Site icon Trickbd.com

এই একটা গল্পের মাধ্যমেই বুঝতে পারবেন আপনি কেন গরিব আছেন।

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

এই একটা গল্পের মাধ্যমেই বুঝতে পারবেন আপনি কেন গরিব আছেন।


আপনারা যারা আমার এই আর্টিকেল পড়ছেন তাদের মধ্যে মোটামুটি সবাই কখনো না কখনো একবার হলেও চিন্তা করেছেন। যে ভাগ্যের দোষে আজ আমি গরিব হয়ে আছি। আমার ভাগ্যটাই খারাপ। গরীব ঘরে জন্ম গ্রহণ করেছি বলে আজ আমি গরিব। যদি আমার
জন্ম কোন ধনী ঘরে হতো তাহলে আজ আমি ধনী থাকতাম। আসলে কি আমরা ভাগ্যের জন্য গরিব হয়ে আছি নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে। চলুন তা আজ এই আর্টিকেলে সহজ ভাষায় বোঝার চেষ্টা করি।

আশা করি আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি কি কারনে গরীব আছেন এবং এটা থেকে মুক্তি পাবার আসল উপায় টা কি। তাহলে চলুন বেশি কথা না বলে শুরু করি। আমি এই বিষয়টি সহজভাবে বুঝার জন্য একটা গল্প বলছি মনোযোগ দিয়ে পড়েন। এক গ্রামে দেবনাথ নামে একজন ব্রাহ্মণ ব্যক্তি ছিলেন। তার দুই ছেলে ছিল। একজনের নাম হরেশ আরেকজনের নাম নরেশ। দেবনাথ বাবু অনেক জমিজমার মালিক ছিলেন।

তিনি মৃত্যুর সময় দুই ছেলেকে সমানভাবে তার সম্পত্তি ভাগ করে দিয়ে যান। বাবার মৃত্যুর পরে হরেশ তার বুদ্ধি আর সম্পত্তিকে কাজে লাগিয়ে আরো অনেক জমির মালিক হয়। অন্যদিকে নরেশ তার সম্পত্তি একটু একটু করে বিক্রি করে বসে বসে খেতে থাকে। কিছু বছর পর নরেশের সব সম্পত্তি শেষ হয়ে যায়। অন্যদিকে পরেশের সম্পত্তি আরো দ্বিগুন হয়ে যায়।


তখন নরেশ হরেশের বিরুদ্ধে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে বিচার দেয় তাকে ঠকিয়ে বাবার সম্পত্তি বেশি নিয়েছে। তো হরেশের বিরুদ্ধে নালিশ বসল। নালিশে হরেশ বলে আমি আমার বুদ্ধি ও বাবার দেওয়া জমিকে কাজে লাগিয়েছে যে টাকা আয় করেছি তা দিয়ে জমি কিনেছি এই হচ্ছে জমির
দলিল। কিন্তু নরেশ মানতে নারাজ যে সে টাকা ইনকাম করে জমি কিনেছে। তার মতে হরেশ তার বাবার টাকা চুরি করে লুকিয়ে রেখেছিল পরের জমি কিনেছে।

সে এর বিচার চায়। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে হরেস নিদোর্ষ ছিল। এখন কি করা যায় সবাই তা নিয়ে চিন্তা করতে লাগল। তখন শালিশের পাশ দিয়ে এক সাদু ব্যক্তি হেঁটে যাচ্ছিল সে সব শুনতে পায় এবং সবাইকে বলে আমার কাছে সমাধান আছে। সবাই বলে কি সমাধান। তখন সাধু বলে আমি এদের দুইজনকে দুইটা গর্ভবতী ছাগল দিয়ে যাচ্ছি আর তাদের দুজনকে পরিবারসহ আলাদা একটা গ্রামে রেখে আসছি।

তারা কেউ নিজেদের সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবে না। চার মাস পর বুঝতে পারা যাবে যে কে মিথ্যা বলছে আর কে সত্য বলছে। তো সাদুর কথামতো দুইজনকে দুইটা ছাগল দিয়ে অন্য একটা গ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হলো। গ্রামে যাবার একদিন পরই ছাগল দুইটা বাচ্চা হলো বাচ্চা হবার পর এই ছাগল দুইটা দুধ দিতে শুরু করল।নরেশ সেই দুধ বাজারে বিক্রি করল ৪০০ টাকায় আর এই টাকা দিয়ে নরেশ তার পরিবারের জন্য বড় মাছ মাংস টাটকা সবজি কিনে আনলো আর সবাই পেটভরে মন মত খাওয়া-দাওয়া করলো।

আর হরেশ সেই দুধ বিক্রি করল ৪০০ টাকা দিয়ে সেখান থেকে ২০০ টাকা দিয়ে তার ঘরের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও খাবারগুলো কিনলো আর 200 টাকা জমিয়ে রাখল। যদিও ২০০ টাকা দিয়ে তার পরিবার চালাতে অনেক কষ্ট হয়েছে তারপরও সে ২০০ টাকা জমিয়ে রেখেছে। এভাবেই সে প্রতিদিন ২০০ টাকা খরচ করে আর ২০০ টাকা জমিয়ে রাখে। অন্যদিকে নরেশ ৪০০ টাকায় খরচ করে ফেলে প্রতিদিন এসে ভালো ভালো খাবার এবং ভালো পোশাক কেনার পেছনে।

এক মাস পরে হরেশের ৬০০০ টাকা জমানো হয় তখন সেই টাকা দিয়ে আরেকটা ছাগল কিনে যে ছাগলেরও দুইটা বাচ্চা ছিল আর দুধ দিত। তো এখন বাজারে ৪০০ টাকা দুধ বিক্রি করে সেখান থেকে ২০০ টাকা পরিবারের জন্য খরচ করে আর ৬০০ টাকা সে জমিয়ে রাখে। আরো একমাস পর সে আরও তিনটি ছাগল কিনল দুইটা বাচ্চা সহ। আর নরেশ এভাবেই চলতে থাকল প্রতিদিন ৪০০ টাকার দুধ বিক্রি করে ৪০০ টাকায় খরচ করতে লাগলো।

চার মাস পর পর হরেশের ছাগলের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ টা ছাগল । এখন বর্তমানে চৌদ্দটা ছাগল থেকে হরেশ প্রতিদিন দুধ পায় প্রায় ৫৬০০ টাকা। যা থেকে সে প্রতিদিন তার পরিবারের জন্য এক হাজার টাকা খরচ করে আর বাকি ৪৬০০ টাকা সে জমিয়ে রাখে। আর নরেশ সে ৪০০ টাকার মধ্যে আটকে আছে। চার মাস পর সাদু এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সভায় হরেশ আর নরেশের অবস্থা দেখে বুঝতে পারে যে আসলে হরেশ সত্যি কথা বলেছে।

সে তার বাবার জমি কাজে লাগিয়ে এত জমির মালিক হয়েছে। যেভাবে একটি ছাগলকে কাজে লাগিয়ে সে চৌদ্দটি ছাগল এবং ২৮ টি বাচ্চার মালিক হয়েছে। এখন আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কেন আসলেই মানুষ গরিব থাকে। ভাগ্যের জন্য কেউ গরীব থাকে তার চিন্তা আর কর্মের জন্য। তেমন একটা বাস্তব গল্প হচ্ছে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খামার পাড়া গ্রামের এক বড় ভাই উদ্যোক্তা আনোয়ার ভাই।

যিনি শুন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন। বর্তমানে সে ২০০ এর বেশি ছাগলের মালিক তার বছরের টার্গেট থাকে ২৫ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ছাগল বিক্রি এবং তিনি তা পূরণ করতে পারেন। তিনি ২৫ বছর ধরে এই ছাগলের খামার এর সাথে যুক্ত ২৫ বছরে অদম্য শক্তি এবং ইচ্ছাকে কাজে লাগিয়ে আজ তিনি কোটিপতি হয়েছেন। তাই ইচ্ছে আর বুদ্ধি থাকলে আপনার যেকোন ভাবে ধনী হতে পারবেন। আশা করি বিষয়টা আপনার বুঝতে পেরেছেন। আজকে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবে আল্লাহ হাফেজ।

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি

Exit mobile version