মোবাইলে ইন্টারনেট চালানোর আসল মজা পাওয়া যায় ওয়াই ফাই চালিয়ে। কিন্তু অনেক সময় আমাদেরকে কাজের জন্য, দুরের জার্নির জন্য বাসার ওয়াইফাই কানেকশন থেকে বিছিন্ন থাকতে হয়। তখন মোবাইলের ডাটা ব্যবহার করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। কিন্তু আজকাল বড় বড় মেট্রোপলিটন এরিয়াগুলোতে ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট দেওয়া রয়েছে। যেখানে এলে আপনিও ফ্রি ওয়াইফাই নেটওর্য়াকে যু্ক্ত হয়ে নেট ব্যবহার করতে পারবেন।
বাংলাদেশেও বেশ কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় সরকার ফ্রি ওয়াই-ফাই হটস্পট এর ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় জায়গাগুলোতে ওয়াইফাই হটস্পটের আয়োজন করে দিয়েছে। কিন্তু আপনি কিভাবে বুঝবেন যে আপনার আশে পাশের কোথায় এধরনের হটস্পট রয়েছে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য আজকের এই টিউনটি নিয়ে আমি চলে এলাম টেকটিউনকে। এই টিউনে আমি আপনাদেরকে ৫টি ওয়াই-ফাই হটস্পট ফাইন্ডার নিয়ে কথা বলবো যাদের মাধ্যমে আপনি আপনার আশেপাশের কোনো ওয়াই ফাই হটস্পট থাকলে সেটি নিজে নিজেই খুঁজে পেতে পারবেন। তো চলুন টিউনে চলে যাই।
১) ওয়াই-ফাই ম্যাপ:
Wi-Fi Map একটি ফ্রি স্মার্টফোন এপপ। এই এপে দুনিয়ার প্রায় ১০০ মিলিয়ন ওয়াই ফাই পয়েন্টের তথ্য দেওয়া রয়েছে। এপপটি অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইসের জন্য পাওয়া যাবে। যারা ঘন ঘন দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ভ্রমণ করে বেড়ান তাদের জন্য এই এপপটি পারফেক্ট। ওয়াই-ফাই ম্যাপে ওয়েস্টার্ন দেশগুলো সহ, মিডল ইস্ট, মধ্য এশিয়া, আফ্রিকা, রাশিয়া, ইন্সর্টান ইউরোপ সহ বেশ কতকগুলো দেশের প্রায় অধিকাংশ ওয়াই ফাই হটস্পটের তথ্য রয়েছে।
এছাড়াও এই এপে পাসওর্য়াড প্রটেকশযুক্ত ওয়াই ফাই হটস্পটের পাসওর্য়াডও দেওয়া রয়েছে। তাই এখন আর পাসওর্য়াডের জন্য অন্যদেরকে জিঙ্গাসা করতে হবে না। আর এই এপের ইউনিক ফিচার হলো এটিতে অফলাইন মোডও রয়েছে। তাই আপনার ডিভাইসের নেট কানেক্টশন না থাকলেও আপনি এই এপটি ব্যবহার করতে পারবেন।
Download: Wi-Fi Map forAndroid | iOS
২) এভাস্ট ওয়াই-ফাই ফাইন্ডার:
Avast Wifi Finder: এভাস্ট নামটি মনে হয় আপনি আগে শুনেছেন, তাই তো? বেস্ট ফ্রি এন্টিভাইরাসগুলোর মধ্যে এভাস্ট অন্যতম একটি কোম্পানি। তবে আপনি হয়তো এটা শুনেননি যে এদের একটি চমৎকার ওয়াই-ফাই ফাইন্ডারও রয়েছে। এভাস্ট ওয়াইফাই ফাইন্ডার চালু করার পর এটি আপনার ফোনের জিপিএস কে ব্যবহার করে আপনার বর্তমান লোকেশন জেনে নিবে, তারপর আপনার আশেপাশের হটস্পটগুলোর তথ্য আপনার সামনে রেজাল্ট আকারে নিয়ে আসবে।
এছাড়াও হটস্পট কানেকশনটি পাসওর্য়াডযুক্ত কিনা সেটাও আপনাকে বলে দেবে। তবে আপনি যদি আরো নির্দিষ্ট করে হটস্পট খুঁজতে চান তাহলে এভাস্ট ওয়াইফাই ফাইন্ডারের মেনুতে গিয়ে লোকেশন ভিক্তিক সার্চ ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। এন্টিভাইরাস কোম্পানি বলে এভাস্ট ওয়াইফাই ফাইন্ডারে রয়েছে ওয়াইফাই চেকিং ফিচার। এতে আপনি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কগুলো স্ক্যান করে সিকুরেটি নিয়ে চিন্তামুক্ত হতে পারেন। এছাড়াও এই এপটিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই স্পিড টেস্ট! যার মাধ্যমে অতি সহজে আপনি হটস্পটের নেট স্পিড সম্পর্কে ধারণা পেতে পারবেন।
Download: Avast Wi-Fi Finder for Android | iOS
৩) ওপেন সিগন্যাল (ওয়াইফাই ম্যাপার)
OpenSignal (WiFiMapper): টিউনের প্রথম এপ ওয়াইফাই ম্যাপের ১০০ মিলিয়ন ওয়াইফাই পয়েন্ট যদি আপনার জন্য না পোষায় তাহলে আপনার জন্য এই এপপটি বেস্ট। ওপেন সিগন্যাল এর ওয়াইফাই ম্যাপারে রয়েছে দুনিয়ার প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ওয়াই ফাই হটস্পটের তথ্য! এই এপপটি প্রথমে লোকেশন বেইসড ওয়াইফাই হটস্পটগুলো খুঁজে বের করার চেস্টা করে, এ পদ্ধতিতে কাজ না হলে এটি তার ডাটাবেস থেকে খুঁজার চেষ্টা করবে। এই এপে আপনি হটস্পটের টাইপ, স্পিড, কোয়ালিটি, কানেকশন ইত্যাদির উপর ভিক্তি করে আলাদা আলাদা ভাবে রেজাল্ট পেতে পারবেন।
Download: WiFiMapper for Android | iOS
৪) ওয়াই ফাই হটস্পট স্ক্যানার:
WiFi Hotspot Scanner: টিউনের আগের ৩টি এপপ সবগুলোই মোবাইল ভিক্তিক। কিন্তু আপনার কাছে জরুরী সময়ে মোবাইল না থাকলে আপনার চাই একটি ডেস্কটপ এপপ। সেটার জন্য এই ওয়াই ফাই হটস্পট স্ক্যানারটি বেস্ট। তবে জেনে রাখা ভালো যে, উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে আগে থেকেই বিল্ট ইন বেসিক ওয়াইফাই স্ক্যানার রয়েছে, যেটির মাধ্যমে সাধারণত উইন্ডোজ থেকে নেটওর্য়াকগুলোতে কানেক্ট হওয়া যায়।
তবে ওয়াইফাই হটস্পট স্ক্যানেরর রয়েছে এক্সট্রা কিছু ফিচার। যেমন এই এপটি নেটওয়ার্ক নামের পাশাপাশি এর বর্তমান সিকুরেটি সেটিংস, চ্যানেল ইনফরমেশন, ম্যাক এড্রেস সহ বিভিন্ন তথ্য আপনার সামনে রেজাল্ট আকারে নিয়ে আসবে। আর এই রেজাল্টকে আপনি ভবিষৎতের ব্যবহারের জন্য HTML, XML, text or CSV ফাইল আকারে পিসিতে সেভ করে রাখতে পারবেন। আর এই এপপটি পোর্টেবল বিধায় আপনি পেনড্রাইভ করে নিয়ে ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।
৫) ওয়াই-ফাই স্পেস:
Wi-Fi Space: ওয়াই ফাই স্পেস হচ্ছে একটি ওয়েব বেসড হটস্পট ফাইন্ডার। ওয়েব বেসড হটস্পট ফাইন্ডারগুলো ব্যবহার করার জন্য আপনাকে ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করে ব্রাউজিং করতে হয়। কিন্তু লিমিটেড অপশন থাকার পরে এগুলো ফালতু নয়। আপনি এক শহর থেকে অন্য শহরে যাবার আগে এই ওয়েব বেসড ফাইন্ডারগুলোর থেকে চেকিং করে নিতে পারেন।
ওয়াই ফাই স্পেস ওয়েবসাইটে দুনিয়ার প্রায় ২০ মিলিয়ন ওয়াই ফাই লোকেশনের লিস্ট রয়েছে। কোনো লোকশন সেট করে সার্চ দিলে আপনি গুগল ম্যাপের মতো একটি ম্যাপে বিভিন্ন হটস্পটের তথ্য সম্বলিত একটি ম্যাপ রেজাল্ট পাবেন। ম্যাপের সবুজ লোকেশনগুলোর হটস্পটে পাসওর্য়াড নেই এবং ম্যাপের লাল রংয়ের হটস্পটগুলোতে পাসওর্য়াড সিস্টেম রয়েছে।
অন্যান্য এপের তুলনায় এখানে ফিচার কম হলেও এটি সর্বশেষ ব্যাকআপ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে যখন অন্য সকল মাধ্যম ব্যবহারের উপায় থাকবে না।
ওয়াইফাই হটস্পট খোঁজার জন্য আমি আজ কিছু বেস্ট পদ্ধতি নিয়ে আপনাদের সামনে চলে এলাম। মোবাইল এপপ বা ডেস্কটপ এপপ ইন্সটলের মাধ্যমে কিংবা ওয়াই ফাই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনি আপনার নিকটবর্তী ওয়াই ফাই হটস্পট গুলোর সম্পর্কে তথ্য পেতে পারেন।
তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মোবাইল লোকেশন ভিক্তিক এপগুলোই উত্তম। যেমন আমার লোকেশন খুলনার কথাই ধরুন। খুলনার রেলস্টেশনে ফ্রি সরকারি ওয়াই ফাই রয়েছে, নগর ভবনের চারিদিকে একটি শক্তিশালি ওয়াই ফাই লাইন দেওয়া রয়েছে, হাদিস পার্কেও একটি সরকারি ওয়াইফাই সংযোগ রয়েছে, ওদিকে জাতিসংঘ পার্কেও বছরখানেক হলো একটি ওয়াই ফাই সংযোগ দেখা যাচ্ছে।
এই সমস্ত সরকারি ওয়াইফাই লাইনের তথ্য আপনি এসব মোবাইল এপে খুঁজে পেতে পারেন। কিন্তু রয়েলের মোড়ে দুটি বেসরকারি ওয়াইফাই হটস্পটের তথ্য, শিববাড়ী মোড়ের বেসরকারি ওয়াইফাই হটস্পটের তথ্য এগুলো আপনি লোকেশন ভিক্তিক এপপ ছাড়া অন্য কোথাও পাবেন না।
আমার পোস্টি যদি আপনাদের ভালো লাগে আমার সাইট TipsNow24.Com ভিজিট করে আসবেন
আমাদের সাইটে ১ টি পোস্ট করলে ১০ টাকা।আর ৩০ টাকা হলে পেমেন্ট
Cradit:ফাহাদ
আশা করি আজকের টিউনটি দেখে আপনি আপনার জন্য উপযুক্ত ওয়াইফাই ফাইন্ডার মাধ্যমটি বেছে নিতে পারবেন। আজ এ পর্যন্তই। আগামীকাল অন্য কোনো টপিক নিয়ে আলোচনা করতে চলে আসবো।