Site icon Trickbd.com

পরীক্ষায় A+ পাওয়ার প্রাথমিক কার্যকরী পদ্ধতি

আমরা যারা বাংলাদেশের পিইসি,জে এস সি, এস এস সি, এইচ এস সি এর বিভিন্ন শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী তাদের প্রায় সবারই লক্ষ্য থাকে A+ পাওয়া। কিন্তু যারা ভালো ছাত্র ছাত্রী তাদের চাহিদা আরেকটু বেশি।তারা ট্যালেন্টপুলে বা সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেতে চায়। সবারই কমন লক্ষ্য থাকে A+ পাওয়া। A+ চাওয়ার আরো অনেক কারণ আছে। কারণ ভবিষ্যতে ভালো কোনো স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয় এ লেখা পড়া করতে ভর্তি পরীক্ষায় সব বোর্ড পরীক্ষার নাম্বার মূল্যায়ন করা হয়।

তাই আজকে এই ব্লগে A+ পাওয়ার সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করব।

 

বার্ষিক প্রস্তুতি

যেভাবে বই পড়বেনঃ ছাত্র-ছাত্রীরা বই পড়ে নানা নিয়মে।কেউ মুখস্ত করে আবার কেউবা বই হাইলাইটার দিয়ে দাগাদাগি করে পড়ে।কিন্ত বই পড়ার সঠিক নিয়ম হলো প্রয়োজনীয় সকল তথ্য যেগুলো MCQ তে আসতে পারে সেগুলো হাইলাইটার দিয়ে হাইলাইট করতে হবে যাথে রিভিশন দিতে সহজ হয়।

সবগুলো কন্সেপ্ট সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।ফলে বড় প্রশ্ন বা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যেতে পারে। আর পুরো বই মুখস্ত করতে হবে তার কোনো মানে নেই বা বাধ্যবাধকতা নেই। শুধু বইতে কোনো পয়েন্ট,সূত্র,তথ্য বক্স ইত্যাদি মুখস্ত করলেই চলবে।

 

গাইড বইঃ বইয়ের প্রতিটা অধ্যায়ের উপর ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারলে নিজেকে আরো ভালো ভাবে ঝালাই করে নেওয়ার জন্য গাইড বইয়ের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। গাইড বই থেকে অনেক ধরনের প্রশ্ন পাওয়া যায় যা বিভিন্ন স্কুলের বা বিভিন্ন বোর্ড থেকে দেওয়া হয়েছিল।

এগুলো অনুশীলন করলে প্রশ্ন সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি নিজস্ব একটা নোট তৈরী করে নেওয়া যায়।

 

নিজস্ব নোটঃ প্রতিটা বিষয়ের উপর যদি নিজস্ব কোনো নোট তৈরি করা যায় তাহলে তার প্রস্তুতি আরো ভালো করা সম্ভব।এতে তার লেখাও হলো এবং সাথে সাথে পড়াও হয়ে গেল। নিজস্ব নোটে একটা আলাদা বিশ্বাস থাকে।নিজস্ব নোটে নিজস্ব বাছাইকৃত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলো সুন্দর করে নোট করতে হবে। নিজস্ব নোট হতে পারে A+ পাওয়ার উপায়। তাই নিজস্ব নোট অনেক গুরুত্ব বহন করে।

 

রুটিনঃ বার্ষিক প্রস্তুতি ভালোভাবে করার জন্য একটা নির্দিষ্ট রুটিন তাহাক অত্যন্ত জরুরী।রুটিনে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনটা বিষয় রাখতে হবে এবং প্রতিটা সপ্তাহে যেন সবগুলো সাব্জেক্ট বা বিষয় পড়ে। প্রতিটা সাব্জেক্টের জন্য আধা থেকে দুই ঘন্টা রাখা ভালো তবে এটা বিষয়ের উপর নির্ভর করে।

কঠিন বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্য বেশি সময় এবং কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্য কম সময় দিতে হবে। এমন ভাবে সময় দিতে হবে যেন প্রতি সপ্তাহে প্রতিটা বিষয়ের একটা করে অধ্যায় শেষ হয়। কারণ দ্রুত অধ্যায় শেষ হলে রিভিশন দেওয়ার সময় বেশি পাওয়া যায়। যারা ভাল রেজাল্ট করতে চায়,তাদের জন্য রুটিন করে অত্যন্ত জরুরি।

 

প্রস্তুতি হোক অনলাইনেঃ বর্তমানে ইন্টারনেট আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে। তার আমাদের দৈনন্দিন পড়ালেখায়ও ইন্টারনেটের ব্যবহার ব্যাপক হারে হচ্ছে এবং এটি যথেষ্ট জনপ্রিয়। যেসকল টপিক আমরা বুঝি না সেগুলো আমরা গুগল কিংবা ইউটিউবে এর মাধ্যমে খুব সহজেই আয়ত্ত করতে পারছি।

