Site icon Trickbd.com

সিলেবাস শেষ করার উপায় | কিভাবে সিলেবাস শেষ করবো

প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পড়াশোনা করার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তবুও পরীক্ষার সিলেবাস শেষ করার জন্য আমরা পরীক্ষার আগের দিনগুলিতে এই কাজ করতে বাধ্য হয়ে থাকি। আজকের মূল কথা হবে পড়াশোনায় কম সময় দিব কিন্তু তা অবশ্যই কার্যকরী হবে।
আপনারা যারা সারা বছর পড়াশোনা তেমন করেন না, পাঠ্যবইকে অবহেলা করেন তাদের জন্য পরীক্ষা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। আপনার দরজার কাছে আপনার বোর্ড পরীক্ষায় এসে কড়া নাড়ছে, তাই আপনি অবশ্যই চেষ্টা করছেন যে কিভাবে এক বছরের সিলেবাস খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা যায়।

দ্রুত সিলেবাস শেষ করার উপায়

এরকম কাছাকাছি পরীক্ষার সময়ে আপনাকে বুঝতে হবে ১২ ঘন্টা বা তার বেশি পড়াশোনা করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। যদিও মাঝে মাঝে আপনাকে এই কাজটা মানিয়ে নিতে হবে। আজকের এই লেখাটি মূলত সিলেবাস শেষ করার উপায় সম্পর্কে।
এই আর্টিকেলটি  শেষ পর্যন্ত পড়লে জানতে পারবেন সিলেবাস শেষ করার উপায় বিস্তারিত একদম। তো আর বেশি বকবক না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক, খুব অল্প সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করার কৌশল।
আজকে কিছু টিপস শেয়ার করব যে কিভাবে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে পড়াশোনা করে সিলেবাস সম্পন্ন করতে পারেন। এইচডি গুলো অনুসরণ করলে আপনি দীর্ঘক্ষণ পড়াশোনা করতে পারবেন এবং ভারত কার্যকরীভাবে এবং সেই সঙ্গে ভালো মনোনিবেশ তৈরি করতে পারবেন।

সিলেবাস শেষ করার ৯টি উপায়

১. ছোট ছোট অংশে ভাগ করে পড়া

আপনি যদি দ্রুত সময়ে সিলেবাস শেষ করতে চান তবে আপনার জন্য এই টিপসটি অনেক বেশি কার্যকর হবে। এই কৌশলে আপনাকে প্রতিদিন বড় বড় অংশ করে পড়ার চেয়ে ছোট ছোট অংশ করে নিয়মিত পড়তে হবে।
আপনার সিলেবাস সম্পন্ন হয়নি এই কথা ভেবে আপনি যদি তাড়াহুড়া করে সবগুলো অধ্যায় পড়তে যান তাহলে আপনি কার্যকরীভাবে পড়া মুখস্ত করে শিখতে পারবেন না।
তাই আপনার জন্য উত্তম হবে আপনার সিলেবাসের অধ্যায়গুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিয়মিত ছোট ছোট অংশ অধ্যায়ন করা।

২. একটানা দুই ঘন্টার বেশি না পড়া

একটানা পড়ার সর্বোচ্চ সময় হল মোট ২ ঘন্টা। আপনি চাইলে এই দুই ঘণ্টার সময়কে ২৫ মিনিটের একটা অংশে ভাগ করে প্রতি স্লট সময় পরে পরে আপনি পাঁচ মিনিটের বিরতি নিতে পারেন।
এভাবে দুই ঘন্টা পড়াশোনা করলে আপনার প্রায় ২০ মিনিটের বিরতি হবে। দুই ঘন্টা পড়া সম্পন্ন করার পরে আপনি আবার ২০ মিনিট বিরতি নিবেন।

৩. মনকে বিরতি দেওয়া

আপনি যখন পড়ার বিরতিতে থাকবেন তখন চেষ্টা করবেন আপনার মনকে বিরত রাখার পড়াশোনা বিষয়ে চিন্তা করতে।
অনেক সময় দেখা যায় আপনি বিরতিতে আছেন কিন্তু তারপরেও আপনি আপনার সহপাঠী বন্ধুদের সঙ্গে পড়াশোনা বিষয়ে বিভিন্ন রকম আলোচনা করেন।
বন্ধুদের সাথে সিলেবাস নিয়ে আলোচনা কিংবা পরীক্ষার তারিখ নিয়ে আলোচনা কিংবা পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে আলোচনা। এ ধরনের আলোচনা থেকে বিরত থাকবেন।
আপনি যতই বিরতি নেন ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ হবে না যতক্ষণ আপনার মন বিরতিতে যাবে। মনের বিরতি না হলে পরবর্তী রাউন্ডে আপনি কার্যকরভাবে পড়াশোনা করতে পারবেন না।

