মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম আপডেট হতে হতে এখন পর্যন্ত Windows 11 পর্যন্ত এসে পৌছেছে। এতে অনেক নতুন নতুন ফিচার যুক্ত হয়েছে। যার ফলে অনেকেই অপারেটিং সিস্টেম আপডেট বা পরিবর্তন করেছেন। এটির ইউজার ইন্টারফেস পরিরর্তীত হওয়ায় অনেকেরেই কম্পিউটার ব্যবহার করতে অসুবিধায় পড়েন। আপনি যদি চান পূর্বের Windows 10 এর মত এই ভার্সনের ইউজার ইন্টারফেস করতে তাহলে তা করতে পারবেন। যদিও পুরোপুরি করতে পারবেন না। আর এই বিষয় নিয়েই মূলত আমাদের আজকের এই পোস্ট।
Start মেনু এর অবস্থান:
Windows 11 তে সবচেয়ে সুস্পষ্ট ডিজাইনের পরিবর্তন হলো স্টার্ট মেনু এর অবস্থান পরিবর্তন করা। যা পূর্বের ভার্সনগুলিতে বাম পাশে থাকতো তা এই ভার্সনে একদম মাঝখানে। যার ফলে অনেকেই স্টার্ট মেনু ব্যবহারের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে চিন্তা করবেন না আপনি চাইলে এটিকে আগের মত বাম পাশের দিকে স্থাপন করতে পারবেন।
এর জন্য আপনাকে Start মেনুতে ক্লিক করতে হবে। তারপর Settings এ ক্লিক করে Personalization ক্লিক করুনন। তারপর Taskbar এবং Taskbar behaviors ক্লিক করুন। এখানে ড্রপ ডাউন লিস্ট সহ Taskbar Alignment দেখতে পারবেন। এইবার এখান থেকে আপনি স্টার্ট মেনু কোন দিকে স্থাপন করতে চান তা করতে পারবেন। অর্থাৎ আগের ভার্সনের মত করতে চাইলে Left সিলেক্ট করে দিন।
টাস্কবারের আইকন সরান:
Windows 11 তে টাস্কবারের মধ্যে ডিভল্টভাবে সার্চ, টাস্ক ভিউ, উইডগেটস এবং চ্যাট সম্বলিত আইকন সহ একটি টাস্কবার আইটেম রয়েছে। এটিকে সরাতে হলে আপনাকে Settings এর Personalization যেতে হবে। তারপর Taskbar এর Taskbar Item এ ক্লিক করে এখানে আলাদা আলাদা করে সবগুলো আইকন সরিয়ে দিতে পারবেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, আপনি এখানে উইন্ডোজ ১০ এর মত ফুল সার্চবারটি রাখতে পারবেন না। যার কারণে আমরা এটিকেও সরিয়ে দিব। কেননা এখানে যদি এটি রাখি। তাহলে এখানে শুধু সার্চবারের আইকনটি দেখাবে। যা ১০ এর ডিজাইনের বিপরীত। সার্চবার যদি আপনার প্রয়োজন পড়ে তাহলে কিবোর্ডের শর্টকাট কমান্ড Windows + S বাটন ব্যবহার করতে পারেন।
Start মেনু এর ডিজাইন:
সহজে যদিও আপনি স্টার্ট মেনু স্থানান্তর করতে পেরেছেন। কিন্তু এর ভিতরের ডিজাইন আপনি চাইলে পরিবর্তন করতে পারবেন না। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি থার্ট পার্টি অ্যাপের সাহায্য নিতে হবে। এই অ্যাপটি সম্পূর্ণ ফ্রি এটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন। এটি একটি ওপেন সোর্স প্রোগ্রাম। এটি দিয়েই আপনি স্টার্ট মেনুর ডিজাইন পরিবর্তন করতে পারবেন। তাই এটিকে ডাউনলোড করে ইনস্টল দিন। মনে রাখবেন ইনস্টল করার সময় Classic Explorer এবং Classic IE ডিজেবল করে দিবেন। অন্যথায় এটি আপনার স্টার্ট মেনুর ডিজাইন এমনভাবে পরিবর্তন করবে যা আপনার উইন্ডোজ ১০ এর সাথে মিলবে না।
প্রোগ্রামটি ইনস্টল হয়ে গেলে ওপেন করুন। তারপর উইন্ডোজ ৭ স্টাইল মেনু নির্বাচন করুন এবং তারপর স্কিন ট্যাব খুলুন। আমি এই গাইডের জন্য ফ্লুয়েন্ট-মেট্রো স্কিন ব্যবহার করেছি। প্রকৃতপক্ষে, এটি উইন্ডোজ 10 কোট অফ পেইন্ট সহ একটি উইন্ডোজ 7 স্টার্ট মেনুর মতো কাজ করে, তবে এটি আমার পাওয়া সেরা স্ক্রিন ছিল। সফটওয়্যারটি ঠিকমত কাজ করলেও, এটি নিখুঁত নয়। এটি সঠিকভাবে স্টার্ট মেনুর ডিজাইনট পরিবর্তন করতে পারে না এবং Windows 10 ফিচারগুলি যুক্ত করতে পারে না। যেহেতু এটি ফ্রি তাই। তবে এর বিকল্প কিছু সফটওয়্যার আছে তবে সেগুলো পেইড ভার্সন। যেগুলোর মাধ্যমে আপনি প্রায় উইন্ডোজ ১০ এর মত করতে পারবেন।
আইকন পরিবর্তন করুন:
উইন্ডোজ ১১ এর টাস্কবারের আইকন প্রায় উইন্ডোজ ১০ এর মতই। এইগুলো না পরিবর্তন করলেও চলবে। তবে অন্য আইকনগুলি একদমই আলাদা। তাই সেগুলো আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে। এর জন্য আপনাকে প্রথমত উইন্ডোজ ১০ এর আইকন প্যাক ডাউনলোড করতে হবে। আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে আইকন প্যাক ডাউনলোড করতে পারেন। অথবা অনলাইনের মাধ্যমেও আপনি আইকন প্যাক ডাউনলোড করে নিতে পারেন। তারপর এইগুলো আনজিপ করে একটি ফোল্ডারে রাখুন। এইবার আইকন পরিবর্তন করার জন্য আপনার কম্পিউটারের সেটিংসে গিয়ে পার্সোনালাইজেশনে ক্লিক করে থিমস বাটনে ক্লিক করে ডেস্কটপ আইকনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর এখানে ৫টি আইকন দেখতে পারবেন। এইবার আপনি যে আইকনটি পরিবর্তন করতে চান সেটি পরিবর্তন করে নিন।
আপনি প্রত্যেকটি ফোল্ডার এবং শর্টকাটের আইকন পরিবর্তন করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে যেটির আইকন পরিবর্তন করতে চান সেটির উপর মাউসের কার্সার রেখে রাইট বাটনে ক্লিক করুন এবং তারপর Properties ক্লিক করে Customize ট্যাবে ক্লিক করুন। একদম নিচে Change Icon বাটন দেখতে পাবেন। এটাকে ক্লিক করুন এবং আইকন পরিবর্তন করুন। তবে উইন্ডোজ আপনাকে কিছু আইকন পরিবর্তন করার অনুমতি দেয় না। বিশেষ করে ফাইল এক্সপ্লোরারের ড্রাইভের আইকনগুলি। আপনি যদি ড্রাইভের আইকনগুলি পরিবর্তন করতে চান তাহলে এখানে ক্লিক করে একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিন এবং এর মাধ্যমে ড্রাইভারের আইকনগুলি পরিবর্তন করে নিন।
রাউন্ড কর্নার ডিজেবল করুন:
উইন্ডোজ ১১ এর উইন্ডোগুলোর কর্নার রাউন্ড আকারের। অনেকেই এটা পছন্দ করেন না। এর থেকে খারাপ খবর হচ্ছে আপনি চাইলেই এগুলো পরিবর্তন করতে পারবেন না। এমনকি কোন থার্ট পার্টি সফটওয়্যার দ্বারাও। তবে আপনার জন্য একটা সুযোগ আছে। এর জন্য আপনাকে হার্ডওয়্যার গ্রাফিক্স অ্যাক্সিলারেশন বন্ধ করে দিতে হবে। তবে এর জন্য আপনার অন্যান্য কিছু ফিচার কাজ নাও করতে পারে। যেমন ট্রান্সফারেন্সি ফিচার।
গ্রাফিক্স হার্ডওয়্যার ডিজেবল করার জন্য আপনার কম্পিউটারের Device Manager ওপেন করুন। এর জন্য This Pc এর উপর মাউসের রাইট বাটনে ক্লিক করুন অথবা স্টার্ট বাটনে ক্লিক করে সার্চবারের সাহায্যে Device Manager লিখে সার্চ দিয়েও ডিভাইস ম্যানেজার ওপেন করতে পারেন। এখানে Display Adapter এ ক্লিক করে রাইট বাটন ক্লিক করে Disable করে দিন। আপনার স্ক্রিনটি কিছু সময়ের জন্য ফ্লিকার করব। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যাবে এবং আপনার রাউন্ডেড কর্নার চলে যাবে।
তবে এটা করার জন্য আপনাকে একান্তভাবে সুপারিশ করব না। কারণ আপনার গ্রাফিক্স হার্ডওয়্যার ডিজেবল করলে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমটি স্লো কাজ করবে। এছাড়াও আপনি 3D অ্যাপস এবং গেমস চালাতে পারবেন না।
ওয়ালপেপার পরিবর্তন করুন:
সর্বশেষ উইন্ডোজ ১০ এর মত করতে আপনাকে উইন্ডোজ ১০ এর ওয়ালপেপার সেট করতে হবে। তবে এর জন্য আপনাকে গুগলের সাহায্য নিয়ে যেকোন সাইট থেকে এই ওয়ালপেপারটি ডাউনলোড করতে হবে। আপনি চাইলে এই লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। ডাউনলোড করার পর এটির উপর মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে Set as desktop background এ ক্লিক করে সেট করে নিন।
এইভাবে আপনি মোটামুটি উইন্ডোজ ১১ কে উইন্ডোজ ১০ এর মত করে নিতে পারবেন। কিন্তু সবকিছু একবারে কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন না। শুধুমাত্র কোনরকম স্টার্ট মেনু এবং ডেস্কটপের রূপ পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে আমার প্রস্তাব থাকবে যে, নতুন অপারেটিং সিস্টেম এর ডিজাইনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে। এতে করে আপনি নিত্যনতুন বিষয়গুলির সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন। যা পরবর্তী আপডেটগুলির ব্যবহার আপনাকে সহজ করে দিবে।
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।
সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।