আপনি যদি অনেক ব্যস্ত থাকেন আর চটপট কোন মেইল চেক করতে চাচ্ছেন, সেই সময় লম্বা পাসওয়ার্ড টাইপ করে ফোন আনলক করা অনেক বিরক্তিকর ব্যাপার হিসেবে প্রমানিত হতে পারে। ফোন আনলক করা এমন একটি কাজ, যেটি আমরা দিনে ১০০ বারের উপর করে থাকি, কখনো প্রয়োজনে আবার কখনো অপ্রয়োজনে। আবার ফোনকে পাসওয়ার্ড ছাড়াও ব্যবহার করা যাবে না।
একজন সিকিউরিটি ফোকাস টেক রাইটার হিসেবে আমি কখনোই আপনাকে পাসকোড ছাড়া ফোন ব্যবহার করার জন্য রেকোমেন্ড করবো না। তাহলে কিভাবে আরো সহজে ফোন আনলক করা সম্ভব হবে? সৌভাগ্যবসত এখনকার অনেক স্মার্টফোনে ট্যাচ আইডি রয়েছে, মানে আপনার হাতের স্পর্শে ফোন আনলক করতে পারবেন। কিন্তু আপনার ফোনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর না থাকলে বা ট্যাচ করে আনলক করাকেউ বোরিং লাগলে আপনি কি করবেন?
সৌভাগ্যবশত, অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে রয়েছে স্মার্ট লক/আনলক ফিচার, যেখানে ইউজার কয়েক প্রকারের পদ্ধতি ব্যবহার করে তাদের ফোন লক এবং আনলক করতে পারবে। এই টিউনে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট লক সেটআপ করা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
স্মার্ট লক
যদি আপনি ললিপপ বা তারপরের ভার্সনের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করেন, তবে অবশ্যই আপনার ফোনে স্মার্ট লক ফিচারটি রয়েছে। যেটার মাধ্যমে আপনি ট্র্যাস্টেড ডিভাইজ, ট্র্যাস্টেড প্লেস, ট্র্যাস্টেড ফেস, ট্র্যাস্টেড ভয়েজ, এবং আপনার শরীর ডিটেক্ট করে আপনার ফোন আনলক করা সম্ভব হবে। এখান থেকে শুধু যেকোনো একটি ম্যাথড আপনাকে পছন্দ করতে হবে আর সেই অনুসারে সেটআপ করে নিতে হবে। ফাইনালি এবার পাসওয়ার্ড প্রবেশ করিয়ে ফোন আনলক করাকে বলুন, “টাটা বাই বাই!”
যদি আপনি প্রথমবারের মতো স্মার্ট লক ফিচারটি ব্যবহার করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে সেটিং অপশনে যেতে হবে। সিকিউরিটি অপশনে আপনি স্মার্ট লক অপশনটি পেয়ে যাবেন। কিন্তু তার আগে আপনার ডিভাইজে প্যাটার্ন বা পাসকোড লক সেটআপ করে নিন। এবার স্মার্ট লক অপশনে ট্যাপ করুণ, দেখবেন ট্র্যাস্টেড ডিভাইজ, ট্র্যাস্টেড প্লেস, ট্র্যাস্টেড ফেস, ট্র্যাস্টেড ভয়েজ ইত্যাদি অপশন গুলো বেড় হয়ে আসবে — আমরা প্রথমে ট্র্যাস্টেড ডিভাইজ থেকে সেটআপ দেখানো শুরু করবো!
এই ফিচারটি ব্যবহার করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি বিশ্বস্ত ডিভাইজ এড করে নিতে হবে। ধরুন আপনি আপনার ব্লুটুথ হেডসেট’কে এখানে এড করে নিলেন কিংবা আপনার কারের সাথে আপনার ফোনকে এড করে নিলেন, এতে আপনি যখন ঐ বিশ্বস্ত ডিভাইজটির সাথে কানেক্টেড থাকবেন, আপনাকে আর পাসওয়ার্ড প্রবেশ করিয়ে আপনার ফোনকে ম্যানুয়ালি আনলক করতে হবে না। আপনার ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আনলক হয়ে যাবে।
বিশ্বস্ত জায়গা এড করার ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। আপনি বর্তমান প্লেস’কেই সিলেক্ট করে রাখতে পারেন, কিংবা ম্যাপ থেকে যেকোনো জায়গাকে সিলেক্ট করে রাখতে পারেন। তারপরে সেই জায়গাতে যখন আপনি অবস্থান করবেন, আপনার ফোনে আর পাসওয়ার্ড প্রবেশ করিয়ে আনলক করতে হবে না। ট্র্যাস্টেড ফেস অপশনটি সেটআপ করতে আপনার ফোনকে আপনার ফেস দেখিয়ে দিতে হবে, তারপরে আপনার ফোন আপনার ফেস থেকে কিছু তথ্য কালেক্ট করে সেভ করে রাখবে।
পরবর্তী সময় ফোন আনলক করার ক্ষেত্রে আপনার ফেস’কে ফোনে দেখাতে হবে আপনার ফোন ফেস রিকোগ্নাইজ করার পরে ফোনটি আনলক হয়ে যাবে। কিন্তু আমি ট্র্যাস্টেড ফেস অপশনটি ব্যবহার করার জন্য রেকমেন্ড করবো না, এটি মোস্ট সিকিউর পন্থা নয়। অনেক সময় আপনার ছবি দেখিয়েও আপনার ফোন আনলক করা যেতে পারে। যদি এক্সপেরিয়েন্স করার জন্য এটি ব্যবহার করতে চান তো ঠিক আছে, কিন্তু ফোনের প্রাইমারি সিকিউরিটি আনলক সিস্টেম হিসেবে ট্র্য্যাস্টেড ফেস ব্যবহার না করায় ভালো।
অন-বডি ডিটেকশন —এই ফিচারটি ব্যবহার করার জন্য তেমন কোন সেটআপ করার প্রয়োজনীয়তা নেই, জাস্ট ট্যাপ করে অপশনটিকে এনাবল করে দিতে পারেন, যদি এই ফিচারটি ব্যবহার করতে চান, এর পরে আপনার ফোন আপনার মুভমেন্ট মনে রাখবে আর আপনাকে চিনে নেবে। তারপরে আপনি যতক্ষণ মুভিং করতে থাকবেন, আপনার ফোন আনলক করার জন্য পাসওয়ার্ড প্রবেশ করানোর প্তয়জন পড়বে না।
ট্র্যাস্টেড ভয়েজ আনলকিং সিস্টেমে আপনার ফোনকে প্রথমে আপনার ভয়েজ শুনিয়ে ট্রেইন করতে হবে। এর পরে আপনার ফোন আপনার ভয়েজ মনে রাখবে, তারপরে জাস্ট ফোনের সামনে বলুন, “ওকে গুগল” —ব্যাস আপনার ফোন আনলক হয়ে যাবে। তো দেখলেন, কিভাবে আপনার ফোন আনলক করাতে পারবেন, ফোনে হাত না লাগিয়ে!
Subscribe for Free Net Click here