“”আসসালামু আলাইকুম””
আন্তঃগ্রহীয় মাধ্যম দৃশ্যমান আলোর
পাশাপাশি সূর্য অবিরাম ধারায় প্রবাহিত আহিত কণা (প্লাজমা) বিকিরণ করে। এই কণা প্রবাহের সাথে ঝড়ের সাদৃশ্য আছে
বিধায় একে সৌরবায়ু বলা হয়। সূর্য থেকে ছুটে আসা এই বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। এ বায়ুর কারণে একটি ক্ষীণ বায়ুমণ্ডলের (সৌরমণ্ডল) সৃষ্টি হয় যা সৌরজগতের বাইরের দিকে প্রায় ১০০
জ্যোতির্বিজ্ঞান একক দূরত্ব (হেলিওপজ) পর্যন্ত প্রবাহিত হয়। এরই নাম
আন্তঃগ্রহীয় মাধ্যম। সূর্যের পৃষ্ঠতলে সৌরঝলক এবং জ্যোতির্বলয়ের ভর
নিক্ষেপণের মত ভূচুম্বকীয়
ঝড়গুলো মহাকাশ আবহাওয়া
তৈরির মাধ্যমে সৌরমণ্ডলের
ক্ষতি সাধন করে। সূর্যের
ঘূর্ণায়মান চৌম্বক
ক্ষেত্রে আন্তঃগ্রহীয় মাধ্যমের উপর ক্রিয়া
করে সৌরমণ্ডলীয় প্রবাহ পাত তৈরি করে। এটা সৌরজগতের সর্ববৃহৎ
কাঠামো হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তার বায়ুমণ্ডলকে সৌরবায়ুর ক্রিয়া থেকে রক্ষা করে। শুক্র ও মঙ্গল
গ্রহে চৌম্বক ক্ষেত্র না থাকায় সৌরবায়ুর প্রভাবে তাদের বায়ুমণ্ডল ক্রমান্বয়ে
মহাকাশে বিলীন হয়ে
যাচ্ছে। সৌরবায়ুর সাথে
পৃথিবীর চৌম্বক
ক্ষেত্রের মিথস্ক্রিয়ার
কারণে অপরূপ
মেরুজ্যোতির সৃষ্টি হয়।
পৃথিবীর চৌম্বক মেরুর
নিকটে এই জ্যোতি দেখা
যায়। মহাজাগতিক রশ্মি
সৌরজগতের বাইরে উৎপন্ন
হয়। এক্ষেত্রে সৌরমণ্ডল
সৌরজগতের জন্য ঢাল
হিসেবে কাজ করে। এর
পাশাপাশি বিভিন্ন
গ্রহের চৌম্বক
ক্ষেত্রগুলোও কিছুটা
প্রতিরক্ষার কাজ করে।
আন্তঃগ্রহীয় মাধ্যমে
মহাজাগতিক রশ্মির ঘনত্ব
এবং সূর্যের চৌম্বক
ক্ষেত্রের শক্তি অনেক
সময়ের ব্যবধানে
পরিবর্তিত হয়। এ কারণে
সৌরজগতের ভেতরে
মহাজাগতিক বিকিরণের
পরিমাণও সময় সময়
পরিবর্তিত হয়। অবশ্য কি
পরিমাণে পরিবর্তিত হয়
তা এখন পর্যন্ত জানা
যায়নি। মহাজাগতিক ধূলির অন্তত
দুটি চাকতির মত অঞ্চল এই
আন্তঃগ্রহীয় মাধ্যমে
অবস্থান করে। প্রথমটির
নাম রাশিচক্রের
ধূলিমেঘ যা সৌরজগতের
ভেতরের দিকে অবস্থান
করে এবং
রাশিচক্রের
আলো সৃষ্টির কারণ
হিসেবে কাজ করে।
গ্রহগুলোর মিথস্ক্রিয়ার
কারণে গ্রহাণু বেষ্টনীতে যে সংঘর্ষের
সূত্রপাত ঘটেছিল তার
মাধ্যশেই এই ধূলিমেঘ
গঠিত হয়েছে বলে ধারণা
করা হয়। দ্বিতীয় অঞ্চলটি
১০ থেকে ৪০
জ্যোতির্বিজ্ঞান একক
দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত।
কাইপার বেষ্টনীর ভেতর
একই ধরণের সংঘর্ষের
কারণে এই অঞ্চলের সৃষ্টি
হয়েছিল।
সৌরজগতের
অভ্যন্তরভাগ
সৌরজগতের যে
অংশটিতে
পার্থিব গ্রহ ও
গ্রহাণু থাকে সে অংশকে
অভ্যন্তরভাগ নামে
আখ্যায়িত করা হয়। এ
অংশের বস্তুগুলো মূলত
সিলিকেট এবং ধাতু
দ্বারা গঠিত। এই বস্তুগুলো
সূর্যের বেশ কাছাকাছি
অবস্থান করে। এই পুরো
অংশের ব্যাসার্ধ্য
বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের
মধ্যবর্তী দূরত্বের চেয়ে
কম।
অভ্যন্তরভাগের
গ্রহসমূহ
পার্থিব গ্রহ
ভেতরের অংশে মোট
চারটি গ্রহ আছে
যেগুলোকে
পার্থিব গ্রহ
এবং এগুলোর গাঠনিক
উপাদান পাথুরে। এগুলোর
উপগ্রহের সংখ্যা খুবই কম,
কোন কোনটির উপগ্রহই
নেই। এছাড়া এগুলোর
চারদিকে কোন বলয়ও
নেই। এদের গাঠনিক
উপাদান মূলত বিভিন্ন
খনিজ পদার্থ যাদের
গলনাঙ্ক খুব বেশি। যেমন,
তাদের ভূত্বক ও ম্যান্ট্ল
সিলিকেট দ্বারা গঠিত
এবং কেন্দ্র গঠিত লৌহ ও
এ ধরণের অন্যান্য ধাতু
দ্বারা। চারটির মধ্যে
তিনটি গ্রহের
উল্লেখযোগ্য পরিমাণ
বায়ুমণ্ডল আছে। এই গ্রহ
তিনটি হল শুক্র, মঙ্গল এবং
পৃথিবী। আর সবগুলোরই
সংঘর্ষ খাদ এবং
ফাটল
উপত্যকা ও আগ্নেয়গিরির
মত টেকটোনিক পৃষ্ঠতলীয়
কাঠামো আছে। ভেতরের
দিকের গ্রহগুলোর সাথে
নগণ্য গ্রহগুলোকে গুলিয়ে
ফেলা ঠিক হবে না। যে
গ্রহগুলো থেকে সূর্যের
দূরত্ব পৃথিবীর চেয়ে কম
সেগুলোকে নগণ্য গ্রহ বলে।
বুধ এবং শুক্র নগণ্য গ্রহ।
বুধ গ্রহ ::
বুধ গ্রহ সূর্যের সবচেয়ে
কাছে (০.৪ এইউ) এবং
এটি সৌরজগতের
ক্ষুদ্রতম (০.৫৫ পার্থিব
ভর) গ্রহ। এর কোন
প্রাকৃতিক উপগ্রহ নেই।
সংঘর্ষ খাদ ছাড়া এর
একমাত্র জানা
ভৌগোলিক ফিচার
হচ্ছে লতিযুক্ত রিজ বা
rupe। ইতিহাসের প্রথম
দিকে যখন গ্রহের
সংকোচন চলছিল তখন
এগুলো সৃষ্টি হয়েছিল
বলে ধারণা করা হয়।
বুধের বায়ুমণ্ডল অতি
নগণ্য যার প্রধান
উপাদান
সৌরবায়ুর
প্রভাবে পৃষ্ঠ থেকে
সজোরে উৎক্ষিপ্ত
পরমাণু। এর তুলনামূলক বড়
লৌহ কেন্দ্র এবং সরু
ম্যান্ট্লের ব্যাখ্যা এখন
পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন অনুকল্পে বলা
হয়েছে, একটি বড়
সংঘর্ষের মাধ্যমে
গ্রহটির বহিস্তর
ছিন্নভিন্ন হয়ে
মহাকাশে বিলীন হয়ে
গেছে এবং নিকটবর্তী
সূর্যের শক্তির প্রভাবে
এর কোন বিবৃদ্ধিও
ঘটেনি।
শুক্র গ্রহ ::
শুক্র গ্রহের আকার
(০.৮১৫ পার্থিব ভর)
প্রায় পৃথিবীর সমান
এবং সূর্য থেকে এর দূরত্ব
০.৭ এইউ। পৃথিবীর মতই এই
গ্রহের ম্যান্ট্ল
সিলিকেট দ্বারা এবং
কেন্দ্রভাগ লৌহ দ্বারা
গঠিত। এর বায়ুমণ্ডল বেশ
পুরু এবং এর ভেতরের
অংশে বিভিন্ন
