Site icon Trickbd.com

[In Details] ইন্টারনেট থেকে নিজের পছন্দের বিষয়গুলো খুঁজে নিন সহজেই ।।  (Find Your Needs Easily on Internet)

নিজের একটা গল্প বলি..

আমার ইন্টারনেটের সাথে পরিচয় হয় খুব বেশি দুরের কথা নয় । কারণ এখন পর্যন্ত আমি কোন মোবাইল হাতে পাই নি । যদিও তিন চার মাস আগে  সিম্ফোনির একটা ফিচার মোবাইল(বোতাম মোবাইল) কিনেছিলাম । যাইহোক শুরুর দিকে আমি ইন্টারনেটকে কোন একটা বিশেষ যন্ত্র মনে করতাম,,, হাঁসতে পারেন । তারপর এক বন্ধুর কাছ থেকে ইন্টারনেটের সুচনা করি । সে আমাকে একটা ওয়েবসাইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল । ওয়েবসাইটটির নাম ততটা মনে নেই, তবে Wap বেজড ডাউনলোড ওয়েবসাইট ছিল । আমি ভাবতাম ইন্টারনেট মানে শুধুমাত্র এই ওয়েবসাইটটিই,,, । অনেক বিভ্রান্ত ধারণা থাকা সত্ত্বেও ইন্টারনেট সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল অনেক । সেই আগ্রহের পিপাসা মেটাতেই একসময় ইন্টারনেট সম্পর্কে আমার ধারণা স্পষ্ট হয়, জানতে পারি google এর কথা এবং এর পর আর পেছনে থাকাই নি । এবং আল্লাহর রহমতে আমি এখন একটা ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে সক্ষম ।

 

ইন্টারনেট কি?

ইন্টারনেট হচ্ছে নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক । অনেক অনেক নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত হয় ইন্টারনেট । এখন জানতে হবে নেটওয়ার্ক কি? একাধিক কম্পিউটার পরস্পর যুক্ত থাকার নাম হচ্ছে নেটওয়ার্ক । নেটওয়ার্কের প্রধান কাজ হচ্ছে রিসোর্স শেয়ারিং এবং ডেটা কমিউনিকেশন করা । তার মানে, অনেকগুলো কম্পিউটার একসাথে যুক্ত হয়ে গঠিত হয় নেটওয়ার্ক এবং এইরকম অনেকগুলো নেটওয়ার্ক একসাথে যুক্ত হয়ে একটি বিশাল কমিউনিকেশন সিস্টেম তৈরি করে যার নাম হচ্ছে ইন্টারনেট । ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত প্রতিটি কম্পিউটার একে অপরের সাথে রিসোর্স শেয়ারিং এবং ডেটা কমিউনিকেট করতে পারে।

 

ইন্টারনেট আর ওয়েব কি একই জিনিস?

এই বিষয়ে অনেকেরই ধারণা স্পষ্ট না । আমি একটু বুঝিয়ে দিচ্ছি,, আচ্ছা আপনি কি আইওটি(IOT) এর নাম শুনেছেন ? IOT এর মানে হচ্ছে Internet of Things বাংলায় জিনিসপত্রের ইন্টারনেট । মানে আপনার ঘরের জিনিসপাতি যেমনঃ- বাতি,ফ্যান,টেলিভিশন সবকিছুই ইনটারনেটের মাধ্যমে চলবে । তার মানে এখানে ইন্টারনেট আছে কিন্তু ওয়েব নেই, মানে এখানে কোন ওয়েবসাইট কাজ করছে না । তাহলে ওয়েব কি? ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হচ্ছে বিশ্বব্যাপি বিস্তৃত জাল এবং অনেক অনেক ওয়েবসাইট এর সমষ্টি যা ইন্টারনেট দ্বারা প্রদর্শন যোগ্য । ওয়েবসাইটগুলোতে থাকে টেক্সট, অডিও , ভিডিও , ইমেজ , অ্যানিমেশন ইত্যাদি যেগুলো ইন্টারনেটে রান করে । তাহলে বুঝতে পারছেন যে ইন্টারনেট হচ্ছে বিস্তৃত পরিসরের একটা জিনিস এবং এর ক্ষেত্র অনেক যার মাঝে ওয়েব একটি । আর ইন্টারনেটের বেশিরভাগ অংশ জুড়েই ওয়েব রয়েছে ।

 

ওয়েবসাইট কি?

