তাকে
অনেক টাকা পয়সা, ভালো স্বামী বা স্ত্রী, দামী
গাড়ি দেননা। যদিও আমরা এইগুলোকেই কল্যানের
বিষয় বলে মনে করি। পার্থিব সুখ স্বাচ্ছন্দ কখনো
আল্লার নেয়ামত হতে পারে, কখনোবা সেটা
আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন পরীক্ষাও হতে
পারে। কিন্তু আল্লাহ যখন কারো কল্যান করতে
চান, তখন তাকে “ফিকহ” বা দ্বীনের গভীর জ্ঞান
দান করেন। আর সেই জ্ঞান চাওয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর শেখানো সুন্দর
ছোট্ট একটা দুয়া আছে, আপনারা মুখস্থ করে
নিতে পারেন।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻋِﻠْﻤﺎً ﻧﺎﻓِﻌﺎً، ﻭَﺭِﺯْﻗﺎً ﻃَﻴِّﺒﺎً، ﻭَﻋَﻤَﻼً ﻣُﺘَﻘَﺒَّﻼً
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস-আলুকা ই’লমান
নাফিআ’ন, ওয়া রিযক্বান ত্বাইয়্যিবান, ওয়া আ’মালাম
মুতাক্বাববালান।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট উপকারী
জ্ঞান, পবিত্র জীবিকা ও গ্রহণযোগ্য আমল
প্রার্থনা করছি। ইবনে মাজাহ, হিসনুল মুসলিম পৃষ্ঠা ১১৩।
এই দুয়াটা আমার প্রিয় কারণ, এর সাথে আরো দুইটা
খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চাওয়া হয়েছে – রিযকান
ত্বাইয়্যিবান বা পবিত্র জীবিকা – এর দ্বারা দুনিয়াবি চাহিদার
পূরণের জন্যও দুয়া করা হলো আর, আ’মালান
মুতাক্বাব্বালান বা – এমন আমল যা আল্লাহর কাছে কবুল
হয়, পরকালের জন্য যা প্রয়োজন তাও প্রার্থনা করা
হলো। এতো গুরুত্বপূর্ণ তিনটা বিষয় একসাথে
ছোট্ট একটা দুয়ার মধ্যে থাকায় আমাদের সবার
শিখে নেওয়া উচিত। এই দুয়া প্রত্যেকদিন ফযরের
ফরয নামাযের সালাম ফেরানোর পর একবার পড়া
সুন্নত। এছাড়া সিজদাতে, সালাম ফিরানোর আগেসহ
যেকোনো সময় করা যাবে। আরবীতে না
পারলে বাংলাতেও করা যাবে, যতদিন না মুখস্থ হচ্ছে।
দুয়াটা পাওয়া যাবে হিসনুল মুসলিম বইয়ের ১১৩ নাম্বার
পৃষ্ঠায়।
______________________________
৫. দুই সিজদার মাঝখানে বসা অবস্থায় দুয়াঃ
এখানে নিজের পছন্দমতো যেকোনো দুয়া করা
যায়না, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেই
দুয়াগুলো করেছেন শুধুমাত্র সেই দুয়াগুলোই করা
যাবে। আর এইখানে দুয়া আরবীতেই করতে
হবে। দুই সিজদার মাঝখানে এই দুয়াগুলো করার সময়
তাশাহুদের মতো আংগুন দিয়ে ইশারা করা সুন্নত।
যেই দুয়া করতে হবেঃ
ছোট্ট এই দুয়াটা কি মুখস্থ করা যায়না? রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরয, সুন্নত, নফল যে
কোনো সালাতের দুই সিজদার মাঝখানে বসা
অবস্থায় এই দুআটি করতেনঃ
ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ، ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ
উচ্চারণঃ রাব্বিগ ফিরলি, রাব্বিগ ফিরলি। অর্থঃ হে আমার
রব আমাকে ক্ষমা করা, হে আমার রব আমাকে ক্ষমা
কর। আবু দাউদ ১/৩১, ইবনে মাজাহ, দুয়াটা সহীহ।
এই ছোট্ট দুয়াটা পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার
সুযোগ মিস করা ঠিকনা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম দিনে ৭০ থেকে ১০০ বার তোওবা
করতেন। আপনি যদি সালাতের দুই সিজদার মাঝখানে
এই দুয়াটা পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলেন তাহলে দিনে
যত রাকাত করে সালাত পড়বেন, তত বারই আল্লাহর
কাছে ক্ষমা চাওয়া হবে। আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার
একটা উপায় হচ্ছে বেশি বেশি করে নিয়মিত
তোওবা ও ইস্তিগফার করা (ক্ষমা চাওয়ার দুয়া করা)।
এছাড়া দুই সিজদার মাঝখানে আরেকটা ছোট্ট সুন্দর
দুয়াঃ
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ، ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨِﻲ، ﻭَﺍﻫْﺪِﻧِﻲ، ﻭَﺍﺟْﺒُﺮْﻧِﻲ، ﻭَﻋَﺎﻓِﻨِﻲ،

