শেষ ওভারে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে টানা
দুই বলে ছক্কা মারলেন শহীদ আফ্রিদি।
দুর্দান্ত জয়ে শেষ চারের সম্ভাবনা
বাঁচিয়ে রাখল সিলেট সুপার স্টার্স।
অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঢাকা
ডায়নামাইটসকে।
২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৭ রান তুলেছিল
ঢাকা। সিলেট জিতেছে ৬ উইকেটে, ১ বল
বাকি থাকতে।
নবম ম্যাচে তৃতীয় জয়ে সিলেটের পয়েন্ট
৬। সমান ম্যাচে পঞ্চম পরাজয়ে ঢাকার
পয়েন্ট ৮। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক পর্বের
শেষ দিনেই তাই হবে শেষ চারে ঢাকা ও
সিলেটের মধ্যে কে উঠবে।
হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত
অনেক কঠিন করে জিতেছে সিলেট। শেষ
দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৫ রান, হাতে
৭ উইকেট। কিন্তু আফ্রিদি ও সোহেল
তানভির উইকেটে থাকার পরও ১৯তম
ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে মাত্র ৫
রান দেন মুস্তাফিজুর রহমান।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১০ রান।
মাঠে ঢাকার ৬-৭ জন ক্রিকেটারের
লম্বা বৈঠকের পর অধিনায়ক কুমার
সাঙ্গাকারা বল তুলে দেন ফারহাদ
রেজাকে। প্রথম বলে ১ রান দেন ফরহাদ,
পরের বলে বোল্ড তানভির। তৃতীয় বলেও
আসে ১ রান।
৩ বলে যখন দরকার ৮ রান, যাবতীয়
নাটকীয়তা আর অনিশ্চয়তার অবসান
আফ্রিদির টানা দুই বলে ছক্কায়। লেগ
স্টাম্পে থাকা লো ফুলটসে হাঁটু গেড়ে
ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে প্রথমটি
উড়ালেন আফ্রিদি। নার্ভাস ফরহাদ পরে
বলটিও করলেন ফুলটস , এবারও প্রায় একই
জায়গা দিয়ে ছয়।
একটা সময় যদিও মনে হচ্ছিল, শেষ
ওভারের আগেই জিতে যাবে সিলেট। দুই
দলের রান যা বলছে, উইকেট ছিল
তেমনটিই। অবশেষে শের-ই-বাংলার
ব্যাটসম্যানদের। বল ব্যাটে এসেছে
ভালোভাবে, বাউন্সও ছিল সমান।
ব্যাটসম্যানরাও খেলেছে স্বচ্ছন্দে।
রবি বোপারা ও জুনায়েদ সিদ্দিকের
দুর্দান্ত এক জুটিই জয়ের পখে এগিয়ে
নেয় সিলেটকে। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৩
বলে ৮৬ রানের জুটি গড়েন দুজন।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই নাবিল
সামাদকে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন
জুনায়েদ সিদ্দিক। পরে ছক্কা মারেন
আবুল হাসানকেও। ৩৬ রানের উদ্বোধনী
জুটি ভাঙে কুমার সাঙ্গাকারার দুর্দান্ত
ডাইভিং থ্রোতে জশুয়া কব (১৫) রান
আউট হলে।
জুনায়েদের সঙ্গে জুটিতে শুরুতে
খানিকটা সময় নিয়েছেন বোপারা।
ডানা মেলেছেন থিতু হওয়ার পর। ঢাকার
আগের ম্যাচের নায়ক মোশাররফ
হোসেনকে দুটি ছক্কা মেরেছেন মাথার
ওপর দিয়ে।
দুজনকেই ফিরিয়েছে ম্যালকম
ওয়ালারের দারুণ দুটি ক্যাচ। ৪৪ বলে ৩
ছক্কায় ৫১ রান করেন জুনায়েদ। চারটি
করে চার ও ছক্কায় ৪০ বলে ৫৫ করেছেন
বোপারা।
ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে ১১
বলে ১৯ রান করেছেন তানভির। আর ওই দুই
ছক্কায় ৭ বলে অপরাজিত ১৫ আফ্রিদি।
এর আগে ঢাকা দেড়শ’ ছাড়ানো স্কোর
গড়তে পেরেছিল সাঙ্গাকারা ও নাসির
হোসেনের সৌজন্যে। প্রথম ১০ ওভারে
ধুঁকতে থাকা ঢাকার ইনিংসকে গতি দেন
সাঙ্গাকারা ও নাসিরের জুটি। চতুর্থ
উইকেটে ৪৫ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন
দুজন।
এরপর ওয়ালার ও মোসাদ্দেকের ব্যাটে
ছোট্ট দুটি ঝড়। শেষ ১০ ওভারে ১০২ রান
তোলে ঢাকা, শেষ ৪ ওভারেই ৫৭।
আগের ম্যাচে ব্যর্থতার পরও ইয়াসির
শাহকে আবার ওপেনিংয়ে নামায়
ঢাকা। নতুন উদ্বোধনী জুটিতে
পাকিস্তানি লেগ স্পিনারের সঙ্গী
ফরহাদ রেজা।
প্লেতে মহামূল্যবান কিছু বলও অপচয় করে
এসেছেন। ১৮ বলে ৮ রান করে আউট
হয়েছেন আব্দুর রাজ্জাকের বলে।
ইয়াসিরের স্বদেশি মোহাম্মদ
হাফিজকেও ফিরিয়েছেন রাজ্জাক।
দারুণ এক কাট শটে চার মেরে পরের
বলেই শর্ট বলে ক্যাচ দিয়েছেন মিড
উইকেটে (৮)।
টি-টোয়েন্টিতে এর আগে দুইবার ওপেন
করেছিলেন ফরহাদ। দুটিই ২০১০ সালে। ৫
বছর পর ওপেন করতে নেমে খারাপ
করেননি এই অলরাউন্ডার। চার ও ১
ছক্কায় ২৮ বলে করেছেন ৩১।
ঢাকার ইনিংসের চেহারা অবশ্য তখনও
সুবিধের নয়, ১০ ওভারে রান ছিল ৫৫।
সেখান থেকে দারুণ এক জুটিতে
ইনিংসের মোড় পাল্টে দেন
সাঙ্গাকারা ও নাসির।
দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৩ বলে ৩১
করেছেন নাসির। ৭ চারে ৩৫ বলে ৪৮
সাঙ্গাকারা।
এরপর ৬ বলে ৩ চারে ১৩ রান করেছেন
ওয়ালার। শেষ ওভারে টানা তিন চার
মেরে ৪ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন
মোসাদ্দেক।
কিন্তু দিনশেষে আফ্রিদির ছোট্ট ঝড়ই
গড়ে দিল ম্যাচের পার্থক্য। টুর্নামেন্টের
উত্তেজনাও টিকে থাকল প্রাথমিক
পর্বের শেষ দিন পর্যন্ত।