ওয়েবসাইট হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কম্পিউটারের সার্ভারে রাখা এইচটিএমএল ফাইল । সার্ভারে রাখা ওয়েবসাইটগুলো ইউজারের(ক্লায়েন্ট) কম্পিউটারে প্রদর্শিত হয় HTTP প্রক্রিয়ার মাধ্যমে । একটি ওয়েবসাইটে থাকতে পারে ইমেজ,টেক্সট,অডিও,ভিডিও,অ্যানিমেশন ইত্যাদি । বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার সাহায্যে এই ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজগুলো তৈরি করা হয় । যেমনঃ- HTMl,Css,Javascript,Php/Asp,Sql/Mysql ইত্যাদি । এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হচ্ছে HTML . প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটি ইউনিক নাম থাকে যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম । যেমনঃ- Trickbd.com । এখানে .com হচ্ছে ডোমেইন । কয়েকটি টপ লেভেল ডোমেইন নেম হচ্ছে .org .info .net ইত্যাদি । আর ট্রিকবিডির সকল পোস্ট রাখার জন্য সার্ভার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কে যে মেমোরির দরকার হয় তাকে বলে হোস্টিং । পৃথিবীর সকল ওয়েবসাইট নির্দিস্ট ডোমেইন নেমের অন্তর্গত এবং সার্ভার কম্পিউটারের মেমোরিতে সংরক্ষিত ।

 

কোন বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকলে ঐ বিষয়ে গভিরভাবে জানা যায় । তাই উপরের বিষয়গুলো সহজে ক্লিয়ার করার চেস্টা করলাম । এবার আসুন দেখি আপনার পছন্দের বিষয়গুলো কিভাবে ইন্টারনেট থেকে খুঁজে বের করবেন ।

পছন্দের বিষয় বলতে এখানে শুধুমাত্র টেকনোলোজিক্যাল বিষয়গুলোকে বুঝাই নি । ইন্টারনেটের অভিধানে সকল বিষয়ের ইনফর্মেশন রয়েছে । এই স্মার্ট যুগে সবচেয়ে বড় শিক্ষক এখন নির্ধিদ্বায় ইন্টারনেট । সকল বিষয়ে যেকোন সমস্যার সমাধান আপনি ইন্টারনেট থেকে পাবেন । পৃথিবীতে ওয়েবসাইটের অভাব নেই । একেক বিষয়ের তথ্য একেক ওয়েবসাইটে রয়েছে । আপনাকে শুধু খুঁজে নিতে হবে আর খুঁজে দেওয়ার কাজটি করে দিবে Google.

 

Google কি?

গুগল হচ্ছে সিমপ্লি একটা ওয়েবসাইট । যে ওয়েবসাইটের মাঝে পৃথিবীর অন্য সকল ওয়েবসাইটের তথ্য ইনডেক্স করা আছে । মনে করুন আপনি জানতে চাচ্ছেন ফেসবুক হ্যাকিং সম্পর্কে । এখন আপনার ত আর জানা নেই যে কোন ওয়েবসাইটে ফেসবুক হ্যাকিং সম্পর্কে তথ্য দেওয়া আছে । কারণ এত এত ওয়েবসাইটের নাম তো আর মুখস্থ রাখা সম্ভব নয় । তাহলে এখন কি করবেন , google.com এর  সার্চবক্সে গিয়ে লিখবেন “ফেসবুক হ্যাকিং” , লিখে সার্চ করলে এই সম্পর্কিত তথ্য যেই ওয়েবসাইটের যেই পেজে রাখা আছে সেই পেজগুলোর অনেকগুলো লিঙ্ক প্রদর্শন করবে । তারপর আপনার মনমতো একটি লিঙ্কে গিয়ে আপনার নির্দিস্ট সমস্যার সমাধান পেতে পারেন । google এর মতোন আরও কয়েকটি ওয়েবসাইট হচ্ছে Bing,Yahoo,Ask,DuckDuckGo ইত্যাদি তবে গুগলই সবচেয়ে জনপ্রিয়। এই ধরণের ওয়েবসাইটগুলোকে বলা হয় সার্চ ইঞ্জিন ।