এছাড়া বিভিন্ন জনপ্রিয় সাইট, ইউটিউব চ্যানেল , এপসের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত সাইট, ইউটিউব চ্যানেল , এপস হলো রবি টেন মিনিট স্কুল। এছাড়া আরেকটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল হলো আমাদের স্কুল। পড়া লেখার পাশা পাশি অনলাইনে ফ্রিতে পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া যায়। ফলে প্রস্তুতি আরো অনেক ভালো হয়। প্রয়োজনে ইউটিউবে ভিডিওর প্লে লিস্ট বানানো যায়। এর ফলে রিভিশন দেওয়া সহজ হয়।

 

যে সকল জিনিস মুখস্ত করতে হবে

আমরা অনেকেই আছি যারা কিছু নাহ বুঝে শুনে শুধু মুখস্ত করে। কিন্তু বইয়ের সব জিনিস মুখস্ত করতে হয় নাহ। যেহেতু সব বিষয় এক নয়, তাই সব বিষয়ে মুখস্ত করার বিষয়ও এক নয়। তাই আলাদা আলাদা জিনিস মুখস্ত করতে হবে আলাদা আলাদা বিষয়ের জন্য। a+ পাওয়ার উপায় হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক।

 

যা যা মুখস্ত করতে হবেঃ

#১ – বাংলায় কবি পরিচিতিতে কবিদের জন্ম সাল ও তাদের দেশের বাড়ি এবং তাদের শিক্ষা স্থান মুখস্থ করতে হবে। এছাড়া বিগিত শিক্ষা বর্ষে আসা শব্দার্থ মুখস্থ করতে হবে।

#২ – ইংরেজিতে শুধু গ্রামারের রুলস এবং ওয়ার্ড মিনিং মুখস্থ রাখলেই চলবে।

#৩ – গণিতে বিভিন্ন বীজ গণিতীয় সূত্র মুখস্থ করতে হবে।

#৪ – বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সাল এবং বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য মুখস্থ করতে হবে।

#৫ – বিজ্ঞান বিষয়ে পিসিক্স এর সূত্র, রসায়নের বিক্রিয়া এবং জীব বিজ্ঞান এর বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য মুখস্ত করতে হবে। এছাড়া কোনো সারণি থাকলে তাও মুখস্থ করতে হবে।

#৬ – ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয় এর জন্য প্রতিটা চ্যাপ্টার থেকে অত্যন্ত একটা করে সূরার আয়াত মুখস্থ করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য মুখস্থ করতে হবে

#৭ – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এর বিভিন্ন সাল, প্রযুক্তি পরিচিতি মুখস্থ করতে হবে।

 

আর বেশি গুরুত্ব দিয়ে ইংরেজি,গণিত এবং বিজ্ঞান পড়তে হবে এবং বেশি বেশি অনুশীলন করতে হবে।

পরিক্ষায় A+ পেতে যা করবেন

পরীক্ষার খাতা উপস্থাপন

পরীক্ষার খাতায় সঠিক ভাবে উপস্থাপনা এ+ পাওয়ার উপায় হতে পারে এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে পেজের পাশে এক স্কেল পরিমাণ মার্জিন টানতে হবে এবং উপরে দেড় স্কেল পরিমাণ মার্জিন টানতে হবে।

প্রতিটা প্রশ্ন অবশ্যই প্রয়োজনীয় প্যার‍্যা দিতে হবে। সব গুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। হেডিং ও প্রশ্ন নাম্বার অবশ্যই নীল কালি দিয়ে লেখতে হবে। প্রতিটা প্রশ্নের জন্য সময় থেকে নির্ধারণ করে নিতে হবে। কোনো প্রশ্ন না পারলে সময় নষ্ট না করে পরের প্রশ্নে যেতে হবে। সৃজনশীল প্রশ্ন ৫-৬ পেজ লেখতে হবে। এর কম নয়।

রচনা অবশ্যই ৮-১২ পেজের মধ্যে লিখতে হবে। এভাবে সঠিক নিয়মে লেখতে হবে

নিজের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সঠিক ভাবে লেখতে হবে এবং লেখার পর মিলিয়ে নিতে হবে।পরীক্ষায় লেখার গতি সর্বোচ্চ রাখতে হবে। বিভিন্ন কোটেশন এবং হেডিং নীল কালি ব্যবহার করে লিখতে হবে। লুজ শীটের উপরে পেজ নম্বর লিখতে হবে। এতে পরে খাতা জমা দেওয়ার সময় পেজ উলটা পালটা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

খাতা জমা দেওয়ার আগে পুরো খাতা একবার রিভিশন অবশ্যই দিতে হবে এবং লুজ শীটের নাম্বার মিলিয়ে নিতে হবে। কোনো ভুল গেলে ওভার রাইটিং না করে এক টানে কেটে দিয়ে আবার নতুন করে লিখতে হবে। ভালো হয় যদি বক্স করে কাটা যায়। পরীক্ষার আগে প্রয়োজনে গ্রুপ স্টাডি করা যেতে পারে। এতে সবার দূর্বলতা টের পাওয়া যায় এবং নিজেলে আরো ঝালিয়ে নেওয়াত সুযোগ থাকে।

 

ব্লগটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

এছাড়াও আপনি চাইলে আমার নতুন ব্লগ “মুসলিম নাম” এর সম্প্রতি ব্লগটি পড়তে পারেনঃ স দিয়ে ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