আজকাল আমরা সবাই বড়লোক; সবার বাড়ীতেই কমবেশী দুই-একটা ফ্রিজ আছে। আগেকার দিনে অবশ্য বাড়ীতে বড় মাছ আনলে ধনী পড়শীর দুয়ারে ছুটতে হতো ফ্রিজে রাখার জন্য; তাতে পড়শীরও আলাদা এক প্রকার দেমাগ কাজ করতো….হি হি হি হি!!!
যাই হউক আজ আমরা কথা বলবো এমন একটা মিনি ফ্রিজ সম্পর্কে যেটি চাইলে আপনি নিজেও বানাতে পারবেন খুব সহজেই অল্প খরচেই তৈরী করতে পারবেন, এমনকি সেটিকে পড়ার টেবিলেও সাজিয়ে রাখতে পারবেন!!
উপকরণ:
(১) হার্ডবোর্ড
(২) তাপ অপরিবাহী সাদা ফোম কর্ক
(৩) দুইটি সিপিইউ কুলিং ফ্যান
(৪) হিট সিংক
(৫) থার্মোইলেকট্রিক কুলার/পেল্টিয়ার
(৬) ব্যাটারি
(৭) অন্যান্য আনুসাঙ্গিক ইলিমেন্ট
কার্যকরণ:
সবার আগে হার্ডবোর্ড সাইজমতো কেটে আপনার মিনি ফ্রিজ আকারের একটি ফ্রেম তৈরী করুন; হার্ডবোর্ডের পিসগুলা জোড়া দিতে আপনি গ্লু-গান ব্যবহার করতে পারেন।
এবার সাদা ফোম কর্ক কেটে ফ্রিজের ফ্রেমের ভেতর আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিন যেন তা তাপরোধী হয়।
বাজারে বিভিন্ন দরের পেল্টিয়ার পাবেন (ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট বিক্রির দোকানে খোজ করুন) তবে দামটা সর্বনিম্ন দুইশত টাকার মতো হবে হয়তো।
পেল্টিয়ারের পোল আছে অর্থাৎ এর একটি প্রান্ত ডিসি পজেটিভ এবং অপর প্রান্ত নেগেটিভ ভোল্টের সাথে যুক্ত করতে হয় ( রিমার্ক: লাল তার পজেটিভ এবং কালো তার নেগেটিভ প্রান্তের সাথে যুক্ত করুন)। এবার পেল্টিয়ারের দুই প্রান্তে আঠা দিয়ে হিট সিংক যুক্ত করুন (এমন আঠা ব্যবহার করবেন না যা তাপ- অপরিবাহী)। হিটসিংকের দুই পাশে দুটি কুলিং ফ্যান লাগান। পেল্টিয়ারের কুলিং পার্টে লাগানো হিটসিংকের সাথে যেই কুলিং ফ্যান লাগাবেন সেটি যেন পেছনের বাতাস সামনে ফ্লো করতে পারে এমন করে যুক্ত করুন; অপরদিকে অপর কুলিং ফ্যান যেন বাতাস ফ্লো করে হিটসিংক বরাবর(এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস কেননা পেল্টিয়ারের হট পার্টের হিটসিংক কুলিং ফ্যানের বাতাসে ঠান্ডা না হলে পেল্টিয়ার পুরে যেতে পারে আবার কুলিং পার্টের বাতাস ফ্লো করতে না আপনার মিনি ফ্রিজ ঠান্ডা হতে পারবে না)।
এবার আপনার ফ্রিজের পেছনের বোর্ড কেটে কুলিং ফ্যান(পেল্টিয়ারের যেই ফ্যানটি ঠান্ডা বাতাস ফ্রো করে) আঠা দিয়ে ভালোমতো যুক্ত করুন।
লক্ষ্য করুন পেল্টিয়ারের পজেটিভ এবং নেগেটিভ ওয়্যার এবং দুটি কুলিং ফ্যানের দুই জোড়া পজেটিভ ও নেগেটিভ ওয়্যার পরস্পর প্যারালাল কানেকশনে পাওয়ার সোর্স তথা ব্যাটারির সাথে যুক্ত করবেন; চাইলে সাথে একটি মিনি অন/অফ সুইচও লাগাতে পারেন।
