কান্না তো আমাদের প্রায়শই আসে।হয়তো দেখা গেল পেঁয়াজ কাঁটতে গেলেন , কিংবা কেউ আপনাকে বকা দিলে অথবা শরীরে কোথাও ব্যথা পেলে বা চোখে কিছু পড়লে আমাদের
চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আপনারা কখনো ভেবে দেখেছেন কি,এই অশ্রুটি কিভাবে , কোথা থেকে আসে?

নিশ্চয়ই আপনারা কান্না করার সময় এই অশ্রুর স্বাদ নিয়েছেন , কেমন লাগে বলুন তো এর স্বাদ ? লবণাক্ত , তাই না?

আসলে আমাদের শরীরে উৎপাদিত রাসায়নিক পদার্থ এবং হরমোনের কারণেই আমাদের চোখে পানি আসে!

আমরা যখন অনেক উদাস হয়ে পড়ি , তখন আমাদের মস্তিষ্ক ও দেহ এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ এবং হরমোন উৎপাদন
করে। অতঃপর আমরা কান্নার মাধ্যমে সেসব অপ্রয়োজনীয় বস্তু শরীর থেকে সহজেই বের করে ফেলি। এসব রাসায়নিক পদার্থ এবং হরমোন দেহ হতে অপসারণের মাধ্যমে আমরা
আমাদের হতাশা , দুঃখ, বেদনা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারি।

এজন্যই, কান্না করার পর আমরাঅনেকটাই হালকা বোধ করি।

অশ্রুর প্রধান উপাদান হল –

লবণ ,প্রোটিন এবং লাইসোজাইম নামক একধরণের এনজাইম , যেটি একসাথে চোখের পুষ্টি প্রদান এবং চোখের প্রতিরক্ষার কাজ করে। অশ্রু তৈরি হয় আমাদের চোখের উপরিভাগে অবস্থিত আই- লিডের ছোট্ট “ ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি ” হতে এবং এর সংযোগ থাকে নাক ও মুখের সাথে। আবার আমরা যখন অতিরিক্ত কান্না করি , তখন অশ্রু চোখের নিম্মভাগে অবস্থিত আই- লিড হতে উপচে পড়ে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে।

শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে ,আমাদের চোখে প্রতিমুহূর্তেই অশ্রু সরবরাহিত হচ্ছে। খেয়াল করে দেখবেন ,
চোখ সবসময়ই পানি দ্বারা সিক্ত থাকে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল , চোখের কর্ণিয়াকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করা এবং আমাদের চোখের উপরিভাগকে পরিষ্কার রাখা। এটি চোখে অক্সিজেন সরবরাহ করা ছাড়াও চোখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। মোদ্দা কথা , চোখকে সুস্থ রাখার
জন্যই অশ্রুর প্রয়োজন।

তবে সাধারণ অশ্রুর সাথে আমরা যখন আবেগবশত কান্না করি , সেই অশ্রুর মাঝে অনেকখানি পার্থক্য আছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, আবেগজনিত অশ্রুর সাথে অধিক পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ এবং এক ধরণের রাসায়নিক উপাদান ‘ প্রোল্যাকটিন ’ ও বের হয়। এটাও ধারণা করা হয়ে থাকে ,
অধিক পরিমাণে কান্নার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত রাসায়নিক
উপাদানগুলো বের হয়ে যায়।

তাছাড়া আপনারা কি কখনো খেয়াল করেছেন , আমরা যখন প্রচুর হাসি , তখন আমাদের চোখে পানি চলে আসে। এর
কারণ হল – অতিরিক্ত হাসির কারণে আমাদের চোখের অশ্রুগ্রন্থিতে (যেই গ্রন্থিতে অশ্রু সংরক্ষিত থাকে ; এটি চোখের কোণায় অবস্থিত) অনেক চাপ পড়ে , তাই অবধারিত ভাবেই অশ্রুগ্রন্থি হতে অশ্রু বেড়িয়ে পড়ে।

এছাড়া পেঁয়াজ কাটার সময়েও আমাদের চোখ হতে অশ্রু বেয়ে পড়ে। এর কারণ হল – পেঁয়াজে অবস্থিত অ্যালিনেজ নামক এনজাইম পেঁয়াজের মাঝেই অবস্থিত অ্যামিনো এসিড সালফোক্সাইডকে উদ্বায়ী সালফোনিক এসিডে পরিণত করে।
এটি যখন চোখের পানির সংস্পর্শে আসে তখন আমাদের
চোখে জ্বালাপোড়া করে এবং চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
জার্মানের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নারীরা গড়ে প্রতি বছরে ৩০- ৬৪ বার এবং পুরুষেরা গড়ে প্রতি বছরে ৬ – ১৭ বার কান্না করে। এছাড়াও জানা গিয়েছে , নারীরা বছরে গড়ে ৬
মিনিট এবং পুরুষেরা গড়ে ২ – ৪ মিনিট কান্না করে থাকে।

একটা তথ্য শুনে অবাক হতে পারেন, আমরা আমাদের
জীবদ্দশায় ২৫০ , ০০০ , ০০০ বার কান্না করি!! কি অবাক হলেন নাকি ??

আরো সুন্দর সুন্দর টিউন পেতে ভিসিট করুন:→ ভিসিট করুন BDMoU.xyZ

5 thoughts on "জেনে নিন কান্নার কিছু উপকারিতা ও গুনাগুন"

  1. Reja BD Author says:
    এক্সিলেন্ট পোস্ট।
  2. Sarowar Subscriber says:
    কি মেহদী ভাই কান্না নিয়েও গবেষণা শুরু কইরা দিছেন।
    খুব ভালো চালিয়ে যান।
    যা হোক ভালো পোস্ট
  3. Mehadi Hasan Mehadi Author Post Creator says:
    ধন্যনাদ রেজা ভাই আর সরোয়ার ভাই কে আর সরোয়ার ভাই সুরু করলাম কান্না নিয়া গবেসনা।

Leave a Reply