“”আসসালামুআলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি
সবাই আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন।
ভাল থাকারই কথা কারণ ট্রিকবিডির সাথে
থাকলে সবাই সবসময় ভাল থাকে।
=============================
তাহলে আর কথা বাড়ায়ে লাভ নেই সোজাসুজি
পোষ্টে চলে যাই!

_____আলহামদুলিল্লাহ আমার আজকের পোষ্ট হলঃ-
“রমযানের কিছু মাসায়েল নিয়ে।এবং রমযানের কিছু দোয়া সহ আরো অনেক কিছু নিয়ে নিম্নে App এ প্রকাশ করা হল।
“অর্থাৎ.যা আমাদের জন্য অতি জরুরী দরকার।
“””আসা করি, আল্লাহর রহমতে সবার ভাল লাগবে।
তাহলে পোষ্টে চলে যাই………!


“””প্রথমে App টি,ডাউনলোড করেনিন।
Name: মাহে রমযান ২০১৭ সময়সূচী
Size:4.2MB

↓↓↓সবাই ডাউনলোড করেনিন↑↑↑

===আগে সবাই শিরোনাম গুলো পড়েনিনঃ-


>১/_রোজা কি…..?কেন!
>২/_রোজার নিয়তের মাসায়েলঃ
>৩/_সেহরীর মাসায়েলঃ
>৪/_ইফতার-এর মাসায়েলঃ
>৫_/যেসব কারণে রোজা ভাঙ্গে না! এবং মাকরুহও হয় না

>৬/_যে সব কারণে রোজা ভাঙ্গে না!তবে মাকরুহ হয়ে যায়।
>৭/_যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
>৮/_যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং কাযা, কাফফারা উভয়টা ওয়াজিব হয়।

>৯/_যে সব কারণে রোজা না রাখার অনুমতি আছে?
>১০/_যেসব কারণে রোজা শুরু করার পর তা ভেঙ্গে ফেলার অনুমতি রয়েছে।
>১১/_রমযান মাসের সম্মান রক্ষারর মাসায়েলঃ

>১২/_রোজার কাযার মাসায়েল।
>১৩/_রোজা কাফফারা_র মাসায়েল।
>১৪/_রোজার ফেদিয়ার মাসায়েল।
>১৫/_নফল রোজার মাসায়েল।

>১৬/_মান্নতের রোজার মাসায়েল।
>১৭/_তারাবীহর নামায কি?এবং কয় রাকাত।

===-রোজা কি?কেন।-===


*☺রোজা অর্থঃবিরত থাকা।
*আর সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যান্ত নিয়ত সহকারে ইছাকৃতভাবে,পান আহার ও যৌন তৃপ্তি থেকে বিরত থাকে কে রোজা বলা হয়।
*এবং সকল,বালেগ ও সুস্থ নর-নারীর উপর রমযানের রোজা রাখা ফরজ।
*ছেলে মেয়ে দশ বৎসরের হয়ে গেলে তাদের দ্বারা শাস্তি দিয়ে হলেও রোজা রাখানো কর্তব্য।এর পূর্বেও শক্তি হলে রোজা রাখার অভ্যাস করানো উচিত।☺☺

::::-রোযার নিয়তের মাসায়েলঃ-::::


*রমযানের রোজার জন্য নিয়ত করা ফরজ।
নিয়ত ব্যতীত সারাদিন পানাহার ও যৌনতৃপ্তি থেকে বিরত থাকলেও রোজা হবে,না।
*মখে নিয়ত করলেও আরবীতে হওয়া জরুরী নয়-
যে কোন ভাষায় নিয়ত করা যায়।

?=নিয়ত এভাবে করা যায়=?
(বাংলায়ঃআমি আজ রোজা রাখার নিয়ত করলাম।
*সূর্য ঢলার দেড় ঘন্টা পূর্বে পর্যান্ত রমযানের রোজার নিয়ত করা দুরস্ত আছে।
তবে রাতেই নিয়ত করে নেয়া উত্তম।
*রমযান মাসে অন্য যে কোন প্রকার রোজা বা কাযা রোজার নিয়ত করলেও এই রমযানের রোজা আদায় হবে-অন্য যে রোজার নিয়ত করবে সেটা আদায় হবে না।???

===সেহরীর মাসায়েলঃ-===

* সেহরী খাওয়া সুন্নাত, অনেক ফযীলতের
আমল, তাই ক্ষুধা না লাগলে বা খেতে
ইচ্ছা না করলেও সেহরীর ফযীলত হাছিলের
করার নিয়তে যা-ই হোক কিছু পানাহার
করে নিবে।
* নিদ্রার কারণে সেহরী খেতে না
পারলেও রোযা রাখতে হবে। সেহরী না
খেতে পারায় রোযা না রাখা অত্যন্ত
পাপ।
* সেহরীর সময় আছে বা নেই নিয়ে সন্দেহ
হলে সেহরী না খাওয়াই উচিত। আর যদি
এরূপ সময়ে খাওয়া হয়ে থাকে তবে রোযা
কাযা করা ভালো।
* আর ‍যদি পরে নিশ্চিত ভাবে জানা যায়
যে, তখন সেহরীর সময় ছিল না, তাহলে
কাযা করা ওয়াজিব।
* সেহরীর সময় আছে মনে করে পানাহার
করল অথচ পরে জানা গেল যে, তখন সেহরীর
সময় ছিল না, তাহলে রোযা হবে না; তবে
সারাদিন তাকে রোযাদারের ন্যায়
থাকতে হবে এবং রমযানের পর ঐ দিনের
রোযা কাযা করতে হবে।
* বিলম্বে সহরী খাওয়া উত্তম। আগে
খাওয়া হয়ে গেলেও শেষ সময় নাগাদ কিছু
চা-পানি ইত্যাদি করতে থাকলেও বিলম্বে
সেহরী করার ফযীলত অর্জিত হবে।।

=====ইফতারের মাসায়েল=====


*সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর বিলম্ব না করে তাড়াতাড়ি ইফতার করা মোস্তাহাব।
বিলম্বে ইফতার করা মাকরূহ।
মেঘের দিনে কিছু দেরী করে ইফতার করা ভালো মেঘের দিনে ঈমানদার ব্যক্তির অন্তরে সূর্য অস্ত গিয়েছে বলে সাক্ষ্য না দেয়া পর্যন্ত ছবর করা ভালো।
শুধু ঘড়ি বা আযানের উপর নির্ভর করা ভাল নয়, কারণ তাতে ভুলও হতে পারে।
সূর্য_অস্ত যাওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ থাকা পর্যন্ত ইফতার করা দুরস্ত নেই।
সবচেয়ে উত্তম হল খোরমার দ্বারা ইফতার করা,
তারপর কোন মিষ্টি জিনিস দ্বারা,
তারপর পানি দ্বারা।
লবণ দ্বারা ইফতার শুরু করা উত্তম এই আকীদা ভুল।
ইফতার করার পূর্বে নিম্নোক্ত দ’আ পাঠ করব। দু,আ পাঠ করা মোস্তাহাব।

[====اللّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ====]
ইফতার_করার পর নিম্নোক্ত দু’আ পাঠ করিবে-

ذَهَبَ الظَّمَآءُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الْاَجْرُاِنْ شَآءَاللهُ
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়,
তাই ইফতারের পূর্বে বা কিছু ইফতার করে বা ইফতার থেকেফারেগ হয়ে দু’আ করা মোস্তাহাব।[]
পশ্চিম দিকে প্লেনে সফর শুরু করার কারণে যদি দিন লম্বা হয়ে যায়।
তাহলে সুব্‌হে সাদেক থেকে নিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সূর্যাস্ত ঘটলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইফতার বিলম্ব করতে হবে, আর ২৪ ঘন্টার মধ্যেও সূর্যাস্ত না ঘটলে ২৪ ঘন্টা পূর্ণ হওয়ার সামান্য কিছু পূর্বে ইফতার করে নিবে।
*পুর্ব দিক থেকে প্লেনে সফর করলে যখনই সূর্যাস্ত পাবে তখনই ইফতার করবে।

==যে সব কারণে রোজা ভাঙ্গে না এবং মাকরুহ হয় না।==

১। মেসওয়াক করা। যে কোন সময় হোক, কাঁচা হোক বাশুষ্ক।
২। শরীর বা মাথা বা দাড়ি গোঁপে তেল লাগানো।
৩। চোখে সুরমা লাগানো বা কোন ঔষধ দেয়া।
৪। খুশবু লাগানো বা তার ঘ্রাণ নেয়া।
৫। ভুলে কিছু পান করা বা আহার করা বা স্ত্রী সম্ভোগ করা।
৬। গরম বা পিপাসার কারণে গোসল করা বা বারবার কুলি করা।
৭। অনিচ্ছা বশতঃ গলার মধ্যে ধোঁয়া, ধুলাবালি বা মাছি ইত্যাদি প্রবেশ করা।
৮। কানে পানি দেয়া বা অনিচ্ছাবশতঃ চলে যাওয়ার কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না, তবে ইচ্ছাকৃতভাবে দিলে সতর্কতা হল সে রোযা কাযা করে নেয়া।
৯। অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হওয়া। ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প বমি করলে মাকরূহ হয় না, তবে এরূপ করা ঠিক নয়।১০। স্বপ্ন দোষ হওয়া।
১১। মুখে থুথু আসলে গিলে ফেলা।
১২। যে কোন ধরনের ইনজেকশন বা টীকা লাগানো। তবে রোযার কষ্ট যেন বোধ না হয়-এ উদ্দেশ্যে শক্তির ইনজেকশন বা স্যালাইন লাগানো মাকরূহ।
১৩। রোযা অবস্থায় দাঁত উঠালে এবং রক্ত পেটে না গেলে।
১৪। পাইরিয়া রোগের কারণে যে সামান্য রক্ত সব সময় বের হতে থাকে এবং গালার মধ্যে যায় তার কারণে।
১৫। সাপ ইত্যাদিতে দংশন করলে।
১৬। পান খাওয়ার পর ভালভাবে কুলি করা সত্ত্বেও যদি থুথুতে লালভাব থেকে যায়।
১৭। শাহওয়াতের সাথে শুধু নজর করার কারণেই যদি বীর্যপাত ঘটে যায় তাহলে রোযা ফাসেদ হয় না।
১৮। রোযা অবস্থায় শরীর থেকে ইনজেকশনের সাহায্যে রক্ত বের করলে রোযা ভাঙ্গে না এবং এতে রোযা রাখার শক্তি চলেযাওয়ার মত দুর্বল হয়ে পড়ার আশংকা না থাকলে মাকরূহও হয় না।

===যে সব কারণে রোজা ভাঙ্গে না!তবে মাকরুহ হয়ে যায়===

১। বিনা প্রয়োজনে কোন জিনিস চিবানো।

২। তরকারী ইত্যাদির লবন চেখে ফেলে দেয়া। তবে কোন চাকরের মুনিব বা কোন নারীর স্বামী বদ মেজাজী হলে জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে লবন চেখে তা ফেলে দিলে এতটুকুর অবকাশ আছে।

