আস-সালামুয়ালাইকুম,
কেমন আছেন সবাই?
শুরুতে শাহরিয়ার ভাইকে ধন্যবাদ জানাই।

ডোমেইন:

ওয়েবসাইট বানানোর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হবে একটি ডোমেইন নেম এর, ডোমেইন হলো ঠিকানা, ধরুন আপনাকে যদি আমি ডাক দিতে চাই কি ভাবে ডাকবো? অবশ্যই নাম ধরে, ওয়েব সাইট নির্দিষ্ট আই্পি তে হোস্ট করা থাকে যা মনে রাখা কষ্টকর তাই সহজে মনে রাখার জন্য আইপি কে টেক্সটে্ রূপান্তর করা হয় যা ডোমেইন নামে পরিচিত।

হোস্টিং:

এরপর প্রয়োজন হবে হোস্টিং এর। হোস্টিং হলো স্পেস যেখানে ওয়েবসাইটের ফাইলগুলোকে সংরক্ষন করে রাখা হয়। যেমন: আপনার মোবাইলে ফাইল সেভ রাখতে মেমরি এর প্রয়োজন হয়। তেমনি ভাবে, ওয়েবসাইটের ফাইল সেভ করে রাখার জন্য হোস্টিং এর প্রয়োজন হবে।

হোস্টিং অনেক রকমের আছে, যেমন : শেয়ারর্ড হোস্টিং, ভিপিএস এবং ডেডিকেটেড সার্ভার

ধরুন আপনার একটি কম্পিউটার আছে, আপনি এটি ভাড়া দিতে চান। অর্থাৎ তো আপনি এটা একজন কে ভাড়া দিলেন মানে পুরো কম্পিউটার টাই ভাড়া দিয়ে দিলেন। এর মানে এখন এটা যদি সার্ভারের ক্ষেত্রে বিবেচনা করেন তাহলে সে আপনার থেকে ডেডিকেটেড সার্ভার কিনেছে। এখন যিনি ক্রয় করেছে আপনার থেকে তিনি দেখলেন তার পিসিতে অনেক স্পেস, র‍্যাম এবং সিপিউ রিসোর্স অব্যবহৃত পরে আছে। সুতরাং সে চিন্তা করলো এই অব্যবহৃত রিসোর্স আরো কয়েক জনের কাছে বিক্রি করবে। সুতরাং সে ভার্চুয়াল কিছু সিস্টেম তৈরী করলো। আপনারা অনেকেই VMWare কিংবা Virtual Box ব্যবহার করে একই পিসিতে একাধিক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেছেন কিন্তু ব্যাপার টা এমন। সে ভার্চুয়াল কিছু সিস্টেম বানিয়ে পুরো কম্পিউটার টাকে অনেক গুলো ভাগে ভাগ করে ফেললো। প্রতিটা ভাগে ইচ্ছা মত র‍্যাম, সিপিইউ দিয়ে দিল। এখন যারা তার থেকে এই ভাগ গুলো কিনছে তারা হলো VPS কিনছে অর্থাৎ Virtual Private Server ক্রয় করছে। এটি কয়েক ধরনের আছে, যেমন: openvz,  xen server,  kvm ইত্যাদি। তবে প্রধানত দুইরকম:

১. ডেডিকেটেড রিসোর্স

২. শেয়ারড রিসোর্স

ধরুন মেইন পিসি তে ১০ জিবি র‍্যাম আছে। আপনি সবাইকে ১জিবি করে র‍্যাম দিলেন,  কিন্তু অনেকের ১জিবি র‍্যামের প্রয়োজন নেই আবার অনেকের ১জিবির বেশী প্রয়োজন। সুতরাং শেয়াড ভিপিএস এ রিসোর্স শেয়ারর্ড হবে। অর্থাৎ আপনার ব্যবহার এর পর যদি রিসোর্স ফাকা থাকে তবে তা অন্য রা ব্যবহার করতে পারবে। এর প্রধান অসুবিধা হলো আপনি ২জিবি র‍্যাম কিনলেও পরিপূর্ন ২জিবি পাবেন না কম কিংবা বেশী পাবেন। যেমন : OpenVZ VPS

আর ডেডিকেটেড ভিপিএস এ আপনাকে যা দেওয়া হবে তাই ই আপনি পাবেন অন্যরা এতে ভাগ পাবে না কিংবা আপনি অন্যদের টার ভাগ পাবেন না। যেমন: KVM VPS