৪. গুরুত্বপূর্ণ টপিকে মনোনিবেশ করা

একটা সিলেবাসের অধ্যায়গুলোকে কম গুরুত্বপূর্ণ এবং বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাগে করা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হতে পারে আপনি যে টপিক পড়ছেন সেই টপিকের মূল ধারণা, বৈশিষ্ট্য, নীতি, উপপাদ্য, চিত্র, ডায়াগ্রাম উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব ইত্যাদি।
বিগত বছরের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে আপনি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নির্বাচন করতে পারবেন। এছাড়া শিক্ষকরা ক্লাসে কোন অংশটুকু গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে পড়ালো না সেগুলো খেয়াল রেখে পড়তে হবে। অগুরুত্বপূর্ণ টপিকে বেশি সময় মনোনিবেশ করা যাবে না।
একটা পরীক্ষায় মূলত ৮০ শতাংশ প্রশ্ন করা হয়ে থাকে বেসিক থেকে। তাই আপনি যদি অল্প সময়ে দ্রুত সিলেবাস সম্পন্ন করতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিটি বিষয়ের অধ্যায়ের বেসিক বিষয়গুলো আগে সম্পন্ন করতে হবে। আপনার উচিত হবে গুরুত্বপূর্ণ টপিকে মনোনিবেশ করা।

৫. বিষয়কে বিভক্ত করা

আপনি আজকের দিনে কি পড়বেন তা আপনাকে নির্ধারণ করে নিতে হবে। তবে আমরা বিষয়গুলোকে নিম্ন তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করতে পারি। যথা:
স্মৃতি বা মুখস্ত নির্ভর বিষয়: জীববিজ্ঞান ইতিহাস ও ভূগোলে প্রচুর পড়া রয়েছে যেগুলো আপনাকে মস্তিষ্কে মুখস্ত করে রাখতে হবে।
সমাধানের বিষয়: গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান
ইত্যাদি বিষয় আপনাকে  সমাধান করতে হবে।
ব্যাখ্যাভিত্তিক বিষয়: ইংরেজি সাহিত্য ও বাংলা সাহিত্য ।
সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো আপনাকে এই তিন শ্রেণীর বিষয়ের সমন্বয় করে পড়াশোনা করতে হবে নিয়মিত।

৬. শিখুন এবং লিখুন

সিলেবাসের অধ্যায়গুলো যখন পড়বেন তখন গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো বিভিন্ন রকমের রঙের কালি দিয়ে হাইলাইট করতে পারেন। যেটা আপনার অনেক বেশি উপকার করবে।
আপনি চাইলে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো একটা নোটবুকে নোট করে টুকে রাখতে পারেন। এটি আপনাকে তথ্যবহুল পড়াশোনা করতে সাহায্য করবে অনেক বেশি। সিলেবাসের গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো জোরে জোরে পড়ুন এবং আপনি নিয়মিত লেখার মাধ্যমে প্র্যাকটিস করুন।
একদম পরীক্ষা শেষ মুহূর্তে এসে কার্যকরীভাবে একটা সিলেবাস শেষ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই নোটবুকে নোট করতে হবে। বৈজ্ঞানিকভাবে নোট করার ২টি পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো আপনি google করে জানতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ কোন কোন সাবজেক্টে শিক্ষা ক্যাডার আছে

৭. ভিজুয়াল টেকনিক ব্যবহার করা

আপনি চাইলে আলমারিতে কিংবা আপনার কক্ষের দেয়ালে গুরুত্বপূর্ণ গণিত এর সূত্র কিংবা পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো লিখে কাগজে ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
এগুলো চোখের সামনে ঝুলিয়ে রাখলে আপনি যেকোনো সময় মনে না পড়লে সেগুলো চোখ বুলিয়ে নিতে পারবেন। এভাবে আপনি চাইলে কঠিন সূত্রগুলো খুব সহজে আয়ত্ত করতে পারবেন।
এছাড়া আরো অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো কঠিন। কঠিন পয়েন্ট গুলোকে মনে রাখার জন্য আপনি ফ্ল্যাশকার্ড ব্যবহার করতে পারেন।
এই কার্ড আপনি চাইলে যেকোনো জায়গায় নিতে পারবেন এবং সেখানে এগুলো দেখে পড়া রিভিশন করতে পারবেন।

৮. ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিভিশন দেওয়া

আপনি সিলেবাস শেষ করার জন্য পরীক্ষা শেষ মুহূর্তে এসে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাগুলো সম্পন্ন করবেন।
একদম নতুন অধ্যায়গুলো যেহেতু করবেন যেহেতু আপনাকে 24 ঘণ্টার মধ্যে আর একবার রিভাইজ করতে হবে।
কেননা আমরা কোন একটা নতুন পড়া 24 ঘন্টার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ হারিয়ে ফেলি। তাই আপনার সম্পূর্ণ পড়াকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে রিভাইজ দিন।

৯. স্মৃতিশক্তি উন্নতি করতে ঘুমান

অনেক সময় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগের দিন গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে থাকে। যেটা আপনার মস্তিষ্কের জন্য কল্যাণকর নয়।
কারণ আপনাকে মনে রাখতে হবে একমাত্র ঘুমই আমাদের স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে রূপান্তর করে থাকে। যেটা আপনি পরীক্ষার হলে মনে করে লিখতে পারবেন।
তাই আপনাকে নিয়মিত সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমাতে হবে যাতে আপনার মস্তিষ্ক সারা দিনের পড়াশোনাগুলো মস্তিষ্কে ধরে রাখতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ডিগ্রি সাবজেক্ট কি কি

উপসংহার

পরিশেষে বলতে চাই, এই নয়টি টিপস আশা করি কার্যকরী হবে আপনাকে দীর্ঘক্ষণ পড়ায় মন বসাতে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করতে সাহায্য করবে। সিলেবাস শেষ করার জন্য আজকের আর্টিকেলটা আপনার জন্য যথেষ্ট হবে। সিলেবাস শেষ করার উপায় নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!