Site icon Trickbd.com

অদ্ভুত সামুদ্রিক জীব “স্পার্ম তিমি”র তেলের গল্প। পড়ুন আর অবাক হোন!

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম।

আমরা সবাই জানি সামুদ্রিক জীবগুলো সবসময়ই একটু বিচিত্র হয়। স্পার্ম তিমিও তেমন। এই তিমির মাথায় প্রায় ৩৬০০ কেজি তেল জমা থাকে। স্পার্ম তিমির এই বিপুল পরিমাণ তেলের উৎস হলো তাদের প্রধান খাদ্য “স্কুইড”। কিন্তু, স্কুইড থাকে পানির ১-২ কিলোমিটার নিচে যেখানে তাপমাত্রা ও পানির ঘনত্ব সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যথাক্রমে কম এবং অনেক বেশি! স্পার্ম তিমিরা সারাদিন সমুদ্রের উপরে ঘুরে বেড়ায় আর খাওয়ার সময় ২ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে খেয়ে আসে!

কিন্তু প্রশ্ন হলো, এতো গভীরে স্পার্ম তিমি ডুব দিয়ে সাঁতার কাটে কিভাবে???
এর নেপথ্যের নায়ক হচ্ছে এর মাথায় থাকা স্পার্ম তেল! এ তেলের গলনাঙ্ক ৩১°C. কিন্তু, তিমির দেহের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি হওয়ায় এ তেল তাদের মাথায় তরল অবস্থায় থাকে। কিন্তু, সমুদ্রের ২ কিলোমিটার নিচে তাপমাত্রা অনেক কভ থাকে এবং এটাই স্বাভাবিক। ধরি সেখানে তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি। এটা কিন্তু ঐ তেলের গলনাঙ্ক অপেক্ষা কম। তাই, স্পার্ম হোয়েল ডুব দেয়ার সাথে সাথে তার মাথার তেল তরল থেকে কঠিনে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। অনেকটা শীতের দিনে নারকেল তেল জমে যাওয়ার মতো।

আবার প্রশ্ন হলো, তেল কঠিন ও ঘন হলে সুবিধা কি?
আর্কিমিডিসের সূত্রানুযায়ী, কোনো কিছুর ঘনত্ব বাড়লে তার পানিতে ডুবা সহজ হয়ে যায়। গভীর পানিতে স্পার্ম তিমির মাথার তেল জমে দেহের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়। সে যখন উপরে উঠতে থাকে তখন আবার তেল গুলো তরল হতে শুরু করে। আবার সে পানিতে ভাসতে শুরু করে।

ব্যাপারটা কি অসাধারণ! সমুদ্রের অধিকাংশ প্রাণীই একটা নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত বিচরণ করতে পারে। কিন্তু, স্পার্ম তিমি তার শরীরের ঘনত্ব পরিবর্তন করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ কিমি গভীর পর্যন্ত যেতে পারছে! সবই ঐ তেলের খেলা।

কিন্তু, হতাশার কথা হচ্ছে, স্পার্ম তিমির তেল খুব ভালো লুব্রিকেন্ট এবং জালানি। এজন্য লোভী মানুষ একের পর এক এই তিমিগুলো হত্যা করছে।
এজন্য আজ এগুলো বিলুপ্তপ্রায়!