বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
কেমন আছেন সবাই?
আশা করি অবশ্যই ভালো আছেন?
ভাল না থাকলেও আজকের প্রযুক্তি আলোচনা পড়ে মন ভাল হয়ে যাবে আশা করি।
“আগেই বলে রাখি আমি যে তথ্য গুলো শেয়ার করবো সেগুলো বিভিন্ন ভাবে সংগ্রহ করে এর পর টিউন করি। যদি কেউ কপি ভেবে থাকেন তাহলে আমি দুঃখিত।”
আর কিছু কথা বলে রাখি, আমি এটা একটা সিরিজ টিউন হিসেবে প্রকাশ করতে চাই। সিরিজ টিউন বলতে এটা একটার পর একটা টিউন আসবে কিন্তু সেটা শিরোনামের পাশে পর্বের কথা উল্লেখ করা থাকবে, যেমনঃ প্রযুক্তি আলোচনা পর্ব ০১, এভাবে চলতে থাকবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
এবার চলুন মূল আলোচনায় চলে যাই।
প্রথমেই থাকবে গ্যালাক্সি এস ৯ এর প্রতিবেদন।
২৫ ফেব্রুয়ারি গ্যালাক্সি এস৯ উন্মোচন করতে যাচ্ছে স্যামসাং। ইভেন্টের আমন্ত্রণপত্রে তারিখ নিশ্চিত করেছে ইলেক্ট্রনিক পণ্য নির্মাতা দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে শোনা যাচ্ছিলো ২৬ ফেব্রুয়ারি বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে নতুন ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসটি উন্মোচন করা হবে। কিন্তু ইভেন্টের একদিন আগেই বার্সেলোনায় ডিভাইসটি উন্মোচন করা হবে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ।
ইভেন্টের আমন্ত্রণপত্রে নতুন গ্যালাক্সি এস৯-এর উন্নত ক্যামেরার আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ‘ক্যামেরা রিইমাজিনড’।
সাধারণত প্রতিবছরই নতুন ডিভাইসের ক্যামেরা উন্নত করে থাকে অ্যাপল, স্যামসাংসহ অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু ইভেন্টের টিজারে স্যামসাংয়ের এমন ইঙ্গিত কিছুটা কৌতুহল জাগিয়েছে।
বলা হচ্ছে, বাহ্যিক দিক থেকে এস৮-এর সঙ্গে খুব বেশি পার্থক্য রাখা হবে না গ্যালাক্সি এস৯-এ। ডিভাইসটির বেশিরভাগ পরিবর্তন আনা হবে এর হার্ডওয়্যারে।
এস৮-এর মতোই এজ-টু-এজ ইনফিনিটি ডিসপ্লে থাকবে গ্যালাক্সি এস ৯-এ। আর এর পর্দার মাপ বলা হয়েছে ৫.৮ ইঞ্চি। এস৯-এ আগের মতোই পেছনে একটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। আর এস৯ প্লাস মডেলে পেছনে দুইটি ক্যামেরা রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে ফাঁস হওয়া রিটেইল বাক্সে দেখা গেছে ‘সুপার স্পিড ডুয়াল পিক্সেল ১২ ওআইএস’ ক্যামেরা রাখা হয়েছে গ্যালাক্সি এস৯-এ। আর সামনে ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা থাকবে এতে।
৪ জিবি র্যামের পাশাপাশি ৬৪ জিবি ইনটার্নাল স্টোরেজ থাকতে পারে গ্যালাক্সি এস ৯-এ। আর ডিভাইসটির ব্যাটারিও উন্নত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আর এতে স্যামসাংয়ের নতুন এক্সিনস ৯৮১০ চিপ ব্যবহার করা হতে পারে। এই চিপের মাধ্যমে আইফোন X-এর মতো ফেসিয়াল-রিকগনিশন ও অ্যানিমোজি ফিচার যোগ করতে পারে স্যামসাং।
এবার থাকবে কোয়ালকমের প্রতিবেদন।
মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপলকে নিজেদের চিপ ব্যবহার করতে অর্থ দিয়েছে কোয়ালকম- এই অভিযোগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন চিপনির্মাতা প্রতিষ্ঠানটিকে ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ইউরো জরিমানা করেছে ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ।
ইইউ’এর কম্পিটিশন কমিশন-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, কোয়ালকম ‘প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাজারে প্রতিযোগিতা করতে বাধা দিয়েছে।”
এই জরিমানার বিরুদ্ধে কোয়ালকম আপিল করবে বলে বিবিসি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
কম্পিটিশন কমিশনার মারগ্রেথ ভেসটেগার বলেন, কোয়ালকম পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাজারে “অবৈধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের থামিয়ে রেখেছে।” তিনি বলেন, অ্যাপল যাতে তাদের আইফোন আর আইপ্যাডে বিশেষভাবে কোয়ালকম-এর প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেজন্য চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি আইফোন নির্মাতাদের শত শত কোটি ডলার দিয়েছে। এর ফলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী বাজারে কোয়ালকম-এর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি, “তাদের পণ্য যত ভালোই হোক না কেন”- যোগ করেন তিনি।
