Site icon Trickbd.com

জনপ্রিয় ফ্রি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম।

বলতে গেলে একটি অপারেটিং সিস্টেম যেকোনো কম্পিউটারের প্রাণ। আমরা সময়ের সাথে সাথে এই পর্যন্ত অনেকগুলি অপারেটিং সিস্টেম দেখেছি। তবে এর মধ্যে যে অপারেটিং সিস্টেমটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেটি হচ্ছে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ। অপারেটিং সিস্টেম বাজারের হিসাব অনুযায়ী উইন্ডোজের দখলে প্রায় ৯০%। কেননা, উইন্ডোজ ব্যবহার করা সহজ এবং যেকোন ওএস থেকে আশা করা যায় এমন সমস্ত পরিষেবা দিয়ে সজ্জিত – এবং এটি একটি ওপেন-সোর্স অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে ভাল বলে মনে করা হয়। কিন্তু তারপরও অনেক কম্পিউটার ব্যবহারকারী আছেন যারা হয়তো তাদের কম্পিউটারের জন্য একটি ফ্রি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম খুঁজতেছেন। এখন আপনি যদি এই পথের পথিক হয়ে থাকেন তাহলে এই টপিকটি চালিয়ে যেতে পারেন। কারণ আমি আজকে এই টপিকে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।

ফ্রি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেমঃ

বিশ্বব্যাপী বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে সেগুলো নিয়ে আমাদের আজকের পোস্ট। এখানে আমরা সেগুলিকে নিয়ে নিচে একটি তালিকা আকারে সংক্ষেপে আলোচনা করব। আপনি যদি আগে থেকে জেনে থাকেন ভালো কথা। আর যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি ভালো করে লক্ষ্য করলে জেনে যাবেন।

Ubuntu (উবুন্টু):

সর্বাধিক ব্যবহৃত ওপেন সোর্স ডাটাবেস হল উবুন্টু। এটি একটি লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম এবং সোর্স কোড সহ ফ্রিতে পাওয়া যায়। এর ডেস্কটপ দেখতে কিছুটা উইন্ডোজের মতই, আইকন এবং উইন্ডো কন্ট্রোলও। উবুন্টুতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের বড় ভান্ডার রয়েছে। সাধারণ অ্যাপ্লিকেশনগুলির মধ্যে রয়েছে Mozilla Firefox ওয়েব ব্রাউজার, LibreOffice অফিস অ্যাপ্লিকেশন স্যুট, GIMP ইমেজ এডিটর, এছাড়াও আরো অনেক কিছু।

উবুন্টু GNU এবং GPL লাইসেন্সের অধীনে উন্মুক্ত বা বিতরণ করা হয়। এটিতে টার্মিনাল নামে একটি ইউনিক্স শেল রয়েছে যা নেটওয়ার্কের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে এবং তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

উবুন্টুর ফিচার, স্পেসিফিকেশন এবং প্রয়োজনীয়তাঃ

উবুন্টুর আকর্ষণীয় ফিচারগুলির মধ্যে একটি হল সম্প্রচার এবং অনলাইন পরিষেবা অ্যাপ্লিকেশনগুলির একীকরণ। আপনি উবুন্টু ডেস্কটপে বাস্তব টিভি দেখার বা ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ভোগ করতে পারবেন। আপনি যদি উবুন্টু ব্যবহার করতে চান তাহলে এটি ডাউনলোড করে আপনার পিসিতে ইনস্টল করে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

FreeBSD (ফ্রি বিএসডি):

FreeBSD একটি উন্নতমানের অপারেটিং সিস্টেম যা x86 (পেন্টিয়াম এবং অ্যাথলন সহ), AMD64 কমপেটিবল। এই অপারেটিং সিস্টেম নেটওয়ার্ক ডেভেলপারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। কারণ FreeBSD এর মধ্যে উন্নত নেটওয়ার্কিং, কর্মক্ষমতা, নিরাপত্তা এবং কমপেটিবল ফিচার বিদ্যমান রয়েছে। লিনাক্সে চলা বেশিরভাগ সফটওয়্যার FreeBSD তে সহজেই ব্যবহার করা যায় কোনরকম কমপেটিবিলিটি স্তরের প্রয়োজন ছাড়াই। FreeBSD তবুও লিনাক্স সহ অন্যান্য ইউনিক্স-এর মতো অপারেটিং সিস্টেমের জন্য কমপেটিবিলিটি স্তর প্রদান করে থাকে। যার ফলস্বরূপ বেশিরভাগ লিনাক্স বাইনারি ফ্রি বিএসডি-তে চালানো যায়।

FreeBSD ওপেন সোর্সের অধীনে আওতাধীন। CD-ROM, DVD সহ বিভিন্ন মিডিয়া থেকে অথবা সরাসরি FTP বা NFS ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইনস্টল করা যায়।