৩। কোন ধরনের মাজন, কয়লা, গুল বা টুথপেস্ট ব্যবহার করা মাকরুহ। আর এর কোন কিছু সামান্য পরিমাণ গলার মধ্যে চলে গেলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।

৪। গোসল ফরজ এ অবস্থায় সারাদিন অতিবাহিত করা।

৫। কোন রোগীর জন্য নিজের রক্ত দেয়া।

৬। গীবত করা , চোগলখুরী করা, অনর্থক কথাবার্তা বলা, মিথ্যা কথা বলা।

৭। ঝগড়া ফ্যাসাদ করা, গালি-গালাজ করা।

৮। ক্ষুধা বা পিপাসার কারণে অস্থিরতা প্রকাশ করা।

৯। মুখে অধিক পরিমান থুতু একত্রে গিলে ফেলা ।

১০। দাঁতে ছোলা বুটের চেয়ে ছোট কোন বস্তু আটকে থাকলে তা বের করে মুখের ভিতর থাকা অবস্থায় গিলে ফেলা।

১১। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না এরুপ মনে হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুম্বন করা ও আলিঙ্গন করা। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণের আস্থা থাকলে ক্ষতি নাই । তবে যুবকদের এহন অবস্থা থেকে দূরে থকাই শ্রেয়। আর রোজা থাকা অবস্থায় স্ত্রীর ঠোট মুখে নেয়া সর্বাবস্থায় মাকরুহ।

১২। নিজের মুখ দিয়ে চিবিয়ে কোন বস্তু শিশুর মুখে দেয়া। তবে অনন্যোপায় অবস্থায় এরুপ করলে অসুবিধা নাই।

১৩। পায়খানার রাস্তা পানি দ্বারা এত বেশী ধৌত করা যে , ভিতরে পানি পৌছে যাওয়ার সন্দেহ হয়-এরুপ করা মাকরুহ। আর প্রকৃত পক্ষে পানি পৌছে গেলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই এ ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। এ জন্য রোজা অবস্থায় পানি দ্বারা ধৌত করার পর কোন কাপড় দ্বারা বা হাত দ্বারা পানি পরিষ্কার করে ফেলা নিয়ম।

১৪। ঠোটে লিপিস্টিক লাগালে যদি মুখের ভিতর চলে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে তা মাকরুহ।

==যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।==

১। গোসল বা কুলি করার সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে পানি কন্ঠনালীতে চলে গেলে।
২। নাকে বা কানে ঔষধ দিলে।
৩। বিড়ি, সিগারেট, হুক্কাসেবন করিলে, অনুরূপ আগর বাতির ধোঁয়া ইচ্ছাকৃত নাক বা হলকে প্রবেশ করালে।
৪। ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করলে অথবা অল্প বমি আসার পর গিলে ফেললে।
৫। সূর্য ডুবে গেছে মনে করে ইফতার করে ফেললে।
৬। রাত আছে মনে করে সাহরী খেয়ে ফেললে।
৭। হস্তমৈথন বা অন্য কোন উপায়ে বীর্যপাত করলে।
৮। পেশাবের রাস্তায় বা যৌনিতে ঔষধ বা কিছু প্রবেশ করালে।
৯। স্ত্রীর বে-খবর বা বেহুশ অবস্থায় তার সাথে যৌনকর্ম করলে স্ত্রীর উপর কাযা ওয়াজিব হবে, তবে পুরুষের উপর কাযা ও কাফ্ফারা উভয়টা ওয়াজিব।
১০। মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে গেলে, অতপর সুবহে সাদেকের পর ঘুম থেকে উঠলে।
১১। দাঁত দিয়ে রক্ত বা অন্য কিছু বের হয়ে কন্ঠনালীতে চলে গেলে যদি থুথুর চেয়ে বেশী পরিমানে হয়। অন্যাথায় শুধু মাকরুহ হবে, কাযা লাগবে না।
১২। খাদ্য নয় এমন জিনিস যেমন কাঠ, কাগজ, কয়লা ইত্যাদি খেলে।
১৩। দুপুরের পর রোজার নিয়ত করলে।
১৪। কেউ জোরপূর্বক রোজাদারের মুখে কোন কিছু দিলে এবং তা কন্ঠনালীতে পৌছে গেলে।
১৫। দাঁতে আটকে থাকা খাদ্য কণা যদি তা ছোলা বুটের চেয়ে বড়, তা যদি কন্ঠনালীতে পৌছে যায়।
১৬। স্ত্রী বা কোন নারীর স্পর্শ প্রভৃতি কারনে বীর্যপাত হয়ে গেলে।
১৭। রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার বা সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভেঙ্গে ফেললে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে।
১৮। রোজা অবস্থায় বৈধ কোন কাজ করে রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে, যেমন স্ত্রীকে চুমা দিলে বা মাথায় তৈল দিলে।
১৯। রোজা অবস্থায় পুরুষ পায়ুপথে সঙ্গম করলে স্বামী-স্ত্রী উভয় এর উপর কাযা কাফ্ফারা জরুরী হবে।
২০। একটি রোজার কাফ্ফারা ৬০ টি রোজা, এই ৬০ টি রোজা একাধারে বিরতিহীন ভাবে রাখতে হবে, মাঝখানে ছুটে গেলে পুনরায় পূর্ণ ৬০ টি একাধারে রাখতে হবে।
২১। একই রমজানের একাধিক রোজা ছুটে গেলে কাফ্ফারা একটাই অর্থাৎ ৬০ টি রোজা ওয়াজিব হবে।
২২। রোজার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায় করতে সক্ষম না হলে পূর্ণ খোরাক দিতে পারে এমন ৬০ জন মিসকিনকে ৬০ দিন দু বেলা খাবার খাওয়াতে হবে। অথবা সদকায়ে ফিতর পরিমাণ গম বা তার মূল্য ৬০ জন মিসকিনের প্রত্যেককে দিতে হবে। একজন মিসকিনকেও ৬০ দিন দেওয়া যাবে। তবে একজনকে ৬০ দিনের কাফ্ফারা একত্রে দিয়ে দিলে মাত্র একদিনের আদায় হবে। তাই পৃথক পৃথক দেওয়া উচিৎ।

==যে সব কারণে রোযা ভেঙ্গে যায় এবং কাযা,কাফফারা উভয়টা ওয়াজিব হয়।==

* রোযার নিয়ত (রাতে) করার পর ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে।

* রোযার নিয়ত করার পর ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সম্ভোগ করলে। স্ত্রীর উপরও কাযা ও কাফফারা উভয়টা ওয়াজিব হবে।

* রোযা অবস্থায় কোন বৈধ কাজ করলে যেমন স্ত্রীকে চুম্বন দিলে কিংবা মাথায় তেল দিলে তা সত্ত্বেও সে মনে করল যে, রোযা নষ্ট হয়ে গিয়েছে; আর তারপর ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার ইত্যাদি করলে কাযা ও কাফফারা উভয়টা ওয়াজিব হবে।র‍্য

===যে সব কারণে রোজা না রাখার অনুমতি আছে।

কোরআন হাদিসের আলোকে ইসলামি স্কলাররা এর বর্ণনা দিয়ে বলেছেন-

১. অসুস্থতার কারণে রোজা রাখার শক্তি না থাকলে বা রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে। (পরে কাজা করে নেবে)। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে কেউ রমজান মাস পাবে, সে যেন রোজা পালন করে। আর যে ব্যক্তি রোগাক্রান্ত বা সফরে থাকে সে যেন অন্য সময়ে তা আদায় করে নেয়।’ -সূরা বাকারা: ১৮৫

২. গর্ভবর্তী মহিলা রোজা রাখলে যদি নিজের বা সন্তানের জীবনের ব্যাপারে আশঙ্কা করে।

৩. যে মহিলা নিজ বা অন্যের বাচ্চাকে দুধ খাওয়ান, তিনি রোজা রাখলে যদি বাচ্চার কষ্ট হবে মনে করেন, তাহলে রোজা না রেখে পরে কাজা করতে পারবেন।

৪. শরয়ি মুসাফির (কমপক্ষে ৪৮ মাইল ভ্রমণ করেছেন যিনি) তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি আছে। তবে কষ্ট না হলে রোজা রাখা উত্তম। অবশ্য নিজের বা সঙ্গীদের কষ্ট হলে রোজা না রাখাই উত্তম।

৫. যদি রোজা রেখে সফর শুরু করে, তাহলে সে রোজা পূর্ণ করা জরুরি। আর যদি খেয়ে সফর থেকে বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়, তাহলে বাকি দিন খাওয়া-পানাহার বাদ দেওয়া উত্তম। আর যদি না খেয়ে শুরু করে এরপর বাড়ি পৌঁছানোর পরও রোজার নিয়ত করার সময় থাকে, তাহলে রোজার নিয়ত করে নেবে।

৬. কেউ কাউকে রোজা রাখলে হত্যার হুমকি দিল বা কোনোভাবে রোজা না রাখার ওপর বাধ্য করলো- তাহলে রোজা না রেখে পরে কাজা করে নিতে পারেন।

৭. ক্ষুধা বা পিপাসা যদি এত বেশি হয় যে, কোনো দ্বীনদার অভিজ্ঞ ডাক্তার প্রাণনাশের আশঙ্কা করেন, তাহলে রোজা ভাঙা যাবে। তবে পরে কাজা করে নিতে হবে।

৮. মহিলাদের ঋতুকালীন সময়ে বা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরবর্তী অসুস্থকালীন সময়ে রোজা রাখা যাবে না। তবে পরে কাজা করে নিতে হবে।

রমজানে এসব কারণ ছাড়া এমনিতে অনেকে অসুস্থ বনে যান। এটি খুবই দুঃখজনক। নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা সব রকম চালাকি বুঝতে পারেন।

উল্লেখ্য, যাদের জন্য রোজা ভাঙার অনুমতি আছে, তাদের উচিৎ প্রকাশ্যে কোনো কিছু না খেয়ে রমজানের সম্মান ধরে রাখা।

==যেসব কারণে রোজা শুরু করার পর তা ভেঙ্গে ফেলার অনুমতি রয়েছে==


১।যদি এমন পিপাসা বা ক্ষুধা লাগে যাতে প্রানের আশংকা দেখা দেয়।
২।যদি এমন কোন রোগ বা অবস্থা দেখা দেয় যে,ওষুধ -পত্র গ্রহন না করলে জীবনের আশা ত্যাগ করতে হয়।
৩।গর্ববতী স্ত্রীলোকের যদি এৃন অবস্তা হয়,যে নিজের বা সন্তানের প্রান নাশের আশংকা হয়।
৪।বেহুঁশ বা পাগল হয়ে গেলে।

===রমযান মাসের সম্মান রক্ষারর মাসায়েলঃ===

*রমযান মাসে দিনের বেলায় লোকদের পানাহারের উদ্দেশ্য হোটেল রেস্তোরা প্রভৃতি খাবার দোকান খোলা রাখা রমজানের অবমাননা বিধায় তা পাপ।
*কোন কারণ বশতঃ রোযা ভেঙ্গে গেলেও বাকী দিনটুকু পানাহার পরিত্যাগ করে রোযাদারের ন্যায় থাকা ওয়াজিব। (বেহেশতী জেওর)
*দুর্ভাগ্য বশতঃ কেউ যদি রোযা না রাখে তবুও অন্যের সামনে পানাহার করা বা প্রকাশ করে যে, আমি রোযা রাখিনি-এতে দ্বিগুন পাপ হয়, প্রথম হল রোজা না রাখার পাপ, দ্বিতীয়ত হল গোনাহ প্রকাশ করার পাপ ।

====রোজার কাযার মাসায়েল====

• রমযান মাসের ফরয রোযা কাযা হয়ে গেলে , রমযানের পর যথাশীগ্র কাযা করে নিতে হবে । বিনা কারনে কাযা রোযা রাখতে দেরি করা গোনাহ ।
• কাযা রোযার জন্য সুব্হে সাদিকের পূর্বেই নিয়ত করে নিতে হবে , অন্যথায় কাযা রোযা সহীহ হবে না । সুব্হে সাদিকের পর নিয়ত কররে সে রোযা নফল রোযা হয়ে যাবে ।
• ঘটনাক্রমে একাধিক বছরের রমযানের রোযা কাযা হয়ে গেলে , নির্দিষ্ট করে নিয়ত করতে হবে যে , আজ অমুক বছরের রমযানের রোযা আদায় করছি ।
• যে কয়টি রোযা কাযা হয়েছে তা একাধারে রাখা মোস্তাহাব । বিভিন্ন সময়েও রাখা যায় ।
• কাযা শেষ করার আগেই নতুন রমযান এসে গেলে , নতুন রমযানের রোযা রাখতে হবে । কাযা পরে আদায় করতে হবে।

===রোজা কাফফারা_র মাসায়েল===

• একটি রোযার কাফফারা ৬০টি রোযা (একটি কাযা বাদেও) ৷ এই ৬০টি রোযা একাধারে রাখতে হবে ৷ মাঝখানে ছুটে গেলে আবার পূনরায় পূর্ণ ৬০টি একাধারে রাখতে হবে ৷ এই ৬০ দিনের মধ্যে নেফাস বা রমযান মাস এসে যাবার কারনে বিরতি হলেও কাফফারা আদায় হবে না ৷
• কাফফারা রোযা এমন দিন থেকে শুরু করতে হবে যেন মাঝে কোন নিষিদ্ধ দিন এসে না যায় ৷ উল্লেখ্য, দুই ঈদের দিন এবং ঈদুল আসহার পরের তিন দিন রোযা রাখা হারাম ৷
• কাফফারা রোযা রাখার মধ্যে হায়েযের দিন (নেফাস নয়) এসে গেলেও যে কয়দিন হায়েয যে কয়দিন হায়েযের কারনে বিরতি যাবে তাতে সম্যসা নাই ৷
• কাযা রোযার ন্যায় কাফফারা রোযার নিয়তও সুবহে সাদিকের পূর্বেই করতে হবে ৷
• একই রমযানের একাধিক রোযা ছুটে গেলে কাফফারা একটাই ওয়াজিব হবে ৷ দুই রমযানের ছুটে গেলে দুই কাফফারা ৷
• কাফফারা বাবদ বিরতিহীন ৬০ দিন রোযা রাখার সামর্থ না থাকলে পূর্ণ খোরাক খেতে পারে – এমন ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেসা পরিতৃপ্তির সাথে খাওয়াতে হবে অথবা একজনকেই ৬০ দিন দুই বেলা খাওয়াতে হবে অথবা সদকায়ে ফিতরায়ে যে পরিমাণ গম বা তার মূল্য দেয়া হয় প্রত্যেককে (৬০ জনকে) সে পরিমাণ দিতে হবে ৷ এই গম বা মূল্য দেবার ক্ষেত্রে একজনকে ৬০ দিনেরটা একদিনেই দিয়ে দিলে কাফফারা আদায় হবে না ৷ তাতে মাত্র একদিনের কাফফারা ধরা হবে ৷
• ৬০ দিনের খাওয়ানোর বা মূল্য দেবার মাঝে ২/১ দিন বিরতি পড়লে সম্যসা নাই ৷

===রোজার ফেদিয়ার মাসায়েল===

• ফেদিয়া অর্থ ক্ষতিপূরণ ৷ রোযা রাখতে না পারলে বা কাযা আদায় করতে না পারলে যে ক্ষতিপূরণ দিতে হয় তাকে ফেদিয়া বলে ৷ প্রতিটা রোযার পরিবর্তে সাদকায়ে ফিতরা পরিমাণ পণ্য বা তার মূল্য দান করাই হল এক রোযার ফেদিয়া ৷
• যার উপর কাযা রোযা আছে কিন্তু জীবদ্দশায় আদায় হয় নাই, মৃত ব্যক্তি ওসিয়ত করে গিয়ে থাকলে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে নিয়ম অনুযায়ী এই ফেদিয়া আদায় করা হবে ৷ আর ওসিয়ত না করে থাকলেও যদি ওয়ারিশগণ নিজেদের সম্পদ থেকে ফেদিয়া আদায় করে তবুও আশা করা যায় আল্লাহ তা কবুল করে মৃত ব্যক্তিকে ক্ষম্ করে দেবেন ৷
• অতি বৃদ্ধ/বৃদ্ধা রোযা রাখতে না পারলে অথবা দীর্ঘ মেয়াদী বা মারাত্বক কোন রোগ থাকলে এবং সুস্থ হবার সম্ভবনা না থাকলে এবং রোযা রাখায় ক্ষতি হবার আশংকা থাকলে এমন লোকের জন্য প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে ফেদিয়া আদায় করার অনুমতি আছে, তবে বৃদ্ধ বা/বৃদ্ধা বা এরুপ রোগী পূনরায় কখনও রোযা রাখার শক্তি পেলে তাদেরকে কাযা করতে হবে এবং যে ফেদিয়া দান করেছিল তার সওয়াবও পৃথকভাবে সে পাবে ৷

===নফল রোজার মাসায়েল===

১। স্ত্রীর জন্য স্বামী বাড়ীতে থাকলে স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা রাখা জায়েজ নয়। এমন কি স্বামীর অনুমতি ছাড়া যদি নফল রোজার নিয়্যত কেউ করে এবং মাসায়ালা ঃ
পরে স্বামী রোজা ভাঙ্গতে আদশে করে তাহলে রোজা ভাঙ্গ জায়েজ আছে। কিন্তু পরে স্বামীর অনুমতি নিয়ে ক্বাযা করতে হবে।
২। মেহমান অথবা মেযবান যদি একে অপরের সাথে না খাওয়াতে মনে কষ্ট পায় তবে নফল রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ আছে। কিন্তু এই রোজার পরিবর্তে একটি রোজা রাখতে হবে।
৩। কেউ ঈদের দিন নফল রোজা রাখল এবং নিয়্যত করল তবুও রোজা ছেড়ে দিবে তার ক্বাযা করা ওয়াজিব হবে না।
৪। মহরম মাসের দশ তারিখ রোজা রাখা মুস্তহাব। হাদীস শরীফে রেওয়ায়েত আছে যে কেউ মহরম মাসের ১০ তারিখে একটি রোজা রাখল তার বিগত এক বছরের ছগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
৫। জিলহজ্জ মাসে ৯ তারিখ রোজা রাখাও বড় ছাওয়াবের কাজ। হাদীস শরীফে বর্ণিত যে যে ব্যক্তি জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখে এ রোজা রাখবে বিগত এবং আগামী বছরের ছগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
৬। শাবানের চাঁদের ১৫ তারিখ রোজা এবং শাওয়ালের চাঁদের ঈদের দিন বাদ দিয়ে ছয়টি রোজা রাখা অন্য সব নফল রোজা অপেক্ষা বেশি ছাওয়াব।
৭। যে প্রত্যেক চাঁদের ১৩,১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়্যাম বীজের তিন রোজা রাখল সে যেন সমস্ত বছরই রোজা রাখল। রাসুলুল¬াহ (সাঃ) এই তিনটি রোজা রাখতেন এবং প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিও রোজা রাখতেন। কেউ যদি এ সব রোজা রাখে তাহলে অনেক ছাওয়াব পাওয়া যায়।

===মান্নতের রোজার মাসায়েল===

যদি কেহ কোন ইবাদতের (অর্থাৎ নামায, রোযা, ছদ্‌কা ইত্যাদির) মান্নত করে, তবে তাহা পুরন করা ওয়াজিব হইয়া যাইবে। যদি না করে, তবে গোনাহ্‌গার হইবে।

মাসআলাঃ
মান্নত দুই প্রকার।

প্রথম- দিন তারিখ ঠিক করিয়া মান্নত করা ।
দ্বিতীয়- অনির্দিষ্টরুপে মান্নত করা ।
ইহার প্রত্যকটি আবার দুই প্রকার

(১) শর্ত করিয়া মান্নত করা । যেমন বলিল, যদি আমার অমুক কাজ সিদ্ধ হয়, তবে আমি ৫০ টাকা আল্লাহ্‌র রাস্তায়দান করিব।
(২)- বিনা শর্তে শুধু আল্লাহ্‌র নামে মান্নত করা । যেমন বলিল, আমি আল্লাহ্‌র নামে পাঁচটি রপযা রাখিব। মোটকথা, যেরুপই মান্নত করুক না কেন, নির্দিষ্ট হউক বা অনির্দিষ্ট হউক, শর্তসহ হউক বা বিনাশর্তে হউক আল্লাহ্‌র নাম উল্লেখ করিয়া যবানে মান্নত করিলেই তাহা ওয়াজিব হইয়া যাইবে।(অবশ্য শর্ত করিয়া মান্নত করিলে যদি সেই শর্ত পাওয়া যায়, তবে ওয়াজিব হইবে ; অন্যথায় ওয়াজিব হইবে না।)
(মাসআলাঃ যদি কেহ বলে, আয় আল্লাহ্‌! আজ যদি আমার অমুক কাজ হইয়া যায়, তবে কালই আমি আপনার নামে একটা রোযা রাখিব, অথবা বলে, হে খোদা! আমার অমুক মকছুদ পূর্ণ হইলে আমি পরশু শুক্রবার আমি আপনার নামে একটা রোযা রাখিব। এরুপ মান্নত এ যদি রাত্রে রোযার নিয়্যত করে, তবুও দুরুস্ত আছে । আর যদি রাত্রে না করিয়া দ্বিপ্রহরের এক ঘন্টা পূর্বে নিয়্যত করে, তাহাও দুরুস্ত আছে এবং মান্নত আদায় হইয়া যাইবে।)

মাসআলাঃ
মান্নত করিয়া যে জুমু’আর দিন নির্দিষ্ট করিয়াছে, সেই জুমু’আর দিনে রোযা রাখিলে যদি মান্নতের রোযা বলিয়া নিয়্যত না করে, শুধু রোযার নিয়্যত করে, অথবা নফল রোযা রাখার নিয়্যত করে, তবুও নির্দিষ্ট মান্নতের রোযা আদায় হইয়া যাইবে । অবশ্য যদি ঐ তারিখে ক্বাযা রোযার নিয়্যত করে এবং মান্নতের রোযার কথা মনে না থাকে, অথবা মনে ছিল কিন্তু ইচ্চছা করিয়া ক্বাযা রোযা রাখিয়াছে, তবে ক্বাযা রোযাই আদায় হইবে, মান্নত আদায় হইবে না; মান্নতের রোযা অন্য আর একদিন ক্বাযা করিতে হইবে।

মাসআলাঃ
দ্বিতীয় মান্নত এই যে, যদি দিন তারিখ নির্দিষ্ট করিয়া মান্নত না করে, শুধু বলে যে, যদি আমার অমুক কাজ হইয়া যায়, আমি আল্লাহ্‌র নামে পাঁচটি রোযা রাখিব, অথবা শর্ত না করিয়া শুধু বলে, আমি আল্লাহ্‌র নামে পাঁচটি রোযা রাখিব, তবুও পাঁচটি রোযা রাখা ওয়াজিব হইবে; কিন্তু যেহেতু কোন দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে নাই, কাজেই যে কোন দিন রাখিতে পারিবে কিন্তু নিয়্যত রাত্রে করাই শর্ত। ছোব্‌হে ছাদেকের পর মান্নতের রোযার নিয়্যত করিলে এইরূপ অনির্দিষ্ট মান্নতের রোযা আদায় হইবে না এবং এই রোযা নফল হইয়া যাইবে।

===তারাবীহর নামায কি?এবং কয় রাকাত===

*তারাবীহ অর্থ কি? এ সলাতকে কেন তারাবীহ নামকরণ করা হল?
উত্তর : তারাবীহ শব্দের অর্থ বিশ্রাম করা। তারাবীহ বহু দীর্ঘায়িত একটি সলাত। প্রতি চার রাকআত শেষে যাতে একটু বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারে সেজন্য এর নামকরণ করা হয়েছে তারাবীহ।

প্রশ্ন : রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র তারাবীহর সালাত কী ধরণের বৈশিষ্ট মণ্ডিত ছিল?
উত্তর : লম্বা ও অনেক আয়াত এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে তিনি তারাবীহ পড়তেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ রাতের একাকী সকল সালাতই ছিল অতি দীর্ঘ। এমনকি কিয়াম, রুকু, সাজদা সবই ছিল খুব লম্বা ও ধীরস্থির।
আসসায়িব ইবনে ইয়াযিদ রাদিআল্লাহু আনহু বলেছেন :
كَانَ الْقَارِئُ يَقْرَأُ بِالْمِئْيِنَ يَعْنِي بِمِئَاتِ الآيَاتِ حَتَّى كُنَّا نَعْتَمِدُ عَلَى الْعَصَى مِنْ طُوْلِ الْقِيَامِ
অর্থাৎ ইমাম (পাঠক) সাহেব তারাবীহতে শত শত আয়াত পড়তেন। ফলে সুদীর্ঘ সময় দাড়ানোর কারণে আমরা লাঠির উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। (মুয়াত্তা)

প্রশ্ন : তারাবীহ সর্বপ্রথম কোথায় চালু হয়।
উ: আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম মসজিদে নববীতে তারাবীহর সালাত সুন্নাত হিসেবে চালু করেন।

প্রশ্ন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি নিয়মিত প্রত্যহ জামা‘আতের সাথে তারাবীহ পড়তেন?
উত্তর : না। সাহাবায়ে কিরাম দুই বা তিন রাত্রি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র ইমামতিতে তারাবীহ পড়েছিলেন। উম্মাতের উপর এ সলাত ফরয হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরে জামাআতের সাথে মসজিদে তারাবীহ পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন,
وَلَمْ يَمْنَعْنِيْ مِنَ الْخُرُوْجِ إِلَيْكُمْ إِلاَّ أَنِّيْ خَشِيْتُ أَنْ تُفْتَرَضَ عَلَيْكُمْ وَذَلِكَ فِيْ رَمَضَانَ
অর্থাৎ (তারাবীহর সালাতে মসজিদে তোমরা একত্রিত হয়ে আমার জন্য যেভাবে অপেক্ষা করছিলে তা সবই আমি দেখেছি) কিন্তু আমার ভয় হচ্ছিল (আমি নিয়মিত এ সলাত আদায় করলে) তা তোমাদের জন্য ফরয হয়ে যেতে পারে। সে কারণে আমি (এ সালাতের জন্য) ঘর থেকে বের হইনি। আর এ ঘটনাটি ছিল রমযান মাসের ( কোন এক রাতে)। (বুখারী ও মুসলিম)

প্রশ্ন : তারাবীহর সলাত কত রাক‘আত?
উত্তর : এটি একটি ইখতিলাফী অর্থাৎ মতবিরোধ পূর্ণ মাস্আলা। কেউ কেউ বলেছেন বিতরসহ তারাবীহ ৪১ রাক‘আত। অর্থাৎ বিতর ৩ রাকআত হলে তারাবীহ হবে ৩৮ রাক‘আত। অথবা বিতর ১ রাকআত ও তারাবীহ ৪০ রাকআত। এভাবে তারাবীহ ও বিতর মিলে :
কেউ বলেছেন ৩৯ রাকআত (তারাবীহ ৩৬ + বিতর ৩)
কেউ বলেছেন ২৯ রাকআত (তারাবীহ ২৬ + বিতর ৩)
কেউ বলেছেন ২৩ রাকআত (তারাবীহ ২০ + বিতর ৩)
কেউ বলেছেন ১৯ রাকআত (তারাবীহ ১৬ + বিতর ৩)
কেউ বলেছেন ১৩ রাকআত (তারাবীহ ১১ + বিতর ৩)
কেউ বলেছেন ১১ রাকআত (তারাবীহ ৮ + বিতর ৩)
(ক) বিতর ছাড়া ২০ রাক‘আত তারাবীহ সলাতের পক্ষে দলীল হল মুসান্নাতে আঃ রায্যাক হতে বর্ণিত ৭৭৩০ নং হাদীস, যেখানে বর্ণিত হয়েছে :
أَنَّ عُمَرَ جَمَعَ النَّاسَ فِي رَمَضَانَ عَلَى أُبَي بنِ كَعَبٍ وَعَلَى تَمِيْمِ الدَّارِيْ عَلَى إِحْد‘ى وَعِشْرِيْنَ مِنْ رَكْعَةِ يَقْرَؤُنَ بِالْمَئِيين
উমার (রাযি.) রমযানে উবাই ইবনে কাব ও তামীম আদদারীকে ইমামতিতে লোকদেরকে একুশ রাকআত সলাতের প্রতি জামাআতবদ্ধ করেছিলেন। (অর্থাৎ তারাবীহ ২০ ও বিতর ১ রাকআত)
(খ) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেছেন যে,
كَانَتْ صَلاَةُ النَّبِيِّ -صلى الله عليه وسلم- ثَلاَثَ عَشَرَةَ رَكْعَةً يَعْنِيْ مِنَ اللَّيْلِ
“নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র রাতের সালাত ছিল ১৩ রাক‘আত।” (বুখারী ও মুসলিম)
(গ) মা আয়িশাহ  বলেন,
مَا كَانَ يَزِيْدُ فِيْ رَمَضَانَ وَلاَ غَيْرِهِ عَلَى إِحْد‘ى عَشَرَةَ رَكْعَةً
তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান ও অন্য সময়ে (রাতে) ১১ রাকআতের অধিক সলাত আদায় করতেন না। (বুখারী ও মুসলিম)
(ঘ) ইবনে ইয়াযিদ রাদিআল্লাহু আনহু বলেন,
أَمَرَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أُبَيْ بْنِ كَعَبٍ وَتَمِيْمَا الدَّارِيِّ أَن يَّقُوْمَ لِلنَّاسِ بِإحْد‘ى عَشَرَةَ رَكْعَةٍ
‘উমার ইবনু খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহু (তার দুই সঙ্গী সাহাবী) উবাই ইবনে কাব তামীম আদদারীকে এ মর্মে নির্দেশ দিলেন যে, তারা যেন লোকদেরকে নিয়ে (রমযানের রাতে) ১১ রাকআত কিয়ামুল্লাইল (অর্থাৎ তারাবীহর সলাত) আদায় করে। (মুয়াত্তা মালেক)
উল্লেখ্য যে, সৌদী আরবের মসজিদগুলোতে তারাবীহ ও বিতর মিলে ১১ বা ১৩ রাকআত পড়লেও মাক্কার হারামে ও মাদীনার মসজিদে নববীতে তারাবীহ ২০ এবং বিতর ৩ মিলিয়ে মোট ২৩ রাকআত পড়ে থাকে।

প্রশ্ন : তারাবীহর সংখ্যার মতবিরোধের মধ্যে কোনটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য?
উত্তর : মালেকী মাযহাবের ইমাম মালেক (রহঃ) বলেছেন, একশ বছরেরও বেশী সময় ধরে লোকেরা ৩৬ রাকআত তারাবীহ পড়েছে। শাফেঈ মাযহাবের ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেছেন যে, তিনি তারাবীহ মদীনায় ৩৬ এবং মাক্কায় ২০ রাকআত পড়তে দেখেছেন।

®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®®
?-বিঃদ্রঃ-পোষ্টি,করতে অনেক কষ্ট হয়েছে।
“তাই কেউ অযর্থা কমেন্ট করবেন না!আর লেখায় ভূল ভুল হইতে পারে।খারাপ মন্তব্য করবেন না!!!???

——————————

সবাই ভাল থাকুন সুস্থ,থাকুন এবং সব সময় Trickbd.com এর সাথেই থাকুন।

! ……সবাইকে অনেক ধন্যবাদ……!


=”my_official-_fb,account_-=


[ভাল লাগলে সবাই কমেন্ট করবেন…….?]

13 thoughts on "?”রোজা’ কি?তারাবীহর’নামায কি? রোজার নিয়তের মাসায়েল?”সেহরীর মাসায়েলঃ?ইফতার,-এর মাসায়েলঃ?রোজা কাযার মাসায়েল?নফল রোজার মাসায়েল” যে সব কারণে রোজা না রাখার অনুমতি আছে?এবং একটি App”সহ(A”To”Z)বিস্তারিত_নিম্নের’পোষ্টে-বর্ননা করা হল।__Boy-_BD-Yasin__>"

  1. Md Khalid Author says:
    Thank you for this valuable topic
    1. BD Yasin Author Post Creator says:
      Thanks!!! vai Khalid
  2. Reja BD Author says:
    সুন্দর।
    1. BD Yasin Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ!!! ভাই
  3. Md Khalid Author says:
    Bangladeshi der jonno sob haram e always halal, tai tara ai post dekhe na:D
  4. BD Yasin Author Post Creator says:
    হ্যা”সত্যি বলেছেন ব্র”
  5. jahed9631 Contributor says:
    ধন্যবাদ
    1. BD Yasin Author Post Creator says:
      ওয়েলকাম!!!
  6. Rakib hossain Author says:
    ভাল লাগল ভাল post
    1. BD Yasin Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ #রাকিব ভাই…….!
      ভাল মন্তব্য করার জন্য!!!!
  7. Love11 Contributor says:
    Good post vaiya.
    1. BD Yasin Author Post Creator says:
      thanks!!! bor
  8. Love11 Contributor says:
    Welcome brother.

Leave a Reply