আসসালামু আলাইকুম
আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ২০ হাজার টাকার মধ্য ভালো ক্যামেরার কিছু অফিসিয়াল ফোন। বর্তমানে ২০ হাজার টাকার মধ্য অনেক ফোন পাবেন। কিন্তু কোনটার ক্যামেরা ভালো হবে সেটা নিয়ে অনেকেই টেনশনে থাকেন। তাই আজকে আপনাদের ভালো ক্যামেরার কিছু ফোন সম্পর্কে জানাবো।
আজকের লিস্টের তিনটি ফোন মূলত ক্যামেরার উপর বিবেচনা করে লিস্টে নেওয়া হয়েছে। গেমিং পার্ফর্মেন্স বিবেচনা করা হয় নি। তাই গেমার ভাইদের এই পোস্ট টা স্কিপ করার জন্য বলবো। আসলে এই বাজেটে আপনারা সব কিছু একদম পার্ফেক্ট পাবেন না। ক্যামেরা ভালো হলে গেমিং এর দিকে খারাপ হবে। আবার এই দুইটা ভালো হলে অন্য কোনো দিক খারাপ হবে।
তো যাই হোক, মেইন টপিকে যাওয়া যাক। আমরা নিচে ভালো ক্যামেরার কিছু ফোন সম্পর্কে জেনে নিবো। এখানে ক্যামেরা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা থাকবে। আর ফোনের অন্যান্য স্পেফিসিকশন গুলো শর্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
Tecno spark 10 pro
এই ফোনটি মার্কেটে আপনারা ৪/৬৪ ভ্যারিয়েন্ট ১৩,৫০০ টাকা ও ৮/১২৮ ভ্যারিয়েন্ট ১৬ হাজার টাকার আশেপাশে পেয়ে যাবেন। এই ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে পাওয়া যাবে Mediatek Helio G88. যা মূলত 12nm এর একটি প্রসেসর। এছাড়াও এটাতে এন্ড্রয়েড ভার্সন হিসেবে রয়েছে এন্ড্রয়েড ১৩।
ডিসপ্লে হিসেবে পাবেন ৬.৭৮ ইঞ্চির একটি ফুল এইচডি প্লাস রেজুলেশনের একটি ডিসপ্লে যার ppi density হলো ৩৯৬। এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ৫০০০ mAh এর একটি ব্যাটারি যা সর্বোচ্চ ১৮ ওয়াটের চার্জার দিয়ে চার্জ করা সম্ভব। চার্জিং পোর্ট হিসেবে USB Type-C ব্যবহার করতে পারবেন।
এবার আসা যাক, এর ক্যামেরা সেকশন নিয়ে। এর ব্যাক ক্যামেরা ট্রিপল সেট আপ। যেখানে ৫০ মেগাপিক্সেল এর মেইন ক্যামেরার পাশাপাশি ২ মেগা পিক্সেলের ও ০.৮ মেগাপিক্সেল এর দুটি সেন্সর আছে। মেইন ক্যামেরা দিয়ে প্রোপার লাইটে আপনারা বাজেট বিবেচনায় খুব ভালো ফটোগ্রাফি করতে পারবেন। তবে যদি লাইটের ঘাটতি হয় তাহলে ছবিতে অনেক নয়েজের দেখা যাবেন।
সেইম বাজেটে অন্যান্য ফোনের তুলনায় এই ফোনের ছবির কোয়ালিটি কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছে। প্রোপার লাইটে ভালো রকম শার্পনেস ও ডিটেল পাবেন ছবিতে। প্রোপার লাইট না থাকলে নাইট মোড অন করে নিলে কিছুটা বেটার রেজাল্ট পাবেন। এতে আবার প্রোটেইট মোড আছে, যা দিয়েও ভালো রেজাল্ট পাবেন।
এর সামনের ক্যামেরা হলো ৩২ মেগাপিক্সেলের। এই ক্যামেরাটাও প্রোপার লাইটে আপনাক ভালো ছবি দিবে। আর ছবি কিছুটা ব্রাইট করে তোলে এই ক্যামেরাটি, যা মূলত অনেকের কাছেই ভালো লাগবে। আবার লো লাইটে ছবিকে অনেকটা সফট করে দেয়। এই ফোনের মেইন আকর্ষণ হলো এর ভিডিও গ্র্যাফি।
এই ফোন থেকে সর্বোচ্চ 2k রেজুলেশনে ভিডিও করা সম্ভব। যা মূলত এই বাজেটে অন্য অনেক কম ফোনেই আছে। তার মধ্য থেকে এই ফোনের ভিডিও কোয়ালিটি এগিয়ে থাকবে। তবে ভিডিও করার সময় যদি ফোনকে স্টেডি না রাখতে পারেন, তাহলে ভিডিও অন্যান্য নরমাল ফোনের মতোই হবে। তাই ভিডিও করার সময় ফোনকে ঠিক ঠাক কন্ডিশনে রাখার চেষ্টা করবেন। আর এই ফোনটিতে GCam বা LMC ব্যবহার করতে পারবেন না।
Moto G31
এই ফোনটি মার্কেটে আপনারা ৪/৬৪ ভ্যারিয়েন্ট ১৯,৫০০ টাকা ও ৮/১২৮ ভ্যারিয়েন্ট ২৩ হাজার টাকার আশেপাশে পেয়ে যাবেন। যদিও আগে এই ফোনের দাম কম ছিলো। এছাড়া আন অফিসিয়াল ভাবে কিনতে গেলে কিছুটা দাম কম পড়বে। এই ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে পাওয়া যাবে Mediatek Helio G85. যা মূলত 12nm এর একটি প্রসেসর। এছাড়াও এটাতে এন্ড্রয়েড ভার্সন হিসেবে রয়েছে এন্ড্রয়েড ১১।
ডিসপ্লে হিসেবে পাবেন ৬.৪ ইঞ্চির একটি ফুল এইচডি প্লাস রেজুলেশনের একটি ডিসপ্লে যার ppi density হলো ৪১১। এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ৫০০০ mAh এর একটি ব্যাটারি যা সর্বোচ্চ ১০ ওয়াটের চার্জার দিয়ে চার্জ করা সম্ভব। চার্জিং পোর্ট হিসেবে USB Type-C ব্যবহার করতে পারবেন। আবার এটা কিন্তু ওয়াটারপ্রুভ। তবে এমন না যে পানিতে চুবিয়ে রাখবেন। হাল্কা পানি ডিসপ্লে তে পড়লে, কিংবা ফোন পানিতে পড়ে যাওয়ার পর দ্রুত সেটাকে শুকিয়ে ফেললে তেমন সমস্যা হবে না।
এবার আসা যাক, এর ক্যামেরা সেকশন নিয়ে। এর ব্যাক ক্যামেরা ট্রিপল সেট আপ, যেখানে ৫০ মেগাপিক্সেলের মেইন ক্যামেরার পাশাপাশি ৮ মেগাপিক্সেলের একটি আল্ট্রা ওয়াইড সেন্সর ও ২ মেগাপিক্সেলের একটা ম্যাক্রো সেন্সর রয়েছে। এই রকম বাজেটে যারা ফটোগ্রাফি করতে চান তারা এই ফোনটি চুজ করতে পারেন। এটাতে আবার LMC বা Gcam ও ব্যবহার করতে পারবেন।
এই ফোনটা ম্যাক্সিমাম সময় ন্যাচারাল টাইপের ছবি দিবে আপনাকে। আর প্রোপার লাইট পেলে তো বেশ ভালো ছবিই দিবে। তবে লো লাইটে কিছুটা স্টাগল করবে কিন্তু যদি আপনি কিছুটা সময় নিয়ে ছবি তুলতে পারেন তাহলে আবার বেটার রেজাল্ট দিবে এটা।
আবার ফন্ট ক্যামেরা ৮ মেগাপিক্সেলের। এই ফোনের ফন্ট ক্যামেরার সাথে যদি উপরের ফোনটার তুলনা করি তাহলে ভিন্নতা এক যায়গায় পাবেন, সেটা হলো কালার টোন। এই ফোনটা আপনাকে ন্যাচারাল কালার দিবে, অন্যদিকে Tecno কিছুটা আর্টিফিশিয়াল ভাব আনবে ছবিতে। এতে ভিডিও করা যায় সর্বোচ্চ 1080p তে। যদিও আগের ফোনের থেকে এই ফোনের ভিডিও রেজুলেশন কম তাও এই ফোনের ভিডিও উপরের ফোনের থেকে ভালো লাগবে।
