প্রিয় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থী
বন্ধুরা,
প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল
তোমাদের সবার প্রতি। আশা করছি
তোমরা সবাই খুব ভালো আছ। এই তো
সেদিন তোমরা জেএসসি কিংবা
জেডিসি পরীক্ষায় সফলতার সঙ্গে
উত্তীর্ণ হয়েছিলে। দুই বছর পর আর কিছুদিন পরেই
মুখোমুখি হচ্ছো এসএসসি কিংবা
দাখিল পরীক্ষার। তোমাদের
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিশ্চয়ই ভালো
হয়েছে। পরীক্ষার জন্য দুই বছরে অনেক
পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে নিজেদের প্রস্তুত
করেছ। এখন সবাই হয়তো পরীক্ষা নিয়ে
উদ্বিগ্ন। পরীক্ষা চলাকালে অনেকে
অস্বস্তিবোধ করে। এই অস্বস্তিবোধ
অনেককে ভালো পরীক্ষা দেয়ার
পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই পরীক্ষা
নিয়ে কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা করো
না। এখন দুশ্চিন্তা করলে তীরে এসে
তরী ডোবার মতো অবস্থা হবে। তাই
গত দুই বছরে যা পড়েছ তা এখন সতর্ক ও
আন্তরিকতার সঙ্গে রিভিশন দিতে
হবে।
তোমাদের এসএসসি ও দাখিল
পরীক্ষা যাতে ভালো হয়। তোমরা
যাতে ভালো রেজাল্ট করে
উচ্চশিক্ষার পথকে শানিত করতে পার
তার জন্য কিছু পরামর্শ দেয়া হলো।
এ বিষয়গুলা মাথায় রাাখলে অবশ্যই তোমরা 2017 এর পরীক্ষায় ভালোভাবে অংশগ্রহন করতে পারবে এবং ভালো রেসাল্ট করবে।
আশা করি তোমরা উপকৃত হবে।
দেখো তাহলে কিভাবে চলবা পরীক্ষার আগ পর্যন্ত বা পরীক্ষার সময়→:
শেষ সময়কে সদ্ব্যবহার করো
তোমাদের পরীক্ষার আর মাত্র
কয়েকটা দিন বাকি। জেএসসি
কিংবা জেডিসি পরীক্ষার মাধ্যমে
তোমরা পরীক্ষার পরিবেশটি বুঝতে
পেরেছ। আসলে এটিও সাধারণ একটি
পরীক্ষা। তবে জীবনের প্রত্যেকটি
পরীক্ষার সমান গুরুত্ব রয়েছে। তাই
আগের পরীক্ষাগুলোর মতো করে খুব
স্বাভাবিক থেকে পরীক্ষা দিতে
হবে। প্রত্যেকটি পরীক্ষার মাঝখানে এবারো
২-১ দিন করে সময় দেয়া রয়েছে। এই
সময়টিকে খুব ভালো করে কাজে
লাগাতে হবে। ভালো ফল করার জন্য
এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হয়তোবা এই
সামান্য সময়ই পারে তোমাদের
জীবনের মোড় পাল্টে দিতে। আগের
শেখা বিষয়গুলো ভালো করে
রিভিশন দাও। অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো
বেশি করে রিভিশন দেবে। এই শেষ
সময়টুকু হয়তো তোমাকে সাফল্যের
শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে।
অনুশীলন মানুষকে যোগ্য ও
আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলে। এই
সত্য কথাটি আরো বাস্তবে দেখতে
পারবে যখন তোমরা অনুশীলন করে
নিজেদের যোগ্য করে পরীক্ষায়
অবতীর্ণ হবে। এই পরীক্ষার সাফল্যের
জন্য যথাযথভাবে অনুশীলন করতে হবে।
পরীক্ষার মাঝের সময়গুলোয় অহেতুক
বিষয়গুলো না পড়ে প্রয়োজনীয় ও অতি
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভালোভাবে
আয়ত্ত করতে হবে। পরীক্ষার দিন সকাল
পর্যন্ত ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে
তোমাদের মনোবল বৃদ্ধিতে অত্যন্ত
সহায়ক হবে। তোমরা তো ইতোমধ্যে
অনেক সাজেশন পেয়ে গেছ। প্রত্যেক
সাজেশন কিন্তু অতীতের
পরীক্ষাগুলো প্রশ্নপত্রের ওপর নির্ভর
করে তৈরি করা হয়। এসব গতানুগতিক
সাজেশনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকেও
একটি সাজেশন তৈরি করে নিতে।
অতীতে পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো
ভালো করে আয়ত্ত করতে হবে। বিগত
বছরের প্রশ্নগুলো স্ট্যাডি করে যেসব