 

Google কিভাবে কাজ করে?

শর্টকাটে বলছি– গুগল বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন কিওয়ার্ড নিজের ডাটাবেজে জমা করে রাখে । আর এই কাজটি করার জন্য গুগলের অটোমেটিক ক্রওলার মেশিন রয়েছে । আপনি গুগলে গিয়ে যা লিখে সার্চ করেন তাই হচ্ছে কিওয়ার্ড । আপনি যখন গুগলে কোন কিছু সার্চ করবেন তখন গুগল তার ডাটাবেজ থেকে ঐ কিওয়ার্ড রিলেটেড ওয়েবপেজের লিঙ্কগুলো ক্রমান্বয়ে সার্চ রেজাল্টে শো করে । আর আপনি আপনার পছন্দের বিষয়গুলো খুঁজে পান । দ্যাটস ইট ।।

 

কি জানতে চাচ্ছেন?

ধরুন, আপনি HTML শিখবেন । এর জন্য টিউটোরিয়াল দরকার । তাহলে গুগলে গিয়ে সার্চ করুন ঃ- “html tutorial” লিখে অথবা শুধু “html” লিখে । তাহলে অনেক অনেক ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পেয়ে যাবেন । সেখান থেকে আপনার পছন্দের ওয়েবসাইটটি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন । আপনার যদি বাংলা টিউটোরিয়াল দরকার হয় তাহলে সার্চ করুন “html bangla tutorial” অথবা “এইচটিএমএল বাংলা টিউটোরিয়াল” অথবা শুধু “এইচটিএমএল” লিখে তাহলে সার্চ রেজাল্টে যে লিঙ্কগুলো দেখাবে সেখানে ক্লিক করে এইচটিএমএল এর বাংলা টিউটোরিয়াল পেতে পারেন । ভিডিও টিউটরিয়ালের জন্য একই নিয়মে ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন । অথবা গুগলে সার্চ করুন “html bangla video tutorial” লিখে । তাহলে গুগলই আপনাকে ইউটিউবের লিঙ্ক দেখিয়ে দিবে । এভাবে যেকোন বিষয় সম্পর্কে সার্চ করতে পারেন । যেমন:- “how to make a transformer” , “how to make a youtube channel” , “what is wordpress” , “SSC live class bangla” বাংলায় লিখতে পারেন এইভাবে “ট্রান্সফরমারের ক্যাল্কুলেশন” , “ফ্রীল্যান্সিং কি” ,  “ওয়েব ডিজাইন” , “ইন্টারনেট থেকে আয়” ইত্যাদি ইত্যাদি ,,,

 

প্রশ্ন করুন, উত্তর পান !!

ইন্টারনেটের চমৎকার ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রশ্ন উত্তরের সাইটগুলো । এসব ওয়েবসাইটে আপনি যেকোন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন এবং উত্তর জানা মহৎ লোকদের কাছ থেকে আপনার সঠিক উত্তরটি পেতে পারেন । “Quora” হচ্ছে এমন একটি বিশাল বড় ইংরেজি ওয়েবসাইট ।  তবে বাংলাতেও এমন অনেকগুলো ওয়েবসাইট রয়েছে যেমন ঃ- ”   http://bissoy.com ” , ” http://beshto.com ” ” http://zero2infinity.com ” ইত্যাদি ওয়েবসাইটগুলো বেশ জনপ্রিয় । এই সাইটগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করে আপনি আপনার প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যের প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা থাকলে সেই প্রশ্নের উত্তরও প্রদান করতে পারেন ।

 

গুগল এখন অনেক বড় ভাষাবিদ !!

