জমিদার বাড়ি রহস্য
Part 1
Rn Efty
কথায় আছে না। ভাগিনা মানে বাশ।
কিন্তু বাশ নাকি বাশের ঝাড়
সেটা আমার থেকে ভাল কেউ জানে না।
আমার মুড়ির টিনের কপাল যে, রিওর মত
একটা ভাগিনা জুটেছে।
আসলে কপালের আর দোষ দিয়ে লাভ কি?
তবে দোয়া করি আমার শত্রুকেউ যেন আল্লাহ রিওর মত ভাগিনা না দেয়।
কাজের কথা আসি।
অনেক টায়ার্ড হয়ে বিকাল চারটা নাগাদ বাসায় এসে মেজাজ বিগড়ে গেল।
কারন বাসায় ঢুকে প্রথমে ভেবেছিলাম ভাগিনা দিনের বেলায় মশার কয়েল জালিয়েছে।
কিন্তু পরক্ষনে বুঝলাম, মসার কয়েল নয়।
নিজের কয়েল জ্বালাচ্ছে।
সিগারেটের গন্ধে সারা বাড়ি সুভাস ছড়াচ্ছে।
অনেকটা রেগেই রিও রুমে ঢুকলাম।
আজ এর একটা হেস্তা নেস্তা করতে হবে।
কিন্তু রুমে আমাকে ঢুকতে দেখে সে যা বলল তাতে
চুপশে না গিয়ে আর উপায় ছিল না।
আমায় দেখেই হেসে দিয়ে বললঃ আরে প্রফেসর।
তোমার অপেক্ষা করছিলাম।
এই যা, তোমার দেখি মন খারাপ। ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে
ইন্মরার বাসায় গিয়েছিলে নিশ্চয়?
আর মামির এত আবেগ কেন?
আহারে, অতি সামন্য বিষয়ে তোমায় জড়িয়ে ধরে
কান্না কাটি করেছে মেয়েটা।
__________ কোথায় ভাগিনাকে আজ বকা দিব বলে আসলাম।
আর সে আমায় উল্টে ঘোল খাইয়ে দিল।
কিন্তু আমি প্রতিদিন এই সময়ে ভার্সিটি থেকেই আসি।
আজ কি দেরি হয়েছে।
ঘড়িতে সময় ঠিকই আছে।
এই সময়ে প্রতিদিন আসি।
কিন্তু ভাগিনা কি করে বুঝল।
ঘরের বিষয় পরে জানলে কি ভাল লাগে?
অনেকটা হেসে দিয়ে বললামঃ এই ১৫ মিনিটেই নিউজ পেপারে এসে গেল খবরটা?
_নিউজ পেপারে নয়।
তোমায় গায়ে।(রিও)
_মানে?
_বুঝেও না বোঝার ভান কর মামা?
_সত্যি বলছি, বুঝতে পারিনি।
_তার মানে, স্বিকার করছ। আমি তোমায় চমকে দিতে পারছি?
_হ্যা।
_কিন্তু একটু পর যখন আমি সব বুঝিয়ে দিব। তখন বলবে এটা অনেক সোজা ছিল।
_আরে বলই না।
_ওকে।
দেখ! তুমি প্রতিদিন বাসায় আস ভার্সিটির গাড়ি দিয়ে।
কিন্তু আজ এসেছো হেটে।
কারন তোমার কালো জুতা পুরো ধুলাময় হয়ে গেছে।
মেইন রোডে এত ধুলা নেই।
তার মানে গলি রোডে হেটেছো?
আর আমার মামা গলির রোডে কার বাড়ি যায়, সেটা আমি ভাল করে জানি।
_হতে পারে আমি আমার বন্ধু সাইফের বাসায় গিয়েছিলাম।
ইন্মরার বাসায় নয়।
কারন ইন্মরার বাসার পাশেই সাইফের বাসা।
_হতে পারত কিন্তু হয়নি যে মামা।
_কেন?
_নিশ্চয় তোমার বন্ধুর বউ তোমায় জড়িয়ে ধরে কাদবে না।
_কি বল এসব?
_আরে তোমার সার্টের দিকে কি খেয়াল করেছ?
নাকের পানি আর চোখের পানির মিশ্রনের দাগটা কি
স্পস্ট দেখা যাচ্ছে।
________ নিজের দিকে খেলায় করে দেখলাম। সত্যি।
ইন্মরা যখন কাদছিল তখন
ও আমার বুকেই ছিল।

আর সাদা সার্টে নাকের পানির দাগ দেখা যাচ্ছে।
আবার বললামঃকিন্তু ভাগিনা। কান্নার কারন যে, অতি অল্প সেটা কি করে বুঝলে?
