ইউএসবি টেথারিং
ইন্টারনেট সংযোগ চালু
প্রথমে অবশ্যই আপনার মোবাইল সেটে ইন্টারনেট চালু থাকতে হবে। এটি পরীক্ষা করার জন্য মোবাইলের ব্রাউজার থেকে কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। যদি ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যায়, তবেই কেবল আপনি তা শেয়ার করতে পারবেন। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ কনফিগার করার পদ্ধতি জানতে এই পোস্টটি দেখুন।
ডেটা ক্যাবল কানেকশন
ইউএসবি ডেটা ক্যাবলটি কম্পিউটার ও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সঙ্গে সংযোগ দিন। সাধারণত ইউএসবি ডিভাইস সংযোগ দেয়ার পর মেমোরি কার্ডটি স্টোরেজ হিসেবে কানেক্ট হয়ে থাকে। যদিও এতে আপনার কাজে সমস্যা হবে না, কিন্তু ভালো হয় মেমোরি কার্ডটি পিসি থেকে Safely remove করে ফেললে। অর্থাৎ, টাস্কবার থেকে ইউএসবি আইকনে রাইট ক্লিক করে মেমোরি স্টোরেজটি সেফলি রিমুভ করার কমান্ড দিন। এটা পেনড্রাইভ খুলে ফেলার আগে সতর্কতার জন্য যা করা হয় ঠিক তাই।
ইউএসবি টেথারিং
এবার হচ্ছে আসল কাজ। আপনার ডিভাইসের সেটিংস-এ যান। সাধারণত হোমস্ক্রিন থেকে মেনু বাটনে প্রেস করলে সেটিংস অপশনটি আসে। এবার সেটিংস থেকে Wireless & networks -> Tethering & portable hotspot এ ক্লিক করুন।
ইউএসবি ক্যাবল সংযোগ করার পর ইউএসবি টেথারিং চালু করা হয়েছে। ফলে ফোনটির ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করা যাচ্ছে কম্পিউটার থেকেই।
এই আইকনটি আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার কম্পিউটার ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যাবে। আর কোনো বাড়তি সেটিংসের ঝামেলা ছাড়াই কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করে উইন্ডোজ ৭ এবং লিনাক্সমিন্ট ১২ এই দুই অপারেটিং সিস্টেমে কোনো বাড়তি সেটিংস বা কনফিগার করা ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহার করা গেছে। উল্লেখ্য, টেথারিং করার সময় কম্পিউটারের অন্যান্য ইন্টারনেট সংযোগ (যেমন ইউএসবি মডেম বা ল্যান ইন্টারনেট) বন্ধ রাখা হয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েডে ওয়াই-ফাই হটস্পট
এর আগে কখনও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসকে ওয়াই-ফাই হটস্পট হিসেবে ব্যবহার না করা হলে প্রথমবার Port. Wi-Fi hotspot settings-এ যেতে হবে। এখান থেকে আপনি আপনার হটস্পটের নাম, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি সেটিংস ঠিক করে নিতে পারবেন। উল্লেখ্য, সাধারণ অবস্থায় ওয়াই-ফাই হটস্পট উন্মুক্ত অবস্থায় থাকে। অর্থাৎ, আপনার ডিভাইসে ইন্টারনেট চালু থাকা অবস্থায় যদি এই স্ক্রিনে Portable Wi-Fi hotspot চেকবক্সে টিক দিয়ে দেন, তাহলেই ওয়াই-ফাই কানেকশন পেয়ে যাবে আপনার ল্যাপটপ, অন্যান্য স্মার্টফোন কিংবা ওয়াই-ফাই কার্ড সংযুক্ত কম্পিউটার।
কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার হটস্পটটি হবে ওপেন। অর্থাৎ, আপনার এলাকায় অন্যরাও কোনো পাসওয়ার্ড ছাড়াই এই হটস্পটে কানেক্ট হতে পারবেন। ফলে, আপনার ফোনের ব্যান্ডউইথ চুরি হতে থাকবে। তাই ওয়াই-ফাই হটস্পট চালু করার আগে অবশ্যই তাতে পাসওয়ার্ড দিয়ে নেবেন। আর পাসওয়ার্ড দেয়ার জন্য Port. Wi-Fi hotspot settings -> Configure Wi-Fi hotspot-এ।
সিকিউরিটি ড্রপ-ডাউন লিস্টে ওপেন ও WPA2 PSK এই দুই ধরনের চয়েস পাবেন। ওপেন হচ্ছে কোনো পাসওয়ার্ড ছাড়াই হটস্পটে কানেক্ট হওয়ার পদ্ধতি। আর WPA2 PSK হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ পদ্ধতি। তাই এখানে এটি সিলেক্ট করুন। পাসওয়ার্ড ফিল্ডে ন্যূনতম ৮ অক্ষর বা বর্ণবিশিষ্ট পাসওয়ার্ড দিতে হবে। আপনার নিরাপত্তার জন্যই বড় হাতের ও ছোট হাতের অক্ষর এবং সংখ্যা মিলিয়ে দিতে হবে। নইলে পাসওয়ার্ড এক্সেপ্ট নাও করতে পারে। পাসওয়ার্ড ঠিকভাবে লিখেছেন কি না তা দেখার জন্য নিচের Show password চেকবক্সে একবার টিক দিয়ে দেখে নিতে পারেন। এবার সেইভ বাটনে প্রেস করুন। এর মাধ্যমে আপনি আপনার ডিভাইসে ওয়াই-ফাই হটস্পট কনফিগার করলেন। এবার হটস্পট চালু করতে হলে আগের পদ্ধতিতে সেটিংস থেকে Wireless & networks -> Tethering & portable hotspot -> Portable Wi-Fi hotspot চেকবক্সে টিক দিতে হবে। চেকবক্সে টিক দেয়া হলেই ওয়াই-ফাই হটস্পটটি চালু হবে ও নোটিফিকেশন বারে আইকন দেখা যাবে। এবার আপনি আপনার অন্যান্য ডিভাইস বা ল্যাপটপ থেকে মোবাইলের ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করতে পারবেন।
কেন মোবাইল ওয়াই-ফাই হটস্পট
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন এই ওয়াই-ফাই হটস্পট? সাধারণত মোবাইলে সবাই লিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। এই লিমিটেড ইন্টারনেট কম্পিউটারে শেয়ার করার দরকার কেন হবে? এর উত্তরটা আসলে সহজ। অ্যান্ড্রয়েডের হটস্পট সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে ইমার্জেন্সি বা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। ধরুন আপনি জরুরি কোনো কাজ করছেন এমন সময়ে আপনার ব্রডব্যান্ড বা ওয়াইম্যাক্সের ইন্টারনেট চলে গেল কিংবা ল্যাপটপে কাজ করার সময় কারেন্ট সংযোগ লাগে এমন মডেমটি লোডশেডিং-এর কারণে বন্ধ হয়ে গেল। তখন সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ সারতে ওয়াই-ফাই হটস্পট কাজে লাগবে। ওয়াই-ফাই পদ্ধতি ছাড়াও ইউএসবি ক্যাবল দিয়েও ইন্টারনেট পিসিতে শেয়ার করা যায়, কিন্তু সবসময় ক্যাবল আপনার কাছে নাও থাকতে পারে, তাই না?
নিরাপত্তা নিয়ে একটি কথা
ওয়াই-ফাই হটস্পটের পাসওয়ার্ড আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে যে কেউই দেখতে পারেন। আপনার পাশের বাসার বন্ধুটি যদি সুযোগ মতো আপনার ফোন থেকে পাসওয়ার্ডটি দেখে নেন, তাহলে কিন্তু আপনার অজান্তেই আপনার অ্যান্ড্রয়েডের হটস্পট চালু থাকা অবস্থায় তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। তাই আশেপাশে বন্ধু থাকলে প্রতিবার পাসওয়ার্ড বদলে নিতে পারেন।
সব সময় ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন।