হ্যালো বন্ধুরা, আজ আমরা কথা বলব রিয়েলমি নারজো সিরিজের নতুন ফোন নারজো ৩০ এ সম্পর্কে। একে একে জেনে নিব ফোনটির ভালো মন্দ সহ সকল উল্লেখযোগ্য ফিচার সম্পর্কে।
বরাবরের মতো প্রথমেই এক নজরে ফোনটির হাইলাইটেড ফিচারগুলো দেখে নিব। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে হেলিও জি ৮৫ গেমিং প্রসেসর, ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি রম, এইচডি প্লাস ডিসপ্লে, ৬০০০ মিলি এম্পিয়ারের মেগা ব্যাটারি, ফোনটির সাথে থাকছে ১৮ ওয়াটের কুইক চার্জার, পিছনে থাকছে ১৩ মেগা পিক্সেলের এআই ডুয়াল ক্যামেরা আর এই ফোনটির বর্তমান বাজার মূল্য মাত্র ১২৯৯০ টাকা।
তো চলুন ডিজাইন ও বিল্ড ম্যাটেরিয়াল নিয়ে কথা বলি। ডিজাইনের মধ্যে আমার কাছে সব থেকে ভালো লেগেছে পিছনের ৩ডি ডিজাইনটা। দেখতে উঁচু-নিচু মনে হলেও ফিনিশিং একদমই প্লেইন। পিছনে হালকা টেক্সচার রয়েছে যার কারণে স্ক্রাচ পড়ার সম্ভাবনা কিছুটা কম। তাই অনায়াসেই ব্যাকপার্ট ছাড়া ইউজ করা যাবে।
সামনে ৬.৫ ইঞ্চির ডিসপ্লে এবং ৮ মেগাপিক্সেল এর সেলফি ক্যামেরা, পিছনে ডুয়াল ক্যামেরা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, ডানের পাওয়ার বাটন এবং ভলিউম ব্রেকার, বামে ট্রিপল স্লট যাতে দুটি ন্যানো সিম কার্ড সহ একটি মাইক্রো এসডি কার্ড ইউজ করা যাবে, এছাড়াও নীচে রয়েছে ৩.৫ এম এম হেডফোন জ্যাক, ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট (যা এই বাজেটে রিয়ার) এবং স্পিকার।
ফোনটির ওয়েট ২০৫ থেকে ২০৭ গ্রামের মতো। আর এর থিকনেস ৯.৮ মিলিমিটার। ওভারঅল বাজেটে পছন্দসই ডিজাইন প্রোভাইড করার চেষ্টা করেছেন রিয়েলমি। লেজার ব্ল্যাক ও লেজার ব্লু এই দুটি কালারে পাওয়া যাচ্ছে এই ফোনটি।
এবার জাম্প করব ফোনটির ডিসপ্লে সেকশনে। এই ফোনটিতে ডিসপ্লে হিসেবে পাচ্ছেন ৬.৫ ইঞ্চির মিনি ড্রপ ফুলস্ক্রিন ৭২০*১৬০০ পিক্সেলের এইচডি প্লাস ডিসপ্লে। কালার রেজুলেশন কম হওয়ায় মাঝে মাঝে সার্পনেছের ঘাটতি মনে হতে পারে। ব্রাইটনেস নিয়ে তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। এর টাচ রেসপন্স ও মোটামুটি ভালো ছিল।
এবার কথা বলব ফোনটির সব চেয়ে বড় আকর্ষণ এর পার্ফমেন্স নিয়ে। ফোনটি মূলত গেমারদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা। তাই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে হেলিও জি ৮৫ গেমিং প্রসেসর। এবং ৪ জিবি র্যাম ৬৪ জিবি ইন্টার্নাল স্টোরেজ। অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১০। তাই কোন হ্যাং অথবা ল্যাক ছাড়াই অনেক সময় ধরে ইউজ করতে পারবেন।
যদি আমরা গেমিংয়ের কথা বলি তাহলে এই ফোনটিতে পাবজি আল্ট্রা ফ্রেম ও হাই গ্রফিকসে স্মুথলি খেলতে পারবেন। পাবজির বাইরে ফ্রী ফায়ার অথবা এ জাতীয় অন্যান্য গেম গুলোতেও বেশ ভালো পারফর্মেন্স পাবেন।
তো চলুন বন্ধুরা ফোনটির ক্যামেরা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। সাধারনত গেমিং ফোন গুলোর ক্যামেরা বেশি একটা ভালো হয় না। এর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। ব্যাক সাইট ইউজ করা হয়েছে এ আই ডুয়েল ক্যামেরা সেটআপ যার প্রাইমারি ক্যামেরা ১৩ মেগাপিক্সেলের।
ফটো কোয়ালিটি অন্যান্য লো-বাজেট ফোনের মত। পর্যাপ্ত লাইট ছাড়া ভালো ফটো পাওয়া যায় না। লো-লাইটে কালার অনেকটা ডিফারেন্ট মনে হয়। এছাড়াও পোর্টেড মোডে তোলা ফটো গুলো পার্সোনাল্লি আমার পছন্দ হয়নি। প্রাইমারী ক্যামেরা দিয়ে প্রপার লাইটে তোলা ফটো গুলো এভারেজ সোশ্যাল মিডিয়া রেডি।
তাই আপনি যদি গেমিং এর পাশাপাশি ফটো তুলতে পছন্দ করেন তাহলে আপনাকে অন্য কোন ফোন খুজতে হবে। কারণ এই ফোনটি গেমিংয়ের জন্য ভালো পার্ফম করলেও ক্যামেরার দিক থেকে বেশি একটা ভালো হবে না।
এ পর্যায়ে আলোচনা করব ফোনটির অন্যতম বড় আকর্ষণ এর মেগা ব্যাটারি নিয়ে। রিয়েলমি তাদের এই ফোনটিতে দিয়েছে ৬০০০ মিলি এম্পিয়ার লিথিয়াম পলিমার নন রিমুভাল ব্যাটারি। এবং ১৮ ওয়াটের কুইক চার্জার।
আশা করি এই ব্যাটারিটি দিয়ে অনায়াসেই সাধারণ ইউজাররা দুই দিনের মত ব্যাকআপ পেয়ে যাবেন। যদি আপনি খুব ভারী ভাবেও ইউজ করেন তাহলে একদিনের মত ব্যাকআপ পাবেন।
আমার পার্সোনাল মতামত হল আপনি যদি একজন গেমার হন এবং কম বাজেটে ভালো একটি গেমিং ফোন কিনতে চান। তাহলে আপনার জন্য নারজো ৩০ এ ফোনটি বাজেটে পারফেক্ট। গেমিং এর পাশাপাশি ডে টু ডে লাইফে ফোনটি বেশ ভাল পারফর্ম করবে।
তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আমার ইউটিউব চ্যানেল পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন।