Site icon Trickbd.com

XIAOMI MI A3 – বাজেটের মধ্যে একটা অবিশ্বাস্য সেরা ক্যামেরা ফোনের রিভিউ + সাথে থাকছে ওয়েব ডিজাইনার শেখার আগ্রহীদের জন্য দারুন অফার!!!! (বিস্তারিত পোস্টে)

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম


কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছি।

টাইটেল দেখে বুঝে গিয়েছেন আজকের টপিকের বিষয়বস্তু কি! আশা করি সহজে বুঝাতে পারবো। ভালো লাগলে লাইক / কমেন্ট করবেন। এতে একটু হলেও পোস্ট লেখার মতো এনকারেজের জোগান পাই।
অন্য দিকে যদি পোস্ট খারাপ লাগে, ইগনোর করবেন।
হয়তো আপনার খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু অন্যের তোহ ঠিকই উপকার হলো। তাই না??

যাক কথা না বাড়িয়ে চলুন সরাসরি টপিকে চলে যায়!

নেকের প্রশ্ন, “ভাই বর্তমান বাজারের কম দামের সেরা ক্যামেরা এবং পারফরম্যান্সের ফোন কোনটা??”

ঠিক তাদের জন্যই এই পোস্ট।

Xiaomi Mi A3 ফোনের হাত ধরে বাংলাদেশে মিডরেঞ্জ বাজারে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে শাওমি। Mi A সিরিজের অধীনে গত কয়েক বছরে ভারতে একাধিক অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে বেজিং এর কোম্পানিটি । এই ফোনগুলিতে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের উপরে শাওমি-র, MiUi স্কিন এর পরিবর্তে স্টক অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম দেখা যায়। Mi A1 ফোনের দুর্দান্ত সাফল্যের পরে গত বছর লঞ্চ হওয়া Mi A2 ফোনও বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল গোটা দেশে। মিডরেঞ্জের মধ্যে Mi A2 ফোনে সেরা ক্যামেরা থাকলেও এই ফোনে ছিল তুলনামুলক ছোট ৩,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। এছাড়াও সেই ফোনে ছিল না ৩.৫ মিমি হেডফোন জ্যাক আর কোন এক্সপ্যান্ডেবেল স্টোরেজ। সম্প্রতি বাজারে এসেছে এই সিরিজের লেটেস্ট স্মার্টফোন Mi A3.।

মিডরেঞ্জ সেগমেন্টে কতটা দাগ কাটতে পারবে এই ফোন? জানার জন্য Mi A3 সেটটি রিভিউ করলাম আমি। এখানে জানিয়ে রাখতে চাই যে, আমি নিজেও Mi A3 (৪/৬৪ ভেরিয়েন্টের মোর দ্যান হোয়াইট) সেটটি ব্যবহার করি, এবং আলহামদুলিল্লাহ পুরোপুরি স্যাটিসফাইড।

Design:
Mi A3 ফোনের সামনে, পিছনে এবং ক্যামেরাতে থাকছে গ্লাস ফিনিশিং। ফোনের দুই দিকেই এবং ক্যামেরাতে থাকছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫ এর প্রটেকশন। ফোনের ডিসপ্লের উপরে রয়েছে ডিউড্রপ নচ। এই ফোনে ডিসপ্লের দুই পাশে পাতলা বেজেল থাকলেও উপরে ও নীচে থাকছে তুলনামুলক চওড়া বেজেল।

তিনটি রঙে পাওয়া যাবে এই স্মার্টফোন। কালার গুলোর নামও সুন্দর। কাইন্ড অফ গ্রে, মোর দ্যান হোয়াইট এবং নট জাস্ট ব্লু। ফোনের উপরে রয়েছে একটি ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক একটি সেকেন্ডারি মাইক্রোফোন আর একটি আইআর ব্লাস্টার। যার সাহায্যে আপনি চাইলে ঘরের টিভি, এসি, প্রজেক্টর ইত্যাদি ডিভাইসগুলো ফুললি কন্ট্রোল করতে পারবেন।



ফোনের নিচে রয়েছে ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট, দুটি স্পিকার গ্রিল। ফোনের ডান দিকে রয়েছে ভলিউম রকার আর পাওয়ার বাটন। আর বাঁ দিকে রয়েছে হাইব্রিড সিম ট্রে।

