কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী সূর্য গ্রহন ও চন্দ্র গ্রহনের কোন প্রভাব গর্ভবতী মা, বা তার গর্ভস্থ ভ্রুনের উপর পড়ে না। গর্ভবতী মা কোন কিছু কাটলে, ছিঁড়লে বাচ্চা ঠোঁট কাটা জন্মাবে, কোন কিছু ভাঙলে, বাঁকা করলে সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নেবে – এধরনের যত কথা প্রচলিত আছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা, যার সাথে কুরআন ও সুন্নাহর কোন সম্পর্ক নেই।
চন্দ্র, সূর্য বা অন্য কোন সৃষ্ট বস্তু অদৃশ্য ভাবে কারও উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে এধরনের বিশ্বাস রাখা তাওহীদের পরিপন্থী।

যে আল্লাহ তা’য়ালা ও শেষ দিবসে বিশ্বাস রাখে তার মনে রাখা উচিত যে, আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শনের মধ্যে চন্দ্র, সূর্যের গ্রহণও একেকটি নিদর্শন। কেউ যদি চন্দ্র বা সূর্য গ্রহন দেখে, তার উচিত হবে রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করা ও বেশী বেশী করে সে সময় আল্লাহকে স্মরণ করা।

রাসুল (সাঃ) বলেছেন •►
*“চন্দ্র এবং সূর্য এ দুটি আল্লাহর নিদর্শনের অন্যতম। কারও জন্ম বা মৃত্যুর কারণে এদের গ্রহন হয় না। তাই তোমরা যখন প্রথম গ্রহণ দেখতে পাও, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর।”*
[সহিহ বুখারী ৪৮১৮; ইফা]

অন্য বর্ণনায় রাসুল (সাঃ) বলেছেন •►
*“চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ কারও জন্ম বা মৃত্যুর কারণে লাগেনা বরং এদুটো আল্লাহর নিদর্শন, যা দ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দাকে সতর্ক করেন। অতএব তোমরা যখন গ্রহণ লাগতে দেখ, আল্লাহর জিকিরে মশগুল হও যতক্ষণ তা আলোকিত না হয়ে যায়।”*
[সহীহ মুসলিম ১৯৭২; ইফা]

আমাদের উচিত যা কিছু কুরআন ও রাসুল (সাঃ) এর সহীহ হাদিসে রয়েছে সে সম্পর্কে জানা ও সে অনুযায়ী আমল করা।

আল্লাহ যেন আমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন এবং আমাদেরকে রাসুল (সাঃ) এর দেওয়া শিক্ষাকে দৃঢ় ভাবে আঁকড়ে থাকতে সাহায্য করেন। আমীন।

সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ কালে যে নফল ছালাত আদায় করা হয়, তাকেছালাতুল কুসূফ ও খুসূফ বলা হয়। সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ আল্লাহ্র অপারকুদরতের অন্যতম নিদর্শন। এই গ্রহণ শুরু হ’লে আল্লাহ্র প্রতিগভীর আনুগত্য ও ভীতি সহকারে এর ক্ষতি থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যেজামা‘আত সহ দু’রাক‘আত ছালাত দীর্ঘ ক্বিরাআত ও ক্বিয়ামসহকারে আদায় করতে হয় এবং শেষে খুৎবা দিতে হয়।[1] এইছালাতের বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে। যাতে দু’রাক‘আত ছালাতে (২+২)৪টি রুকূ হয় এবং এটিই সর্বাধিক বিশুদ্ধ।[2]

পদ্ধতি : আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সময়ে একবার সূর্য গ্রহণ হ’লে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ) ছালাতআদায় করেন ও লোকেরাও তাঁর সাথে ছালাত আদায় করে।প্রথমে তিনি ছালাতে দাঁড়ালেন এবং সূরা বাক্বারাহ্র মত দীর্ঘক্বিরাআত করলেন। অতঃপর (১) দীর্ঘ রুকূ করলেন। তারপর মাথাতুলে ক্বিরাআত করতে লাগলেন। তবে প্রথম ক্বিরাআতের চেয়েকিছুটা কম ক্বিরাআত করে (২) রুকূতে গেলেন। এবারের রুকূপ্রথম রুকূর চেয়ে কিছুটা কম হ’ল। তারপর তিনি রুকূ থেকে মাথাতুলে সিজদা করলেন। অতঃপর সিজদা শেষে তিনি উঠে দাঁড়ালেনএবং লম্বা ক্বিরাআত করলেন। তবে প্রথমের তুলনায় কিছুটা ছোট।এরপর তিনি (৩) রুকূ করলেন, যা আগের রুকূর চেয়ে কম ছিল।রুকূ থেকে মাথা তুলে পুনরায় ক্বিরাআত করলেন। যা প্রথমেরতুলনায় ছোট ছিল। অতঃপর তিনি (৪) রুকূ করলেন ও মাথা তুলেসিজদায় গেলেন। পরিশেষে সালাম ফিরালেন।

