জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং র্যাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে শেষে সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে তারানা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুকের নানা ধরনের অপব্যবহারসহ নেতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাব পাওয়ার পরই আলোচনার বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে।’
গত শনিবার এক গোলটেবিল আলোচনায় তারানা হালিম জানিয়েছিলেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য জানতে একটি চুক্তি করার লক্ষ্য নিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবে সরকার।
বর্তমানে দেশে ৫ কোটি ৪১ লাখ সক্রিয় ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখ।
মানহানিকর কনটেন্ট, নারীর প্রতি অবমাননা, রাজনৈতিক অপপ্রচার ও জঙ্গি কার্যক্রমে উৎসাহ দিয়ে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টির নানা চেষ্টা ফেসবুকের মাধ্যমে ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু ফেসবুকের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো ধরনের চুক্তি না থাকায় ফেসবুকের অপব্যবহারের মাধ্যমে ঘটা এসব অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না।
বাংলাদেশে ফেসবুকের কোনো অ্যাডমিন না থাকায় আপত্তিকর পোস্ট বা কনটেন্ট সরানোও কঠিন হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য গত আড়াই বছরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে ৩৭ জনের তথ্য চেয়ে সাড়া পায়নি বাংলাদেশ । ‘গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্টস রিপোর্ট’ নামে ২০১৩ সাল থেকে ৬ মাস পর পর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
গত ১১ নভেম্বর প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তিনজন ব্যবহারকারীর তথ্য চাওয়া হয়।
এর আগে ২০১৩ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে ১২ জন, ২০১৪ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে ১৭ জন ও জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে পাঁচজনের তথ্য চেয়েছিল সরকার। ফেসবুক কারও তথ্যই দেয়নি।
তবে ২০১৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে মধ্যে তিনটি ‘কনটেন্ট’ দেখার সুযোগ বন্ধ রাখার বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাড়া দেয় বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের অনুরোধে সাড়া না দিলেও ভারত ও পাকিস্তানের অনুরোধ ঠিকই রাখা হয়। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুরোধ এসেছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে । দেশটির সরকার ফেসুবকের কাছে ৫ হাজার ৪৭৩টি আবেদনের মাধ্যমে ৭ হাজার ২৮১ জনের তথ্য চেয়ে পাঠায়। এর প্রায় ৪৫ শতাংশ তথ্য ফেসবুক ভারতকে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তান ১০০টি আবেদনের মাধ্যমে ১৫২ জনের তথ্য চায় ফেসবুকের কাছে। আবেদনের ৪২ শতাংশ তথ্য পাকিস্তান সরকারকে দিয়েছে বলে ফেসবুক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর প্রথম ৬ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ৪১ হাজার ২১০ টি অনুরোধ পায় ফেসবুক । এরই মধ্যে ২০ হাজার ৫৬৮টি পোস্ট বা কনটেন্টের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
সবচেয়ে বেশি তথ্য চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র । তাদের চাওয়া ২৬ হাজার ৫৭৯ জন ব্যবহারকারীর তথ্যের মধ্যে ৭৯.৮৫ শতাংশের তথ্যই ফেসবুক দিয়েছে।
TipsaLL24,Com আমাদের সাইটে একবার ঘুরে আসুন।