আসসালামু আলাইকুম,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান আল্লাহর রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছেন। এই আর্টিকেলে আমি কথা বলবো এমন ১০ টি Android Tips & Tricks নিয়ে যা আপনার Android ব্যবহার করার অভিজ্ঞতাকে আরো মজাদার করে তুলবে।
আমরা সবাই জানি Android এ ব্যবহার করার জন্য প্রচুর Tricks আছে। সেটা যে কারনেই ব্যবহার করা হোক না কেন। Android এ যেসব Features আছে তা নিয়ে নিয়ে বই লেখা যাবে তবুও শেষ করা যাবে না।
ইউটিউবে এ নিয়ে প্রচুর ভিডিও আছে। এমনই ১০ টি ট্রিক ও টিপস এর কথা বলবো এই পোস্টে যা আপনার এন্ড্রয়েড ব্যবহার করার স্বাদ আরো বাড়িয়ে দিবে। আমি জানি এই মুহূর্তে যারা এই পোস্টটি পড়ছেন তারা বেশিরভাগই অবশ্যই কোনো না কোনো এন্ড্রয়েড ব্যবহার করছেন। কারন আমাদের দেশে এন্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর সংখ্যাই বেশি। আপনি যেমন ইউজার (ব্যবহারকারী) হোন না কেন এই ট্রিকসগুলো আপনার ভালো লাগবে বলে আশা করছি।
?10) Chrome Flags :
আপনি যদি Google chrome/brave/kiwi এসব browser এর search bar এ গিয়ে chrome://flags এই লিখাটা টাইপ করেন তবে আপনি কিছু Experimental features পাবেন যার মাধ্যমে আপনারা আপনাদের chrome/brave/kiwi type এর ব্রাউজারগুলো আরো বেশি ফিচারের নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
কয়েকটি Chrome flags এর নাম ও তাদের কাজ বলছি। আপনারা চাইলে আমি এ নিয়ে আলাদা একটি পোস্ট লিখতে পারি যেখানে এরকম আরো অনেকগুলো Chrome flags নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো আর তাদের কাজগুলো সম্পর্কেও আপনাদের সুন্দর ধারনা দিতে পারবো। আমি অনেকগুলো Chrome flags on করে রেখে ব্রাউজার ব্যবহার করি। আর এতে ব্রাউজিং করার আসল মজাটা উপভোগ করতে পারি। আপনারাও চাইলে ব্যবহার করে দেখতে পারেন Chrome এর এই ফিচারটি। কিছু Chrome flags এর বর্ননাঃ
#1) parallel downloading : এই flags টি enable করলে আপনারা আপনাদের ডাউনলোড স্পিড বাড়াতে পারবেন। এর কথা তো অনেকেই শুনেছেন। তাই না? যারা জানেন না তারা এই flags টি enable করে দেখতে পারেন।
#2) Smooth scrolling : যারা scroll করার সময় একটু ঝামেলা অনুভব করেন তাদের জন্য এই ফিচারটি। যদি scroll করার সময় একটু laggy অনুভব হয় তারা এই flags টি enable করে দেখতে পারেন। আমি ব্যবহার করি। আমার কাছে scrolling এ এখন সেই lag টা অনুভব হয় না।
#3) incognito screenshot : এই flags টির মাধ্যমে আপনারা incognito mode এ গিয়েও screenshot তুলতে পারবেন।
#4) Playback speed button : অনেকেই chrome এ এই ফিচারটিকে অনেক প্রয়োজনীয় মনে করেন কিন্তু এটা default ভাবে দেওয়া থাকে না। এই Flags টি enable করার মাধ্যমে আপনারা যখনই কোনো ভিডিও স্ট্রিমিং করবেন তখনই স্পিড বাড়ানো কমানোর option পাবেন যা সচরাচর সব ওয়েবসাইটে পাওয়া যায় না
এছাড়াও এমন প্রচুর flags আছে যা আপনাকে ব্রাউজিং করার ক্ষেত্রে ভিন্ন রকমের স্বাদ দিবে।
?৯) Assistant Menu : এটা বেশিরভাগ Samsung Phone এই আপনারা পেয়ে যাবেন Default ভাবে। Settings এ গিয়ে Assistant Menu লিখে search দিলেই পেয়ে যাবেন। নয়তোবা Settings এ গিয়ে Accessibility তে যান। এরপর Dexterity and interaction এ যান। এরপরই Assistant Menu পেয়ে যাবেন।
এই Assistant Menu এর কাজ কি?
এটি মূলত একটি Floating bar। এমন অনেক App ও Playstore এ আছে। Floating apps বা Floating Window লিখে search দিলেই পেয়ে যাবেন। বেশিরভাগ মানুষই Assistive Touch App টি ব্যবহার করে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানে না Samsung এর Android Phone গুলোতে এটা Default ভাবেই দেওয়া থাকে।
এই Assistant Menu এর মাধ্যমে আপনারা অনেক কাজই সহজেই করতে পারবেন। কি কি সুবিধা পাবেন?
১) আপনারা এখানে Cursor অথবা Mouse এর Option পাবে যার মাধ্যমে আপনারা আলাদা একটি mousepad ও cursor পাবেন। আপনার যদি বড় ফোন বা ট্যাব হয় তবে আপনি আপনার ফোনকে কম্পিউটার এর মতো করে ব্যবহার করতে পারবেন Curson ও mousepad এর মাধ্যমে।
২) Screenshots তুলতে পারবেন যা Samsung এর Device গুলোতে দেওয়া থাকে না। বিশেষ করে পুরোনো J5,J2,J7 এরকম Device গুলোতে। আপনাকে স্ক্রিনশট তোলার জন্য বার বার Power key ও Home key চেপে ধরে রাখতে হবে না। এই Floating window তেই পেয়ে যাবেন সে option
৩) আপনার মোবাইলের যদি Back/Recent/Volume button/Home button কিংবা Power button নষ্ট হয়ে যায় তবে এই Floating bar টি আপনাকে অনেক সাহায্য করবে এই কাজগুলো করতে।
বুঝতেই পারছেন দারুন একটা ট্রিক। এটা সবাই জানে না। আপনি জানলে অন্যদেরকে জানতে সাহায্য করুন। Third Party Apps থেকে বিরত থাকুন যতক্ষন আপনার ফোনেই Third party apps এর feature গুলো Default ভাবেই দেওয়া আছে।
?৮) Answering and Ending calls with home key or power key :
সবার ফোনেই এই Option টা আছে কি না জানি না। তবে অনেক ফোনেই এই Option টা আমি পেয়েছি। একটু বিস্তারিত বলি। এই Option টির কাজ হচ্ছে আপনার ফোনের Home button কিংবা Power Button এ Click করে কোনো Call আসলে তা Receive করতে পারবেন। অনেকে তাড়াহুড়োর সময় কল ধরতে দিয়ে অনেক সময় কলটি কেটে দেন এবং এতে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এই দুটির মধ্যে যেকোনো একটি কিংবা দুটি Option ই যদি আপনি On করে দেন তবে সে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কল আসলে আপনার Power button কিংবা home button টিতে একটি চাপ দিবেন আর সাথে সাথে কলটি Receive হয়ে যাবে।
Call end করার জন্যেও এই দুটি button কে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে এর জন্যে সে Option টি settings থেকে On করতে হবে।
যাদের এই Option টি ফোনে নেই তারা এমন App Playstore এ পেয়ে যাবেন।
?৭) High Contrast Fonts :
এটা সব Android এই দেওয়া থাকে Default ভাবে। আপনি Settings এ গিয়ে Accessibility তে গেলেই পেয়ে যাবেন। অনেক সময় এটা Developer options এও দেওয়া থাকে। Developer option টি পাওয়ার জন্য আপনার Settings এ গিয়ে About Phone e গিয়ে Build Number এ ১০ বারের মতো একসাথে ক্লিক করলেই পেয়ে যাবেন। প্রত্যেক ফোনে আলাদা আলাদা জায়গায় দেওয়া থাকে।
যাই হোক, এই Option টি তারা ব্যবহার করবেন যাদের চোখে একটু সমস্যা আছে বা চশমা ছাড়া চোখে লিখাগুলো ঝাপসা বোঝা যায়। আপনার যদি এমন সমস্যা না থাকে তবে আপনার চেনা জানা কেউ (হতে পারে আপনার বাবা-মা কিংবা কাছের কেউ) থাকলে তাদেরকে এই Option টি enable করে দিবেন। তারা লিখাগুলো স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারবে।
?৬) Magnification Gestures :
আমি জানি অনেকেই আমার মতো ছোটবেলায় এই Option টি Enable করে অনেক সমস্যায় হয়তো ভুগেছেন ??। কিন্তু এর আসল কাজ কি?
তার আগে বলে দেই এই Option টির কাজ কি। এর কাজ হচ্ছে স্ক্রিনের যেকোনো অংশে দুইবার ট্যাপ করলে জুম করা। আবার দুইবার ট্যাপ করলে জুম হওয়া হতে বেরিয়ে আসা।
অনেক সময় এমন Apps আমরা ব্যবহার করি যেগুলোতে জুম করার ফিচারটি নেই। কিংবা অনেক সময় ছোট লিখা বুঝা যায় না। এই Option টি Enable করার মাধ্যমে আপনারা স্ক্রিনের যেকোনো স্থানে জুম করতে পারবেন।
এটি পাবেন Accessibility তে।
?৫) App Permissions :
আমি জানি অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না। যেকোনো App ইন্সটল করার আগেই কোনো কিছু না দেখে না শুনে যা যা Permission চায় সব Enable করে দেন।
এটি করা মোটেই উচিত না। কারন আপনার Microphone কিংবা Camera এর permission নিয়ে যেকোনো App আপনার কথাবার্তা কিংবা আপনার ভিডিও করে গোপনে এসব তথু কালেক্ট করে নেয়। তাই যেন তেন App কে আপনার Permission দিতে বিরত থাকুন।
আপনি যেসব App কে যে যে Permission গুলো দিয়েছেন এটা দেখতে আপনি Settings এ গিয়ে App permissions কিংবা permission লিখে search দিন। এরপর যেসব Apps এ আপনার মনে হয় এই এই permission গুলোর কোনোই প্রয়োজন নেই সেগুলো disable করে দিন। যেমনঃ camera, location, microphone ইত্যাদি।
?৪) Owner Information :
আচ্ছা মনে করুন আপনি কোনো এক দূর্ঘটনায় পড়লেন কিংবা আপনার ফোনটি রাস্তায় কোথাও হারিয়ে গেল। সে মূহূর্তে যদি কোনো স্বহৃদয়বান ব্যক্তি যদি আপনার ফোনটি আপনাকে ফেরত দিতে চায় তবে সে আপনার ঠিকানা কিভাবে পাবে। এই Setting টির মাধ্যমে আপনি আপনার Home screen কিংবা Lockscreen এ ছোট্ট করে আপনার নাম, নাম্বার ও ঠিকানাটি লিখে রাখবেন। যদি এমন কোনো সমস্যায় পড়ে যান তবে যদি ভাগ্য ভালো থাকে তবে আপনার এই ছোট্ট ইনফরমেনশনটি আপনার জীবন বাচিয়ে দিতে কিংবা আপনার হারানো ফোনটি পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।
Settings এ গিয়ে আপনি Owner information লিখে search দিলেই পেয়ে যাবেন এই Option টি।
?৩) Cached Data :
অনেকেই দেখবেন আপনার ফোনের স্টোরেজ কোনো কারন ছাড়াই ফুল হয়ে যাচ্ছে। আপনি কোনো কিছু ডাউনলোড না করা সত্তেও এমনটা হচ্ছে।
আপনি যদি Storage এ গিয়ে Cached Data তে যান তবেই বুঝতে পারবেন আপনার ফোনের স্টোরেজ কেন বা কোথা থেকে ফুল হচ্ছে।
এর সমাধান কি?