ﻭَﺍﺭْﺯُﻗْﻨِﻲ، ﻭَﺍﺭْﻓَﻌْﻨِﻲ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহা’মনী,
ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়াআ’ফিনি, ওয়ারযুক্বনী,
ওয়ারফা‘নী।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার
প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন,
আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে
নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন এবং আমার
মর্যাদা বৃদ্ধি করুন”।
হাদীসটি ইমাম নাসাঈ ব্যতীত সুনান গ্রন্থগারগণ সবাই
সংকলন করেছেন। আবূ দাউদঃ ৮৫০, তিরমিযীঃ ২৮৪,
২৮৫, ইবন মাজাহঃ ৮৯৮। শায়খ আলবানির মতে হাদীস
সহীহ।
বিঃদ্রঃ এই দুয়াটা কম-বেশি বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা আছে,
সবগুলো সহীহ – তবে এখানে যেটা দেওয়া
আছে এটা সবচাইতে বড় যেখানে সবগুলো দুয়া
একসাথে আছে। এটা করলে সবগুলো দুয়াই করা
হলো।
______________________________
৬. যারা অবিবাহিত তারা নেককার স্বামী/স্ত্রী ও
সন্তান পাওয়ার জন্য বা যারা বিবাহিত তাদের স্বামী/
স্ত্রী ও সন্তান ধার্মিক হওয়ার জন্য দুয়াঃ
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻨَﺎ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻦَﺍ ﻗُﺮَّﺓَ ﺃَﻋْﻴُﻦٍ ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ
ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﺇِﻣَﺎﻣًﺎ
উচ্চারণঃ রব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া যুররিয়্যাতিনা
ক্বুররাতা আ’ইয়ুন, ওয়াজআ’লনা লিল মুত্তাক্বীনা ইমামা।
অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের
স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের
সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে
চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে
মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। সুরা আল-
ফুরক্বানঃ ৭৪।
______________________________
৭. আল্লাহর যিকর, শুকিরিয়া ও সুন্দরভাবে তাঁর ইবাদত
করার জন্য সাহায্য চাওয়ার দুয়াঃ
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻋِﻨِّﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺫِﻛْﺮِﻙَ، ﻭَﺷُﻜْﺮِﻙَ، ﻭَﺣُﺴْﻦِ ﻋِﺒﺎﺩَﺗِﻚَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আ ই’ন্নী আ’লা যিকরিকা ওয়া
শুকরিকা ওয়া হু’সনি ইবাদাতিকা।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার স্মরণ,
তোমার কৃতজ্ঞতা এবং তোমার সুন্দর ইবাদত করার
ব্যাপারে আমাকে সাহায্য কর”।
এই দুয়া ইচ্ছা করলে নামাযের ভেতরে সিজদাতে বা
সালাম ফেরানোর আগে দুয়া মাসুরার সময়ও করা যায়।
এই দুয়াটা এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এক
সাহাবীকে এই দুয়া পড়ার জন্য বিশেষভাবে
ওয়াসীয়ত করে যান। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মুয়ায বিন জাবাল
(রাঃ) এর হাত ধরে বলেছিলেনঃ ‘‘হে মুয়াজ! আল্লাহর
কসম আমি তোমাকে ভালোবাসি। অতঃপর তিনি
বললেন, হে মুয়াজ! আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি
যে তুমি প্রত্যেক সালাতের পর এই দুয়া করা ত্যাগ
করবেনা, “আল্লাহুম্মা আ ই’ন্নী আ’লা যিকরিকা ওয়া
শুকরিকা ওয়া হু’সনি ইবাদাতিকা।” আবু দাউদ ১/২১৩, নাসায়ী,
ইবেন হিব্বান, হাদীস সহীহ।
______________________________
৮. ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় যেকোনো শিরক থেকে
বাঁচার দুয়াঃ
কেউ ৪০ বছর আল্লাহর ইবাদত করলো, কত যে
নফল সুন্নত নামায পড়লো, রোযা রাখলো, কিন্তু
মরণের আগে শিরক করে তোওবা না করেই মারা
গেলো. . .একটা মাত্র শিরক তার সমস্ত আমল নষ্ট
করে দেবে (নাউযুবিল্লাহ)!
কেয়ামতের দিন তার আমলগুলোর কোনো ওযন
আল্লাহ তাকে দেবেন না, এইগুলোকে ধূলো
বালিতে রূপান্তরিত করে দেবেন। আর জেনে
হোক বা না জেনেই হোক যেকেউ,
যেকোনো সময় শিরকে লিপ্ত হতে পারে, যে
যত বড় নেককারই হোক না কেনো (মা যা’
আল্লাহ)।
এইজন্য শিরক করা অথবা অনিচ্ছায় শিরকে লিপ্ত হওয়া
থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হয়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) শেখানো একটা দুয়া আছে, কেউ
যদি প্রতিদিন সকাল বিকাল একবার করে পড়েন,
তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাকে শিরক থেকে
হেফাজত করবেন। আপনি কি জানেন, সেই দুয়াটা কি?
দুয়াটা হচ্ছেঃ
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﺃَﻥْ ﺃُﺷْﺮِﻙَ ﺑِﻚَ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ، ﻭَﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُﻙَ
ﻟِﻤَﺎ ﻻَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা
ওয়া আনা আ’লাম, ওয়া আস-তাগফিরুকা লিমা লা আ’লাম।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার
সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয়
প্রার্থনা করছি। আর আমার অজানা অবস্থায় কোনো
শিরক হয়ে গেলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
আহমাদ ৪/৪০৩, হাদীসটি সহীহ, সহীহ আল-জামে
৩/২৩৩। হিসনুল মুসলিমঃ পৃষ্ঠা ২৪৬।
______________________________
৯. বিপদ বা দুঃশ্চিন্তার জন্য এই দুয়াটা সবাই মুখস্থ করে
নিনঃ
তিমি মাছের পেটে থাকা অবস্থায় ইউনুস (আঃ) এই
দোয়া করেছিলেন এবং কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার
পেয়েছিলেন।
ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﺇِﻧِّﻲ ﻛُﻨْﺖُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻈّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ
উচ্চারণঃ লা ইলা-হা ইল্লা-আনতা, সুবহা’-নাকা ইন্নি কুনতু
মিনায-যোয়ালিমিন।
অর্থঃ (হে আল্লাহ) তুমি ছাড়া আর কোনো মা’বুদ
নাই, তুমি পবিত্র ও মহান! নিশ্চয় আমি জালেমদের
অন্তর্ভুক্ত।
কুরানুল কারীমে এই দুয়া বর্ণিত হয়েছে সুরা আল-
আম্বিয়া: আয়াত নাম্বার ৮৭ তে।
এই দুয়ার উপকারীতাঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“কোনো মুসলিম যদি এই দুয়া পড়ে, তার দুয়া কবুল
করা হবে। অন্য হাদীস অনুযায়ী, এই দুয়া পড়লে
আল্লাহ তার দুঃশ্চিন্তা দূর করে দিবেন।” সুনানে আত-
তিরমিযী।
দুয়া কিভাবে পড়তে হবেঃ বিপদ আপদ বা দুঃশ্চিন্তার
সময় এই দুয়া বেশি বেশি করে পড়তে হয়। যতবার
ইচ্ছা ও যতবার সম্ভব হয় ততবার পড়বেন। এক লক্ষ
পঁচিশ হাজার পড়ে যে “খতম ইউনুস” পড়ানো হয়
হুজুর বা মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে, বা
দুয়া কেনাবেচা করা হয় – এইগুলো বেদাত – এই
রকম খতম করানোর কোনো দলীল নেই
শরীয়তে। আপনার যতবার সম্ভব হয় ততবার
পড়বেন – এত এত বার পড়তে হবে, এমন
কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আপনি নিজের জন্য
নিজে দুয়া করবেন – আল্লাহর কাছে সেটাই বেশি
পছন্দনীয়। সর্বোত্তম হচ্ছে – ফরয/নফল/
সুন্নত যেকোনো নামাযের সিজদাতে এই দুয়া
পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। আল্লাহ
আমাদেরকে তাঁর অতুলনীয় রহমতের ছায়ার মধ্যে
আশ্রয় দিন, আমীন।
______________________________
১০. হেদায়েতের উপর থাকা, অন্তর যেন
দ্বীনের উপরে থাকে তার জন্য দুয়াঃ
আরবীতে হৃদয়কে বলা হয় ‘ক্বালব’, যার একটা
অর্থ হচ্ছে – যেই জিনিস খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে
যায়। অর্থাৎ, মানুষের হৃদয় খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে
যায়, একারণে মানুষ আজকে যাকে ভালোবাসে,
কাল তাকে ঘৃণা করে। কেয়ামতের আগে এমন
হবে মানুষ সকালে ঈমানদার থাকবে, সন্ধ্যা সময়
কাফের হয়ে যাবে। আবার মানুষ সন্ধ্যা সময় ঈমানদার
থাকবে, সকালে কাফের হয়ে যাবে। এইজন্য হৃদয়
যাতে পরিবর্তন না হয়ে যায়, পাপাচার, কুফুরী,
আল্লাহর নাফরমানির দিকে ঝুকে না পড়ে সেই
জন্য আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বেশি বেশি করে এই দুয়া করতেনঃ
উচ্চারণঃ ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলুব! সাব্বিত ক্বালবী আ’লা
দ্বীনিক।
অর্থঃ হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তন করার মালিক! আমার
হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপর অবিচলভাবে
প্রতিষ্ঠিত রাখো। সুনানে তিরমিযী।
______________________________
১১. জান্নাত প্রার্থনা করা ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয়
চাওয়ার দুয়াঃ
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া
আ’উযু বিকা মিনান্নার।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাত চাই এবং
জাহান্নাম থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর
কাছে ৩ বার জান্নাত প্রার্থনা করে, জান্নাত আল্লাহর
কাছে দুয়া করে, হে আল্লাহ তাকে জান্নাত দান
করো। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ৩ বার জাহান্নাম
থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে, জাহান্নাম আল্লাহর
কাছে দুয়া করে, হে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম
থেকে মুক্তি দাও”।
তিরমিযিঃ ২৫৭২, ইবনে মাজাহ ৪৩৪০, শায়খ আলবানি এই
হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামি
৬২৭৫।
উল্লেখ্য, সকাল সন্ধ্যায় ৭ বার “আল্লাহুম্মা আজিরনি
মিনান্নার” পড়ার হাদীসটা জয়ীফ বা দুর্বল, শায়খ
আলবানী সিলসিলা জয়ীফাহঃ ১৬২৪।
সুতরাং সেটা না পড়ে এই দুয়া পড়বেন, কারণ এটাতে
জান্নাত চাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া দুইটা
দোয়া আছে আর এটা সহীহ। ঐটা থেকে
এইদুয়াটা ভালো ও সহীহ।
______________________________
১২. কেয়ামতের দিন হিসাব সহজ করার জন্য দুয়াঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
প্রত্যেকের হিসাব নেওয়া হবে আর আল্লাহ যার
হিসাব নেবেন তাকে শাস্তি দেবেন। এই কথা শুনে
সাহাবীরা ভয় পেলো, কারণ কে এমন আছে যে
নিষ্পাপ? সুতরাং সকলেই শাস্তি পাবে। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মুমিনদের
জন্য হিসাব সহজ করা হবে। কেয়ামতের দিন আল্লাহ
তাঁর ঈমানদার বান্দাদেরকে রহমতের চাদরে
ঢেকে নেবেন, অন্যদের থেকে আলাদা করে
দেবেন। এরপরে গোপনে তাকে তার
পাপকাজগুলো দেখানো হবে। বান্দা তার
পাপকাজগুলো দেখে ভয় পেয়ে যাবে, আর
চিন্তা করতে থাকবে তাহলেতো আমার বাঁচার
কোনো পথ নাই! তখন আল্লাহ তাকে বলবেন তুমি
পাপ করেছো কিন্তু অমুক সময় তোওবা
করেছো আর আমি তোমার তোওবা কবুল
করেছি। আর শুধু কবুলই করিনাই – তোওবা
করেছো এইজন্য পাপ কাজগুলোকে এখন
নেকীতে পরিবর্তন করে দিলাম। এইকথা শুনে
বান্দা খুব খুশি হয়ে বলবে, হে আল্লাহ আমারতো
আরো অনেক পাপ আছে – সেইগুলোতো
দেখতে পাচ্ছিনা (পাপের পরিবর্তে নেকী
পাওয়ার আশায় সে এই কথা বলবে)।
এর পরে বান্দাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেওয়া
হবে। এই হচ্ছে হিসাব সহজ করার পদ্ধতি। এরকম
যেন হিসাব গ্রহণ সহজ করা হয়, এই জন্য এই দুয়া
করতে হয়ঃ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্ম হা’সিবনি হি’সাবাই-য়্যাসিরা। অর্থঃ হে
আল্লাহ তুমি আমার হিসাব সহজ করো।
ইমাম হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, শায়খ
আলবানীর মতে দুয়াটি হাসান সহীহ।
______________________________
১৩. গুনাহ মাফ করার ও নেককার ঈমানদার হিসেবে
মৃত্যুর জন্য দুয়াঃ
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﺫُﻧُﻮﺑَﻨَﺎ ﻭَﻛَﻔِّﺮْ ﻋَﻨَّﺎ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻨَﺎ ﻭَﺗَﻮَﻓَّﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺄَﺑْﺮَﺍﺭِ
উচ্চারণঃ রাব্বানা ফাগফির লানা যুনুবানা ওয়া-কাফফির আ’ন্না
সাইয়্যিআ-তিনা ওয়া তাওয়াফ্ফানা মাআ’ল আবরা-র।
অর্থঃ হে আমাদের পালনর্তা! আপনি আমাদের
গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন, আমাদের মন্দ কাজগুলো
দূর করে দিন আর আমাদেরকে নেককার হিসেবে
মৃত্যু দান করুন। সুরা আলে ইমরানঃ ১৯৩।
______________________________
১৪. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্দর একটি দুয়াঃ
মুখস্ত করে নিতে পারেন ও মুনাজাতে বেশি বেশি
করে আর বিশেষ করে সিজদাতে বা সালাম
ফেরানোর পূর্বে এই দুয়া করতে পারেন।
ﺍَﻟﻠﻬﻢ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺍﻟﻬُﺪَﻯ، ﻭَﺍﻟﺘُّﻘَﻰ، ﻭَﺍﻟﻌَﻔَﺎﻑَ، ﻭَﺍﻟﻐِﻨَﻰ
আল্লা-হুম্মা ইন্নি আস-আলুকাল হুদা ওয়াত-তুকা ওয়াল
আ’ফাফা ওয়াল গি’না।
অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে হেদায়েত,
তাকওয়া, সুস্থতা ও সম্পদ প্রার্থনা করছি।
মুসলিম ২৭২১, তিরমিযী ৩৪৮৯, ইবনু মাজাহ ৩৮৩২,
আহমাদ ৩৬৮৪।
______________________________
১৫. দুঃখ ও দুশ্চিন্তার সময় পড়ার দো‘আঃ
এই দুয়াটা প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় অন্তত একবার পড়া
সুন্নত।
ﻳَﺎ ﺣَﻲُّ ﻳَﺎ ﻗَﻴُّﻮﻡُ ﺑِﺮَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﺃَﺳْﺘَﻐﻴﺚُ ﺃَﺻْﻠِﺢْ ﻟِﻲ ﺷَﺄْﻧِﻲَ ﻛُﻠَّﻪُ
ﻭَﻻَ ﺗَﻜِﻠْﻨِﻲ ﺇِﻟَﻰ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﻃَﺮْﻓَﺔَ ﻋَﻴْﻦٍ
উচ্চারণঃ ইয়া হা’ইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যূম বিরহ্মাতিকা
আস্তাগীস, আসলিহ্-লী শা’নী কুল্লাহু, ওয়ালা
তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা আ’ইন।
অর্থঃ হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী! তোমরা
রহমতের জন্য তোমার দরবারে জানাই আমার সকাতর
নিবেদন, তোমার রহমতের অসীলায় তোমার
কাছে (বিপদ, দুশ্চিন্তা থেকে) উদ্ধার কামনা করি। তুমি
আমার অবস্থা সংশোধন করে দাও, আর তুমি
চোখের পলক পরিমান সময়ের (এক মুহূর্তের)
জন্যেও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে
দিওনা।
হাকেম ১/৫৪৫, তিনি হাদীসটিকে সহীহ
বলেছেন, আর যাহাবী তা সমর্থন করেছেন,
সহীহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ১/২৭৩।
______________________________
১৬. দুঃখ ও দুশ্চিন্তার, দারিদ্রতা ও ঋণগ্রস্থ হওয়া
থেকে মুক্তির জন্য দুয়াঃ
যারা স্বচ্ছল অবস্থায় শান্তিতে আছেন, তারা যেনো
কঠিন পেরেশানি, বড় বিপদ, বড় ঋণের বোঝা,
মানুষের, অলসতা, অক্ষমতা, কাপুরুষতার স্বীকার না
হন, সেই জন্য নিয়মিত এই দুয়া পড়া উচিৎ। আর যারা
এইগুলোর স্বীকার হয়েছেন তারাও নিয়মিত এই দুয়া
পড়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবেন।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻬَﻢِّ ﻭَﺍﻟْﺤَﺰَﻥِ، ﻭَﺍﻟْﻌَﺠْﺰِ ﻭَﺍﻟْﻜَﺴَﻞِ،
ﻭَﺍﻟْﺒُﺨْﻞِ ﻭَﺍﻟْﺠُﺒْﻦِ، ﻭَﺿَﻠَﻊِ ﺍﻟﺪَّﻳْﻦِ ﻭَﻏَﻠَﺒَﺔِ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নি আ‘ঊযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল
হা’যানি, ওয়াল আ’জযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি,
ওয়া দ্বোলাই’দ-দ্বাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল।
অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার কাছে আশ্রয়
প্রার্থনা করছি দুঃশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অলসতা ও
অক্ষমতা থেকে, কৃপণতা ও কাপুরুষতা থেকে,
ঋণের বোঝা ও মানুষের নির্যাতন-নিপীড়ন
থেকে। [বুখারীঃ ২৮৯৩]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এ দুআ’টি
বেশি বেশি করে পড়তেন। ফাতহুল বুখারীঃ
১১/১৭৩।
______________________________
১৭. দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যানের জন্য
সুন্দর একটি দুয়াঃ
আমরা সবাই দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত। আপনি লক্ষ্য করে
দেখবেন আমাদের বেশিরভাগ দুয়াই ঘুরেফিরে
দুনিয়া কেন্দ্রিক। দুনিয়াবি কোনকিছু চাওয়া নিষেধ বা
অপছন্দের কিছু না, বরং দুনিয়া আখেরাতের ছোট-
বড় প্রতিটা বিষয়ের জন্যই আল্লাহর কাছে দুয়া
করলে আল্লাহ খুশি হন। তবে মনে রাখা
প্রয়োজন, আল্লাহ যেই ঈমানদারদের প্রশংসা
করেছেন, তারা শুধু দুনিয়ার জন্যই দুয়া করতোনা,