Specifications & Software:
ফোনটি স্টক অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলবে। এই ফোনে রয়েছে ৬.০৮ ইঞ্চি এইচডি+ সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে। ফোনের চিপসেট হিসেবে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৬৬৫ চিপসেট। সাথে থাকছে দুই ভেরিয়েন্ট, ৪ জিবি র‍্যাম এবং ৬৪ / ১২৮ জিবি রম আর ৬ জিবি র‍্যাম এবং ১২৮জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ। ফোনে ইউএফএস ২.১ স্টোরেজ ব্যবহার করেছে শাওমি। যদিও ৬ জিবি র‍্যাম এবং ১২৮ জিবি রমের ভেরিয়েন্টটি বাংলাদেশে আসেনি, এটি মূলত ইন্ডিয়ার জন্য উন্মোচিত করেছে শাওমি।

ফোনের পিছনে ট্রিপল ক্যামেরায় থাকছে ৪৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর। সাথে থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরা আর ২ মেগাপিক্সেল ডেপ্ট সেন্সর। সেলফি তোলার জন্য এই ফোনের ফন্টে থাকছে ৩২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।

Mi A3 ফোনে থাকছে একটি ৪,০৩০ MAh ব্যাটারি। সাথে থাকছে ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং। কানেক্টিভিটির জন্য এই ফোনে থাকছে এনএফসি, ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক, ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট, ব্লুটুথ ভি৫ ওয়াই-ফাই ৮০২.১১ এ/বি/জি/এন/এসি। এই ফোনে ডিসপ্লের নীচে থাকছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। থাকছে ফেস আনলক, গেম টার্বো ফিচার। ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা হওয়ায় স্বল্প আলোতেও ভালো ভাবেই ফেস ডিটেক্ট করে আনলক করতে পারে ফোনটি। আর ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি মূলত ইন-ডিসপ্লে ৭ম জেনারেশনের সেন্সর।

Performance & Battery Life:
রিভিউ করার সময় Mi A3 ফোনে কোন রকম ল্যাগ পাইনি আমি।। প্রয়োজনীয় সকল কাজ খুবই স্মুথলি করতে পেরেছে এই স্মার্টফোনটি। এই ফোনের স্ন্যাপড্রাগন ৬৬৫ চিপসেটে মাল্টিটাস্কিং করতে কোন অসুবিধা হয়নি। কোন সমস্যা ছাড়াও সহজে যে কোন অ্যাপ লোড হয়েছে।

আনতুতু বেঞ্চমার্কিং এ ১৪১,১৩২ পয়েন্ট পেয়েছে Xiaomi Mi A3 । গিকবেঞ্চ সিঙ্গেল কোর ও মাল্টিকোরে Mi A3 যথাক্রমে ১,৫০৪ আর ৫,৩৮৬ পয়েন্ট পেয়েছে।

পাবজি মোবাইল খেলার সময় ফোনে কোনপ্রকার ল্যাগিং সমস্যা হচ্ছিলো না। বিভিন্ন রিভিউতে দেখেছি ফোন একটু হিট করে গেইম খেললে, কিন্তু আমি COD /Asphalt 9 এবং পাবজি মোবাইল খেলে তেমন একটা গরম অনুভব করিনি। আমার কাছে ভালোই লেগেছে। ব্যাটারিও তেমন খরচ করেনি। ১ ঘন্টা গেইম খেলে দেখলাম মাত্র ১৮% চার্জ খরচ করেছে ফোনটি।

রোজকার ব্যবহারে এই ফোনে প্রায় দেড় দিন ব্যাটারি ব্যাক আপ পাওয়া গিয়েছে। ফোনের সাথে দেওয়া ১০ ওয়াটের চার্জারে ৩০ মিনিটে এই ফোনের ব্যাটারি ৩৪% চার্জ হয়েছে। যদিও একটি ১৮ ওয়াটের চার্জার কিনে নিলে জলদি চার্জ করে নেওয়া যাবে। এক রিভিউতে দেখেছি মাত্র ৩০ মিনিটে ৬০% চার্জ হয় ১৮ ওয়াটের চার্জারে।

এইবার আসি ক্যামেরা প্রসঙ্গেঃ
১৫০০০ টাকা (আন-অফিসিয়াল) দামের এই ফোনে আপনি যে ক্যামেরাটি পাচ্ছেন, তাতে আপনার মনে হবে আপনার টাকাগুলো আপনি জলে ফেলে দেননি বরং ডাবল করে নিয়েছেন। ? ফোনের পিছনে রয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেল সনি আইএমএক্স ৫৮৬ প্রাইমারি সেন্সর। এর সাথে রয়েছে একটি ৮ মেগাপিক্সেল ১১৮ ডিগ্রি ফিল্ড অফ ভিউ এর আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরা আর একটি ২ মেগাপিক্সেল ডেপ্ট সেন্সর। ওয়ানপ্লাস ৭ আর রেডমি কে২০ প্রো ফোনের প্রাইমারি ক্যামেরাতে একই সনি আইএমএক্স ৫৮৬ প্রাইমারি সেন্সর ব্যবহার হয়েছে।