ভেস্টেগার বলেন, কোয়ালকম-এর এমন আচরণ “ভোক্তাদের আর অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও পছন্দ এবং উদ্ভাবন থেকে দূরে রেখেছে।”
এক বিবৃতিতে কোয়ালকম-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে। এ নিয়ে দ্রুতই তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-এর জেনারেল কোর্টে আপিল করবে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন নীতিনির্ধারকরা দাবি করেন, কোয়ালকম অ্যাপলকে কম অর্থে তাদের পণ্য বিশেষভাবে ব্যবহার করতে চাপ দিয়েছে।
এই অভিযোগের বিস্তারিত মার্কিন প্রতিযোগিতা পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফেডারেল ট্রেড কমিশন কোয়ালকম-এর বিরুদ্ধে মামলার অংশ হিসেবে নথিভুক্ত করে রেখেছে। এই মামলায় ‘ত্রুটি’ রয়েছে আখ্যা দিয়ে কোয়ালকম এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে।
কোয়ালকম অন্যায্য চর্চার মাধ্যমে তাদের প্রযুক্তির লাইসেন্স দেয় দাবি করে মামলা করেছে কমিশন। বিশেষত, মোবাইল ফোন আর অন্যান্য ডিভাইসের প্রসেসরের ক্ষেত্রে এই অনুশীলন করে প্রতিষ্ঠানটি।
আইফোন এক্সের প্রতিবেদনে যাবো এবার।
২০১৭ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ২৯ মিলিয়ন আইফোন X সরবরাহ করেছে অ্যাপল।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস-এর তথ্যানুসারে ছুটির মৌসুমে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া স্মার্টফোন মডেল হলো আইফোন X– খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আইএএনএস-এর।
মঙ্গলবার ক্যানালিস-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, “আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সরবরাহকৃত ২৯ মিলিয়ন আইফোন X-এর মধ্যে ৭ মিলিয়ন সরবরাহ করা হয়েছে চীনে।”
“৯৯৯ মার্কিন ডলারের একটি ডিভাইস হিসেবে আইফোন X-এর কার্যক্ষমতা দারুণ, কিন্তু এই খাতের প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা কম,” বলেন ক্যানালিস বিশ্লেষক বেন স্ট্যানটন।
স্ট্যানটন আরও বলেন, “২০১৭ সালের নভেম্বরের শুরুতে চাহিদামতো পণ্য সরবরাহে ঝামেলার মধ্যে পড়ে অ্যাপল। কিন্তু নভেম্বরের শেষ ও ডিসেম্বর মাস জুড়ে উৎপাদনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে প্রান্তিকের শেষ ভাগে চাহিদা মেটানো এবং কিছু বাজারে চাহিদা ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে তারা।”
ক্যানালিস আরও জানিয়েছে, ২০১৭ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে আইফোন এসই, ৬এস, ৭ এবং ৮ মডেলগুলোর সরবরাহও ভালো হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে কেজিআই সিকিউরিটিস-এর বিশ্লেষক মিং-চি কুয়ো বলেন, প্রত্যাশার তুলনায় চাহিদা কম থাকায় চলতি বছরের মাঝামাঝি আইফোন X-এর বিক্রি বাতিল করতে পারে অ্যাপল।
প্রথম সংস্করণের বিক্রি বন্ধ করলেও চলতি বছরের শেষ দিকে আইফোন X-এর নতুন সংস্করণ উন্মোচন করা হতে পারে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আইএএনএস-এর।
কুয়ো বলেন, দাম কমিয়ে আইফোন X বিক্রি করবে না অ্যাপল। দাম কমালে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য প্রিমিয়াম আইফোনগুলোর উপর এর প্রভাব পড়বে। কুয়ো’র ধারণা ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে ১৮ মিলিয়ন আইফোন X সরবরাহ করবে অ্যাপল।
২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে ১৮ মিলিয়ন আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৩ মিলিয়ন আইফোন X সরবরাহ করা হবে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন কুয়ো। আগে ধারণা করা হয়েছে প্রথম প্রান্তিকে ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন আইফোন X সরবরাহ হবে।
“আমরা ধারণা করছি ২০১৮ সালের মাঝামাঝি আইফোন X-এর সরবরাহ বন্ধ হবে, এতে ডিভাইসটির মোট সরবরাহ সংখ্যা দাঁড়াবে ৬২ মিলিয়ন। আগে ধারণা করা হয়েছিল এই সংখ্যাটি হবে ৮০ মিলিয়ন।”– কুয়ো।
“২০১৮ সালে নতুন আইফোন উন্মোচনের পর দাম কমিয়ে আইফোন X-এর বিক্রি চালিয়ে গেলে তা পণ্যের ব্র্যান্ড মূল্যের জন্য ক্ষতিকর হবে। এছাড়া কম মূল্যে আইফোন X বিক্রি করলে নতুন ৬.১ ইঞ্চি এলসিডি পর্দার আইফোন সরবরাহেও এর প্রভাব পড়বে,” যোগ করেন তিনি।
ধন্যবাদ সবাইকে, মতামতের জন্য অপেক্ষায় আছি।
আল্লাহ্ হাফেজ।