তাদের দুয়া হচ্ছেঃ “রাব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও-
ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাও ওয়া-ক্বিনা আযাবান্নার” অর্থাৎ,
হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে দুনিয়ার
জীবনে কল্যাণ দাও এবং পরকালে জীবনেও
কল্যাণ দান করো। আর আমাদেরকে জাহান্নামের
আযাব থেকে বাঁচাও। (সুরা বাক্বারাহ)। অর্থাৎ, তারা
দুনিয়ার জন্য দুয়া করতো কিন্তু সাথে সাথে
পরকালের কল্যানের জন্যও দুয়া করতো। তবে
পরকালের জন্য দুনিয়াবী কল্যানের চাইতে দুই গুণ
বেশি দুয়া করে, কারণ দুনিয়ার জীবন পরকালের
তুলনায় অতি নগণ্য। যাই হোক, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্দর এই দুয়াটা মুখস্থ করে
আপনারা সহজেই নামাযে বা নামাযের বাইরে দুনিয়া ও
আখেরাতের উভয় জাহানের কল্যানের জন্য দুয়া
করতে পারবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এই দুয়া করতেন,
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আসলিহ-লি দ্বিনিয়াল্লাযি হুয়া ই’সমাতু
আমরি, ওয়া আসলিহ’-লি দুনিয়া-য়্যাল্লাতি ফীহা মাআ’-শী,
ওয়া আসলিহ’-লি আ-খিরাতায়াল্লাতী ফীহা মাআ’দী।
ওয়াজ আ’লিল হায়া-তা যিয়া-দাতাললী ফি কুল্লি খাইরি ওয়াজ
আ’লিল মাউতা রা-হা’তাল লী মিং কুল্লি শাররি।
অর্থঃ হে আল্লাহ্! তুমি আমার দ্বীনকে আমার জন্য
সঠিক করে দাও, যা আমার সকল বিষয়ের প্রতিরক্ষা।
তুমি আমার দুনিয়াকে আমার জন্য সংশোধন করে দাও,
যার মধ্যে রয়েছে আমার জীবন-জীবিকা। তুমি
আমার আখেরাতকে আমার জন্য সুন্দর করে দাও,
যেখানে আমাকে ফিরে যেতে হবে। তুমি আমার
প্রত্যেক পুণ্য কাজে আমার জীবনকে বৃদ্ধি
করে দাও এবং প্রত্যেক মন্দ কাজ হতে মৃত্যুকে
আমার জন্য শান্তির কারণে পরিণত কর।
রিয়াদুস সালেহীনঃ ১৪৭২, সহীহ মুসলিমঃ ২৭২০।

9 thoughts on "মুনাজাতের জন্য জরুরী আরবী দুয়া সমূহ"

    1. Devian Sagor Author Post Creator says:
      thanks Bro…
  1. Aabheer Leyon Contributor says:
    ধন্যবাদ
  2. ARIF Contributor says:
    : মারহাবা অসাধারণ পোস্ট
  3. Md Khalid Author says:
    Thank you.. ‘হিসনুল মুসলিম’ boi t akhub e valo karon onno boi te reference o dewa thakena kintu ‘হিসনুল মুসলিম’ a all hadis er reference dewa ache…….. and ‘হিসনুল মুসলিম’ er ABDROID APP o ache……………..
    1. Md Khalid Author says:
      kintu apni ja bollen kichuta vul ache. NAMAZ seshe ba onno time kothaevabe bola nai but, dua er time a haat tolar Gurutto hadis a esheche. shob time a noy abar. je je time a haat tulte boleche sei sei time a haat tola, je je time a haat tola chara dua ache se time a ahaat na tola e uchit o sunnah amal……
    2. Devian Sagor Author Post Creator says:
      Ami Apnar sate ekmot
  4. Anind0 Contributor says:
    নামাজই ঠিক মতো পড়তে পারি না আমরা দোয়া দিয়ে কী হবে?

Leave a Reply