রোজার নিয়ত সম্পর্কিত মাসআলা
রোজার নিয়ত :
রোজার জন্য রাতে শুধু এই নিয়ত করে
নেয়াই যথেষ্ট যে, ‘আমি
আগামীকাল রোজা রাখব’ কিংবা
দিনে (এগারটার আগে) এই নিয়ত
করাই যথেষ্ট যে, ‘আজ রোজা রাখব’।
যদি কেউ আরবি নিয়ত করতে চায়,
তবে এরূপ করবে ‘নাওয়াইতুআন আসুমা
গাদাম মিন শাহরি রামাজান।
‘রমজান মাসের আগামীকালের
রোজা রাখার নিয়ত করছি।’
রোজার নিয়তে ১০ জরুরি মাসআলা :
(১) রমজানের প্রতিদিনই রোজার
নিয়ত করতে হবে। এক দিন নিয়ত
করলে পুরো রমজানের জন্য তা যথেষ্ট
নয়। (সূত্র : ইলমুল ফিকাহ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা
১৮)।
(২) রাতেই নিয়ত করা আবশ্যক নয়, করে
ফেললে ভালো। নিয়ত করার
বিষয়টি মনে না থাকলে সকালে
যখন মনে হবে, তখনই নিয়ত করে
নিলেও তা হয়ে যাবে। তবে
সেহরির সময় পার হয়ে যাওয়ার পর
কোনো কিছু পানাহার করলে বা
রোজা ভঙ্গের কোনো কারণ
সংঘটিত হওয়ার পর নিয়ত করলে তা
আদায় হবে না। (সূত্র : বেহেশতি
জেওর, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩)।
(৩) রমজানুল মোবারকে মনে মনে শুধু
এটুকু ভাবলেই নিয়ত হয়ে যাবে যে
আমি আজ রোজা রাখব।
নির্দিষ্টভাবে কোনো দোয়া পাঠ
করা বা আমি আজ রমজানের ফরজ
রোজা রাখছি- এমন কিছু বলা জরুরি
নয়। (সূত্র : বেহেশতি জেওর, খণ্ড ৩,
পৃষ্ঠা ৩)।
(৪) নফল রোজা, নির্দিষ্ট মানতের

রোজা এবং রমজানের
রোজাসমূহের নিয়ত রাতের বেলা
অথবা শরিয়তের ঘোষিত অর্ধদিবস
পর্যন্ত করা যাবে। অন্য সব ধরনের
রোজার জন্যই রাতের মধ্যেই নিয়ত
করে নেওয়া জরুরি। (সূত্র : ফাতাওয়া
দারুল উলুম, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৩৪৬)।
(৫) রমজান মাসে সেহরি
খাওয়াটাও রোজার নিয়ত বলে গণ্য
হবে। তবে সেহরি খাওয়ার সময়
রোজা রাখার ইচ্ছা না থাকলে তা
নিয়ত বলে গণ্য হবে না। (সূত্র :
কিতাবুল ফিকাহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৮৮১)।
(৬) কোনো ব্যক্তি সারা দিন কিছুই
পানাহার করেনি, রোজা ভাঙার
কোনো কাজও তার মাধ্যমে
সংঘটিত হয়নি; অথচ তার মনে
রোজার রাখার কোনো ইচ্ছা ছিল
না। হয়তো তার ক্ষুধাই লাগেনি বা
তেমন কিছু করার প্রয়োজন হয়নি। এমন
অবস্থায় তা রোজা বলে গণ্য হবে
না। তবে মনে মনে রোজা পালনের
ইচ্ছা করে থাকলে তা রোজা হয়ে
যেত। (সূত্র : বেহেশতি জেওর, খণ্ড ৩,
পৃষ্ঠা ৩)।
(৭) ইসলামী শরিয়ার আলোকে
রোজা শুরু হয় সুবহে সাদিক হতে।
তাই সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া
পর্যন্ত পানাহারে কোনো আপত্তি
নেই। সব কিছুই তখন বৈধ। অনেকে
রাতের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে
সেহরি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং মনে
করেন, রোজার নিয়ত করার পর বা
সেহরি খেয়ে ফেলার পর আর কিছু
পানাহার করা যাবে না। এমন
ধারণা সঠিক নয়। সুবহে সাদিক উদয়
না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে
কোনো দোষ নেই। তা নিয়ত করা
হোক বা না হোক। (সূত্র : বেহেশতি
জেওর, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩)।
(৮) মনের ইচ্ছার নামই নিয়ত।
সুনির্দিষ্টভাবে বিশেষ কোনো
বাক্য মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়।
তাই রাতের বেলায় মনে মনে
রোজা রাখার ইচ্ছা নিয়ে শুয়ে
পড়লে তার জন্য ফের নিয়ত করার
প্রয়োজন নেই। (সূত্র : হাশিয়ায়ে
ফাতাওয়া দারুল উলুম, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা
৪৪৬)।
(৯) মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট, তবে
‘নাওয়াইতু বি সাউমি গাদিম মিন
শাহরি রামাদান’ মুখে উচ্চারণ
করার মাধ্যমে নিয়ত করা উত্তম। (সূত্র :
বেহেশতি জেওর, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩)।
(১০) দিনের দ্বিপ্রহরের আগে
রোজার নিয়ত করা না হয়ে থাকলে
সেই রোজা সহিহ হবে না। এর পরও
রোজাহীন অবস্থায় দিনের বাকি
সময়ে পানাহার করা রমজানুল
মোবারকের সম্মানের বিরোধী
বলে তা জায়েজ নয়। (সূত্র : ইমদাদুল
ফাতাওয়া, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৭৩)।

রোজার নিয়ত:
নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম
মিনশাহরি রামাদ্বনাল মুবারাকি
ফারদ্বাল্লাকা ইয়া আল্লাহ
ফাতাক্বাববাল মিন্নী ইন্নাকা
আনতাসসামীয়ু’ল আ’লীম।

ইফতারের দোয়া:
আল্লাহুম্মা ছুমতুলাকা ওয়া
তাওয়াক্কালতু আ’লা রিজক্বিকা
ওয়া আফতারতু বি রাহমাতিকা ইয়া
আর্ হামার রাহিমীন।

ফেসবুকে একটা লাইক দিয়া এক্টিভ হোউন

Leave a Reply