Site icon Trickbd.com

ভাষা কাকে বলে? ভাষার উৎপত্তি, ভাষার সংজ্ঞা, ভাষার বৈশিষ্ট্য এবং আরো অনেক কিছু জেনে নিন এই পোষ্টে [বিস্তারিত]

Unnamed

হ্যালো বন্ধুরা,,
সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই খুবই ভালো আছেন ।

আজ আমি নিয়ে এলাম শিক্ষামুলক একটি পোষ্ট ।

আশা করি আমার আজকের এই পোষ্টটি দ্বারা অনেকে উপকৃত হবেন ।

আজ আমরা আলোচনা করতে চলেছি ভাষা সম্পর্কে ।

এই পোষ্টটিতে যা যা থাকছেঃ

* ভাষার উৎপত্তি,
* ভাষার সংজ্ঞা,
* ভাষার বৈশিষ্ট্য,
* পশুপাখির ডাক এবং মানুষের ভাষার মধ্যে পার্থক্য ।

আশা করি এই বিষয় গুলো জানতে পেরে আপনারা খুবই উপকৃত হবেন । তো এবার চলুন শুরু করা যাক…….>>

ভাষার উৎপত্তিঃ

মানুষ সৃষ্টির সাথে সাথে তার ভাষা সৃষ্টি হয়েছে । তবে সেটা ছিল ইশারা ভাষা ।
ইশারা-ইঙ্গিত বা সংকেতের সাহায্যে আদিম যুগের মানুষ তাদের মনের ভাব প্রকাশ করত

। নির্বাক মানুষ একদিন তাদের নিজের অজান্তেই ধ্বনি সৃষ্টি করল । তারপর আরও কিছুকাল পরে, মানুষ অনেক কঠিন প্রচেষ্টার ফলে ধ্বনির প্রতিক আবিষ্কার করে ফেলে । এভাবেই রচিত হয় মানুষের ভাষার মুল ভিত্তি । ভাষার মাধ্যমেই প্রথম আদিম মানুষের সামাজিক প্রবৃত্তি অঙ্কুরিত হয় । ভাষার মাধ্যমেই মানুষের মাঝে আরো বেশি মেলা-মেশা হয়, সমাজের সৃষ্টি হয় এবং সৃষ্টি হয় সভ্যতার । ভাষার মাধ্যমে মানুষ তার চিন্তাকে নানাভাবে প্রসারিত করে ।
এভাবেই মুলত মানুষের ভাষার উৎপত্তি হয়েছিল ।

ভাষার সংজ্ঞাঃ

মনের ভাব প্রকাশের জন্য মানুষ যে অর্থবহ ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি ব্যবহার করে তাই হলো ভাষা ।
অর্থাৎ মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে বিশেষ কৌশলে যেসব ধ্বনি উচ্চারিত হয় তাকে ভাষা বলে ।

নিম্নে ভাষাবিজ্ঞানীদের কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হলোঃ

১.
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহঃ“মনুষ্যজাতি যেসব ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করে তাকে ভাষা বলে ।”

২.
ড. সুকুমার সেনঃ “মানুষের উচ্চারিত, অর্থবহ বহুজনবোধ্য ধ্বনি সমষ্টিই ভাষা ।”

৩. ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ঃ “মনের ভাব প্রকাশের জন্য, বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত, ধ্বনির দ্বারা নিস্পন্ন, কোনো বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত, স্বতন্ত্রভাবে অবস্থিত, তথা বাক্যে প্রযুক্ত শব্দ সমষ্টিকে ভাষা বলে ।”

ভাষার বৈশিষ্ট্যঃ

নিচে সারিবদ্ধভাবে ভাষার ৮টি বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলোঃ

১. ধ্বনি, শব্দ, অর্থ ও বাক্য নিয়ে ভাষা গঠিত ।

২. ভাষার ক্ষুদ্রতম অংশ ধ্বনি । ভাষা ধ্বনিসমষ্টির সাহায্যে বিষয় পরিস্ফুট করে ।

৩. ভাষার মূল ভিত্তি বাক্য । বাক্যের মাধ্যমে মানুষ মনোভাব প্রকাশ করে ।

৪. বাক্য গঠনের দিক থেকে এক ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষার পার্থক্য বিদ্যমান ।

৫. মানুষের বাগযন্ত্রের গঠন, বৈশিষ্ট্য ভাষা সৃষ্টির সহায়ক ।

৬. ভাষা পরিবর্তনশীল ।

৭. ভাষা গতিশীল ।

৮. ভাষা বহমান নদীর মতো নানা রূপ-রূপান্তরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলে ।

পশুপাখির ডাক এবং মানুষের ভাষার মধ্যে পার্থক্যঃ

পশুপাখির ডাক এবং মানুষের ভাষার মধ্যে পার্থক্য সহজে বোঝানোর জন্য আমি পশুপাখির ডাক এবং মানুষের ভাষাকে আলাদা করে লিখেছি । আশা করি বুঝতে সুবিধা হবে ।

পশুপাখির ডাকঃ
পশুপাখি মুখ দিয়ে নানা ধ্বনি উচ্চারণ করে । কিন্তু পশুপাখির ধ্বনিকে ভাষা বলা যায়না ।
কারণ,
পশুপাখি নির্দিষ্ট কয়েকটি ধ্বনি উচ্চারণ করতে পারে । গাভীর হাম্বা হাম্বা, কুকুরের ঘেউ ঘেউ, বিড়ালের মিউ মিউ, কাকের কা কা, কোকিলের কুহুকুহু
এগুলো রব বা ডাক, ভাষা নয় । পশুপাখি তাদের বিভিন্ন প্রয়োজন ও ভাব প্রকাশ করার জন্য ইচ্ছামতো ধ্বনি সৃষ্টি করতে পারে না । তাই তাদের ধ্বনিও ভাষা নয় । এছাড়া পশুপাখির ডাক হয়তো পশুপাখি বুঝতে পারে কিন্তু মানুষ তা বুঝতে পারেনা । তাই ব্যাকরণে ভাষা বলতে যা বোঝায় পশুপাখির ডাক সে অর্থে ভাষায় মর্যাদা লাভ করতে পারেনি ।

মানুষের ভাষাঃ
মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব । মানুষ বুদ্ধিমান, চিন্তাশীল ও বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব । মানুষের মনে দৈহিক প্রয়োজন ছাড়াও নানা ভাব একে অন্যের নিকট উদয় হয় । বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি দিয়ে মানুষ মনের ভাব একে অন্যের নিকট প্রকাশ করতে পারে তখন তাকে ভাষা বলে । মানুষ বিভিন্ন ধরনের ধ্বনি উচ্চারণ করতে পারে । তাই মানুষের ধ্বনিগুলো ভাষা । মানুষ ব্যতীত অন্য কোনো প্রানীর ভাষা নেই ।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।

আমি খুবই সহজভাবে লেখার চেষ্টা করেছি । আশা করি আপনারা খুবই ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন । আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে সেটাই আমার লেখার সার্থকতা ।
তো আজ এপর্যন্তই । সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং
ট্রিকবিডি এর সাথেই থাকবেন । এই আশাতে আমি আজ এখানেই শেষ করছি ।
যদি কারো কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন নিচের ওয়েবসাইটটিতে ।
website = LEARNBD

(নমস্কার) ।