হ্যালো বন্ধুরা আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে দারুন একটি ফোনের রিভিউ নিয়ে এসেছি। ফোন টি এর নাম হলোঃ
Tecno Spark 6 Air
বাংলাদেশে লঞ্চ হয়ে গেলো টেকনোর জনপ্রিয় সিরিজের স্মার্টফোন ‘টেকনো স্পার্ক ৬ এয়ার’ ফোনটি যা একটি লো বাজেটের ফোন। অফিশিয়ালি ফোনটির সেল ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বাজারে। আপনি চাইলেই অফিসিয়ালভাবে এই ফোন টি কিনতে পারেন। ফোন টি এর দাম মাত্র ১২,৪৯০ টাকা।
ডিজাইন
ফোনটি দেখতে বেশ সুন্দর কিন্তু আকারে বেশ বড়। ফোনটির সামনে একটি ডিসপ্লে রয়েছে যেটার স্ক্রিন ৭.০০ ইঞ্চি। যাদের বড় স্ক্রিনের ফোন অনেক পছন্দ তারা ফোনটি কিনে বেশ উপভোগ করতে পারবেন। ফোনটির পিছনের ডিজাইন টেকনো পোউভিয়ার ৪ এবং টেকনো স্পার্ক ৫ প্রো সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। ব্যাকপার্টের ডিজাইনটি বেশ আকর্ষনীয় এবং পুরো ফোনটিই প্লাস্টিক বিল্ডের। এত অল্প বাজেটে গ্লাস বা মেটাল বডির আশা রাখাটাও কিন্তু অনুচিত। ফোনটির পিছনে এলইডি ফ্লাশ এবং সেলফি ক্যামেরা সহ একটি ট্রিপল ক্যামেরা রয়েছে। সেই সাথে হ্যাডফোন জ্যাক,পাওয়ার বাটন,ভলিউম বাটন, সিম কার্ড স্লট,চার্জার স্লটও রয়েছে যা ফোনের অনুচ্ছেদ্য অংশ।
ডিসপ্লে
টেকনো স্পার্ক ৬ এয়ার ফোনটিতে ডিসপ্লে সেকশনে একটি এইচডি প্লাস আইপি এস এলসিডি প্যানেল দেওয়া হয়েছে। ডিসপ্লেটি ৭২০x১৬৪০ পিক্সেল এবং ২৫৬ পিপিআই পিক্সেল ঘনত্বের রেজোলিউশন সহ বিল্ড করা হয়েছে এবং ফোনটিতে আছে ৭.০০-ইঞ্চি টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে। তবে একটা কথা না বললেই না, ফোনটি বাজেট ফোন হওয়া সত্ত্বেও ফোনটিতে আউটডোর ফিজিবিলিটি বেশ ভাল। যেহেতু কোম্পানির মূল টার্গেট ছিল কম মূল্যে বড় ডিস্পলে সেহেতু তারা এ লক্ষ্যে সাকসেসফুল। সব মিলে এই দামে ফোনটির এই ডিসপ্লে আপনাকে হতাশ করবে না বলে আশা করা যায়।
ক্যামেরা পারফরম্যান্স
টেকনোর এ ৬ এয়ার ফোনটিতে রিয়ার ক্যামেরায় একটি ট্রিপল ক্যামেরা সেট আপ দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে এর ফিচারে কিছু বৈশিষ্ট্য এড করা হয়েছে- ডিজিটাল জুম, অটো ফ্ল্যাশ, ফেস সনাক্তকরণ, টাচ ফোকাস ইত্যাদি। এবং সেলফি তোলার জন্য সামনে একটি ৮ মেগাপিক্সেল। ডেলাইট এবং লো লাইট উভয় অবস্থায় এর ক্যামেরা বেশ ভাল পরফর্ম করেছে এর বাজেট অনুযায়ী যা ফোনটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে একটি প্লাস পয়েন্ট এড করে। তবে সার্পনেসের অনেকটাই ঘাটতি রয়েছে যা আমার কাছে বড় কোনো ইস্যু মনে হয়নি।
কর্মক্ষমতা
