Site icon Trickbd.com

এইচএসসি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে কলেজে ভর্তি হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন। (ভর্তি ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র)

এসএসসি ২০২২ পরীক্ষা উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীদের জানাই অভিনন্দন। এসএসসি পরীক্ষায় তো উত্তীর্ণ হলাম এখন এরপর যদি আমাদের পড়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে সাধারণত আমাদের সকলকেই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে এইচএসসি তে ভর্তি হতে হয়। পূর্বে এইচএসসিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে সরাসরি পছন্দের কলেজে গিয়ে ভর্তি হতে হতো। কিন্তু বিগত কিছু বছর যাবৎ এই পদ্ধতির পরিবর্তন হয়ে এখন অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ভর্তির পদ্ধতি চালু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৮ই ডিসেম্বর ২০২২ইং থেকে অনলাইন আবেদনের কার্যক্রম শুরু হয়ে ১৫ই ডিসেম্বর ২০২২ইং তারিখ পর্যন্ত চলে এবং পরবর্তীতে সেই আবেদনের পরীপ্রেক্ষিতে গত ৩১শে ডিসেম্বর ২০২২ইং তারিখে এর ফলাফল বের হয়। তো এই ফলাফলের মধ্যে যারা তাদের পছন্দের কলেজের জন্য নির্বাচিত হয়েছে তাদের এখন উক্ত কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর তার বিস্তারিত গাইডলাইন নিয়েই মূলত আমার আজকের এই টপিক।

নির্বাচিত কলেজ নিশ্চায়ন করাঃ

প্রথমত এইচএসসি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কলেজ পছন্দ করে অনলাইনে যে আবেদন করেছেন, তার ফলাফল দেখে নেওয়া। ফলাফল কিভাবে দেখবেন এই নিয়ে ইতিমধ্যে পোস্ট করা আছে দেখে নিবেন। ফলাফল যদি আপনার সন্তোষজনক হয় অর্থাৎ আপনি যে কলেজে ভর্তি হতে চান ইচ্ছুক সেটি পেয়ে থাকেন, তাহলে এখন আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, আপনি উক্ত কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক এর প্রাথমিক নিশ্চায়ন করা। আর যা করতে হবে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ফি জমাদানের মাধ্যমে। আর এই নিশ্চায়ন ফি হচ্ছে ৩২৮/- (তিনশত আটাশ) টাকা। এটি পেমেন্ট করতে পারবেন বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায় সহ বিভিন্ন উপায়ে। মনে রাখবেন ৩২৮/- টাকা পেমেন্ট করতে গেলে চার্জ বাবদ আরও ৫/- টাকা বেশি কাটবে। উল্লেখ্য এই নিশ্চায়ন ফি আপনাকে অবশ্যই ০১লা জানুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ থেকে ০৮ই জানুয়ারি ২০২৩ইং তারিখের মধ্যে প্রদান করতে হবে। অন্যথায় আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে এবং পরবর্তীতে আবার নতুন করে আবেদন করা লাগবে। এখন কথা হচ্ছে কোনটির মাধ্যমে কিভাবে পেমেন্ট করবেন তা জানতে নিচের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন অথবা স্ক্রিনশটগুলি দেখে নিতে পারেন।

বিকাশ – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/BKash.pdf

নগদ – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/nagad.pdf

রকেট – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/rocket.pdf

উপায় – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/upay.pdf

ট্যাপ – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/tap.pdf

ওকে ওয়ালেট – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/ok-walet.pdf

সোনালী ওয়েব পেমেন্ট – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/Sonali_web.pdf

সোনালী ইসেবা পেমেন্ট – http://xiclassadmission.gov.bd/payment_2022/sonali_esheba.pdf

এইখান থেকে আপনার পছন্দ মতো বা সুবিধামতো যেকোনো একটি পেমেন্ট সার্ভিস ব্যবহার করে আপনি এইচএসসি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আপনার জন্য নির্বাচিত কলেজের নিশ্চায়ন ফি জমা দিয়ে দিবেন। এখানে প্রত্যেকটি পিডিএফ ফাইলের মধ্যে কিভাবে পেমেন্ট করবেন তার বিস্তারিত তথ্য দেওয়া রয়েছে।

কলেজে ভর্তির কার্যক্রমঃ

নির্বাচিত কলেজের নিশ্চায়ন ফি জমা দেওয়ার পর আপনাকে আগামী ২২শে জানুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ২২শে জানুয়ারি থেকে ২৬শে জানুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার সময়সীমা। তাই আপনাকে এই সময়সীমার মধ্যে যেকোনে একদিন গিয়ে নির্বাচিত কলেজে সরাসরি গিয়ে ভর্তি হতে হবে। সরাসরি ভর্তি হওয়ার সময় আপনার বেশকিছু কাগজপত্রাদির প্রয়োজন পড়বে। এছাড়াও একটি নির্দিষ্ট ফিও আপনাকে প্রদান করতে হবে। তো চলুন কাগজপত্র এবং কত টাকা পেমেন্ট করতে তা সম্পর্কে নিচ থেকে জানা যাক।

ভর্তি ফরমের নমুনা

ভর্তির ফরম পূরণঃ

আপনাকে সর্বপ্রথম একটি ভর্তি ফরম পূরণ করতে হবে। আপনি যে কলেজে ভর্তি হবেন সে কলেজে সরাসরি গিয়ে অফিস কক্ষ থেকে উক্ত কলেজের একটি ভর্তি ফরম সংগ্রহ করে নিবেন। অথবা কিছু কিছু কলেজের ক্ষেত্রে তাদের ওয়েবসাইট থেকেও সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। তারপর সেটির চাহিত তথ্য অনুযায়ী তথ্যগুলো পূরণ করবেন। ফরমটি পূরণ করার পর এটির সাথে বেশকিছু কাগজপত্র এবং ফি লাগবে তা নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদীঃ

কলেজে ভর্তির ফিঃ

বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন, সরকারি ও বেসরকারি কলেজ, শহর ও মফস্বলে অবস্থিত কলেজ এর উপর ভিত্তি করে ভর্তির ফি এর পরিমাণে ভিন্নতা রয়েছে। অর্থাৎ আপনি যদি বাংলা ভার্সনে পড়েন তাহলে তার ফি এর পরিমাণ একরকম। আবার আপনি যদি ইংরেজি ভার্সনে পড়েন তাহলে তার ফি এর পরিমাণ আরেকরকম। এইরকম সরকারি কলেজ হলে একরম ফি, আবার বেসরকারি কলেজ হলে আরেক রকম ফি। এছাড়াও শহরে অবস্থিত কলেজ হলে একরকম ফি, আবার মফস্বল বা গ্রামে অবস্থিত কলেজ হলে আরেক রকম ফি। নিচে উক্ত বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করা হলো।

সরকারি কলেজ এর ভর্তি ফিঃ

যদি আপনার পছন্দকৃত এবং আপনার জন্য নির্বাচিত কলেজটি সরকারি কলেজ হয়ে থাকে তো সেক্ষেত্রে আপনার জন্য এটি একটি বিশেষ সুখবর। কারণ সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার ফি এর পরিমাণ একদমই কম। এছাড়াও পরবর্তীতে অন্যান্য চাঁদার ক্ষেত্রে আপনি কম টাকার মধ্যে সেরে যেতে পারবেন। আগেও বলেছিলাম এখনও বলি এলাকা ভিত্তিক কলেজ অনুযায়ী কলেজের ভর্তি ফি আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। নিচে এর তালিকা দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য এখানে ফি এর পরিমাণ যা তুলে ধরা হয়েছে তা হলো নির্ধিষ্ট পরিমাণ ফি। আর ( + ) বা উপরে বলতে বুঝানো হয়েছে একটি কলেজে বিভিন্ন ধরনের চাঁদা থাকে, ঐ চাঁদা সহ সর্বমোট টাকাকে বুঝানো হয়েছে। এছাড়াও এখানে বলে রাখা ভালো যে, যদি কোনো কলেজে বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সন থাকে তাহলে সবগুলোর ক্ষেত্রে একই পরিমাণ ফি হবে।

বেসরকারি কলেজ এর ভর্তি ফিঃ

আপনারা যারা আবেদনের সময় বেসরকারি কলেজগুলো পছন্দের তালিকায় রেখেছেন এবং সেগুলো থেকে কোনো একটি কলেজের জন্য আপনি নির্বাচিত হয়েছেন। তাহলে আপনার জন্য বলা যায় এটি একটি তেমন ভালো খবর নয়, যদি আপনার অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে থাকে। আর যদি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আপনার কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। সরকারি কলেজের ন্যায় বেসরকারি কলেজের ক্ষেত্রেও এলাকা ভিত্তিক কলেজ অনুযায়ী কলেজের ভর্তি ফি আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। নিচে এর তালিকা দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য এখানে ফি এর পরিমাণ যা তুলে ধরা হয়েছে তা হলো নির্ধিষ্ট পরিমাণ ফি। আর ( + ) বা উপরে বলতে বুঝানো হয়েছে একটি কলেজে বিভিন্ন ধরনের চাঁদা থাকে, ঐ চাঁদা সহ সর্বমোট টাকাকে বুঝানো হয়েছে। এছাড়াও এখানে বলে রাখা ভালো যে, যদি কোনো কলেজে বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সন থাকে এবং আপনি যদি বাংলা ভার্সনে ভর্তি হতে চান তাহলে তার ফি একরকম হবে, আর আপনি যদি ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি হতে চান তাহলে তার ফি আরেকরকম হবে অর্থাৎ পরিমাণ বেশি হবে।

সর্বশেষ কার্যক্রমঃ

কলেজের ভর্তি ফরম সঠিকভাবে পূরণ করার পর এর সাথে অর্থাৎ ফরমের সাথে উপরোল্লিখ বিভিন্ন কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করে সুন্দরভাবে সেটআপ বা বাঁধাই করে নিবেন। তারপর কলেজের ফি এর পরিমাণ জেনে ফি সহ ফরম ও অন্যান্য কাগজপত্রাদি কলেজের ভর্তির কক্ষে জমা দিয়ে দিবেন।

কিছু কথাঃ

উক্ত পোস্টে আমি যে নিয়মাবলী তুলে ধরেছি, মোটামুটি সব কলেজের ক্ষেত্রেই এগুলো ফলো করা হবে। হয়তো কিছু কিছু কলেজের ক্ষেত্রে ভিন্নতা লক্ষ করা যেতে পারে। তবে এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আপনি যে কলেজে ভর্তি হতে চান সে কলেজে ভর্তির হওয়ার আগে সরাসরি ভিজিট করে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বা নোটিশ বোর্ড ঝুলানো থাকবে সেটি থেকে ভর্তির নিয়মাবলী জেনে নিতে পারেন অথবা উক্ত কলেজের যদি ওয়েবসাইট থেকে থাকে তাহলে সেখান থেকে তাদের নির্ধেশিকা দেখে নিতে পারেন। তো এইভাবে আপনি পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে কলেজে ভর্তি হতে যাবেন এবং সুন্দরভাবে, সুষ্ঠুভাবে ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন বলে আশা রাখি।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।