এমনিতে ভাবলে ফেসবুক এর জগত টা কিছুই না আবার অন্যভাবে ভাবলে এই জগতটা অনেক গুরুত্বপূর্ন
ভার্চুয়াল জগত টা ও আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে বিভিন্ন ভাবে সম্পর্কিত থাকে… সুতরাং ব্যক্তিগত জীবনের শত্রুতা থেকেও হতে
পারে আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক।
হতে পারে আপনার শত্রু যে কিনা আপনার সফলতা দেখে ঈর্ষান্বিত … সে আপনার ফেসবুক আইডির নিরাপত্তা কম থাকার সুযোগ নিয়ে আইডিতে লগিন করে ইচ্ছা মতো আপনার নামে আপনারই প্রোফাইল থেকে উলটা পালটা কথা রটানো শুরু করলো… ব্যাপার টা কিন্তু অনেক ভয়ংকর এবং আপনার ব্যাক্তিগত জীবনেও অনেক বড় প্রভাব ফেলতে পারে… সুতরাং ব্যাক্তিগত জীবনে ঝামেলা বিহীন থাকার জন্যও আমাদের উচিত ফেসবুক আইডির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা…
আপনাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে সাহায্য করার জন্যই আজকে আমার এই পোষ্ট…
চলুন শুরু করা যাক-
ফেসবুক সিক্যুরিটি কোয়েশ্চনঃ
ফেসবুক আইডির একসেস নেয়ার জন্য এটি বহুল ব্যবহৃত একটি পন্থা…
ধরুন আপনি ফেসবুক খোলার প্রথম দিকে বুঝে না বুঝে সিক্যুরিটি কোয়েশচন এড করেছিলেন এবং সেটার উত্তর মোটামোটি ভাবে আপনার শত্রুও আন্দাজ করে বের করে ফেলছে… তারপর যদি ২৪ ঘন্টা একাউন্ট এ লগিন না করেন শত্রু ইচ্ছা করলেই আপনার একাউন্ট এর একসেস নিয়ে নিতে পারবে।
ফেসবুকে এই সিক্যুরিটি কোয়েশ্চন এর উত্তর একবার আপডেট করলে পরবর্তী তে আপডেট করার ও উপায় নেই।
কোয়েশ্চন গুলা ও সাধারনত এরকম হয়
-আপনার দাদার পেশা কি?
-আপনার প্রিয় শিক্ষকের নাম কি?
যেগুলার উত্তর আপনার সম্পর্কে কেউ খোজ খবর নিয়ে খুব সহজেই বের করে নিতে পারবে । সুতরাং আপনার একাউন্ট এ যদি এরকম সিক্যুরিটি কোয়েশ্চন এড করা থাকে এমন টা হতেই পারে যে একদিন পর ফেসবুকে লগিন করে দেখলেন আপনার একাউন্ট হ্যকড!
বাঁচার উপায়ঃ
খুব সহজেই আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন… এই ধরনের হ্যাক এক্টিভিটি থেকে বাচার জন্য নিচের প্রসেস ফলো করুন।
- ফেসবুকে লগিন করুন
- Settings এ যান
- Security তে যান
- Trusted Contacts এ গিয়ে আপনার পরিচত এবং বিশ্বস্ত ৩ জন বন্ধুকে ট্রাষ্টেড কন্টাক্ট হিসেবে বাছাই করুন
ব্যাস… এখন আর কেউ সিক্যুরিটি কোয়েশ্চন মেথড আইডি এর একসেস নিতে পারবে না উত্তর জেনে ফেললেও…
বিঃদ্রঃ Trusted Contact লিষ্ট সব সময় আপডেট করবেন এবং যেন আপনার ৩ জন বন্ধু এই লিষ্টে সব সময় এড করা থাকে সেটা নিশ্চিত করবেন।
মোবাইল নম্বরঃ
আমরা ফেসবুকে নম্বর এড করে রাখি যেন এই নম্বর দিয়ে পরবর্তীতে আইডির পাসোয়ার্ড রিকভার করে নিতে পারি।
কিন্তু এই ফোন নম্বর ব্যবহার মাধ্যমেই যে কেউ আপনার আইডি হাতিয়ে নিতে পারে।
আপনি বলতে পারেন আপনার সীম তো আপনার কাছেই থাকে… তবে কীভাবে আপনার নম্বর ব্যবহার করেই আইডি হাতিয়ে নিবে?
উত্তর হলো ভাই এটা বাংলাদেশ… টাকার বিনিময়ে সব কিছুই পসিবল….আপনার শত্রুর যদি কাস্টমার কেয়ার এ কাজ করে এমন কারো সাথে জানাশোনা থাকে এবং সে চায় আপনার নম্বর তার নামে রিপ্লেস করতে সে এটা পারবে … টাকার বিনিময়ে হোক অথবা সখ্যতার বিনিময়ে…
বাঁচার উপায়ঃ
- প্রথমেই চেষ্টা করুন এমন নম্বর ফেসবুকে এড করে রাখতে যেটার খবর কেউই জানে না… অর্থাৎ সিক্রেট কোন নম্বর
- অথবা যদি সবাই জানে এরকম নম্বর ই এড করে রাখতে চান তবে অবশ্যই সঠিক কাগজ পত্র দিয়ে নম্বর টা ভেরিফাই করে নিন এবং অন্য কেউ যেন আপনার নম্বর নিজের নামে রিপ্লেস করতে না পারে সে ব্যাবস্থা গ্রহন করুন।
ইমেইলঃ
আপনার একাউন্ট এ যে ইমেইল টা এড আছে সেটা হ্যাক করার মাধ্যমেও হ্যাক হতে পারে আপনার ফেসবুক।সুতরাং আপনার ইমেইল আইডির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দান ও ফেসবুক সিক্যুরিট এর মাঝে পরে।
বাঁচার উপায়ঃ
- এমন একটা ইমেইল ব্যাবহার করুন যেন সেটা সহজেই কেউ আন্দাজ করতে না পারে…
- জিমেইল একাউন্ট ব্যাবহার এর চেষ্টা করুন । ইয়াহু ব্যবহার করলে কয়েকদিন পর পর লগিন করুন… কারন ইয়াহু একাউন্ট এ এক নাগারে কয়েক মাস লগিন না করলে একাউন্ড ডিজেবল করে দেয়।
- ইমেইল আইডির নিরাপত্তার জন্য সবাই জানে এমন ইমেইল ব্যবহার করলে অই ইমেইলে এমন ফোন নম্বর ব্যাবহার করুন যেটা কেউ জানেনা এবং ফোন নম্বর সম্পর্কে জানলেও কেউ রিপ্লেস করতে পারবে না সেটা নিশ্চিত করুন। সীম নিজের নামে রেজিষ্ট্রেশন করে নিন।
ফিশিংঃ
ফিশিং হলো এক প্রকার ফাঁদের মতো।এর মাধ্যমেও অনেকে আপনাকে বোকা বানিয়ে আইডি হাতিয়ে নিতে পারে।
ফিশিং হলো এমন একটা উপায় যার মাধ্যমে নকল একটা ওয়েবপেইজ যেটা আসলটার মতো দেখতে তৈরী করা হয় এবং ভিক্টিম কে সে নকল সাইটের লিংক টা দেয়া হয়।। ভিক্টিম যদি সেই নকল সাইটকে আসল ভেবে লগিন করে তখন ভিক্টিম এর ইউজার নেম/পাসোয়ার্ড চলে যায় ফিশিং সাইট যে তৈরী করেছে তার হাতে।
বাঁচার উপায়ঃ
- কেউ যদি আপনাকে ইনবক্সে কোন লিংক দিয়ে সেখানে গিয়ে লগিন করতে বলে এবং বিভিন্ন টাইপ লোভ দেখায় তবে লগিন করবেন না..যদি লগিন করেন ও অবশ্যই অই সাইটের ওয়েব লিংক[http://example.com] টা আসল নাকি মিলিয়ে নিবেন ।
- যদি কখনো মনে করেন আপনি ফিশিং সাইটে ইউজার নেম এবং পাসোয়ার্ড দিয়ে ফেলেছেন সাথে সাথে সে পাসোয়ার্ড পরিবর্তন করে নিবেন।
ফেসবুক এপঃ
ফেসবুক এপ ব্যবহারের মাধ্যমেও আপনার আইডিতে এপ ডেভেলপার একসেস টোকেন এর সাহায্যে যেকোন কিছু পোষ্ট করতে পারে।তা কোন ফেসবুক এপকে একসেস দেয়ার সময় দেখে নিন সেটা বিশ্বস্ত কিনা এবং কোন এপ প্রয়োজনের বেশী একসেস চাইলে [পেজ একসেস/মেসেজ ভিও একসেস ] যেটা তাদের দরকার নেই তাহলে সে এপ ব্যাবহার না করাই ভালো ।
এইসব সতর্কতা গুলো মেনে চললে ইনশাআল্লাহ আপনার আইডি সহজে কেউ হ্যাক করতে পারবে না।
ফেসবুক এ ট্রিকবিডি এর সব আপডেট পেতেঃ ট্রিকবিডি কে ফেসবুকে লাইক করুন
ভালো থাকুন এবং প্রযুক্তির সাথেই থাকুন 🙂