আসসালামু আলাইকুম । আশা করি সকলে ভালো আছেন ।সকলের জন্য শুভকামনা জানিয়ে আজকের আলোচনা শুরু করছি। আমাদের আজকের আলোচনা জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে।
জার্মানি(Germany)
আজ আমি আপনাদেরকে বলবো জার্মানিতে পড়ালেখা করলে আপনার কি কি সুবিধা পাবেন এবং অসুবিধায় পড়বেন।
প্রথমে আলোচনা করি জার্মানিতে পড়ালেখা করার সুবিধা গুলো নিয়ে:-
১. শেনজেন কান্ট্রি (Schengen Country)
জার্মান শেনজেন কান্ট্রি হওয়ার কারণে আপনি বাকি সব শেনজেন আওতাভুক্ত দেশ গুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন ।এই সুবিধাটি মূলত ট্রাভেলারদের জন্য।
২. পড়ালেখার খরচ ফ্রী (Zero Tuition Fee)
পড়ালেখার খরচ ফ্রি হলেও সেমিস্টার শেষে আপনাকে (Administration Fee) অর্থাৎ প্রশাসনিক খরচ দিতে হবে। যা আনুমানিক ৩০০ থেকে ৫০০ ইউরো হবে।
৩. নো ব্যাংক স্টেটমেন্ট(No bank statement)
৪. পার্টটাইম জব (Part Time Job)
পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব গুলো করতে পারবেন।
এখন কথা হচ্ছে ফুলটাইম জব কি করতে পারবেন?
হ্যাঁ করতে পারবেন তবে তা আপনার পড়ালেখা শেষে। জার্মানি লোকেরা কিছুটা অলস হয়ে থাকে তারা অতি তাড়াতাড়ি তাদের জব থেকে রিজাইন দিয়ে দেয়। তাই জার্মানিতে অনেক মানুষের দরকার হয় যা তারা বাইরের দেশগুলো থেকে নিয়ে থাকে।
৫. ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অনেক বেশি জবের সুবিধা।
জার্মানির নাগরিকদের মধ্যে বৃদ্ধ হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। তাই জার্মানির ইঞ্জিনিয়াররা অনেক আগেই তাদের জব ছেড়ে দেয়। আর সেখানেই জার্মানিতে অনেক ইঞ্জিনেরদের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার জন্য জার্মানিতে নতুন ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন পড়ে। জার্মানিতে ইঞ্জিনিয়ারদের জব পাওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।
চলুন এবার আলোচনা করা যাক অসুবিধা গুলো নিয়ে:-
১. ১৩ বছরের পড়ালেখার অভিজ্ঞতা (13 Years Study Experience)
জার্মানিতে যারা ব্যাচেলর করতে যাবেন তাদের অবশ্যই ১৩ বছরের পড়ালেখার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আরো ভালোভাবে পৌঁছাতে হলে বলা যায় যে আপনাকে এইচএসসি দেয়ার পর ইউনিভার্সিটিতে এক বছর পড়ালেখা করতে হবে।
২. জার্মানির ভাষা (German Language)
আপনি জার্মানিতে লেখাপড়া করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে ইংরেজিতে পড়ালেখা করতে হবে। তবে আপনি যদি পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে জার্মানির ভাষা শিখতে হবে। কেননা জার্মানির মানুষরা জার্মানির ভাষাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।
৩. জার্মানিতে এম্বাসি ওয়েটিং টাইম অনেক বেশি (Long Waiting Time)
জার্মানিতে এম্বাসি ওয়েটিং টাইম অনেক বেশি। ১৯ মাস সময় লাগবে শুধুমাত্র ভিসা আর ইন্টারভিউ এর জন্য।এই সময়টুকু আপনারা বসে না থেকে বাংলাদেশী ইউনিভার্সিটি গুলোতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেন।
চলুন এখন বলি আপনারা কিভাবে জার্মানির ইউনিভারসিটিতে পড়ালেখা করতে পারবেন?
এখন যারা ব্যাচেলর করার জন্য যাবেন তারা ভাবতে পারেন যে,” আমি এই ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করি বা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, আমি কি জার্মানির ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সামর্থ্য রাখি?
আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়লে জার্মানিতে পড়ার সুযোগ পাবেন তা দেখার জন্য আপনি গুগলে গিয়ে সার্চ করবেন ? University Anabin List Bangladesh এখানে গেলেই দেখতে পারবেন বাংলাদেশের সকল ইউনিভার্সিটি নাম দেয়া আছে। সেখানে দেখবেন যে এইচ প্লাস(H+) আর এইচ মাইনাস(H-) দেয়া আছে। এইচ প্লাস যে ইউনিভারসিটির নামের পাশে আছে সেগুলোতে আপনি পড়ে থাকলে আপনি জার্মানিতে পড়ার সুযোগ পাবেন, এবং এইচ মাইনাস যেগুলোতে আছে সেগুলোতে পড়ে থাকলে আপনি জার্মানিতে পড়তে পারবেন না।
আপনি যদি ব্যাচেলারের করার জন্য আবেদন করেন তাহলে কি লাগবে?
১. IELTS
জার্মানিতে পড়তে হলে অবশ্যই আপনার IELTS করা লাগবে আর মনে রাখতে হবে সেখানে আপনার সর্বনিম্ন মার্ক হচ্ছে ছয় লাগবে আর এর উপরে হলে ভালো হয়।
২. এসএসসি এবং এইচএসসি সার্টিফিকেট (SSC and HSC Certificate)
৩. ১৩ বছর পড়ালেখা করার প্রমাণ (Proof of 13 Years Study)
আপনি যে 13 বছর পড়ালেখা করেছেন তার একটি প্রমাণ দেখাতে হবে।
৪. স্টেটমেন্ট অফ পারপাস [Statement of Purpose (SOP)]
৫. রিকমেন্ডেশন লেটার (Recommendation letter)
এগুলো দিয়ে আপনি আপনার পছন্দের ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করবেন।
কোন ইউনিভার্সিটি কেমন হবে তা দেখার জন্য এই ওয়েবসাইটটি অনুসরণ করতে পারেন:?
https://www2.daad.de/deutschland/studienangebote/international-programmes/en/
আরো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
সবকিছু যাচাই-বাছাই করে ভিসার আবেদন করে অপেক্ষা করবেন ভিসা আসার জন্য। সকলের জন্য শুভকামনা জানিয়ে আজকের আলোচনা শেষ করছি।
সকালে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন ।
আল্লাহ হাফেজ।