প্রশ্ন বার বার এসেছে, সেগুলোর
প্রতি জোর দিতে হবে। যে
প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ে সময়ে পরিবর্তন
হয় সেসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর জেনে
নিতে হবে। এভাবে পরীক্ষার
সম্মুখীন হলে তোমাদের আত্মবিশ্বাসও
বেড়ে যাবে।
মনে রাখার ফাঁদ পাতো
সাধারণত পরীক্ষার সময় একটি বিষয়
পরীক্ষার্থীরা খুব বেশি অনুভব করে,
তার কিছুই মনে থাকছে না। এজন্য
অনেকেই হতাশও হয় মাঝেমধ্যে। অবশ্যই
এটি সত্য যে, পরীক্ষা চলাকালে
প্রস্তুতি নিতে গিয়ে একটি বিষয়ের
সব অধ্যয়গুলো পড়তে হয় বলে অনেক কিছু
মনে রাখা কষ্টকর ব্যাপার। যদি একটু
বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে পড়ার
ব্যাপারটাকে গুছিয়ে আনা যায়
তাহলে তোমাদের মনে রাখাটা
অনেকটাই সহজ হবে। এজন্য প্রশ্নের উত্তর
মনে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল সৃষ্টি
করতে হবে নিজেকেই।
নিজেকে একটু যাচাই করো
পরীক্ষা পূর্ববর্তী সময়ে নিজেকে
যাচাই করার উপযুক্ত উপায় হলো
অতিগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর না
দেখে লেখা। এতে
প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের সৃষ্টি
হয়, কোনো ভুল থাকলে ধরা পড়ে ও
আত্মবিশ্বাস বাড়ে। প্রশ্নগুলোর মান ও
পরীক্ষা হলের পরিবেশ সম্পর্কে
ধারণা লাভ করা যায় এতে। এছাড়া
পরীক্ষার হলে কিভাবে কত সময়ে
উত্তর দিতে তারও একটি ধারণা গড়ে
টেনশন মুক্ত থাকো
পরীক্ষার হলের একটি পরিবেশ
রয়েছে। সেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ
খাইয়ে নিতে হবে নিজেকে। খুব
ভালো প্রস্তুতি নিয়েও অনেকে
ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে
না। অনেকে পরীক্ষার পরিবেশটিকে
অন্যরকম মনে করে ভয় করে। মনে রাখতে
হবে এসএসসি কিংবা দাখিল
পরীক্ষা অন্যান্য পরীক্ষার মতোই
একটি পরীক্ষা। এই পরীক্ষা নিয়ে
কোনো প্রকার টেনশন করা চলবে না।
তাতে পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরীক্ষা
দুটোই খারাপ হওয়ার সমূহ আশংকা
থাকে।
আত্মবিশ্বাস রাখো তুঙ্গে
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকেই
আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। আত্মবিশ্বাস
ভালো না থাকলে ভালো রেজাল্ট
করা যায় না। বিশ্বাস রাখতে হবে
তুমি অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট
করতে পারবে। আর তোমরা যারা গত
পরীক্ষাগুলোয় আশানরূপ রেজাল্ট
করতে পারনি তারা এই পরীক্ষার
রেজাল্ট নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা
করবে না। ভালো করে আত্মবিশ্বাস
নিয়ে পরীক্ষা দাও। এই পরীক্ষার
রেজাল্ট অনেক ভালো হবে।
অভিভাবকদের করণীয়
আমাদের কিছু অভিভাবক আছেন
যারা তাদের ছেলেমেয়েদের
পরীক্ষাকে অন্যরকম কিছু মনে করেন।
তাদের মনে রাখতে হবে, এসএসসি
কিংবা দাখিল পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ
বটে কিন্তু কঠিন বা ভয়ানক কিছু নয়।
তাই পরীক্ষার্থীদের ব্যাপারে
অভিভাবকদের একটু সতর্ক থাকা উচিত।
তাদের ওপর পড়ালেখার অহেতুক চাপ
সৃষ্টি করা যাবে না। তাদের স্বাস্থ্য
ও শরীরের প্রতি যত্ন নিতে হবে।
ওদের সুস্থ ও মানসিকভাবে ভালো
রাখার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করতে
হবে। তারা যেন আনন্দের সঙ্গে
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে
পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।