চিপসেট সেকশনে ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে মিডিয়াটেক হেলিও এ ২২(এমটি ৬৭৬১)প্রসেসর এবং এর ক্লক স্পিড হলো ২.০ গিগাহার্জ। এটি একটি কোয়াড কর প্রসেসর। এটি ২টি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যায়।২/৩ জিবি র্যাম এবং ৩২/৬৪ জিবি। টেকনো স্পার্ক ৬ এয়ার অ্যান্ড্রয়েড ১০ এবং এটি ৫০০০ mAh ব্যাটারি দ্বারা চালিত। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ১০ এর উপর ভিত্তি করে এইচআইওএস ৬.২ চালায় এবং একটি উত্সর্গীকৃত স্লট সহ মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে বাড়ানো যায় এর এক্সটার্নাল স্টোরেজ। এই প্রসেসর দ্বারা আপনারা খুব হেভি আকারে গেমিং করতে পারবেন না। এই ফোনে খুব আরাম করে ফ্রি ফায়ার স্ট্যান্ডার্ড গ্রাফিক্সে খেলতে পারবেন তবে এই ফোনে পাবজি খেলা বেশ কষ্টসাধ্য। কারন,এ ২২ এর প্রসেসরগুলোতে পাবজি খুব ভাল ভাবে এক্সপ্রেস করা যায় না। এই ফোনে বেশ ওভার হিটিং ইস্যু রয়েছে। হেলিও এ ২২ একটি লো রেঞ্জের চিপসেট তাই আপনারা যদি এটি হেভি ইউজ করেন তাইলে এটি বেশ হিট হবে- এটাই স্বাভাবিক। তাই আমার সাজেশন থাকবে এই ফোন দিয়ে হেভি আকারে গেমিং না করার। সিকিউরিটির ক্ষেত্রে ফোনে রিয়ার মাউন্টেড ফিংগারপ্রিন্ট স্ক্যানার এবং ফেস আনলক ব্যবহার করা হয়েছে।
ব্যাটারি
এই ফোনের সবচেয়ে দৃষ্টিকাড়া সাইড হলো এর ব্যাটারি প্যাক। ফোনটিতে দেওয়া হয়েছে বিশাল দানব আকারের একটি ৬০০০mAh এর ব্যাটারি। এই সেম ব্যাটারি সেট আপ টেকনো ব্যবহার করেছিল তাদের পোউভিয়ার ৪ এ। এবং এই ২ টি ফোনের ব্যাটারি ব্যাক আপ ও একই রকম। আপনি হেভি ইউজেও টানা ১১ ঘন্টা অন-স্ক্রিন ব্যাক আপ পাবেন। আর চার্জিং এর ক্ষেত্রে এর বক্সে থাকা চার্জারটি দিয়ে ফুল চার্জ করতে লাগবে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টার মতো।কারন এতে কোনো ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করা হয়নি। এত বড় ব্যাটারি থাকলেও ফোনটি দেখতে বেশ স্লিম তবে ফোনটির ওজন বেশি।
শেষ মন্তব্য
ফোনটির বাজেট দিক গত কোন অভিযোগ ফোনটির সাথে আসলে যায় না। চার্জিং টাইম বেশি লাগার কারন হলো ফোনটি লো বাজেটের হওয়ায় ফোনটিতে ফাস্ট চার্জিং প্রোভাইড করা হয়নি। তবে আপনি যদি গেম আসক্ত হন বা আপনার ফোন কেনার কারন যদি গেমিং হয়ে থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই অন্য কোন অপশন দেখতে হবে। তবে কম বাজেটে সুন্দর ডিজাইন,মারাত্মক ব্যটারি লাইফ,বড় ডিসপ্লে এবং ভাল ক্যামেরা চাইলে এই মূল্যে টেকনো স্পার্ক ৬ এয়ার ফোনটি আপনার জন্য একটি উপহার হতে পারে।
তো বন্ধুরা আশা করছি আজকের পোস্ট টি আপনাদের ভালো লেগেছে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এবং প্রতিদিন এমন নৃত্য নতুন সকল পোস্ট পেতে ভিজিট করতে থাকুন আমাদের এই সাইট