প্লেটিয়ার সাধারণত ১২ ভোল্ট এবং ১০ এম্পিয়ার কারেন্ট ডিসার্ভ করে; আপনি চাইলে স্পেসিফিক ব্যাটারি ব্যবহার করতে পারবেন। আবার সারাসরি ২২০ ভোল্ট এসি কারেন্টও ব্যবহার করতে পারেন [সবার আগে এসি কারেন্টকে চারটি ডায়োড দিয়ে তৈরী রেকটিফয়ার ব্রীজের মাধ্যমে পিউর রেকটিফিকেশন করে ডিসি কারেন্টে কনভার্ট করুন> স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার দিয়ে দিয়ে ভোল্টেজ ড্রপ করান> এবার এমপ্লিফায়ার দিয়ে কাঙ্খিত কারেন্ট বিবর্ধিত করুন]। আবার আপনি যদি রিচার্জেবল মিনি ফ্রিজ তৈরী করতে চান তাহলে পাওয়ার ব্যাংক দিয়েও এমনটা করতে পারেন [তাতে অবশ্য বুস্টার সার্কিট ব্যবহার করতে হবে; যা জুল থিপ সার্কিটের অনেকটাই সিনোনিম স্ট্র্যাকচারাল]।
আসুন এবার কিছু ফটোগ্রাফ দেখি নিই…
পেল্টিয়ার:
ফ্রিজের গঠনটা এমনই হবে:
কুলিং পার্টের গঠন:
কিছু বিশেষ বিষয়:
অবশ্যই এটি সত্যিকারের ফ্রিজের মতোন ইফেক্টিভ নয় তবে সাইজ আর টেকনোলজি বিবেচনায় এটি অসাধারণ সেটি কিন্তু আপনাকে মানতেই হবে। আপনি যদি আরও বেশী ইফিসিয়েন্সি চান তবে একাধিক পেল্টিয়ার ব্যবহার করতে পারেন তবে Requirement Power সম্পর্কে অবগত থাকবেন। ফ্রিজের ইন্টারনাল পার্টের ভেতর প্রচুর বাতাসের চাপ হতে পারে তাই মাঝে মাঝে ফ্রিজটির ঢাকনা খুলুন যাতে এয়ার প্রেসার ঠিক থাকে; কিংবা আপনি চাইলে ফ্রিজের সামনের দিকে একটি একমুখী রাবার ভাল্ব বসাতে পারেন যাতে অধিক চাপে ভেতরের বাতাস বাইরে যেতে পারলেও বাইরের বাতাস ভেতরে প্রবেশ না করতে পারে।
যদিচ টেকনোলোজির দিক থেকে এটি অসাধারন তবে ব্লেড এবং বৈদ্যুতিক লাইন নিয়ে কাজ করলে (যেমন সরাসরি AC লাইন নিয়ে কাজ করলে) অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
আসুন এবার সারাসরি ভিডিওতে দেখে নেই পুরো প্রসেস:
একটি ব্যতিক্রমী অনুরোধ:
TrickBD এর সকল ভিজিটর-অথর-কনট্রিবিউটর আমরাদের সকল বয়স হয়তো গড়পড়তা পনের থেকে বিশ- বাইশ হবে; কথার কথা ক্যালেন্ডারের পাতায় যদি আমরা আরও ৪০ বছর বাঁচি তাহলে ৪০*৩৬৫=১৪৬০০ দিন সর্বোচ্চ বাঁচবো মাত্র। এই নিছক সময়টুকু নিয়ে আমরা কতোই না অবহেলা আর উপেক্ষা করি; কেউবা রিলেশনে ব্যর্থ-ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে মন খারাপ করে বসে থাকি আবার কেউবা এমনি এমনিই ডিপ্রেশনে ভুগি।
ঘড়ির কাটার দিকে দেখুন, আপনার মন খারাপের জন্য সে কিন্তু বসে নেই; নিজের হার্টবিট শুনুন, সে কিন্তু মৃত্যুর অপেক্ষায় নিয়ত কম্পিত হচ্ছে….আর এমন একটা সুস্থ শরীর নিয়ে আপনি কি করছেন???
সত্যি বলতে উই আর ডুয়িং নাথিং; জীবনটা ঈশ্বর আপনাকে উপহার দিয়েছে কিন্তু সেটাকে শাইন করার দায়িত্ব আপনার নিজেরই কেননা আপনার মৃত্যুর দায়টা কেউই নিতে পারবে না, সুতরাং অন্যের ভরসায়-কালকের আশায়- অন্যের ইর্ষাতে না জ্বলে নিজের ব্রেইনের নিয়নবাতিটা এইবার তো জ্বালান।
ফেসবুকে আমি→নিশান আহম্মেদ নিয়ন
আল্লাহ হাফেজ