আমাদের প্রযুক্তির পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের মাঝে আজ একটা টিপস নিয়ে আসেছি,

ওয়েব ডিজাইন কি? কেন শিখবেন? কি কি শিখবেন? কিভাবে কাজ করবেন?

ওয়েব ডিজাইন কি?

ওয়েব ডিজাইন মানে হচ্ছে একটা ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে বা এর সাধারন রূপ কেমন হবে তা নির্ধারণ করা। ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে আপনার কাজ হবে একটা পূর্ণাঙ্গ ওয়েব সাইটের টেম্পলেট বানানো। যেমন ধরুন এটার লেয়াউট কেমন হবে। হেডারে কোথায় মেনু থাকবে, সাইডবার হবে কিনা, ইমেজগুলো কিভাবে প্রদর্শন করবে ইত্যাদি। ভিন্ন ভাবে বলতে গেলে ওয়েবসাইটের তথ্য কি হবে এবং কোথায় জমা থাকবে এগুলো চিন্তা না করে, তথ্যগুলো কিভাবে দেখানো হবে সেটা নির্ধারণ করাই হচ্ছে ওয়েব ডিজাইনার এর কাজ। আর এই ডিজাইন নির্ধারণ করতে ব্যাবহার করতে হবে কিছু প্রোগ্রামিং, স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ এবং মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ।

কেন শিখবেন ওয়েব ডিজাইন?

আমাদের দেশে মূলত লোকজন ‘কোন কাজটা আমি শিখবো’ বা ‘আমি কোন কাজটা পারবো’ এধরনের প্রশ্ন না করে বরং বলে ‘কিভাবে সহজে আয় করবো’ বা ‘এটা শিখে কত টাকা আয় করবো’। যারা আয় কত করবেন বা রাতারাতি কিভাবে আয় করবেন এইসব চিন্তা করেন তাদের জন্য ওয়েব ডিজাইন নয়। যদিও ওয়েব ডিজাইন আসলে উচ্চ আয়ের পেশার মধ্যে অন্যতম কিন্তু আপনি যদি আয়ের কথাটাই মাথায় রেখে এগুতে চান তাহলে আমি বলবো আপনার জন্য ওয়েব ডিজাইন নয়। ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন বা প্রোগ্রামিং এই ধরনের পেশা আসলে তাদের জন্য যারা ক্রিয়েটিভ কিছু করতে চান এবং নিজের কাজের মধ্যেই নিজেকে খুজে পেতে চান। ওয়েব ডিজাইন যেহেতু কোডিং এবং প্রোগ্রামিং এ ভরপুর আর প্রোগ্রামিং-এর নেশা ছাড়া প্রোগ্রামিং করা সম্ভব নয় তাই এধরনের কাজ শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা এই কাজের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে শিখে যাওয়ার পর আপনি অন্য যেকোনো পেশা থেকে এখানেই ভালো আয় করতে পারবেন।

কি কি শিখতে হবে?

ওয়েব ডিজাইন বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতের উপর নির্ভর করে মোটামুটি কয়েক ধরনের ল্যাঙ্গুয়েজ এবং স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে করা হয়ে থাকে আবার শুরুতে ফটোশপ ব্যাবহার করে প্রথমে এটার ঘটন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত গুলো নিচে আলোচনা করা হল –

এইচটিএমএল (HTML): HTML একটি মার্কআপ ভাষা। ব্রাউজার কোন একটা সাইটের ভিউয়ার যা দেখতে পায় তা এইচটিএমএল দিয়ে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এটি কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ নয়, বরং যেকোনো প্রোগ্রামিং থেকে অনেক সহজ। এটা এতটাই সহজ যে যেকোনো সাধারন মানুষ যে প্রোগ্রামিং শিখতে চায় না, সেও হাসির ছলে ছলে HTML শিখে নিতে পারে। যেমন আমরা যদি কোন একটা প্যারাগ্রাপ প্রদর্শন করতে চাই তখন এমন লিখতে হয়।

This is a paragraph

অর্থাৎ ‘This is a paragraph’ এই টেক্সট টুকো ব্রাউজার এ একটা প্যারাগ্রাপ হিসেবে প্রদর্শিত হবে।

