বন্ধুদের সঙ্গে নিজের অনুভব, ভালোলাগা-মন্দলাগা ভাগাভাগি করে নেওয়ার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাক কিংবা পিকনিক করুক- সঙ্গে সঙ্গে তা প্রকাশ হয়ে যায় ফেসবুকের দেওয়ালে। হরিষে-বিষাদে ফেসবুক আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। তাহলে এমন একটা মাধ্যমে মহিলারা ‘পিরিয়ড’ সংক্রান্ত তথ্যই বা কেন জানাতে পারবেন না! ফেসবুকে বিভিন্ন ‘ফিলিং’ অপশনের মতোই ‘অন মাই পিরিয়ড’ অপশনের দাবি তুললেন দিল্লির এক যুবতী। এই মর্মে মার্ক জাকারবার্গকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। দিল্লির বাসিন্দা বছর কুড়ির আরুশি দুয়া আইনের ছাত্রী। পিরিয়ড সংক্রান্ত ট্যাবু ভাঙতেই তাঁর এই পদক্ষেপ। এ দেশে মহিলাদের পিরিয়ড নিয়ে কীরকম ধ্যানধারণা তা জাকারবার্গকে বিশদে ব্যাখ্যা করে জানান তিনি। ঋতুকালে মহিলাদের মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়া, কিংবা কালো প্লাস্টিকে ঢেকে ন্যাপকিন কেনা- এদেশের বাস্তবতা। এ কথা জাকারবার্গ সাহেবকে বোঝাতে চেয়েছেন তিনি। এবং সেই সূত্রেই তাঁর প্রশ্ন, ‘পিরিয়ড’ হওয়া কি অন্যায়ের কিছু? কিন্তু এদেশে বিষয়টিকে অচ্ছুৎ করেই রাখা হয়। আর তাই এ নিয়ে কথা বলতে মহিলারা অস্বস্তিও বোধ করেন। জাকারবার্গের কাছে তাই দুয়ার আর্জি, তিনি যেন ফেসবুকে ‘অন মাই পিরিয়ড’ অপশন আনেন। ফেসবুক ইতিমধ্যেই ‘ফিলিং’ অপশন এনেছে। এর মাধ্যমে ‘ফিলিং হ্যাপি’ বা ‘ফিলিং একসাইটেড’ ইত্যাদি জানাতে পারেন ব্যবহারকারীরা। আর পাঁচজন নিজেদের আনন্দ, দুঃখের অনুভূতি যেরকম ভাগ করে নিতে চান, সেভাবেই পিরিয়ড সংক্রান্ত অনুভবও সহজভাবে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান আরুশি। প্রসঙ্গত, পিরিয়ড নিয়ে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতেও এক ধরনের ‘ডিপ্লোম্যাটিক’ মনোভাব দেখা যায়। এর আগে ইনস্টাগ্রাম থেকে এক তরুণীর ছবি বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল এই অজুহাতে। যদিও তরুণী জানিয়েছিল, সেটি ছিল একটি পরীক্ষামূলক পোস্ট। তবুও ছবি ‘আপত্তিজনক’ বলে রাখতে রাজি হয়নি ওই সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে দুয়া জানান, জাকারবার্গ যেন এই ব্যবস্থার বদল আনেন। তাঁকে প্রভাবশালী হিসেবে অভিহিত করে দুয়ার আবেদন, তিনি যদি কোনো ব্যবস্থা নেন, তাহলে হয়ত সারা দুনিয়া ব্যাপারটা বুঝবে। পিরিয়ড নিয়ে অহেতুক ট্যাবুও দূর হবে সাধারণের মন থেকে। জাকারবার্গের উদ্দেশে এ খোলা চিঠির কী জবাব দেন তিনি, তা জানতেই এখন উৎসুক নেটদুনিয়া।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন