আসসালামু আলাইকুম,
এসে পড়লাম আবার আপনাদের সাথে বকবক করতে অনলাইন ইনকাম ফ্রিল্যান্সিং ও খুঁটিনাটি তৃতীয় পর্ব নিয়ে
যারা আগের লেখাগুলো পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন,
ফ্রিল্যান্সিং জিনিসটা কি?
যারা জানেন না তাদের কে অনুরোধ করবো আগের লেখা দুটো পড়ে নিন তাহলে অনেক সহজ হবে।
আজ আমরা কথা বলবো
ফ্রিল্যান্সিং কেন ও কিভাবে?
ফ্রিল্যান্সিং শব্দটা শুনলেই আপাতদৃষ্টিতে চোখের ভিতর যে দৃশ্যটি ভেসে ওঠে সেটা অনেকটা এরকম-
একটি ছেলে তার সকল দিন দুনিয়ার কাজকাম ফেলে কম্পিউটারের সামনে বসে আছে, এবং বিনা প্রয়োজনে মাউস এবং কিবোর্ড এ ইচ্ছাকৃতভাবে জোরে জোরে শব্দ করে টাইপিং ও ক্লিক করছে।
সত্যি কথা বলতে আমাদের সমাজ এখনো এই পেশাটিকে বুঝে নিতে পারেনি, এই পেশাটি সম্বন্ধে সঠিক ধারণা অর্জন করতে পারেনি।
কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়েরভবিষ্যত অনেক উজ্জ্বল,
কারন মানুষ দিন দিন পৃথিবীতে বাড়ছে কমছে না।
বাড়ছে তাদের চাহিদা, বাড়ছে তাদের প্রয়োজন ,বাড়ছে ইন্টারনেট ইউজার ওয়েবসাইট ইউজার নানা ধরনের প্লাটফর্মে প্রতিদিন বাড়ছে ।
প্রতিটি প্লাটফর্মে প্রতিদিন হচ্ছে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন উদাহরণস্বরূপ শুধুমাত্র ফেসবুকে প্রতি 1 মিনিটে 5 টি করে নতুন সাইন-আপ হয় আশা করি এবার বুঝতে পারছেন ইন্টারনেট জগত ধীরে ধীরে কত বড় হয়ে উঠেছে আর কত বড় হতে পারে?
আর এই জগতে যত বড় হবে আর এই জগতে যত পরিমাণ মানুষ থাকবে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার জন্য প্রয়োজন পড়বে লক্ষ্য লক্ষ্য ফ্রিল্যান্সারের আর আমরা সেই স্থানটি এখনো দখল করতে পারেনি।
অনেক দুঃখের সাথে বলতে হয় যে ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে অনেক বিদেশি বায়াররা তাদের রিকোয়েস্ট অথবা রিকোয়ারমেন্ট লিখে দেন যেন বাঙ্গালী ইন্ডিয়ান পাকিস্তানি তার কাজটিতে বিড না করে।
এর পিছে কারণ কি?
এর কারণ আমাদের বাঙ্গালীদের স্বভাব,
আমরা সবচাইতে বড় ভুলটা করি কাজ না শিখেই আগে টাকার পিছে ছুটে ।
কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে একটা একাউন্ট রেডি করে সে একাউন্ট থেকে সমানে বায়ারদের কাছে কাজে বিড করতে থাকি বা কাজের জন্য দরপত্র জমা দিতে থাকি।
যদি ভুলক্রমে বা ভাগ্যক্রমে কোন বায়ার আপনাকে একটি কাজ দিও দেয় আমরা অদক্ষ হওয়ার কারণে সে কাজটি সম্পন্ন করার বদলে বরং আরো খারাপ করে দেই ,
ফলে সেই বাইয়ার এটি একটি খারাপ মন্তব্য নেগেটিভ রিভিউ রেখে যায় আপনার জন্য এবং তার মনে থাকে একটি নেগেটিভ ধারণা সম্পূর্ণ দেশটির জন্য
তাই সবাইকে বলব নিজের স্বার্থে দশের স্বার্থে,দেশের স্বার্থে দয়া করে আগে দক্ষতা অর্জন করুন তারপর ফ্রিল্যান্সিং এ নামুন।
শুধু শুধু মারকেটপ্লেস টা নষ্ট করবেন না,
আজকে থেকে বারো তেরো বছর আগে মার্কেটপ্লেস যত সুন্দর ছিল এখন সেরকম নেই এবং সে জন্য একটা সিংহভাগ দোষ আমাদের।
অনেক কঠিন কঠিন কথা বললাম আসুন এবার একটু আশার কথা শুনাই়,
আমার চোখে দেখা সফলতাগুলো, আমার এক ছোট ভাই এবং আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থী শুধুমাত্র 10 দিন অ্যাকাউন্টের বয়সে 145 ডলারের কাজ করে ফেলেছে।
আরেক ছোট ভাই ় বিগত নয় মাসে প্রায় সাত হাজার ডলারের কাজ করেছে।?