_আরে প্রফেসর। এত প্রশ্ন করনা তুমি?
শোন, মেয়েরা যদি ছোট খাট বিষয়ে কষ্ট পায় তবে
আপন মানুষটা এভাবে ধরে কাদে।
যা ইন্মরা করেছে।
আর বেশি রাগলে?
পুরো উল্টা, তোমার কাছে আসাতো ধুরের কথা।
তোমার দিকে তাকাবেও না।
_______ বুঝলাম রিও কথার লজিক আছে।
একে নিয়ে কোন কালেই পারা যাবে না।
আমার বাশ খেতে খেতেই জিবন যাবে।
π
ফ্রেস হয়ে রিওর পাশে গিয়ে বসে টিভি অন করব এমন সময়
একটা চিঠি বের করে আমার হাতে দিয়ে বললঃপড়।
কত রকমের পাগল আছে
দুনিয়ায়?
_পাগল মানে?বললাম আমি
_যে দেশে ৩৪ভাগ মানুষ তিন বেলা ঠিক মত খেতে পারে না।
সে দেশের মানুষ সখ করেও
এত কিছু করে।
আজব পাবলিক, মামা।
চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম।
সেখানে লেখাঃ__
জনাব রিও,
ডাইমন্ড ভ্যালি রহস্য
পড়ে আপনার কথা
জানতে পারলাম।
আমি আমার অতি গোপনীয় কিছু বিষয়ে আপনার পরামর্শ কামনা করছি।
যদি আমাকে সাহায্য করেন, অতি উপকার হয়।
দেখা করার সময়টা নিচের
মেইলে জানিয়ে দিবেন।
ইতি
আর, এক্স
meilঃrx@——–.com
চিঠিটা পড়া শেষ করতেই
রিও বললঃকি বুঝলে?
_বুঝলাম তিনি তুষারের কেসটার কথা বলেছেন।
_আরে সেটাতো একটা পাগলও বুঝবে।
চিঠির লেখক সম্পর্কে কিছু বল?
_আজব। লেখকের নাম প্রজন্ত স্পস্ট নয় চিঠিতে।
আর তুমি বলছ
লেখক সম্পর্কে কিছু বলতে।
কি আজ কি সিগারেটের অন্য কিছু খেয়েছো নাকি?
_মামা। ভাল করে চিঠিটা দেখ সব পাবে।
________ আমি প্রায় দশ মিনিট ধরে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে
দেখলাম চিঠিটা।
কিন্তু কিছুই পেলাম না।
শুধু দেখলাম, চিঠিটাতে বেশ কিছু নকসা করা।
সেটা অনেকটা নকশি কাথার নকশা হবে হয়ত।
এরপর রিওর হাতে চিঠিটা দিয়ে বললামঃকিছু বুঝলাম না।
_ মামা আমি কিন্তু অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি।(রিও)
_কি দেখতে পাচ্ছ?
_যিনি চিঠিটা লিখেছেন তার আর্থিক অবস্থা বেশ ভাল।
পুরানো জিনিস সংগ্রহের বাতিক আছে।
বয়স সম্ভানত ৬০+।
আর হ্যা তেমন কোন দরকারি বিষয় নিয়ে
তিনি আসছেন না।
হুদায়, অকাজ আর কি?
ওহ হ্যা, তিনি একজন মহিলা।
আর, আর, আর, দেখতে পাচ্ছি তিনি চিঠিটা গ্রামে বসে লিখেছেন।
______ আমি অবাক হয়ে রিওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
কারন ভাগিনা চাপা বাজিও শিখে গেছে।
আর সহ্য করতে পারছিলাম না।
তাই বললামঃ কি করে বুঝলে?
_আসলে মামা তুমিতো জানো
আমি যা বলি সেটার ভিতরে লজিক থাকে।
লজিক ছাড়া কোন কথা আমি বলি না।
কাগজটা দেখ। এটা একটু আলো সামনে ধরলে এর ভিতর
একটা জল ছাপ দেখতে পাবে।
যেটাই লেখা আছে AKH.
মানে বাংলাদেশের বিখ্যাত কাগজ উৎপাদন কোম্পানি।
_তাতে কি?,, কথাটা শেষ বলতেই রিও কাগজটা জগের পানির ভিতর
ছেড়ে দিলো।
এবং সাথে সাথে তুলেও নিলো।
এবার কাগজটা ঝাকি দিল।
আমি অবাক হয়ে গেলাম।
কারন কাগজ থেকে আপনা আপনি ঝরে গেল।
আমি হেসে দিয়ে বললামঃআরে এটা কাগজ নাকি কচুর পাতা?
