অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ গুলো শুধু মাত্র আপনার ফোনের স্পেস নয় সাথে ব্যাটারি লাইফ আর প্রসেসিং পাওয়ার কেও ধ্বংস করে। তাই বেস্ট সলিউসন হচ্ছে অকাজের আর ক্ষতিকর অ্যাপ গুলোকে আপনার ফোন থেকে অ্যানইন্সটল করে দেওয়া। এই টিউনে যে অ্যাপ গুলোর কথা বলা হয়েছে, এর মধ্যে কিছু অ্যাপ আপনার মনে হয় জরুরী কিন্তু সেগুলো মোটেও জরুরী হয়, এবং কিছু জনপ্রিয় অ্যাপ ভয়ংকর ক্ষতিকর! তো অ্যাপ গুলোকে চিনুন আর এক্ষুনি অ্যানইন্সটল করে দিন…
যেকোনো র্যাম ক্লিনার অ্যাপ+ব্যাটারি সেভার অ্যাপ
অনেক অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস রানিং হয়, আপনি ঐ অ্যাপটি ব্যবহার না করার সময়ও অ্যাপটির প্রসেস ব্যাকগ্রাউন্ডে অন থাকে অনেক সময়। তো প্রসেস রান থাকা মানে ব্যাটারি পাওয়ার কনজিউম হওয়া এবং প্রসেসর রিসোর্স নষ্ট হওয়া। তাই যে অ্যাপ গুলো ফোন ফাস্ট আর ব্যাটারি সেভিং করার দাবী করে, তারা ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস গুলোকে কিল করে দেয়।
এটা আগেরদিনে বিশ্বাস করা হতো, ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস কিল করলে পারফর্মেন্স বুস্ট এবং ব্যাটারি লাইফ লম্বা করা যায়। কিন্তু আসলে এটা ভুল, যখন ফোনের কোন প্রয়োজনীয় ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস কিল করা হয়, অ্যান্ড্রয়েড সেই প্রসেসকে আবার রিওপেন করে, আর প্রসেস বারবার পুনরায় রান হওয়ার জন্য ফোনের ব্যাটারি আরোবেশি খরচ হয় এবং ফোন স্লো হয়ে যায়।
আপনার অ্যান্ড্রয়েড বর্তমানে আগের চেয়ে অনেকবেশি স্মার্ট, যে নিজেই জানে কোন অ্যাপকে কিল করতে হবে আর কাকে ওপেন করে রাখতে হবে। আর র্যাম ক্লিন করে র্যাম ফাঁকা করে কি করবেন? মানে র্যাম ফাঁকা রেখে লাভটা কি? বেশি র্যাম ফাঁকা রাখা কি ভালো কিছু? অনেকের ফোনের র্যাম ৩ জিবি বা ৪ জিবি, এর মধ্যে হয়তো ১ জিবি ব্যবহার হয়েছে, তারপরেও দেখি সারাদিন এই ক্লিনার সেই ক্লিনার অ্যাপ রান করিয়ে র্যাম ফাঁকা করে।
দেখুন র্যাম ফাঁকা রাখলে কখনোই ফোনের স্পীড বৃদ্ধি পায় না, আপনি যদি ফোনের র্যাম ব্যবহারই না করেন, তো এতোবড় র্যাম ওয়ালা ফোন কিনেছেনই কি দুঃখে? যখন আপনার ফোনের র্যামের প্রয়োজন পড়বে, আপনার ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ কিল করে দেবে, আপনাকে ম্যানুয়ালি কিছু করার দরকার নেই, এতে কোনই উপকার নেই, উল্টা ক্ষতি!
অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ
কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে এমনটা নয়। আপনি যদি প্লে স্টোর ব্যতিত কোন আলাদা সোর্স থেকে অ্যাপ ডাউনলোড না করেন, ৯০% সময় আপনার ফোন ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হবে না। তাই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলোর কোনই প্রয়োজনীয়তা নেই।
ফোনকে নিয়মিত আপডেটেড রাখুন আর প্লে স্টোর ব্যাতিত অ্যাপ ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন, ব্যাস আপনার ফোন নিরাপদে থাকবে। এখনতো প্লে স্টোর বাদে বাইরে থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করলেও অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সিকিউরিটি সিস্টেম গুগল প্লে প্রটেক্ট সকল অ্যাপ গুলোকে প্রটেক্ট করবে, এই বিষয়ের উপর বিস্তারিত আর্টিকেল আমার ব্লগে পাবলিশ করেছি, আপনি পড়ে নিতে পারেন।
কোন অ্যাপ যখনই সন্দেহভাজক কোন কাজ করতে চাইবে, অ্যান্ড্রয়েড গুগল প্লে প্রটেক্ট থেকে সাথে সাথে আপনাকে অ্যালার্ট দিয়ে দেওয়া হবে। তো আলাদা অ্যান্টিভাইরাসের তো কোন প্রয়োজনীয়তাই নেই এখানে। অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি গুলো নিজেও এই ব্যাপারটি জানে, তাই তাদের সফটওয়্যারের সাথে আরো টুল যুক্ত করে দেয়, যেমন কল ব্লকার, অ্যান্টিথেপ্ট, পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ইত্যাদি।
ইএস এক্সপ্লোরারঅ্যান্ড্রয়েডের সবচাইতে জনপ্রিয় আর পাওয়ারফুল তৃতীয়পক্ষ ফাইল ম্যানেজার হচ্ছে ইএস এক্সপ্লোরার। নিশ্চয় আপনার ফোনেও এটি ইন্সটল করা রয়েছে। কিন্তু এই অ্যাপটি ফ্রী ভার্সনে সমস্যা হচ্ছে, এটি আপনার অনুমতি ছাড়ায় অনেক স্পন্স্র অ্যাপ আপনার ফোনে ডাউনলোড এবং ইন্সটল করিয়ে দেয়। অনেক ইউজার আমার কাছে সমস্যা নিয়ে আসে, তাদের ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে ইন্সটল হয়ে যাচ্ছে! হতে পারে ইএস এক্সপ্লোরারই এই কাজ করছে।
ইএস এক্সপ্লোরার ব্যবহার না করলে কোন ফাইল ম্যানেজার ব্যবহার করবেন? চিন্তার কোন বিষয় নেই, আরো অনেক ফাইল ম্যানেজার রয়েছে যেগুলোকে আরামে ব্যবহার করতে পারেন। X-plore File Manager, AndroXplorer File Manager, FX File Explorer, OI File Manager সহ আরো অনেক পাওয়ারফুল ফাইল ম্যানেজার অ্যাপ প্লে স্টোরে লভ্য রয়েছে!
ইউসি ব্রাউজারইউসি ব্রাউজার কিরকম জনপ্রিয় অ্যাপ সেটার সম্পর্কে আপনাকে নতুন কিছু বর্ণনা করার প্রয়োজন নেই, জানি। কয়েক বছর ধরে আমি নিজেও এই অ্যাপকে অসংখ্যবার ব্যবহার করেছি। ব্যাট বর্তমানে ইউসি ব্রাউজার ভয়ংকর কিছু করছে। প্রথমত, আপনার নোটিফিকেশনকে অ্যাডাল্ট নিউজ নোটিফিকেশন দিয়ে ভর্তি করে দেবে, যেটা সত্যিই অনেক বিরক্তিকর ব্যাপার। সাথে এই ব্রাউজারটি আপনার ফোনের সকল সার্চ ডাটা, আপনার ওয়াইফাই ম্যাক অ্যাড্রেস, আপনার সকল ব্রাউজিং হিস্ট্রি আপনার অনুমতি ছাড়ায় চাইনা’র সার্চ ইঞ্জিনের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
চিন্তা করে দেখুন, এই ব্রাউজার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার প্রাইভেসি বলে আর কিছুই থাকবে না। আর এই দাবী আমি বানিয়ে লাগাচ্ছি না, আপনি গুগল করে দেখুন, নিজেই জানতে পারবেন, ইউসি ব্রাউজার আপনার কোন কোন ডাটা চুরি করছে। তাই নিরাপত্তার জন্য এক্ষুনি এই ব্রাউজারকে অ্যানইন্সটল করে দিন অথবা ইন্সটল করা থেকে বিরত থাকুন! ইউসি ব্রাউজারের বিকল্প হিসেবে ক্রোম বা ফায়ারফক্স ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন।
তো এই লিস্ট ছাড়াও আপনার কাছে কোন অ্যাপ গুলো বিপদজনক মনে হয় এবং কেন? নিচে আমাদের টিউমেন্ট করে জানান। সাথে এই টিউনটি শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরও সতর্ক করে দিন, তারা যাতে এসকল অ্যাপ ইন্সটল করা থেকে বিরত থাকে।