এর সমাধান হচ্ছে আপনি Cached Data clear করে দিন। আবার পুনরায় Cached Data জমলে আবার clear করে দিবেন। চিন্তা করবেন না এতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ কোনো ডেটাই লস হবে না। বেশি সন্দেহ থাকলে আপনার ডেটা কোনো মেমোরি কার্ড বা কোনো ক্লাউড স্টোরেজ যেমনঃ Google Drive, Mega তে রেখে দিতে পারেন।
?৩) Developer options :
আমি জানি এ নিয়ে অনেক পোস্ট আছে। আর এ নিয়ে আলাদা একটি পোস্টও লেখা যাবে। তবে যে Option গুলো Enable না করলেই নয় সেগুলোর কথাই আমি বলছি।
#1) Running services : এখানে গিয়ে দেখতে পারবেন আপনার ফোনের Background এ কতটি App চলছে। আর সেগুলো আপনি নিজে নিজে এক এক করে বন্ধও করতে পারবেন।
#2) Animation scale :
আপনি একসাথে এমন তিনটি Option পাবেন যাদের নামঃ Window animation scale, Transition Animation Scale, Animator duration scale.
আমি যতবারই কোনো নতুন ফোন সেটআপ দিই তখনই এই তিনটি Option এই 0.5x দিয়ে রাখি যা default ভাবে 1x দেওয়া থাকে।
তবে এর কাজ কি?
এর কাজ হচ্ছে আপনার ফোনে কোনো নতুন App বা window যখন আপনি Open করেন তখনই একটি animation Effect দেখতে পান না? যেটি একটি ধীরগতির মনে হয়। আপনি যখন 0.5x দিয়ে দিবেন তখনই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। অনেকেই চাইলে এটা off ও করে রাখতে পারবেন। 0.5x কিংবা off করে রাখার কারন হল এতে Animation গুলো খুবই দ্রুতভাবে কাজ করে।
আমি জানি অনেকেই এই সেটিংটি সম্পর্কে জানে। তবুও যারা জানেন না তাদের জন্যেই বলছি।
#3) limit background processes :
আপনি চাইলে আপনার ফোনের বেকগ্রাউন্ডে কতটি এপ্লিকেশন সর্বোচ্চ চলতে পারবে সেটির একটি লিমিট সেট করে দিতে পারবেন এই অপশনটির মাধ্যমে। যাদের Ram কম ফোনে তাদের উপকারে আসবে আশা করছি। তবে যারা heavy user বা যাদের ফোন ভালো তাদেরকে পরামর্শ দিবো এই অপশনটি না অন করতে।
?১) Google Translate Conversation :
আমি জানি না অনেকেই জানে কি না যে গুগল ট্রান্সলেটে একটা ফিচার আছে যা আপনাকে অনেক সাহায্য করবে আপনার নিজের ভাষা ছাড়াও অন্য ভাষাকে বুঝতে।
আমি একটু বিস্তারিত বলছি।
Google Translate open করার পর নিচে একটি Option দেখতে পাবেন যেখানে একটি microphone দেওয়া আছে। এখানে ক্লিক করে আপনি আপনার নিজের ভাষায় যা বলবেন তা-ই লিখা হয়ে যাবে এবং তা অন্য যেকোনো ভাষায় আপনি চাইলে Translate ও করতে পারবেন। অনেকেই হয়তোবা জানেন আবার অনেকেই হয়তোবা জানেন না। যারা জানেন না তাদের জন্যে বলছি।
আপনি যদি অলস স্বভাবের মানুষ হয়ে থাকেন বেশি লিখলে হাত ব্যথা করে বা এমন কিছু তবে আপনি এই ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার বিদেশি ভাষায় কথা বলার দক্ষতাও অনেকটাই উন্নত হবে এবং আপনি সঠিকভাবে উচ্চারন করতে পারছেন কি না সেটিও সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন।
তো এই হচ্ছে ১০ টি টিপস & ট্রিকস। আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি এই ১০ টির মধ্যে ১ টিও ভালো লেগে থাকে তবে আমাকে অবশ্যই জানাবেন। এই পোস্টটি লিখতে অনেক সময় লেগেছে আর হাত ব্যথা হয়ে গিয়েছে। তাই কোনো ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্যে অনুরোধ করছি। আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এমন আরো পোস্ট চাইলে জানাতে পারেন কিংবা পরের পোস্টটি কি বিষয়ে দেখতে চান সেটিও জানাতে পারেন।
ধন্যবাদ।
This is 4HS4N
Logging Out…..