আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। ট্রিকবিডি প্ল্যাটফর্মে ভিজিট করা সবাইকে স্বাগতম জানাই।
আজকে আলোচনার টপিক হলো ইন্টারনেট নিয়ে। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন ইন্টারনেট হলো মুক্তজগত। অর্থাৎ ইন্টারনেট হলো এমন এক ব্যবস্থা যেটি পুরো বিশ্বের সাথে কানেক্ট করে। আজকের পোস্টে আমি ইন্টারনেট নিয়ে কিছু কথা ব্যাখ্যা করব
ইন্টারনেট
ইন্টারনেট এর মডেল বা এর গঠনকাঠামো একদম সহজভাবে ব্যাখ্যা করলে বলা যায়
ডিভাইস কানেক্ট থাকলেই ইন্টারনেট! ইন্টারনেট এমন একটি জিনিস যেটি পুরো বিশ্বের ডিভাইসের মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে। এই ডিভাইস হতে পারে যে কোন কিছু যেমন মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি।
ডিভাইসগুলো কিভাবে কানেক্ট হয় ইন্টারনেটের সাথে?
কম্পিউটার,ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল যে কোন ডিভাইসই থাক না কেন ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট করতে প্রয়োজন সিম কার্ড ও ওয়াইফাই সংযোগ
যারা সিম কার্ড দেয় তাদের বলা হয় Telecom Company
যারা Wifi দেয় তাদের বলা হয় ISP বা Internet Service Provider
Telecom Company বা ISP কিভাবে ইন্টারনেটের সাথে ডিভাইসগুলোর কানেকশন করায়?
আপনারা সবাই হয়তো সাবমেরিন কেবলের নাম শুনেছেন। পুরো বিশ্বের সকল দেশের সাথে সংযোগ রয়েছে সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে। এইসব সাবমেরিন ক্যাবল থাকে সাধারণত গভীর সমুদ্রের নিচে যাতে এর উপর কোন বাহ্যিক আঘাত না পড়ে। কারন সাবমেরিন ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত হলে গোটা দেশের ইন্টারনেট বিঘ্নিত হয় কারন গোটা দেশের যত ডিভাইস সেগুলো Wirelessly (সিম দ্বারা) এবং Wirely(Wifi Line দ্বারা) সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে কানেক্টেড।
সাবমেরিন ক্যাবলকে বলা যায় হাইওয়ে। আপনারা ডিভাইস আর হাইওয়ের মাঝে যে রাস্তা সেটি Telecom Company ও ISP আপনাকে দেয়।বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরে ও আছে সাবমেরিন ক্যাবল যেটির নাম Sea-me-we 4 ও 5 .
এখন প্রশ্ন আসতে পারে wifi নাহয় তার wire দ্বারা সাবমেরিন ক্যাবলে কানেক্ট করায় কিন্তু টেলিকম অপারেটর কিভাবে সাবমেরিন ক্যাবলের অ্যাকসেস পায়? কিংবা কিভাবে কানেক্ট করায়?
Sim company বা Telecom Operator কোম্পানির ইন্টারনেট সার্ভিস দেয়ার জন্য প্রয়োজন টাওয়ার। এবং সেইসব টাওয়ার হতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট দূরত্বের।এই দূরত্ব কিন্তু ভৌগলিক অবস্থান, গ্রাহকদের জনসংখ্যা ঘনত্ব, দালানকোঠার ঘনত্ব ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।
প্রতিটা টাওয়ার কিন্তু তার(wire) দ্বারা কানেক্টেড। যাদের বাড়ির পাশে টাওয়ার আছে তারা হয়তো খেয়াল করবেন প্রতিটা টাওয়ারের সাথে সুনির্দিষ্ট তার আছে। এখন টাওয়ার আর আপনার ডিভাইসের মাঝে কানেক্ট করাবে যে জিনিস সেটা হচ্ছে Sim
Sim এর পূর্নরূপ Subscriber Identity Moduleএটি মূলত আপনার ইন্টারনেট অ্যাকসেসের ঠিকানা। এই sim দ্বারাই এসব telecom Operator আপনাকে identify করবে। আপনি কাউকে কল দিলে এসএমএস দিলে কিন্তু খেয়াল করুন একটি সিম নাম্বার প্রয়োজন। এই sim একদিকে যেমন আপনার পরিচয় টেলিকম অপারেটরের কাছে অন্যদিকে একটি মাধ্যমও আপনার ডিভাইস আর ইন্টারনেট অ্যাকসেসের মাঝখানে।
অর্থাৎ সব এভাবে কানেক্ট হয়
ডিভাইস ☞ sim card ☞ টাওয়ার ☞ টাওয়ার ☞ সাবমেরিন ক্যাবল
ইন্টারনেটের নাহয় অ্যাকসেস পেলেন এখন ওয়েবসাইটের অ্যাকেসেস পাবেন কিভাবে? কিভাবে কাজ করে?
প্রতিটা website এর জন্য কিন্তু প্রয়োজন একটি url
এই url এর কিন্তু দুটি ধরন আছে।
একটি হচ্ছে Readable যেমন Www.Google.com
আরেকটি হচ্ছে
আরেকটি হচ্ছে Computer readable যেটিকে বলা হয় ip adress.
এই আইপি অ্যাড্রেস হচ্ছে একটি ঠিকানা ইন্টারনেটের। প্রতিটা ডিভাইসের যেমন ip adress আছে তেমনি প্রতিটা ওয়েবসাইট google,facebook ইত্যাদিরও কিন্তু ip adress আছে।
এখন আপনার ip আর ওয়েবসাইটের আইপি কানেক্ট হয় DNS server এর মাধ্যমে।
DNS সার্ভার কি?
Dns server এর নিয়ন্ত্রণ থাকে Telecom Operator ও ISP এর হাতে। এজন্য তারা চাইলেই যেকোন ওয়েবসাইট ব্লক করে দিতে পারে। তবে এই ব্লকড ওয়েবসাইটও bypass করা যায় dns বদলিয়ে কিংবা VPN দ্বারা।
এখন ইন্টারনেটের বিল কোথায় যায়?
এতক্ষণে মোটামুটি জানতে পেরেছেন ইন্টারনেট জিনিসটা আসলে কি। এবার আসি বিস্তারিত ,
প্রথমে মনে রাখতে হবে ISP বা Telecom কিন্তু ব্যাবসা করতেই এসেছে। ব্যাবসা করলেই সরকারকে Tax দিতে হয়। একইসাথে তাদের নিয়মিত টাওয়ার রক্ষনাবেক্ষণ করতে হয়। Bandwidth কিনতে হয় প্রতিনিয়ত। টাওয়ারের যে cable সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করতে হয়। টাওয়ার পরিচালনার লোকদের বেতন দেয়া লাগে। একইসাথে তারা নিজেরাও প্রফিট অর্জন করে।
সুতরাং বলা যায় ইন্টারনেট ব্যাবস্থা decentralized এবং free বা subscription লাগে না
কিন্তু ইন্টারনেট অ্যাকসেসের জন্য যে isp,telecom, bandwidth ইত্যাদির প্রয়োজন হয় সেগুলোর জন্য paid করা লাগে। মূলত এসবেই ইন্টারনেটের বিল খরচ হয়।
আজকে এ পর্যন্তই। আশা করি কারোর সামান্য হলেও উপকারে আসতে পেরেছি।