যেকোন বিষয়ে আপনি হয়ত বাংলায় পর্যাপ্ত কন্টেন্ট পাবেন না । তাই আপনাকে ইংরেজির পেছনে দৌড়াতে হয় । এখানেও আপনাকে হেল্প করবে গুগল মহাশয় । আপনি যদি গুগল ক্রোম ওয়েব ব্রাউজার ব্যাবহার করে থাকেন তাহলে সহজেই ইংরেজি ওয়েবসাইটগুলোকে বাংলায় ট্রান্সলেট করে নিতে পারবেন । আর আন্য ব্রাউজার ব্যাবহারকারীরা গুগল ট্রান্সলেট ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার কাঙ্খিত ওয়েবসাইটটির লিঙ্ক পেস্ট করে দিবেন তাহলেই হবে । এই বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে গুগলে সার্চ করুন ,,, আপনি তো এখন শিখেই গেছেন …

 

বানান ঠিক রাখতে চেস্টা করুন .

সার্চ করার সময় বানান সঠিকভাবে লিখুন । এখন আপনি জানতে চাচ্ছেন PSD সম্পর্কে কিন্তু সার্চ করলেন PHD লিখে । তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়াল নিজেই উপলব্ধি করেন । যদিও অনেক ক্ষেত্রেই বানান ভুল করলে বুদ্ধিমান গুগল তা বুঝে ফেলে এবং আপনাকে জিজ্ঞাস করে যে আপনি কি PSD সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন । আপনি বলবেন হ্যাঁ, তাহলেই সমস্যার সমাধান । তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বানান ভুল করলে সঠিক রেজাল্ট পাওয়া যায় না । যাইহোক সবসময় বানান ঠিক রাখার চেষ্টা করবেন । এটা আপনার অ্যাটিটিউড এর পরিচয় বহন করবে ।

 

জানার আগ্রহ থাকতে হবে…

আপনি কোন কিছু সার্চ করছেন মানে আপনি ঐ বিষয়টা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন । আর জানার জন্য পর্যাপ্ত আগ্রহ না থাকলে আপনি কখনই ঐ বিষয়টা সম্পর্কে জানতে পারবেন না । ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়- কথাটা এমনি এমনি বলা হয় নি । আপনি কোন কিছু প্রবল আগ্রহ নিয়ে শিখতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি কোন না কোনভাবে ঐ বিষয়টা শিখতে পারবেন । তাই জানার আগ্রহ নিজের মাঝে জাগিয়ে তুলুন ।।

 

অনেকেই এই পোস্টটি থেকে নতুন কিছু জানতে পারবেন আশা করি । আর ইন্টারনেট সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে চাইলে বিশেষ করে ডার্ক ওয়েব, ডীপ ওয়েব ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চাইলে নিশান আহম্মেদ নিয়নের পোস্টগুলো পড়তে পারেন ।

 

সবিশেষে । 

“ব্লগিং হচ্ছে ভালোবাসা । নিজের এক্সপেরিয়েন্সকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া ।” কথাটা আরেকবার পড়ুন । এখানেই আসে প্লেজারিজমের কথা । আরেকজনের কষ্টের ফলকে কপি পেস্ট ট্রান্সলেট করে আপনি হয়ত একটা ব্লগ আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারবেন কিন্তু ভালোবাসা নামক সুমধুর বস্তটা পাবেন না । “সো ট্রাই টু বি গুড টু গেট লাভ ।”

 

ফেসবুকে আমি ঃ- Rakib

 

সবার জন্য শুভকামনা আর ভালোবাসা রইল । সকলের জীবন হাঁসিতে কাটুক ।

 

-আল্লাহ্‌ হাফেজ-