আরো একজন ছোট ভাই সে মাত্র দেড় মাসে তেরো টি প্রোজেক্ট কমপ্লিট করেছে তার আর্নিং 250 ডলারের কাছাকাছি।
এবার নিজের কথাই বলি, আমার একটি ফাইবার একাউন্ট যার বয়স কিনা মাত্র এক মাস 18 দিন,আর্নিং 335 ডলার।❤?
তবে তার চাইতে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমার সেই গিগ টি ফাইবার সার্চে ফার্স্ট পেইজে এবং ফার্স্ট রেংকে আছে।?
অর্থাৎ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কোন ব্যক্তি যদি আমার নির্দিষ্ট কি- ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ দেয় তাহলে আমি সর্বপ্রথম তার সামনে এসে দাঁড়াবো।
বলে রাখা ভালো এই রেংকিং টি আমি যখন লিখছিলাম তখন পর্যন্ত বলবৎ আছে।?
যেহেতু একটি সার্চ ইঞ্জিন যে কোন মুহূর্তে পরিসংখ্যান পরিবর্তন হতে পারে।
এবার বলছি ফ্রিল্যান্সিং করবেন তা কিভাবে?
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বর্তমানে প্রায় পাঁচ শতাধিক ক্যাটাগরি পৃথিবীতে আছে তবে সবচাইতে বেশি জনপ্রিয় এবং সবচাইতে বেশি মূল্য যে কাজটির জন্য তা হচ্ছে web-development
বলা হয়ে থাকে একজন ওয়েব ডিজাইনারের সাথে একশজন ওয়েব ডেভেলপার এর প্রয়োজন হয়।?
বুঝতেই পারছেন একজন ওয়েব ডেভেলপার এর কি পরিমান দাম এবং কি পরিমান প্রয়োজন এবং মার্কেট কি পরিমান কাজ ও তার জন্য অপেক্ষা করছে।?
তবে মনে রাখবেন একজন ভাল মানের ওয়েব ডেভেলপার হয়ে উঠতে আপনাকে কমপক্ষে এক থেকে দেড় বছর সময় দিতে হবে এবং দিন শেষে ওয়েব ডেভেলপিং প্রোগ্রামিং বা কোডিং যাই বলেন না কেন তাকে ভালবাসতে হবে যতদিন পর্যন্ত না আপনি এই জিনিস থেকে ভালবাসতে পারছেন ততদিন পর্যন্ত আপনি এই সেক্টরে সফলতা অর্জন করতে পারবেন না
তারপরে আছে ডিজিটাল মার্কেটিং ,
বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রায় 20 থেকে 22 মিলিয়ন ই কমার্স সাইট আছে।
এই 20 থেকে 22 মিলিয়ন ই কমার্স সাইটের জন্য প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হচ্ছে হাজার হাজার ডিজিটাল মার্কেটার,
কারণ এই ওয়েবসাইট গুলোর সাথে জড়িত আছে আরো লক্ষ্য মিলিয়ান ওয়েবসাইট যারা কিনা রিটেল বা ছোট আকৃতিতে ব্যবসা করছে আর তাদের জন্য প্রয়োজন পড়ছে,
আর এই ডিজিটাল মার্কেটিং হতে পারে অন্যতম একটি মাধ্যম টাকা আর্ন করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে।
চতুর বুদ্ধি, তীক্ষ্ণ চিন্তা শক্তি, দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি এসব কিছু সমন্বয় এবং সাথে থাকছে কেস স্টাডি তারপরে আপনি একজন ভালো ডিজিটাল মার্কেটার হতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং গুলোর অনেকগুলো প্লাটফর্ম থাকায় আপনি সেগুলো কে ছোট ছোট করে অর্থাৎ,
✔সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এস এম এম✔সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা এস ই ও
✔কনটেন্ট মার্কেটিং
✔এফিলিয়েট মার্কেটিং
✔ড্রপ শিপিং
ইত্যাদি নানা ভাগে ভাগ করতে পারেন।
আপনি ইচ্ছা করলেই যে কোন একটি অংশ অর্থাৎ শুধুমাত্র এস এম এম দিয়ে শুরু করতে পারেন।?
