দুদিন হলো নেটে পুরো
শক্তি দিয়ে বল করছেন।
অভিজ্ঞতা, ‘হঠাৎ হঠাৎ
মাথাটা একটু ঘুরে ওঠে…।’ তবে
সমস্যা এতটাই নগণ্য যে,
মাশরাফি বিন মুর্তজা নিজেই
উড়িয়ে দিচ্ছেন তা, ‘এটা ঠিক
হয়ে যাবে। আর আমার ছয়-সাত
ওভার বল করতে পারলেই তো
হয়…।’
প্রথমে নতুন বলে চার ওভার, পরে
পুরোনো বলে আরও দুই ওভার—
মিরপুরের ইনডোরের বাইরের
নেটে কাল মোট ৬ ওভার বল
করলেন। সমস্যা বলতে ওই ‘একটু
মাথা ঘোরানো’ই। ডেঙ্গুর
এটুকু প্রতিক্রিয়া এখনো রয়ে
গেলেও জিম্বাবুয়ে সিরিজে
ম্যাচপ্রতি অন্তত সাত-আট ওভার
বল করতে পারবেন বলে
আশাবাদী মাশরাফি। তবে এ
ব্যাপারে আসল পরীক্ষাটা
হবে কাল। নিজের ম্যাচ
ফিটনেস দেখে নিতেই
ফতুল্লায় বিসিবি একাদশের
হয়ে খেলবেন জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে।
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা
সিরিজে কোনো ম্যাচেই
পুরো ১০ ওভার বল করেননি
মাশরাফি। তিন ম্যাচে
করেছেন ৬, ৫ ও ৫ ওভার। এর আগে
গত জুনে ভারতের বিপক্ষে এক
ম্যাচে করেছিলেন ৭ ওভার।
তবে এমন ভাবার কোনো
কারণ নেই যে পুরো ১০ ওভার
বল করার সামর্থ্য ছাড়াই মাঠে
নামছেন ওয়ানডে ও টি-
টোয়েন্টির অধিনায়ক। ১০
ওভার করে বল করেছেন ওই ভারত
সিরিজের অন্য দুই ম্যাচেই।
আসলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে

খেলা মানেই বাংলাদেশের
স্পিনারদের রাজত্ব। বেশি
পেছনে যাওয়ার দরকার নেই, দুই
দলের সর্বশেষ ম্যাচের
স্কোরকার্ডেই জ্বল জ্বল করছে
সেটা। গত বছরের ১ ডিসেম্বর
মিরপুরে ১২৮ রানে অলআউট হয়ে
যাওয়া জিম্বাবুয়ের ৯ উইকেটই
নিয়েছিলেন স্পিনাররা।
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে
তো নাকি সেই অভিজ্ঞতা
থেকে এবার বোলিংটা শুরুই
করতে চাচ্ছেন স্পিন দিয়ে।
এটা যদিও এখনো একদমই
আলোচনার পর্যায়ে, তবে
কোচের হোমওয়ার্কে
ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে স্পিন
বোলিং। জিম্বাবুয়ের
ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কে
বাঁহাতি স্পিনের সামনে দুর্বল,
কে অফ বা লেগ স্পিনে বেশি
অসহায়—হাথুরুসিংহের
ল্যাপটপে বেশি গবেষণা
চলছে সেসব নিয়েই।
প্রতিপক্ষের শক্তি ও দুর্বলতার
মানচিত্রে তাকিয়ে প্রধান
নির্বাচক ফারুক আহমেদের
মনেও একই বিশ্বাস। এবারও
স্পিনই ঘায়েল করা যাবে
জিম্বাবুয়েকে, ‘স্পিন বলে
জিম্বাবুয়ের দুর্বলতার কথা
সবাই জানে। বাংলাদেশের
বিপক্ষে তাদের সেই দুর্বলতা
আরও বেশি করে ধরা পড়েছে
সব সময়। আমার বিশ্বাস, ওদের
ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে এবারও
আমাদের স্পিনাররা কার্যকর
হবে।’
কোচ-নির্বাচকদের ভাবনার
সঙ্গে দ্বিমত আছে মাশরাফির।
বোলিংয়ে ভালো একটা
শুরুর জন্য পেসারদের ওপরই নাকি
তাঁর বেশি আস্থা। দুজন তো
বটেই, শোনা যাচ্ছে একাদশ
নির্বাচনের সভায় প্রয়োজনে
তিন পেসারের জন্যও লড়াই
করতে পারেন অধিনায়ক।
‘ম্যাচের তো এখনো অনেক
দেরি’ বলে সাংবাদিকের
সঙ্গে এ আলোচনায় উৎসাহ
দেখালেন না নড়াইল এক্সপ্রেস।
তবে নিজেই যখন জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে ৬-৭ ওভার বল করতে
পারাটাকে যথেষ্ট মনে
করছেন, মাঠে হয়তো
মাশরাফিও স্পিনারদের
হাতেই বলটা বারবার তুলে
দেবেন।
এসব ক্ষেত্রে বরাবরই শেষ
সিদ্ধান্ত দিয়ে আসছে উইকেট।
দিবা-রাত্রির ম্যাচে তো
সেটা আরও বেশি। শীতের শুরু,
শিশির ভেজা বল সাকিবেরা
কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন,
উইকেটের চরিত্র কেমন হবে—
এসবের ওপরও নির্ভর করবে স্পিন-
পেসের লড়াইয়ের জয়-পরাজয়।
তবে কিউরেটর গামিনি ডি
সিলভার কাছে প্রত্যাশাটা
স্পিনবান্ধব উইকেটেরই।
‘ম্যাচের আগে সাধারণত দুটো
উইকেট প্রস্তুত রাখা হয়। আগের
দিন দেখে যেটা পছন্দ হবে,
সেটাকেই চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত
করতে বলা হবে’—জানিয়েছে
দলের একটি সূত্র।
সেই দুই উইকেটের মধ্যেও
হয়তো লুকিয়ে থাকবে অদৃশ্য এক
প্রতিদ্বন্দ্বিতা—কে বেশি
স্পিনবান্ধব?

Leave a Reply