_এই জন্য বললাম মামা চিঠির লেখকের আর্থিক অবস্থা ভাল।
কারন প্রায় বিশ বছর আগে
akh এই কাগজ বাজারে লঞ্চ করে।
কিন্তু সখের তোলা আশি টাকা মামা।
তাই কিছু দিনের মাঝে ঊৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়।
কারন কেউ একটা ডাইরির পিছে দশ হাজার খসাতে চাইবে না।
আর যে চাইবে তিনি সোখিন এবং বিশ বছর আগের কাগজ যার কাছে যার কাছে পাওয়া যায় তিনি পুরানো জিনিস সংগ্রহ করে এটা বলা যায়।
কেননা, চিঠিটা বলপেন নয় দোয়াত কালি দিয়ে লেখা।
দোয়াতের কালি দিয়ে এখন কেউ লেখেন না।
আর যে লিখে সে সখে এটা করে।
_হুম। বুঝলাম। এই যে বললে, তিনি মহিলা।
সেটা কি করে বুঝলে?
_দেখ। চিঠির চার পাশে হাতে নকশা করা।
নকশাটা প্রাচিন কালের নকশি কাথায় করা হত।
এই যুগের ছেলে মেয়েরা এত নিখুত ভাবে এটা আকতে পারবে না।
আর যিনি এঁকেছেন তিনি
অনেক পারদর্শি।
কাথাও সেলাই করেছে, তাই এত নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন হয়ত।
তাই বলেছি তিনি মহিলা আর
বয়সে প্রাচিন।
অন্তত ৬০ তো হবে ই।
_বেশ। চমৎকার। আসলে তুমি পার ভাগিনা।
কি বলব ভেবে পাচ্ছি না। তাই বললামঃ
কিন্তু বললে যে, চিটিটা গ্রামে বসে লেখা।
আর তিনি যে কাজটা নিয়ে আসছেন।
সেটা তেমন গুরুতপুর্ণ নয়।
_হ্যা।
দেখ। চিঠির এক কোনে একটা দাগ দেখা যাচ্ছে।
ম্যাগনিফাই গ্লাস দিয়ে দেখলে বুঝবে সেটা মোমের দাগ।
তার মানে তিনি মোম বাতি জালিয়ে এটি লিখেছেন।
সেটা শহরেও হতে পারত।
কিন্তু শেষ এক মাস এক মুহুর্তের জন্য লোডসিডিং হয়নি শহরে।
এটা গ্রাম অঞ্চলে হয় মামা।
আর যিনি একটা চিঠি পনের দিন আগে লিখে
এখন সেন্ড করতে পারেন।
তার প্রয়োজনটা কতটা গুরুতপুর্ণ সেটা বোঝায় যাচ্ছে।
এবার চিঠির খামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম। সত্যিইতো তারিখটা ১৫ দিন আগের।
ভাগিনার ইনভেস্টিগেশন দেখে মনে হল আসলেই জিনিয়াস।
আমি আবার বললামঃকেসটা কি নিবে?
_আগে মহিলাকে দেখি।
তারপর বিষয়টা জানি।
তখন যদি মনে হয়, বিষয়টা ইন্টারেস্টিং।
তাহলে নিব নতুবা নিব না।(রিও)
_সেটা তোমার ইচ্ছা। কিন্তু আমার কেন যেন ইন্টারেস্ট ফিল হচ্ছে।
_ওকে। একটা মেইল করে দেও যে, আগামি পরশু সন্ধা ছয়টায় এপায়েন্টমেন্ট।
_ওকে।
চলবে……..?
আমি Reja ভাই কে বলেই এই পোস্ট টা করছি।

11 thoughts on "জমিদার বাড়ি রহস্য Part 1"

  1. DH SAJIB Author says:
    Nice story..carry on bro
    1. Md M.Rudro Author says:
      Vaya.amar agei id nosto houe.gese.
      Tomar fb link dao.plz
  2. Wrifat Contributor says:
    সুন্দর।চালিয়ে যাও ভাই
  3. Misuk BD Author says:
    ভালো লাগলো৷নেক্সস্ট পার্ট কবে পাবো?
    1. Mahbub Subscriber Post Creator says:
      kalke
  4. Zakaria Raz Easin Contributor says:
    prothomoto agrhajjo niya pora suru Kore chilam kintu ekhon osadharon lagse . Thanks A loots.
    Carry on Bro….
  5. bdsami Contributor says:
    আামার পড়তেই মন চায় না। কি করি?
    voice reader diya porbo bapchi

Leave a Reply