অনেকেই এখন দুটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকেন।
একটা ব্যক্তিগত কাজে, অর্থাৎ পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের জন্য। আরেকটি শুধু কাজের জন্য। অর্থাৎ সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য।তবে অনেকেরই বন্ধুসংখ্যা এত বেশি যে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে না। সে কারণেই দরকার পড়ে ফেসবুক পেজের। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যেমন ফেসবুক পেজ আছে, তেমনি অনেক ব্যক্তিও ফেসবুকে পেজ খুলছেন এবং পেজের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন বা আপডেট দিচ্ছেন।
তারকাদের ক্ষেত্রেই ফেসবুক পেজ ব্যবহারের নজির বেশি দেখা যায়। প্রতিনিয়ত নিজের কাজের আপডেট দেওয়া, কোথাও গেলে সেই ছবিগুলো পোস্ট করা বা সচেতনতা বৃদ্ধির কাজেও ব্যবহার করা হয় ফেসবুক পেজকে।
আর এখন ব্যবসার কাজে ফেসবুক পেজ ছাড়া গতি নেই। কারণ, যেকোনো ধরনের ব্যবসাই হোক, মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম ফেসবুক।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমবিষয়ক ওয়েবসাইট কনভার্ট উইথ কনটেন্ট জানিয়েছে ফেসবুক পেজ থাকার ১০টি সুবিধার কথা।
১. অগণিত বন্ধু রাখা যাবে
ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজারের বেশি বন্ধু রাখা যায় না। কিন্তু ফেসবুক পেজের ক্ষেত্রে এ রকম কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। আর এ সুবিধার কারণেই ফেসবুকে অ্যাকাউন্টের চেয়ে পেজ রাখাই ভালো। যদি আপনি বেশি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চান, তাহলে ফেসবুক পেজের বিকল্প নেই।
২. ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়বে না
যখন আপনি ফেসবুক পেজ খুলবেন, তখন আপনার মাথায় থাকবে এটা সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য। সে ক্ষেত্রে আপনি নিশ্চয়ই আপনার কাজ নিয়েই বেশি কথা বলবেন এখানে। ফলে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। আপনি আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি বাড়িয়ে নিতে পারেন। ফলে সবাই আপনার পোস্ট দেখতে পারবে না। অন্যদিকে আপনার যেসব বিষয় জানানো প্রয়োজন, সেগুলো জানাতে নিজের পেজটি ব্যবহার করুন।
৩. সার্চে সুবিধা পাবেন
ফেসবুকে বা সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ দিলে ফেসবুকের পেজগুলোই আগে আসে এবং এগুলো তাড়াতাড়ি খুঁজে পাওয়া যায়। তাই যদি আপনি চান মানুষ আপনাকে বা আপনার প্রতিষ্ঠানকে সহজে খুঁজে পাবে, তাহলে ফেসবুক পেজে অ্যাকটিভ থাকুন।
৪. ট্যাগিং সুবিধা
ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে শুধু বন্ধুরাই আপনাকে ট্যাগ করতে পারে। কিন্তু ফেসবুকে পেজ থাকলে যে কেউ ট্যাগ করতে পারবে। এতে আপনি বা আপনার প্রতিষ্ঠান অন্যদের কাছে দ্রুত পরিচিতি পাবে। আপনার দেওয়া পোস্টগুলোও শেয়ার হবে দ্রুত।
৫. মনিটরিং সুবিধা
ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মনিটরিং করার সুবিধা পাওয়া যায়। কারণ, ফেসবুক পেজে রয়েছে অ্যানালিটিক্স। আপনার পোস্টগুলো কাদের কাছে যাচ্ছে, প্রতিদিন কত মানুষ আপনার পেজে আসছে, সেটা জানতে পারবেন। লাইক আর ডিজলাইক কত, তার সব হিসাবই আপনি পাবেন পেজের অ্যানালিটিক্স থেকে।
৬. নিউজফিড মার্কেটিং
বিভিন্ন পেজের আপডেট ফলোয়ারদের নিউজফিডে দেখা যায়। আর যদি কোনো পোস্ট বুস্ট করা হয়, তাহলে সেটা ফলোয়ারদের বাইরে অন্যদের নিউজফিডেও চলে যায়। এ ক্ষেত্রে পরিচিতি বাড়ে। বিভিন্ন পণ্য বা সেবা সম্পর্কেও মানুষ জানতে পারে।
৭. বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন
বিজ্ঞাপন হিসেবে অনেক প্রতিষ্ঠানই অনলাইনে নানা রকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। অনেক সময় ভোট দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকে। এসব প্রতিযোগিতার জন্য সুন্দরভাবে আয়োজনের জন্য পেজগুলোতে নানা রকম সুবিধা রয়েছে, যা ব্যক্তিগত প্রোফাইলের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়।
৮. বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুবিধা
ফেসবুকে বিভিন্নভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যদিও এ জন্য অর্থ খরচ করতে হয়। তবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ফেসবুকের বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা প্রমাণিত। রয়েছে বিভিন্ন পোস্ট বুস্ট করার সুবিধা। এতে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে আপনার পোস্টটি। কিন্তু ব্যক্তিগত প্রোফাইলে ফেসবুকের এই সুবিধা ব্যবহার করার সুযোগ নেই।
৯. অ্যাডমিন রাখার সুবিধা
আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করার ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড একটাই। তাই যদি আপনি অন্য কাউকে আপনার প্রোফাইলে ঢুকতে দিতে চান, তাহলে আপনার পাসওয়ার্ড তাকে দিতে হবে। আর পাসওয়ার্ড পেলে আপনার অ্যাকাউন্টের সবকিছুই তার হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে ফেসবুক পেজে রয়েছে অ্যাডমিন সুবিধা। আপনি পছন্দের কাউকে অ্যাডমিন বানিয়ে দিতে পারেন। তারা আপনার হয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিতে পারবে। এতে আপনার গোপনীয়তা বজায় থাকবে, কারণ অ্যাডমিনদের ক্ষমতা সীমিত।
১০. চেকইন সুবিধা
নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ফেসবুক পেজ হচ্ছে প্রচারের সবচেয়ে ভালো উপায়। কারণ, পেজ থাকলে বাকিরা সেখানে চেকইন দিতে পারে বা ট্যাগ করতে পারে। এর ফলে অন্যরাও আপনার পেজ সম্পর্কে জানতে পারে।