সিএসএস (CSS): এটাও একটা মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ। এটি নির্ধারণ করে দেয় ব্রাউজার জেই কন্টেন্ট HTML দ্বারা প্রদর্শিত হবে সেটা দেখতে কেমন হবে। অর্থাৎ লেখাটার ফন্ট কত বড় হবে। পাশে কতটুকু জায়গা খালি থাকবে। একটা লেখা থেকে আরেকটার দূরত্ব কতটুকু হবে, এটির রঙ কি হবে বেকগ্রাউন্ড কি হবে, এমনকি সর্বশেষ CSS3 দিয়ে কন্টেন্টে এনিমেশন ও যুক্ত করা যায়। যেমনঃ পূর্বে আমরা একটা HTML paragraph লিখেছিলাম। এখন আমরা চাইলে নিচের কোডটুকু দিয়ে সেই প্যারাগ্রাপ এর টেক্সট এর রঙ লাল করে দিতে পারি।

p {color: red;}

জাভাস্ক্রিপ্ট/জেকুয়েরি (javascript/jQuery): এই দুটোকে মূলত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের কিছুটা কাছাকাছি ধরা যায়। মূলত দু,টি জিনিসের কাজ একি তবে জেকুয়েরি হচ্ছে জাভাস্ক্রিপ্টেরই একটা রূপ যা সাইটে জাভাস্ক্রিপ্ট ব্যবহারকে অনেকটাই সহজ করে। আর এগুলোর কাজ হচ্ছে সাইটটা ইন্টারেক্টিভ করা। অর্থাৎ ভিজিটর একটা বাটনে ক্লিক করলে মেনু ওপেন হবে। অথবা একটা ফর্ম সাবমিট করলে কনফার্মেশন মেসেজ দেখাবে ইত্যাদি।

মূলত কাজ শুরু করতে এই কয়েকটি ল্যাঙ্গুয়েজে দক্ষতা এবং বাস্তব কাজে ব্যবহার করার যোগ্যতা অর্জন করলেই হবে। তবে এই ধরনের কাজে অভিজ্ঞতা একটি চলমান প্রক্রিয়া। উত্তরোত্তর নতুন অনেক কিছু শিখে নিজেকে আরও প্রফেশনাল আরও যোগ্য ওয়েব ডিজাইনার করে তুলতে হবে।

কোথায় কাজ করবেন?

ফ্রিলান্স মার্কেটপ্লেসে ওয়েব ডিজাইন এবং ফ্রন্ট-ইন্ড-ওয়েব ডেভেলপমেন্টের হাজারো কাজ পাওয়া যায় এবং এই ধরনের কাজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুলনামূলক কম তবে চাহিদা বেশি। তাই সহজে কাজ পাবেন এবং এধরনের কাজের দামও বেশি। একজন সাধারনমানের ফ্রিলান্সারের ঘণ্টাপ্রতি কাজ করার রেট হয় ২ ডলার, কিন্তু একজন ওয়েব ডিজাইনার এর ঘণ্টাপ্রতি রেট শুরুতেই ১০ বা ১২ ডলার হয়ে থাকে। তবে অনেকের ধারনা ওয়েব ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট শিখলে শুধু ফ্রিলান্স করতে হবে এবং না করলে আয় বন্ধ, তাদের জন্য বলছি, themeforest.net এবং এধরনের অনেক মার্কেট আছে যেখানে ওয়েব টেম্পলেট এবং ওয়েব ইলিমেন্ট খুবই ভালো দামে বিক্রি করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার একটি ডিজাইন করা টেম্পলেট বহুবার বিক্রি করতে পারবেন এবং এবং কোয়ালিটি ভালো হলে প্রতিমাসে একেকটা টেম্পলেট এর আয় দিয়েই আপনি রাজার হালে চলতে পারবেন।

সারসংক্ষেপ যা বলা উচিত তা হচ্ছে, ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপার হতে হলে যেমন আপনার প্রচুর ধৈর্য আর সময়ের দরকার তেমনি আবার শিখে নিলে এটাই হচ্ছে উচ্চ আয়ের এবং সম্মানজনক পেশা।
প্রথম প্রকাশিত : OurTechbd.Com

4 thoughts on "ওয়েব ডিজাইন কি? কেন শিখবেন? কি কি শিখবেন? কিভাবে কাজ করবেন?বিস্তারিত কিছু কথা।"

  1. ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর লিখছেন!
  2. Saifulp Contributor Post Creator says:
    tnx এইচ এম স্বপন
  3. Nucleas Author says:
    রানা ভাই প্লিজ আমার পোস্ট গুলা দেখুন।।
  4. Wrifat Contributor says:
    darun likhsen!

Leave a Reply