ভূতাত্ত্বিক ক্রিয়া-
প্রতিক্রিয়ার প্রমাণ
পাওয়া গেছে। অবশ্য
গ্রহটি পৃথিবীর তুলনায়
অনেক শুষ্ক এবং এর
বায়ুমণ্ডল আমাদের
থেকে ৯০ গুণ বেশি ঘন।
এরও কোন প্রাকৃতিক
উপগ্রহ নেই। পৃষ্ঠতলের
তাপমাত্রা ৪০০°
সেলসিয়াস হওয়ায় এটি
সৌরজগতের সবচেয়ে
উত্তপ্ত। বায়ুমণ্ডলে
প্রচুর পরিমাণে
গ্রিনহাউজ গ্যাস
তাপমাত্রা এতো বেশি
বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে সেখানে
কোন ভূতাত্ত্বিক
ক্রিয়া সংঘটিত হয়
বলে সুস্পষ্ট প্রমাণ
পাওয়া যায়নি। কিন্তু
উল্লেখযোগ্য পুরুত্বের
বায়ুমণ্ডল ধরে রাখার
জন্য প্রয়োজনীয় চৌম্বক
ক্ষেত্র নেই তার। এ
থেকে বোঝা যায়,
আগ্নেয়গিরির
অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে
এর বায়ুমণ্ডল নিয়মিত
পূর্ণ হতে থাকে। এর
ফলে চৌম্বক ক্ষেত্রের
অপ্রতুলতা কাটিয়ে
উঠা যায়।
পৃথিবী :::
পৃথিবী সৌরজগতের
ভেতরের অংশের
সবচেয়ে ঘন ও বড় গ্রহ।
এটিই এ অঞ্চলের
একমাত্র গ্রহ যাতে
বর্তমানেও ভূতাত্ত্বিক
ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া
চলছে। এটা আমাদের
জানা একমাত্র গ্রহ
যাতে জীবনের
অস্তিত্ব রয়েছে। এর
তরল
জলমণ্ডল
সৌরজগতের ভেতরের
অংশে অনন্য। এটিই
একমাত্র গ্রহ যাতে
গ্রহ
টেকটোনিক পর্যবেক্ষন
করা গেছে। পৃথিবীর
বায়ুমণ্ডল অন্যান্য
যেকোন গ্রহ থেকে
অনেক ভিন্ন। এখানে
শতকরা ২১ ভাগ
অক্সিজেন থাকার
কারণেই জীবনের
বিকাশ ঘটা সম্ভব
হয়েছে। এর একটি মাত্র
প্রাকৃতিক উপগ্রহ আছে
যার নাম
চাঁদ বা ‘মুন’।
সৌরজগতের অন্য কোন
পার্থিব গ্রহের এত বড়
উপগ্রহ নেই।
মঙ্গল ::
মঙ্গল গ্রহ পৃথিবী ও
শুক্রের চেয়ে ছোট (.১০৭
পার্থিব ভর)। এর একটি
পাতলা বায়ুমণ্ডল আছে
যা মূলত
কার্বন ডাই
অক্সাইড দিয়ে গঠিত।
পৃষ্ঠতলে প্রচুর সংখ্যক
আগ্নেয়গিরি (যেমন
অলিম্পাস মন্স) ও ফাটল
উপত্যকায় (যেমন
ভ্যালিস মেরিনারিস)
পরিপূর্ণ। এ থেকে
বোঝা যায় এর
ভূতাত্ত্বিক ক্রিয়া-
প্রতিক্রিয়া খুব বেশি
দিন আগে থেমে
যায়নি। লৌহ সমৃদ্ধ
মাটিতে মরিচা পড়ার
কারণেই গ্রহটির রং
লাল। মঙ্গলের দুটি ছোট
ছোট উপগ্রহ আছে
যাদের নাম ডিমোস এবং ফোবোস। ধারণা
করা হয়, মঙ্গল অনেক
আগে কোন গ্রহাণুকে
নিজ মহাকর্ষের বন্ধনে
বেঁধে ফেলেছিল এবং
এভাবেই উপগ্রহগুলোর
সৃষ্টি হয়
@তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
**আজকে এই পর্যন্ত
**ভালো লাগলে ১ টি লাইক দিয়ে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। *ধন্যবাদ।