আসসালামুআলাইকুম,
আমি যদি বলি এই উপরের ছবিটির দাম ৩৩৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা আপনি কি বিশ্বাস করবেন? বিশ্বাস করেন বা না করেন এটা আপনার ব্যাপার
কিন্তু সত্যিই এই ছবিটির দাম ৩৩৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা এবং দিন দিন এটির দাম বেড়েই যাচ্ছে।
আমি এই ছবিটি ডাওনলোড করলে কি আমি ও এতো টাকার মালিক হবো?
হুম…খুব ভালো চিন্তা। আসলেই যদি এই ছবিটির দাম এতো হয় তবে এটা ডাওনলোড করলেই তো আমি ও এই টাকা টার মালিক হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু আসলে ব্যাপার টা এমন না, এই ছবিটির শুধুমাত্র অরিজিনাল সোর্স এর দাম ৩৩৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা, ডুপ্লিকেট এক কপি আপনার ফোনে রাখলে সেটার কোন দাম নেই…।ব্যাপার টা আরেকটু সহজ করে দেই? “মোনালিসা” এর নাম শোনেছেন? লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চি এর এক বিখ্যাত সৃষ্টি মোনালিসা… মোনালিসা এর ব্যাপারে না জানলে এখানে দেখুন, এখন কেউ যদি মোনালিসার এই আর্ট এর একটা ছবি তুলে প্রিন্ট করে নিজের বাসায় টাংগায়, সে কিন্তু আসল মোনালিসার মালিক হয়ে গেলো না যেটা ল্যুভ জাদুঘরে রয়েছে। লক্ষ্য করুন এখানে মোনালিসার সাথে তার আসল যে উৎস সেটার সম্পর্কিত রয়েছে। অর্থাৎ মোনালিসার ছবি প্রিন্ট করলেই আপনার কাছে আসল মোনালিসা থাকবে না শুধু মাত্র ল্যুভ জাদুঘরে রাখা মোনালিসাই একমাত্র অরিজিনাল মোনালিসা যেটা পৃথিবীর অনেক দামি একটি চিত্রকর্ম।
ঠিক তেমনি উপরের ছবিটি ডাওনলোড করলেই সেটার মূল্য নেই, শুধুমাত্র অরিজিনাল Bored Ape যেটা ওপেন সি প্ল্যাটফর্ম এ আছে, সেটার দাম ই ৩৩৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা! এবং দিন দিন সেটার দাম আর বেড়েই চলছে।
আসলে এখানে হচ্ছে টা কি, মানুষ কেন এই ছবি এতো টাকা দিয়ে কিনে?
আসল কাহিনীটা হচ্ছে ছবিটা নিয়ে না, ছবির পিছিনের প্রযুক্তি নিয়ে। NFT (non-fungible token) প্রযুক্তি টাই মূলত এই ছবিটির এতো দাম হওয়ার পিছনের কারণ। এখন এন এফ টি সম্পর্কে যদি বুঝাই, বর্তমান যুগে যদি লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চি বেচে থাকতো এবং ধরুন তার মোনালিসা ছবিটা সে শখের বসে ফেসবুকে দিলো, তারপর ছবিটা এমন ভাবে সবাই শেয়ার করা শুরু করলো যে লিউনার্দো এর চেয়ে যারা শেয়ার করেছে তারা ছবিটার জন্য বেশি ক্রেডিট পেয়ে গেলো, লিউনার্দো কে কেউ চিনলোই না, তো এই সমস্যার সমাধান কি? কীভাবে লিউনার্দো ই যে ডিজিটাল মোনালিসার আসল মালিক সেটা বুঝা যাবে?
NFT হচ্ছে সমাধান, NFT হচ্ছে এক প্রকার ডিজিটাল টোকেন যেটার মাধ্যমে অরিজিনাল কন্টেন্ট এর যদি হাজার কপি ও হয় ছবিটার অরিজিনাল মালিক কে সেটা টোকেন থেকে বুঝা যায়। সুতরাং লিউনার্দো মোনালিসার এই ছবিটাকে NFT তে কনভার্ট করে আপলোড করলে এই ছবিটার আসল মালিক কে চিনতে কারো সমস্যা হতো না এবং লিউনার্দো ও নিশ্চিন্তে তার শিল্পকর্ম চালিয়ে যেতে পারতো, সাথে তার চিত্রকর্ম খুব সহজে বেচা কিনা ও করতে পারতো।
এই ধারনা থেকেই উপরের ছবিটি একটি পপুলার NFT Token হওয়ায় মানুষ এতো টাকা দিয়ে এই জিনিষটি কিনছে এবং এই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ অনেক সম্ভবনাময় হওয়ায় দিন দিন এটার দাম আরো বেড়েই যাচ্ছে।
আমি কি এমন ছবি বানিয়ে বিক্রি করতে পারবো?
অবশ্যই পারবেন। কিন্তু আপনাকে ইউনিক কিছু তৈরি করতে হবে যেটা মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারবে। বর্তমান সময়ে ইউনিক কিছু করা না জানলে নিজেকে পিছিয়ে রাখা লাগে, ক্রিয়েটিভিটির এই যুগে ক্রিয়েটিভ কিছু শিখে রাখলে সেটা আপনাকে অনেক দিক থেকেই এগিয়ে রাখবে।
এনিমেশন বা কার্টুন হচ্ছে এমন একটা ক্রিয়েটিভ জিনিষ যেটার মাধ্যমে নিজের ভিতরকার ক্রিয়েটিভ সত্তা টাকে বের করে আনা যায়। ইচ্ছা করলেই বানিয়ে ফেলা যায় স্বপ্নেরর জগত।
এনিমেটর বা কার্টুনিস্ট দের ডিমান্ড দিন দিন বেড়েই চলছে, তাছাড়া NFT এর পাশা পাশি মেটাভার্স এ ও অনেকে তাদের নতুন দুনিয়া বানাচ্ছে আর্টওয়ার্ক দিয়ে।
আমি কোথায় শিখতে পারবো এমন ক্রিয়েটিভ কিছু বানানো?
প্রথমত আপনার যদি ইচ্ছা শক্তি দৃড় হয় তাহলে অনেক পপুলার রিসোর্স রয়েছে যেখানে আপনি ডিজিটাল কন্টেন্ট বানানো শিখতে পারেন, এর মধ্যে আমরা সবচেয়ে পছন্দের কোর্স টি হচ্ছে 10 minute school এর Cartoon Animation কোর্সটি, এই কোর্স টির মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই এনিমেশন এবং কার্টুন বানানো শিখতে পারবেন যেটা আপনাকে ভবিষ্যতের ক্রিয়েটিভ জগতে পা রাখতে সহায়তা করবে।
কোর্সটিতে enroll করে শুরু করুন আপনার ক্রিয়েটিভ জার্নি এবং বানিয়ে ফেলুন আপনার কল্পনার জগত।
এখানে ক্লিক করে কোর্স টি করে কি কি শিখবেন দেখে নিন
পোষ্ট টি শেষ করার আগে আপানদের কাছে প্রশ্ন! নিচের ছবিটার দাম কতো হতে পারে? :3