আমি ব্যক্তিগতভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং বেশ পছন্দ করি এখানে গায়ের খাটুনির চাইতে মেধার খাটুনির বেশি প্রয়োজন হয় বলে।
আমার কাছে জিনিসটা বেশ ভালো লাগে যেকোনো একটি প্লাটফ্রম শিখতে গেলে আপনাকে মোটামুটি মাস তিনেক সময় লাগবে,
কিন্তু যদি আপনি সম্পুর্ন ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই 6 মাস সময় আলাদা করে রাখতে হবে যে 6 মাসের প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে আপনি এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশি সময় দিবেন।?
তারপরে চলে আসতেছি গ্রাফিক্স ডিজাইন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন অনেক বিখ্যাত।
এই প্লাটফর্মে মানুষের ফটো ছবি বা অন্যান্য জিনিস গুলোর রং পরিবর্তন ব্যাকগ্রাউন্ড ,রিমুভ ক্লিপিং পাথ, ব্যানার, ব্রুশিয়ার
কার্ড ফ্লায়ার ফেস্টুন আরো কত কিছু এসব কিছু ডিজাইন করা বা রিটাচ করার ক্ষমতা থাকলে আপনি নিজেকে গ্রাফিক্স ডিজাইনার বলে দাবি করতে পারেন।
তবে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে যত টেকনিক্যাল জ্ঞান জিনিসগুলোর প্রতি জ্ঞান থাকতে হবে তার থেকে বেশি প্রয়োজন হবে ক্রিয়েটিভিটি বা চিন্তা শক্তি।?
আপনাকে কোন রঙের সাথে কোন রঙ টা ভালো গেল কোন ছবির সাথে কোন ব্যাকগ্রাউন্ড টা ভালো দেখাচ্ছে সেই চিন্তা শক্তি করতে হবে মাথায় আর তার রূপ দিতে হবে কম্পিউটারে।?
সফটওয়্যার এর মাধ্যমে দিনশেষে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং নানা ধরনের সফটওয়্যার দখল করে নিচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইনের স্থান টি,
কিন্তু মনে রাখবেন একজন মানুষের চিন্তাশক্তি কখনো একটি রোবট বা সফটওয়্যার নকল করতে পারে না তাই আমরা গ্রাফিক ডিজাইন কে নিয়েও দীর্ঘদিনের চিন্তা করতে পারেন।
গ্রাফিক ডিজাইনিং রপ্ত করতে প্রায় ছয় মাসের মতো লাগবে, ভালো মানের গ্রাফিক ডিজাইনার হতে আপনাকে 6 মাস সময়ের চাইতে বেশি’ সময় দিতে হবে,
প্রায় এক বছরের মতো সময় দিলে আপনি যদি নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং প্র্যাকটিস করে যান তাহলে হয়তোবা আপনি খুব ভালো একটি রেজাল্ট পেতে পারেন এই গ্রাফিক ডিজাইন থেকে।
এছাড়াও আরও নানা ধরনের প্লাটফর্ম ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করার জন্য যেমন কনটেন্ট রাইটিং, এস ই ও, এস এম এম,
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট , ওয়েব রিসার্চ, ই-মেইল মার্কেটিং একাউন্ট হ্যান্ডলিং।
আরো অনেক অনেক অনেক কিছু যা কিনা একদিনে বলে বা লিখে বলা সম্ভব না, তাই বাকি লেখাটুকু হবে কালকে।
কাল আমরা ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ফাইবার নিয়ে কথা বলবো এবং ফাইবারে কিভাবে আর্ন করা যায় সে নিয়ে কিছু গোপন টিপস এবং ট্রিকস শেয়ার করব।
সে পর্যন্ত পাশে থাকবেন সঙ্গে থাকবেন, ধন্যবাদ
Facebook www.facebook.com/mahfuz.inam
apni ki kaj koren vai?
myetherium web er old version ta dorkar