FreeBSD এর ফিচারসমূহঃ

ফ্রিবিএসডি অ্যাডভান্স হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন যা এখন ZFS ফাইল সিস্টেম নামক উন্নত ফাইল সিস্টেম সাপোর্ট করে থাকে। (এটির অত্যন্ত স্কেলযোগ্য মাল্টিপ্রসেসিং পারফরম্যান্স।)

SMPng: SMPng কার্নেলের মধ্যে আর্কিটেকচারগুলিকে একত্রিত হওয়ার অনুমতি দিয়ে থাকে। এটি ওএসকে দ্রুত কার্য সম্পাদন করতে সহায়তা করে কারণ এটিতে যখন অনেক কাজের চাপ পড়ে তখন তা ৮ সিপিইউ কোরে স্কেল করে থাকে।

ওয়্যারলেস: হাই-পাওয়ার Atheros-ভিত্তিক কার্ড, Ralink, Intel এবং ZyDAS কার্ডের জন্য নতুন ড্রাইভার, WPA, ব্যাকগ্রাউন্ড স্ক্যানিং, রোমিং এবং 802.11n সহ ওয়্যারলেস সাপোর্ট বৃদ্ধি করে থাকে।

ফ্রিবিএসডি-তে এনক্রিপশন সফটওয়্যার, সুরক্ষিত শেল, কার্বেরোস প্রমাণীকরণ, “ভার্চুয়াল সার্ভার” এর জন্য সাপোর্ট অন্তর্ভুক্ত আছে। আপনি যদি FreeBSD ব্যবহার করতে চান তাহলে তা ডাউনলোড করে আপনার পিসিতে ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারেন।

OpenSolaris (ওপেনসোলারিস):

OpenSolaris হল সান মাইক্রোসিস্টেম দ্বারা তৈরি করা একটি কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। এটি কম্পিউটার, সার্ভার এবং ডেটা সেন্টারে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ওপেনসোলারিস হল উবুন্টুর মত GUI ভিত্তিক সহজে নেভিগেশনের জন্য সমৃদ্ধ গ্রাফিক্যাল ডেস্কটপ এবং উইন্ডো। এটির বর্তমান ভার্সন হচ্ছে ১১ এবং Oracle ওয়েবসাইট থেকে কোনো খরচ ছাড়াই ডাউনলোড করা যাবে।

OpenSolaries এর ফিচারসমূহঃ

এছাড়াও সান এর ZFS ফাইল সিস্টেমে এখন নেটিভ সলিড-স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি) ম্যানেজমেন্ট প্রযুক্তি রয়েছে। যার অর্থ সিস্টেম অ্যাডমিনিস্টেটর এসএসডি পারফরম্যান্স সূক্ষ্ম-টিউন করার অনুমতি দেওয়া। আপনি যদি ওপেনসোলারিজ ব্যবহার করতে চান তাহলে তা ডাউনলোড করে আপনার পিসিতে ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারেন।

ReactOS (রিয়েক্টওএস):


এটি একটি ফ্রি উইন্ডোজ-কমপেটিবল ওএস যা মূলত উইন্ডোজ অ্যাপ চালানোর সুবিধা প্রদান করে থাকে। এটি একটি ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার (এটি এর বিশেষত্ব) এছাড়াও এটিতে অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজার ফিচার রয়েছে যা অনেকটা লিনাক্স প্যাকেজ ম্যানেজারের মতো। এই ফিচারটি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে নেই। আপনি যদি এই ওপেন সোর্স ReactOS অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করতে চান তাহলে তা ডাউনলোড করে আপনার পিসিতে ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারেন।

Haiku OS (হাইকু ওএস):

Haiku হলো এটি ফ্রি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম। এটির বেশিরভাগ ব্যবহারকারী এটিকে পছন্দ করে থাকে এর অভিন্নতা এবং সমন্বয়ের কারণে। এটি মূলত ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহারের লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। এটি অনেক দ্রুত কাজ করে, ব্যবহার করতে একদম সহজ এবং সহজে এটি শিখতে পারবেন। যদিও এটি ব্যক্তিগত কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে তবুও এটি সকল স্তরের বা লেভেলের কম্পিউটারের মধ্যে ব্যবহার করা যাবে।

Haiku এর বিশেষত্বঃ

হাইকু অপারেটিং সিস্টেম যদি ডাউনলোড করতে চান তাহলে তাদের অফিসিয়াল সাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন।

অবশেষে পোস্টের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা সকলেই জানতে পেরেছেন যে ওপেনসোর্স অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে বৈশ্বিকভাবে কোনগুলো বেশ জনপ্রিয়। যদিও আমি এখানে আমি বিস্তারিত তুলো ধরতে পারি না। আপনারা যদি এগুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে সেগুলি সম্পর্কে গুগলে সার্চ দিয়ে জেনে নিতে পারেন।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।