এবার ধরুন কেউ একটা ভিপিএস কিনলো, কিন্তু দেখলো তার ভিপিএস এ দেওয়া জায়গার দরকার হচ্ছে না তার আরো কম রিসোর্সেই চলছে। তখন সে ভিপিএস কে আরো অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে নিলো। আর এগুলোই হলো শেয়ার্ড হোস্টিং, দাম কম এর জন্য পৃথিবীতে এটিই বেশী পরিমানে বিক্রি হয়।

আরো কিছু টার্ম:

প্রোভাইডার: যাদের নিজেদের ডেটাসেন্টার আছে এবং বিক্রি করে।

রিসেলার: যারা প্রোভাইডার থেকে সার্ভিস কিনে তা সাধারন ইউজারদের কাছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগ করে বিক্রি করে।

আপনি কি ধরনের সার্ভিস নিবেন?

খুবই জটিল একটা প্রশ্ন এটা, এক এক জন এর উত্তর এক একভাবে দিবে কিন্তু আমি নিচের মত করে দিবো:

১. পার্সোনাল ব্লগ, ছোট খাট নিউজ, খুবই ছোট খাট ই-কমার্স সাইট, ছোটখাট কর্পোরেট সাইট যাতে সেন্সিটিভ ডেটা আদান প্রদান হবেনা কোনো এ ধরনের সাইট এর জন্য শেয়ারড হোস্টিং বেস্ট। দাম কম, রিসোর্স কম;)

২. মোটামুটি বড় সাইট যাতে প্রতিদিন ৩০-৫০ হাজার ভিজিটর ঢুকে, কর্পোরেট সাইট যাতে অনেক ভিজিটর প্রবেশ করে কিন্তু সেন্সিটিভ কিছু করে না নরমাল কাজ করে, মাঝারী সাইজের ইকমার্স সাইট, নিউজ সাইট কিংবা যেকোনো সাইট যাতে ইমেইল কিংবা অন্যান্য  লিমিটেশান চান না তারা ভিপিএস নিবেন।

৩. বড় সাইট, কিংবা সেন্সিটিভ তথ্য আদান প্রদান হয় এমন সাইটগুলোর জন্য ডেডিকেটেড নিতে হবে।

৪. যারা ব্যবসা করতে চান হোস্টিং এর তারা রিসেলার হোস্টিং নিবেন কিংবা ভিপিএস নিতে পারেন, ক্লাইন্ট বাড়লে ডেডিকেটেড নিবেন।

ডোমেইন হোস্টিং এর পর লাগবে সাইটের জন্য ডেভোলপার, আপনি নিজে যদি সাইট বানাতে চান ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতে পারেন। এটি খুবই সহজ কিংবা প্রফেশনালদের দিয়ে সাইট বানিয়ে নিতে পারেন।

খরচ:    

কোম্পানী ভেদে খরচ বিভিন্ন রকম হবে, বাংলাদেশে অনেক কোম্পানী হোস্টিং, ডোমেইন সার্ভিস দেয় তাদের দামও বিভিন্ন রকম। যেমন, গ্রিনওয়েব, এটি বাংলাদেশী কোম্পানী, এদের থেকে যদি ডোমেইন হোস্টিং ক্রয় করেন তবে বছরে আপনাকে .com এর জন্য এখন ৭০০ টাকা এবং 1 GB স্পেস, আনমিটারড ব্যান্ডউইখ এর জন্য ১০০০ টাকা দিতে হবে। যদি বাহির থেকে কিনেন তবে কুপন ব্যবহার না করলে namecheap.com থেকে কিনলে ১৪ ডলার ডোমেইনের জন্য দিতে হবে।

সার্ভিস কোথা থেকে কিনবেন?

মুলত ডোমেইন হোস্টিং ডেভোলপমেন্ট সার্ভিস ক্রয় করার পূর্বে দেখবেন সাপোর্ট এবং সুবিধা কেমন দেওয়া হবে আপনাকে। অনেকেই অল্প টাকায় নিম্নমানে হোস্টিং দিতে চাইবে তাই ক্রয় করার আগে কোম্পানী সম্পর্কে ভালো ভাবে যাচাই করে নিবেন। বাংলাদেশ থেকে কিনলে সাপোর্ট পেতে সুবিধা হবে তাই দেশী কোম্পানী থেকে কিনার চেস্টা করবেন।

বিঃদ্রঃ পোষ্টটি আগে করে রাখেছিলাম এখন পাবলিস করলাম

2 thoughts on "বানাতে চান নিজের একটি ওয়েবসাইট? দেখে নিন কি কি প্রয়োজন হবে।"

    1. MD JIHAD KHAN Author Post Creator says:
      hmm

Leave a Reply