হ্যালো বন্ধুরা আমি ইয়াশ আছি আপনাদের সঙ্গে এবং আজকে আমরা কথা বলবো বাজেট একটি স্মার্টফোন নিয়ে।
কথা বলছিলাম symphony z28 কে নিয়ে পোস্টের শুরুতেই একটি বিষয় জানিয়ে রাখি এই ফোনটি কিন্তু বেসিক্যালি symphony z30 এর কপি বলা চলে তবে বিশেষ কিছু চেঞ্জেস থাকছে।
চলুন সেই সব নিয়ে কথা বলা যাক আজকের পোষ্টের মাধ্যমে।
শুরুতেই বলে দিই ফোনটি পাওয়া যাবে একটি ভেরিয়েন্ট ৩জিবি র্যাম এবং ৩২ জিবি ইন্টার্নাল এ আর এই ফোনের প্রাইস ৮,৯৯০ টাকা মানে ৯,০০০ টাকা।
আমার মনে হয়েছে এর ৩ গিগাবাইট র্যাম এই ফোনের কি সিলিং পয়েন্ট কারণ ৯,০০০ টাকার ফোনে সচরাচর ৩ গিগাবাইট র্যাম দেখা যায় না।
ত বিল্ড এর দিক থেকে এটিও একটি প্লাস্টিক বিল্ট ফোন, তবে z৩০ এর সাথে এর side-by-side কম্পেয়ার করে দেখলে এই ফোনটি কে একদমই প্রিমিয়াম টাইপের মনে হয়নি।
এর রেয়ার এ থাকছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার যেটা মোটামুটি ফাস্ট এন্ড একুরেট ছিল, আর তার সঙ্গে ফেস আনলক এর মত ফিচার ও থাকছে। যা দিনের বেলায় বেশ ভালোই কাজ করে।
ডানদিকে থাকছে পাওয়ার বাটন ভলিউম রকার বামদিকে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি, ট্রিপল স্লট এর সিম কার্ড ট্রে, যাতে দুইটি সিমকার্ড প্লাস একটি মাইক্রো এইচডি কার্ড ব্যবহার করা যায় ১২৮ জিবি পর্যন্ত।
নিচের দিকে থাকছে মাইক্রোইউএসবি চার্জিং পোর্ট মাইক্রোফোন এবং স্পিকার, যার সাউন্ড কোয়ালিটি ছিল ঠিকঠাক ইনডোরে বেশ লাউড লাগে তবে আউটডোরে এর সাউন্ড টা কিছুটা কম মনে হয়েছে আমার কাছে।
এর উপরে থাকছে একটি ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক এবং ভালো ব্যাপার হচ্ছে এই ফোনে থাকছে একটি আকর্ষণীয় নোটিফিকেশন লাইট।
ডিসপ্লে হিসেবে symphony z28 এ থাকছে একটি ৬.৫ ইঞ্চির এইচডি প্লাস প্যানেল যার পিপিআই ডেনসিটি ২৭০ তাই এটি খুব ভালো মানের কিংবা খুব খারাপ মানেরও নাই মোটামুটি এভারেজ একটি ডিসপ্লে।
তবে প্রাইস বিবেচনায় ডিসপ্লেটি সবার সেরা মনে হয়েছে এখনো পর্যন্ত।
অনেকক্ষণ ঘাটাঘাটি করার পরেও বুঝতে পারলাম না আসলে ডিসপ্লে তে কি ধরনের গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে, তবে এটা ধরে নেয়া যায় এতে কোনো গরিলা গ্লাস প্রটেকশন থাকছে না।
আর ডিসপ্লের উপরের দিকে থাকছে একটি ছোটখাটো নস !
শুরুতেই জানিয়েছিলাম symphony z28 এর ৩ গিগাবাইট র্যাম থাকছে এবং সেটা অবশ্যই একটি প্লাস পয়েন্ট এর সঙ্গে থাকছে ৩২ গিগাবাইটের স্টোরেজঃ। তবে সত্য বলতে ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ এখন খুবই কমই বললে চলে।
তো এসব ফোনের ক্ষেত্রে একদম বেশি বেশি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করাই ভালো কারণ স্টোরেজঃ ফুরিয়ে ফেললে এর পারফর্মেন্স ও ধীরে ধীরে ডাউন হতে থাকবে। ভালো প্র্যাকটিস হবে মাল্টিমিডিয়া গুলো এর এইচডি কার্ডে ট্রান্সফার করে রাখলে!
প্রসেসর হিসেবেও এতে পাওয়ারফুল কিছু থাকছে না, এটি একদমই এন্ট্রি লেভেলের চিপসেট যাতে 1.8 গিগাহার্জ এর অক্টা কোর প্রসেসর থাকবে এবং জিপিইউ হিসেবে থাকছে powerVr 8320 GPU
আমার এক্সপেরিয়েন্স এ ডে টুডে ইউজে এর পারফর্মেন্স বেশ ভালই মনে হয়েছে, লাইট ইউজাররা এতে বেশ ভালো এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। তবে অতিরিক্ত অ্যাপস ব্যাকগ্রাউন্ড এ চালু থাকলে কিছুটা লেগ এর দেখা পাবেন।
যেহেতু এটি একটি এন্ট্রি লেভেলের ফোন তাই কল করা ছবি তোলা ব্রাউজিং বা ভিডিও দেখার জন্য এই ডিভাইস টি একদম পারফেক্ট।
ছোটখাটো গেম প্লে করা যাবে তবে ভারী গেম গুলো প্লে করার ক্ষেত্রে কিছুটা গরম হয়ে যাবে।
আমি এতে পাবজি প্লে করেছিলাম মিডিয়াম গ্রাফিক্সে এক্সপেরিয়েন্স সাধারণভাবে খুবই ভালো ছিল না আবার একেবারে খারাপ ও ছিল না। এটলিস্ট প্লে করতে পারবেন গেমগুলো সত্যি বলতে ৯ হাজার টাকার ফোনে এর থেকে বেশি আশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।
অন্যদিকে symphony z28 এর প্রাইস বিবেচনায় পারফরম্যান্স বেশ ভালই বলা যায়, এতে স্টক এর কাছাকাছি একটি os থাকায় এতে বেশ ক্লিন এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১০ বেস্ট ইউ আই।
ফোনটিতে ভোল্টি সাপোর্ট থাকায় কল কোয়ালিটি বেশ ভালো ছিল এবং আমার এরিয়াতে নেটওয়ার্ক নিয়ে কোনো রকম কোনো ইস্যু আমি পাইনি।
ভাল বিষয় হলো এতে ডার্ক মোড প্লাস থাকছে এফএম রেডিও।
ব্যাটারি হিসেবে এই ফোনে থাকছে ৪,০০০ মিলি এম্পিয়ার এর ব্যাটারি যেটা z৩০ এর তুলনায় ওয়ান থাউজেন মিলি এম্পিয়ার কম।
আমার কাছে যদি এটি বিগ ডিল ছিল না কারণ z28 এ আমি বেশ ভালই ব্যাটারি ব্যাকআপ পেয়েছে এতে স্ট্যান্ডবাই টাইম ছিল অসাধারণ।
রেগুলার ইউজ এ আমি প্রায় দুই দিনের মতো ব্যাটারি ব্যাকআপ পেয়েছি, আর হেবি ইউজেও এতে এক দিনের মতো ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যাবে।
আর চার্জিং এর জন্য এর বক্সে থাকছে একটি ১০ ওয়ার্ড এর চার্জার যা দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগে ফোনটি ফুল চার্জ করতে।
এবার ক্যামেরা নিয়ে কথা বলা যাক, ক্যামেরার ক্ষেত্রেও Z28 এ Z30 এর ই সেটাপ থাকছে মানে রেয়ার এ থাকছে ১৩ মেগাপিক্সেলের মেইন সেন্সর, ৫ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড, টু মেগাপিক্সেল ডিপ সেন্সর এবং ফ্রন্ট এ থাকছে একটি ৮ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা।
সেম ক্যামেরা সেটআপ থাকাই এতেও z30 এর মতোই কালারফুল ছবি পাবেন, দিনের আলোতে বেশ ভালই ডিটেল পাওয়া যায় ছবির ক্লিয়ারিটি ও বেশ বেটার থাকে। তবে এর উইটনেস হচ্ছে এর ডায়নামিক রেনস যেটা z৩০ এর রিভিউতে ও বলেছিলাম যদিও ওভারঅল ডেলাইট এর ক্যামেরা এই বাজেট সেগমেন্টে ওয়ান অফ দা বেস্ট ক্যামেরা।
লো লাইট এর ক্ষেত্রে এতে আমি খুব একটা বেটার ছবি পাইনি, এতে নাইট মুড নামের একটি অপশন আসে যদিও সেটা রিয়েল লাইফে খুব একটা কাজের ছিল না।
অন্যদিকে এর ৮ মেগাপিক্সেল এর সেলফি ক্যামেরা ও দিনের আলোতে বেশ ভালই ছবি ক্যাপচার করে, ডিটেল বেশ ভালো পাওয়া যায়।
তবে লো লাইট এ এটিও গ্রেনি সফট ছবি প্রডিউস করেছে।
আর ভিডিওর খেত্রে symphony z28 এ থাকছে 1080p -30fps অপশন! রিয়ার এবং ফ্রন্ট দুটি ক্যামেরায় ফুল এইচডি অপশন থাকছে। আর ভিডিও কোয়ালিটি ছিল মোটামুটি ভালো মানের ই।
তো নয় হাজার টাকা বাজেট সেগমেন্টে symphony z28 আমার কাছে বেশ ভাল অপশন মনে হয়েছে! স্পেশালি এর যদি ৩ গিগাবাইট র্যাম এর কথা বলি, তবে আমার মনে হয় প্রসেসর এর ক্ষেত্রে এতে আপডেট আনা উচিত।
আজকের পোস্টটি এখানে শেষ করতে হচ্ছে symphony z28 কে নিয়ে আপনার মতামত লিখে ফেলুন কমেন্ট বক্সে।
সবাই ভাল থাকুন আল্লাহ হাফেজ।