FM Radio কি আমরা সেটা সবাই জানি; অন্তত ভূত এফএম এর জন্য হলেও FM রেডিও শুনতে কানে হেডফোন তুলেন’নি এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না….ইভেন আমি নিজেও মন খারাপ থাকলে কানে হেডফোন গুজে FM রেডিওতে গান শুনি…..এফএম রেডিও শোনার মজায় আলাদা!
আজ আমরা এমন একটা সার্কিট নিয়ে আলোচনা করবো যেটার নাম FM Jammer; এই সার্কটি তথা ডিভাইসটি ব্যবহার করা যদিও অনৈতিক [ নিজের রিস্কে ব্যবহার করুন] তবুও ইলেকট্রনিক্স প্রেমী মানুষদের জন্য এটি একটা দারুন প্রজেক্ট এমনকি হ্যাকারদের জন্য এটা একটা দারুন গ্যাজেট হিসেবে কাজ করবে।
FM Jammer আসলে কি?
এটা এমন একটা ডিভাইস VHF (Very High Frequency) উৎপন্ন করে ডিভাইস পার্শ্ববর্তী এলাকাতে নিয়ত বিরাজমান FM signal ব্লক করে দেয় ফলে ঐ এলাকায় কেউই তাদের কাঙ্খিত এফএম চ্যালেনে টিউন করতে পারেন না ফলে FM Radio শুনতে পান না।
কম্পোনেন্ট:
C1= 6pf
C2=6-35 pf এটাকে ট্রিমার (প্রচলিত টিউমার) বলা হয় যা আসলে ভ্যারিয়েবল ক্যাপাসিটর
C3=0.01 uf (uf অর্থ মাইক্রো ফ্যারাড)
C4=10 uf
R1= 15k ohm
R2=3.9k ohm
Q1=2N2222
L1= কয়েল
BT1= 9V (পাওয়ার সোর্স)
এখানে C হলো ক্যাপাসিটর [ মনে রাখবেন এগুলা সিরামিক ক্যাপাসিটর, এগুলার মানের পরিবর্তে কোড ব্যবহার করা হয় তাই দোকানে গিয়ে কোড বলবেন। যেমন 0.01uf এর কোড হলো ১০৩। এটা বের করার উপায়টাও বলে দিচ্ছি 0. 01 uf সমান হলো 10000 pF (পিকো ফ্যারাড) এখানে 10 সংখ্যার পর বাড়ডি 3 টা শূন্যের জন্য 10 সংখ্যার পর 3 বসিয়ে 103 করা হয়েছে। এগুলা সাধারনত লালচে হলুদ কালারের হয়ে থাকে ]। R হলো রেজিস্টার যার কালার কোড অনুযায়ী কিনতে হয়, মনে রাখবেন এখানে সকল রেজিস্টার আমরা কোয়াটার ওয়াটের ব্যবহার করবো। Q1 হলো ট্রানজিস্টার যেটার ইমিটর,বেইজ ও কালেক্টর চিহ্নিত করে সংযুক্ত করতে হবে। L1 হলো কয়েল যা 16 mm কপার ইনসুলেটেড ওয়্যারকে 6 প্যাচ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে। তৈরী করা সহজ মনে হলেও এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এন্টেনা হিসেবে আপনি এলুমিনিয়াম দন্ড/ লম্বা কপার ওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। BT1 হলো 9 ভোল্ট ব্যাটারি।
আসুন এবার সার্কটি ডায়াগ্রাম দেখে কম্পোনেন্টগুলি সংযুক্ত করি:
[খেয়াল করুন যে C এর কোন পোল নেই অর্থাৎ যেকোন একদিক মুখী করে যুক্ত করলেই চলবে]
কিভাবে FM Jammer কাজ করবে?
আপনি উক্ত সার্কটি তৈরী করে ব্যাটারি যুক্ত করুন; এ্যান্টেনাটি সঠিক জায়গায় প্রতিস্থাপন করুন… ব্যাস আপনার FM Jammer রেডী। এবার আপনি আপনার FM রেডিও অন করুন এবং বিভিন্ন চ্যানেল টিউন করার চেষ্টা করুন, যদি টিউন না হয় এবং শো শো শব্দ করে তাহলে বুঝবেন যে আপনার সার্কিট’টি সফলভাবে কাজ করছে।
যদি সকল কিছু সঠিকভাবে করার পরও সার্কিট’টি কাজ না করে তাহলে ট্রিমারটি ঘুড়িয়ে সঠিক অবস্থান [প্রযোজ্য ক্যাপাসিটারের ধারকত্বে] নিয়ে আসুন। তথাপি L1 ট্যাংক কয়েলটি সঠিকভাবে তৈরী হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হউন।
কিছু বিশেষ কথা:
এই FM Jammer সার্কিট’টি তৈরী করতে বড়জোর ৫০ টাকা খরচ হতে পারে, অথচ আমি নিশ্চিত করে বলছি যে এটা আপনি বাজারে ৫০০০ টাকা খরচ করেও খুজে পাবেন না [অবশ্য এটার আরেকটা কারন হলো এটা যথেচ্ছা ব্যবহার বেআইনি]। এমন ডিভাইস শুধু যে ইলিগ্যাল উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় এমনটা নয় বরং মিটিং বা কনফারেন্সে এটার বিভিন্নমুখী ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বাজারে কম্পোনেন্ট কেনার দোকান কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবেন যে স্কুল/কলেজের সায়েন্স ফেয়ার প্রজেক্টে লাগবে নয়তো বিড়ম্বনার স্বীকার হতে পারেন। অনেক সময় দোকানী এমন খুচরা পার্ট দিতে চাইবে না কেননা একটা রেজিস্টার এর মূল্য মাত্র ২৫ পয়সা অথচ কালার ব্যান্ড মিলিয়ে খুজতে লাগে ১ মিনিট তাই বিষয়টা তো বুঝছেনই…..সুতরাং সময় নিয়ে কম্পোনেন্ট খোজার দায়িত্ব আপনার। যদি সার্কিট সোল্ডারিং করেন তবে সোল্ডার আয়রন এবং বিদ্যুৎ হতে বিপদ এড়াতে সতর্ক থাকবেন।
শেষকথা: উপরের সার্কিট’টি খুবই সহজ এবং ইফেক্টিভ তাই ইলেকট্রনিক্স নিয়ে একটু স্টাডি করলে আমি নিশ্চিত আপনি নিজেও তৈরী করতে পারবেন এমন একটি স্পেশাল ডিভাইস। শুনতে অবাক লাগলেও চরম একটা সত্য কথা হলো ইলেক্ট্রনিক্সের সাথে যদি প্রেম করতে পারেন তাহলে নিশ্চিত আপনার ক্যারিয়ার গড়ে যাবে।
ফেসবুকে আমি→নিশান আহম্মেদ নিয়ন
আল্লাহ হাফেজ