ফেসবুকে দেওয়া ব্যক্তিগত তথ্য আপনারই বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে। তাই সাবধান।


ফেসবুক আমাদের প্রতিদিনকার জীবনের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যম ছাড়া এখন মানুষের জীবন কল্পনা করা যায় না।
অনেকেই ফেসবুককে ব্যবসায়িক প্রচার ও ব্যক্তিগত যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করে থাকেন। তবে ফেসবুকে ব্যবহারে কিছু সতর্কতা অবশ্যই পালন করতে হবে।

Advertisement
সব ধরনের তথ্য ফেসবুকে দেওয়াটা আপনার নিজের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কোন ধরনের তথ্য ফেসবুকে দেবেন না, সে পরামর্শ দিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট কমান্ডো ডটকম।
ফোন নম্বর
ফোন নম্বর তো জরুরি বিষয়। অনেকে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায়, কিন্তু ফোন নম্বর নেই। সে সময় অনেকেই আপনার ফোন নম্বরটি হয়তো ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করেন। কিন্তু আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা সবার মনোভাব যে ইতিবাচক হবে, তা তো নয়! আপনাকে বেকায়দায় ফেলার জন্যও আপনার ফোন নম্বর ব্যবহার করা হতে পারে। আবার ফোন নম্বর নিয়ে অসময়ে অনেকে বিরক্তও করতে পারে। ফেসবুকে ফোন নম্বর দেওয়ার সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি। তাই ফেসবুকে নিজের ফোন নম্বর না দেওয়াটাই ভালো।
বাসার ঠিকানা
নিজের ঠিকানা ফেসবুকে দেবেন না। বলা তো যায় না, কেউ আপনার ক্ষতি করতে চাইলে তখন এ তথ্যই আপনার জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। তা ছাড়া দাওয়াত ছাড়াই অতিথিরা চলে এলে তখন সামাল দেওয়াটাও মুশকিল হয়ে পড়বে। বাসার ঠিকানা চেনা পরিচিতজনদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন।
অফিসের বিষয় ফেসবুকে দেবেন না
নিজের কাজ সম্পর্কে ফেসবুকে যত কম জানাবেন, ততই নিরাপদে থাকবেন। আর অফিসের বিষয়-আশয় ফেসবুকে না জানানোই ভালো। এতে আপনার কাজের ও কর্মক্ষেত্রের গোপনীয়তা বজায় থাকবে এবং নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন। আর অফিসে কারো সঙ্গে মনোমালিন্য বা ঝগড়া হলে কখনোই সেটা জানানোর জন্য ফেসবুককে বেছে নেবেন না। তাহলে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবেন। কারণ, এসব সাময়িক আবেগ বা রাগের বশে আপনি অন্যদের কাছে ছোট হবেন।
সম্পর্কের বিষয়ে ফেসবুকে খোলামেলা না হওয়াই ভালো।
পরিবার
নিজের সম্পর্কের বিষয়ে ফেসবুকে বেশি তথ্য না জানানোটাই ভালো। এতে আপনি ও আপনার প্রিয়জন নিরাপদে থাকবেন। নিজের সঙ্গীর বা পরিবারের সঙ্গে তোলা ছবি ফেসবুকে যত কম দেবেন, আপনার ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ততই নিজের কাছে থাকবে। লাইকের আশায় ছবি দেবেন না, কারণ এসব ছবি বিকৃত করে আপনার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করতে পারে আপনার শত্রু কিংবা হ্যাকাররা।
জন্মদিন
ফেসবুকের কল্যাণে এখন জন্মদিনে সবার টাইমলাইন ভেসে যায় শুভেচ্ছায়। কিন্তু এসব তথ্য ফেসবুকে শেয়ার না করলেই আপনি ও আপনার অ্যাকাউন্টটি নিরাপদ থাকে। কারণ, এসব তথ্য ব্যবহার করে সাইবার ক্রিমিনালরা আপনার নামেই আরেকটি অ্যাকাউন্ট খুলে সেটি বিভিন্ন বেআইনি কাজে ব্যবহার করতে পারে, যাতে ফেঁসে যাবেন আপনি। তাই সাবধান।
কোথায় ঘুরতে যাচ্ছেন
শুধু নিপাট ভালো মানুষেরাই যে ফেসবুক ব্যবহার করেন, সেটা ভাবলে বোকামি হবে। গুণ্ডা, বদমাশ, ডাকাতরাও এখন ফেসবুকে আছে। কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে সেটা ফেসবুকে জানান দেবেন না। বলা তো যায় না, আপনার দেওয়া তথ্য দেখে আপনার পেছনেই ছুটল ছিনতাইকারী বা ডাকাতের দল। এই ঝুঁকি না নিয়ে বরং ঘুরে এসে ধীরে-সুস্থে ছবিগুলো আপলোড করুন।
শিশুর ছবি বা তথ্য
নিজের শিশুর প্রতি ভালোবাসা সব মা-বাবারই থাকে। কিন্তু এই ভালোবাসা ফেসবুকে প্রকাশ করতে যাবেন না। শিশুদের ছবি বা তাদের স্কুলের ঠিকানা ও ছবি দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। এসব তথ্য সহজেই অপহরণকারীরা সংগ্রহ করতে পারে। তা ছাড়া অনলাইনে এখন অনেক বিকৃত মানসিকতার মানুষ রয়েছে, যারা শিশুদের ছবি বিকৃত করে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। তাই আপনার শিশুর নিরাপত্তার জন্যই শিশুর ছবি বা তথ্য ফেসবুকে কম দেওয়াটাই ভালো।

Leave a Reply