আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি সকলে অনেক ভাল আছেন। আমি আপনাদের মাঝে লাইব্রেরী কিভাবে গড়ে উঠলো তার সম্পর্কে জানাবো। চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
আমরা তো লাইব্রেরীতে কমবেশি সবাই বই পড়েছি। কিন্তু আপনারা কি জানেন কিভাবে লাইব্রের গড়ে ওঠে? চলুন জেনে নিই।
লাতিন শব্দ ‘লিবের’ (Liber) মানে হল বই, আর এই লিবের থেকে তৈরি হয়েছে ‘লাইব্রেরি’ শব্দ। আর জানোই তো, লাইব্রেরি হল এমন এক জায়গা যেখানে বইপত্র পাঠকের সুবিধার জন্য বিষয়-অনুযায়ী সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হয়।
আজ থেকে প্রায় চারহাজার বছর আগে মধ্যপ্রাচে। আসিরিয়া রাজ্যে লাইব্রেরি গড়ে উঠেছিল। ঐসব অঞ্চলের লোক কাদামাটির ফলকে ধাতুর শিক দিয়ে লিখে সেগুলো পুড়িয়ে নিত। পোড়ামাটির এই বই তাদের মন্দির বা প্রাসাদ-সংলগ্ন লাইব্রেরিতে সংগৃহীত হত।
এই সময়ের আরেক প্রসিদ্ধ লাইব্রেরি ছিল মিশরের নীলনদের মোহনায় অবস্থিত আলেকজান্ডিয়া শহরে। এখানে একশো কুড়িটি বিভাগে প্রায় সাতলক্ষ বই ছিল। সে বই হত মজার। যেরকম আমাদের তালপাতার পুঁথি বা ভূর্জপত্র, সেরকম এক পাতার নাম প্যাপিরাস (papyrus) যা এককালে লেখার জন্য ব্যবহার করা হত।
জনসাধারণের জন্য পাবলিক লাইব্রেরি সর্বপ্রথম দেখা দেয় রোম-নগরে। সে-সময়ে সেখানে ছিল আটাশটি সুবৃহৎ লাইব্রেরি, গড়ে উঠেছিল লোকদের সহযোগিতায়। তারপর খৃষ্টধর্মের প্রসারের সাথে-সাথে গির্জার প্রয়োজনে লাইব্রেরি তৈরি হতে থাকে। প্রায় একইসঙ্গে ক্রমশ উদ্ভুত ইউনিভার্সিটিগুলোর প্রয়োজনে লাইব্রেরির প্রসারলাভ ঘটতে থাকে। ইউরোপের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে বইপত্র শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হত। ভারতবর্ষে নালন্দা ও তক্ষশীলা নামে যে-দুটি বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তাদেরও ছিল দুটি সুবৃহৎ লাইব্রেরি। সার টমাস বডলির (Sir Thomas Bodley, ১৫৪৫-১৬১৩) অর্থানুকূল্যে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গড়ে উঠল বিখ্যাত বডলেইয়ান লাইব্রেরি।
লাইব্রেরি আজকের দুনিয়ায় একনাগাড়ে গড়ে উঠছে-নানা ধরনের লাইব্রেরি, সাধারণ বা বিশেষজ্ঞদের জন্য। বড় বড় শহরে জনসাধারণের জন্য লাইব্রেরি গড়ে উঠছে। আর আছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও নানা সংস্থার সাইব্রেরি। ব্যক্তিগত সংগ্রহের লাইব্রেরি তো চিরকালীন। পৃথিবীর অন্যতম সুবৃহৎ লাইব্রেরি হল লন্ডনে বৃটিশ মিউজিয়াম, ওয়াশিংটনে লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস, রোমে ভ্যাটিকান লাইব্রেরি। এদের প্রত্যেকটিতে বহু লক্ষ বইয়ের সমাবেশ। বিশ্বের হেন বিষয় নেই যার বই এখানে পাওয়া যায় না।
Reference:(কিশোর আনন্দ ২)
সম্পাদনা:( আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ)