ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন আমাদের অনেকেরেই আছে। কিন্তু স্বপ্ন থাকলেই তো আর যাওয়া যায় না। কারণ যাওয়ার জন্য যদি কোনো রাস্তা খুঁজে না পান। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে যাওয়ার জন্য তেমন কোনো সঠিক রাস্তা নেই। যেগুলো আছে সেগুলো হলো দালালের মাধ্যমে যেতে হয়। আর দালালের মাধ্যমে যাওয়া মানে নিজেকে নিঃস্ব করা। আর যার কারণে আমাদের অনেকেরেই আর ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় না। আজীবন স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। আজকে আমি আপনাদের সামনে সরকারিভাবে ইউরোপে যাওয়ার জন্য এই টপিকটি নিয়ে হাজির হয়েছি। আর যার মাধ্যমে আপনি আপনার এতোদিনের ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।
ইউরোপের কোন দেশে যেতে পারবেন?
আমরা সকলেই জানি ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ হচ্ছে ২৬টি। যার মধ্যে স্লোভেনিয়া একটি। আর এই স্লোভেনিয়ায় যদি আপনি যেতে চান তাহলে একদম দালালের হস্তক্ষেপ ছাড়া সরকারিভাবে যেতে পারবেন। এখানে নামমাত্র মূল্যে বা খরচে আপনি যেতে পারবেন একদম স্বল্প খরচে।
কারা যেতে পারবেন?
মূলত ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়াতে Reinforcing Ironworkers (Rod Binder) এর কাজের জন্য দক্ষ কর্মির প্রয়োজন। রিইনফোর্সিং আইরনওয়ার্কার হলো কনস্ট্রাকশন কাজের একটি বিভাগ। যেটি হলো রড কাটা এবং বাঁধার কাজ। আপনারা যারা এই কাজে অভিজ্ঞ তারাই মুলত এই কাজের জন্য আবেদন করে সরকারিভাবে ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়াতে যেতে পারবেন।
কত টাকা বেতন পড়বে?
স্লোভেনিয়া উক্ত পদে চাকুরির বেতন বাবদ মাসিক €১০০০ ইউরো পাবেন। যার বর্তমান বাজার অনুযায়ী বাংলা টাকায় হিসেব করলে দাঁড়ায় ৯৭,৩৯৩/- টাকা। এছাড়াও আপনি ওভারটাইম করে আরও বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।
আবেদনের জন্য যোগ্যতাঃ
আপনার রড কাটা এবং বাঁধাইতে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
চাকুরির শর্তাবলি ও সুযোগ-সুবিধাঃ
চার বৎসরের চুক্তি। তবে আপনি চাইলে পরবর্তীতে নবায়ন করতে পারবেন।
আসা-যাওয়ার বিমান ভাড়া কোম্পানি বহন করবে।
কাজের স্থলে আসা-যাওয়ার যাতায়াত খরচ কোম্পানি বহন করবে।
তবে খাওয়ার ব্যবস্থা আপনার নিজেকে বহন করতে হবে।
সপ্তাহে ৬ দিন দৈনিক ৮ ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে।
আবেদন করার পদ্ধতিঃ
আপনার যদি একটি স্মার্টফোন থাকে এবং সাথে ইন্টারনেট কানেকশন থাকে তাহলে আপনি নিজেই সরাসরি অনলাইনে এই কাজের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার জন্য আগামী ১৭/০৮/২০২২ইং তারিখের মধ্যে এই https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLScTrbT8jkeC5msPLLRXESmCCIQ04D2-8rXUQaUyw1_wR9ViVw/viewform লিংকে গিয়ে ফরমের চাহিদা অনুযায়ী সকল তথ্য পূরণ করে দিন। কিভাবে কি পূরণ করবেন তা দেখতে নিচের স্ক্রিনশট খেয়াল করুন।
উপরের লিংকে ভিজিট করার পর উপরের স্ক্রিনশটের মতো আসবে। এখানে প্রথমে Email এর ঘরে আপনার ইমেইল অ্যাড্রেসটি লিখুন। Name এর ঘরে আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী নাম লিখুন। Father’s Name এর ঘরে আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী বাবার নাম লিখুন। Mother’s Name এর ঘরে আপনার মায়ের নাম লিখুন। Gender এর এখানে Male সিলেক্ট করুন। Date of Birth এখানে আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী জন্ম তারিখ লিখুন। Phone Number এর ঘরে আপনার মোবাইল নাম্বারটি লিখুন মনে রাখবেন নাম্বারের প্রথমে কিন্তু প্রথমে 88 বসাবেন। Passport Number এর ঘরে আপনার পাসপোর্টের নাম্বারটি লিখুন। Upload Resume এর জায়গায় আপনার একটি জীবন বৃত্তান্ত আপলোড করে দিন তবে হ্যাঁ এটি কিন্তু ইংরেজিতে লিখিত হতে হবে। Upload Passport Information Page এর জায়গায় আপনার পাসপোর্টের আপনার তথ্যসম্বলিত যে পেজটি সেটি আপলোড করে দিন। Upload Arrival & Departure Pages এর ঘরে আপনি যদি এর আগে কোনো দেশে গিয়ে থাকেন সে দেশের যে সিল আপনার পাসপোর্টের যে পেজে পড়েছে সে পেজ এখানে আপলোড করে দিন। Upload Experience Certificate এর জায়গায় আপনার যদি উক্ত কাজের উপর অভিজ্ঞতা থাকে এবং সার্টিফিকেট থাকে তাহলে সেটি এখানে আপলোড করে দিন। উপরোল্লিখিত ফরমে আপনার সবকিছু সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কিনা তা ভালো করে লক্ষ্য করুন এবং Submit বাটনে ক্লিক করুন। উল্লেখ্য সিভি ও পাসপোর্ট কপি সহ অন্যান্য সকল কাগজপত্রের কপি পিডিএফ ফরমেটে আপলোড দিয়েন কারণ জেপিজি ফরমেট বা অন্যান্য ফরমেট নাও নিতে পারে। তাই আগে থেকে সবগুলো ফাইলকে পিডিএফ ফরমেটে তৈরি করে নিতে হবে।
অগ্রাধিকারঃ
আপনার যদি উপরোল্লিখিত কাজে ০৮ বছরের অভিজ্ঞতা থাকে এবং আপনি যদি এই কাজের উপর এর আগে মালোশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই অথবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে কাজ করে থাকেন তাহলে আপনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
কত টাকা খরচ পড়বে?
আমরা সকলেই জানি আমাদের দেশ থেকে ইউরোপের কোনো দেশে প্রবেশ করতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন পড়ে কারণ দালালের কারণে। যেহেতু এটি একদম সরকারিভাবে তাই আপনার বেশি টাকার প্রয়োজন পড়বে না। শুধুমাত্র সরকারি আনুপ্রাসঙ্গীক কিছু খরচ আছে সেগুলো আপনাকে বহন করতে হবে। যা আপনি ৫০ হাজার থেকে ০১ লক্ষ টাকার মতো ধরে রাখতে পারেন।
ইউরোপে স্থায়ী হওয়ার সুযোগঃ
উল্লেখ্য আপনি যদি চার বছরের চুক্তিতে স্লোভেনিয়া যেতে পারেন তাহলে তারা আপনাকে TR বা Temporary Residence কার্ড দিবে। আর যদি পরবর্তীতে চুক্তির মেয়াদ নবায়ন করতে পারেন তাহলে পাঁচ বছর ঐখানে থাকার পর আপনি Permanent Residence কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। যদি লাইগা যায় তাহলে আজীবন আপনি ইউরোপে কাটিয়ে দিতে পারবেন।
এখন উপরোল্লিখিত সকল শর্ত যদি আপনি পূরণ করতে পারেন তাহলে আর দেরি না করে অতি তাড়াতাড়ি আবেদন করে ফেলুন। আর ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করুন। যেহেতু এটি সরকারিভাবে যাওয়ার একটা সুযোগ এই সুযোগ হাত ছাড়া করবেন না। এই বলে আমি আমার আজকের এই টপিক এখানেই শেষ করছি।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।
সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।