ইতিমধ্যে সূর্য উজ্জ্বল হয়ে গেল। অতঃপর ছালাত শেষে দাঁড়িয়েতিনি খুৎবা দিলেন এবং হামদ ও ছানা শেষে বললেন যে, সূর্য ওচন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি বিশেষ নিদর্শন। কারু মৃত্যুবা জন্মের কারণে এই গ্রহণ হয় না। যখন তোমরা ঐ গ্রহণ দেখবে,তখন আল্লাহকে ডাকবে, তাকবীর দিবে, ছালাত আদায় করবে ওছাদাক্বা করবে। … আল্লাহ্র কসম! আমি যা জানি, তা যদি তোমরাজানতে, তাহ’লে তোমরা অল্প হাসতে ও অধিক ক্রন্দন করতে’।অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, এর মাধ্যমে আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের ভয়দেখিয়ে থাকেন। অতএব যখন তোমরা সূর্য গ্রহণ দেখবে, তখনভীত হয়ে আল্লাহ্র যিকর, দো‘আ ও ইস্তেগফারে রত হবে। [3]
বিজ্ঞানের যুক্তি : সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের সময় চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবী একইসরলরেখায় চলে আসে। ফলে সূর্য ও চন্দ্রের আকর্ষণী শক্তি বেশীমাত্রায় পৃথিবীর উপরে পতিত হয়। এর প্রচন্ড টানে অন্য কোন গ্রহথেকে পাথর বা কোন মহাজাগতিক বস্ত্ত পৃথিবীর দিকে ধেয়েআসলে পৃথিবী ধ্বংসের একটা কারণও হ’তে পারে। ১৯০৮ সালের৩০ শে জুন ১২ মেগাটন টিএনটি ক্ষমতা সম্পন্ন ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যেরএকটি বিশালাকার জ্বলন্ত পাথর (মিটিওরাইট) রাশিয়ারসাইবেরিয়ার জঙ্গলে পতিত হয়ে ৪০ মাইল ব্যাস সম্পন্নধ্বংসগোলক সৃষ্টি করেছিল। আগুনের লেলিহান শিখায় লক্ষ লক্ষগাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল।[4]
‘কুসূফ’ ও ‘খুসূফ’-এর ছালাত আদায়ের মাধ্যমে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের ক্ষতিকর প্রভাব হ’তে আল্লাহ্র নিকটে পানাহ চাওয়া হয়।এই ছালাতের অন্যতম উদ্দেশ্য হ’ল, আল্লাহ্র এই সব সৃষ্টিকে পূজানা করা এবং ভয় না করা। আল্লাহ বলেন,
لاَ تَسْجُدُوْا لِلشَّمْسِ وَلاَ لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوْا ِللهِ الَّذِيْ خَلَقَهُنَّ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُوْنَ
‘তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চন্দ্রকেও না। বরং সিজদা করআল্লাহকে, যিনি এগুলি সৃষ্টি করেছেন। যদি তোমরা সত্যিকারঅর্থে তাঁরই ইবাদত করে থাক’ (হা-মীম সাজদাহ/ফুছছিলাত৪১/৩৭)।
*কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করুন





 

9 thoughts on "সূর্য গ্রহন ও চন্দ্র গ্রহনের কোন প্রভাব গর্ভবতী মা, বা তার গর্ভস্থ ভ্রুনের উপর পড়ে না"

  1. MX Contributor says:
    TrickBD নাকি PendingBD ১/২ মাস যাবত বলতেসি টিউনার বানাইতে।।। but রানা ভাইয়ের কোন খবরি নাই। পোস্ট করলেই দেখায় Pending…

    user id 65976

    রানা ভাই, ৫টা পোস্ট করছি view করুন প্লিজ।সম্পুর্ন পোস্ট টা নিজের হাতে লিখলাম এবং screenshoot গুলো ও আমার ফোনের।

    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      rana vaike email den
  2. Kamal Uddin Contributor says:
    I like ur post ??
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      Thank u vai Kamal Uddin
  3. Arman Contributor says:
    এটা ফেসবুকে সবাই কপি করে শেয়ার করে দেন।
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      Thank you bro #Arman
  4. Sk Samid Contributor says:
    Rana bhai amar post gula dekhen ebong amake tuner banan.
  5. Shaheen Uddoula Author says:
    #গর্ভবতী মা কোন কিছু কাটলে, ছিঁড়লে বাচ্চা ঠোঁট কাটা জন্মাবে, কোন কিছু ভাঙলে, বাঁকা করলে সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নেবে।#

    এই কথা(#টেগ করা)আমি জিবনে প্রথম শুনলাম?

    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      er mane apni bujhben na, aj porar por karox next a dorkar hoile, sedin se jodi ai lekha hariye khujbe kintu kichu mone porbena, headline ba onno kichu, sedin e tini bujhben ,THANKS FOR COMMENT

Leave a Reply