স্মার্টফোন দুম করে কিনে বসলেই হয়
না। অনেক কিছু দেখে -শুনে -বুঝে তবেই
কেনা উচিত ফোন। ফোন কেনার আগে
অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে এই
পরামর্শগুলো—
১) যদি বাজেট অনেকটা বেশি থাকে,
আইফোন কেনাই ভাল। তবে সস্তাদামের
সেকেন্ডহ্যান্ড বা অনেক পুরনো
সংস্করণের ফোন না কেনাই ভালো।
আপডেটেড সংস্করণের দাম অনেক। অত
টাকা পকেটে না থাকলে অ্যান্ড্রয়েড
চালিত সাশ্রয়ী হ্যান্ডসেটই বেছে নিন।
২) ব্ল্যাকবেরি যে কিনবেন না তা আর
নিশ্চয়ই নতুন করে বলতে হবে না। ঠিক
তেমনই উইন্ডোজ ফোন কেনার আগে
দু’বার ভাববেন। প্রথমত , মাইক্রোসফট
স্টোরে বেশি অ্যাপ থাকে না। আর যদি
শুধু ফোন করা আর ফোন ধরার জন্যেই
ফোন কিনতে হয় তবে আর দামি
স্মার্টফোন কেন , সাধারণ ফোন কেনাই
ভাল।
৩) ফোন কেনার আগে সবচেয়ে প্রথমে
যেটি দেখবেন সেটি হল প্রসেসর। ভাল
প্রসেসর মানেই ফোন হবে সুপারফাস্ট,
গেম খেলার সময়ে ফোন হ্যাং করবেন না
এবং ফোটো এডিটিং হবে তাড়াতাড়ি।
স্ন্যাপড্র্যাগন ৬০০ সিরিজের প্রসেসর
থাকে মাঝারি রেঞ্জের ফোনে। কিন্তু
সবচেয়ে ভাল হল কোয়ালকম
স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ এবং ৮১০ প্রসেসর।
আইফোনের ক্ষেত্রে ৬৪ বিট , এ৯ চিপ
হল সেরা, যা রয়েছে আইফোন সিক্সে।
৪) বাংলাদেশে ফোরজি ডেটা কানেকশন
আসতে চলেছে। তাই এখন নতুন ফোন
কিনলে ফোরজি সাপোর্ট করবে এমন
ফোন কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৫) র্যাম হল আর একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। যদি পকেটের জোর থাকে তবে ৪
অন্তত ২ জিবি র্যাম যেন থাকে। কারণ
এখন মাঝারি রেঞ্জের সব ফোনেই ২
জিবি র্যাম থাকে। এমনকি, আইফোন
সিক্সেও তাই।
৬) র্যাম, ফোরজি, প্রসেসরের পরেই
দেখবেন ডিসপ্লে। চেষ্টা করবেন
অ্যামোলেড ডিসপ্লের ফোন কিনতে।
চড়া রোদে দাঁড়ালেও পরিষ্কার দেখতে
পাবেন স্ক্রিন। কোয়াড এইচডি
২৫৬০x১৪৪০ পিক্সেলের ফোনগুলির দাম
অনেক বেশি। মাঝারি রেঞ্জের ফোন
কিনলে রেজ্যুলেশন যেন অন্ততপক্ষে
১২৮০x৭২০ পিক্সেল হয়।
৭) এর পরেই দেখবেন স্টোরেজ কেমন।
কখনও এক্সপ্যান্ডেবল স্টোরেজ নেই
এমন ফোন কিনবেন না। যারা
স্মার্টফোন ঠিকঠাক ব্যবহার করতে
পারেন তারা প্রচুর অ্যাপ ডাউনলোড
করেন। এর জন্য অনেকটা স্টোরেজ
স্পেস লাগে। যাতে প্রয়োজনে মাইক্রো-
এসডি কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, সেই
অপশনটি খোলা রাখবেন। অন্ততপক্ষে
১৬ জিবি ইন্টারনাল মেমরি আছে এমন
ফোনই কিনবেন।
৮) ফ্রন্ট ক্যামেরা নেই এবং এলইডি
ফ্ল্যাশ নেই এমন ফোন না কেনাই ভাল।
এখন মাঝারি রেঞ্জের ফোনে
স্ট্যান্ডার্ড ১৩ মেগাপিক্সেল রিয়ার
ক্যামেরা থাকে। আইফোন সিক্সএস
প্লাস, গ্যালাক্সি এস৭ , গ্যালাক্সি এস৭
এজ, এইচটিসি ১০-এর ক্যামেরা খুবই
ভাল। আরও মজার এলজি জি৫। এতে
দু’রকমের রিয়ার ক্যামেরা সেটিং রয়েছে।
একটি সাধারণ এবং অন্যটি ওয়াইড
অ্যাঙ্গেল শুটের জন্য।
৯) ব্যাটারি লাইফ হল আর একটি
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একবার ফুলচার্জ
দেওয়ার পরে যে সমস্ত ফোরজি ফোনে
টানা ৮ ঘণ্টা নেট সার্ফিং করা যায় , সেই
ফোনই সবচেয়ে ভাল। ব্যাটারি লাইফ
গড়ে ৩০০০ এমএএইচ হলেই ভাল। মাঝারি
ব্যাটারি লাইফের ফোন না কেনাই ভাল।
১০) ওয়াই -ফাই সব স্মার্টফোনেই থাকে।
চেষ্টা করবেন ব্লু-টুথ ৩ .০ রয়েছে এমন
ফোন কিনতে। কারণ এই ভার্সনটি
থাকলে স্মার্টওয়াচের সঙ্গে মোবাইলটি
কানেক্ট করা যায়। তাছাড়া জিপিএস
রয়েছে এমন ফোন কেনাই ভাল , যাতে
ফোন হারিয়ে গেলে ট্র্যাক করতে সুবিধে
হয়। আর যদি ম্যাগনেটোমিটার সেন্সর
থাকে তবে স্মার্টফোন কম্পাসেরও কাজ
করবে।
১১ ) ডলবি অ্যাটমোস সাউন্ড এখন
স্মার্টফোনের অন্যতম ফিচার।
লেনোভোর সাম্প্রতিক প্রায় সব
ফোনেই এই ফিচার রয়েছে। যারা ফোনে
ভিডিও দেখেন, গান শোনেন বা সিনেমা
দেখেন তারা ডলবি স্পিকার রয়েছে এমন
ফোনসেট কিনলেই ভাল।
১২) ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি ,
শ্যাটারপ্রুফ, স্ক্র্যাচ -প্রুফ স্ক্রিন,
গোরিলা গ্লাস, ওয়াটারপ্রুফ , এনএফসি
ট্যাগ এই সবকিছু অত্যাধুনিক
স্মার্টফোন ফিচার। বাজেট যত বাড়বে ,
ততই এই সবকিছু যোগ হবে ফোনের
ফিচারে। যদি সামর্থ্য থাকে তবে এই
সমস্ত সুবিধা রয়েছে এমন ফোনই
কিনবেন। আবার অনেক বাজেট
স্মার্টফোনেও এগুলির মধ্যে একটি দু’ টি
পাওয়া যায়।
3 thoughts on "যেভাবে সেরা স্মার্টফোন কিনবেন – ফোন কেনার আগে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে এই পরামর্শগুল"