Realme C55
এই ফোনটি মার্কেটে আপনারা ৮/১২৮ ভ্যারিয়েন্ট ২০ হাজা৪ টাকা ও ৮/২৫৬ ভ্যারিয়েন্ট ২৪ হাজার টাকার আশেপাশে পেয়ে যাবেন। এই ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে পাওয়া যাবে Mediatek Helio G88. যা মূলত 12nm এর একটি প্রসেসর। এছাড়াও এটাতে এন্ড্রয়েড ভার্সন হিসেবে রয়েছে এন্ড্রয়েড ১৩।
ডিসপ্লে হিসেবে পাবেন ৬.৬৭ ইঞ্চির একটি আইপিএস এলসিডি প্ল্যানেলের একটি ডিসপ্লে যার ppi density হলো ৩৯২ppi । এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ৫০০০ mAh এর একটি ব্যাটারি যা সর্বোচ্চ ৩৩ ওয়াটের চার্জার দিয়ে চার্জ করা সম্ভব। চার্জিং পোর্ট হিসেবে USB Type-C ব্যবহার করতে পারবেন।
এবার আসা যাক, এর ক্যামেরা সেকশন নিয়ে। এর ব্যাক ক্যামেরার মেইন ক্যামেরাটা বেশ ভালো একটি ক্যামেরা। এই সেইম ক্যামেরা অনেক দামি ফোন গুলোতেও ব্যবহার হতে দেখা গিয়েছে। এই ব্যাক ক্যামেরাতে ডাবল সেট আপ দেখা যাবে। যার মেইন ক্যামেরা ৬৪ মেগা পিক্সেলের ও আরেকটি ২ মেগাপিক্সেল একটি ডেপথ সেন্সর। এর মেইন ক্যামেরা দিয়ে প্রোপার লাইটিং এ উপরের দুইটা ফোনের তুলনায় বেশ ভালো শার্পনেস পাবেন। তবে এটা মটোরোলা ফোনটা থেকে কালারে পিছিয়ে পড়বে। কেননা ঐটা ন্যাচারাল কালার দিলেও এটা কিছুটা কালার ধরে রাখতে হিমসিম খায়।
লাল, সবুজ আর হলুদ কালারের ক্ষেত্রে কিছুটা বুস্টেড কালার দিবে এই ফোন। কিন্তু ওভার অল পুরো ছবিটাকে দেখতে সুন্দর লাগছিলো। আবার এই ফোনের ছবি তোলার সময় কিছুটা জুম করে নিয়েও চালানো যাবে। (বেশি জুম না করে)। আবার শ্যাডো এরিয়াতেও বেশ ভালোই ছবি দিবে এই ফোনটি।
এর ফন্ট ক্যামেরা হলো ৮ মেগাপিক্সেলের। এই ক্যামেরা নিয়ে বেশি কিছু বলবো না, এটাই বলবো যে উপরের দুইটা ফোন থেকে এটা বেশ কিছুটা এগিয়ে থাকবে। আর ভিডিও সর্বোচ্চ 1080p 60fps তে করতে পারবেন। উপরের দুইটা ফোনেই কিন্তু 30fps ছিলো বাট এইটা 60fps সাপোর্টেড। তাই আশা করছি এটায় উপরের দুইটার তুলনায় বেটার ভিডিও রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব। এই ফোনেও LMC বা Gcam ব্যবহার করতে পারবেন।
শেষ কথা
আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই। আশা করি সকলের ভালো লাগবে। কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে তা ধরিয়ে দিবেন। আমি পরবর্তীতে সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করবো। আল্লাহ হাফেজ।