আর অন্যান্য অপশন হিসেবে থাকছে পোট্রেট, প্যানোরামা, নাইট আর প্রো মোড এবং স্লো মোশন ভিডিও রেকর্ড করার অপশন। এর সাথে থাকছে ফটো ও ভিডিও মোড। এছাড়াও থাকছে একটি আলাদা ৪৮ মেগাপিক্সেল মোড। এই মোডে ফুল রেজোলিউশন ছবি তোলা যাবে।

এই ফোনের ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরাতেও ভালো ডিটেল পাওয়া যাবে। বিউটি মোডে ছবি সফট হবে। পোট্রেট মোডে থাকছে ভালো এজ ডিটেকশন। কম আলোতেও এই ফোনের ক্যামেরা উজ্জ্বল ছবি তুলতে পারবে। যে কারণে আগে যেটা বলেছিলাম, ফেস ডিটেক্ট করে স্বল্প আলোতেও ফেস লক খুলতে পারবেন সহজেই।

ফোনের পিছনের ক্যামেরা দিয়ে ৪কে আর সেলফি ক্যামেরা দিয়ে ১০৮০ পিক্সেল ভিডিও রেকর্ড করা যাবে। রিয়ার ক্যামেরায় ১০৮০ পিক্সেল মোডে স্টেবিলাইজেশন ব্যবহার করা যাবে। রিয়ার ক্যামেরা দিয়ে স্লো মোশন ভিডিও খুব ভালো আসে।

মতামতঃ
Mi A3 ফোনে ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক আর আর মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট ফিরিয়ে এনেছে শাওমি। যদিও ডিসপ্লে রেজোলিউশন এফএইচডি+ থেকে কমে এইচডি+ হয়েছে। ফোনের ভিতরে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৬৬৫ প্রসেসর। রোজকার কাজে বেশ সক্ষম এবং শক্তিশালী এই প্রসেসর। দামের প্রতি যথেষ্ট সুবিচার করেছে এই স্মার্টফোন। ৪জিবি র‍্যাম + ৬৪জিবি স্টোরেজে Mi A3 ফোনটির দাম ২২,৯৯৯ টাকা (আনঅফিসিয়ালঃ ১৫০০০ টাকা) । ৪ জিবি র‍্যাম + ১২৮জিবি স্টোরেজে কিনতে ২৪,৯৯৯ টাকা খরচ হবে (আনঅফিসিয়ালঃ ১৭৫০০ টাকা) ।

যদি বলতে বলেন আপনার পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স থেকে ফোনটি কেমন, তাহলে নির্দ্বিধায় বলবো… আলহামদুলিল্লাহ নিজের টাকা ডাবল করে নিয়েছি।

#বিঃদ্রঃ আমি আনঅফিসিয়ালি কিনেছি ১৫৫০০ টাকা দিয়ে। যদিও এখন ১৫০০০ টাকায় পেয়ে যাবেন ৪/৬৪ ভেরিয়েন্ট এর ফোনটি। আমার মনে হয় শুধু শুধু অফিসিয়াল কিনতে চেয়ে এত্তো টাকা খরচ করার কোনো মানে হয়না। অফিসিয়াল এবং নন-অফিসিয়ালের পার্থক্য একটায়, আর তা হলো আপনি অফিসিয়ালে অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি পাবেন আর নন অফিসিয়ালে তা পাচ্ছেন না। আমার মনে হয় শুধু শুধু ওয়ারেন্টির জন্য ৮০০০ টাকা বাড়তি খরচের কোনো মানেই হয় না। তারপরও যদি খরচ করতে চান, তবে তা আপনার একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার। ২য়ত, আমি পুরো পোস্টে আমার পার্সোনাল অপিনিউন পেশ করেছি, সুতরাং, কারো খারাপ লেগে থাকলে দুঃখিত।

প্রমোশনাল সেকশনঃ
ওয়েব ডিজাইন আগ্রহীদের অফারটি দেখতে এখানে ভিজিট করুন


#নোটঃ ট্রিকবিডির টার্ম অনুসরণ করতে গিয়ে ওয়েব আগ্রহীদের পোস্টটি এখানে দেওয়া সম্ভব হয়নি। যেহেতু ওয়েবসাইট লিংক পোস্ট শেষে শেয়ার অনুমোদন আছে, সেক্ষেত্রে পোস্টটি আমার সাইটে পোস্ট করে এখানে প্রমোশনাল সেকশনে লিংক দিয়ে দিলাম। যারা আগ্রহী তারা দয়া করে দেখে নিবেন।


ধন্যবাদ।