Site icon Trickbd.com

আইন জানুন আইন মানুন পর্ব ৫: সাইবার ক্রাইম বলতে কী বোঝায়?

Unnamed

“সাইবার ক্রাইম” বলতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে অপরাধ করা হয়, তাকেই বোঝানো হয়। উন্নত বিশ্বে সাইবার অপরাধকে অপরাধের তালিকায় শীর্ষে স্থান দেওয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে সাইবার অপরাধীদের জন্য নতুন নতুন আইন।

বর্তমান বিশ্বে বহুল আলোচিত কয়েকটি সাইবার ক্রাইম হলো – ১. সাইবার পর্নোগ্রাফি; ২. হ্যাকিং; ৩. স্প্যাম; ৪. বোমাবাজি; ৫. অ্যাকশন গেম ইত্যাদি। বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইমের পরিচিতি বা এ সংক্রান্ত অপরাধ দমনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনটি অনেকেরই জানা নেই। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ আমাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়। এই আইন অনুযায়ী- ইন্টারনেট অর্থ এমন একটি আন্তর্জাতিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যার মাধ্যমে কম্পিউটার, সেলুলার ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহারকারীরা বিশ্বব্যাপী একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্যের আদান-প্রদান এবং ওয়েবসাইটে উপস্থাপিত তথ্য অবলোকন করতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৬ ধারায় বলা হয়েছে, (১) যদি কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের বা কোনো ব্যক্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা ক্ষতি হবে মর্মে জানা সত্ত্বেও এমন কোনো কাজ করেন, যার ফলে কোনো কম্পিউটার রিসোর্সের কোনো তথ্যবিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তিত হয় বা তার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস পায় বা অন্য কোনোভাবে একে ক্ষতিগ্রস্ত করে; (২) এমন কোনো কম্পিউটার সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে এর ক্ষতিসাধন করেন, যাতে তিনি মালিক বা দখলদার নন, তাহলে তাঁর এই কাজ হবে একটি হ্যাকিং অপরাধ। কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং অপরাধ করলে তিনি অনূর্ধ্ব ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন বা উভয়দণ্ড দেওয়া যেতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন; হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে।

সাইবার অপরাধের শাস্তি : বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর ৫৪ ধারা অনুযায়ী, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেম ইত্যাদির ক্ষতি, অনিষ্ট সাধন যেমন-  ই-মেইল পাঠানো, ভাইরাস ছড়ানো, সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ বা সিস্টেমের ক্ষতি করা ইত্যাদি অপরাধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।