আসসালামু আলাইকুম !
Trickbd.com এর সকল সদস্যদের স্বাগতম ! ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন !
আমি সোহাগ আবারো Trickbd.com এ হাজির হলাম আপনাদের মাঝে অন্য একটি পোষ্টে, আজকের পোস্ট শুরু করা যাক !
•••
•••
Power bank ⚡ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। পাওয়ার ব্যাংক কেনার আগে ব্র্যান্ড এর বিষয়ে খেয়াল রাখবেন, নামীদামী ব্র্যান্ড। যেসব চাইনিজ ব্র্যান্ড আছে যেগুলো আপনাকে খুব সস্তায় পাওয়ার ব্যাংক দেবে যেমন, 25,000 mAh পাওয়ার ব্যাংক ১,০০০ টাকায়। এই ধরনের পাওয়ার ব্যাংক কেনা থেকে বিরত থাকুন। এগুলো শুধু বলা হয় আসলে আপনাকে পুরোটা দেওয়া হয় না। এবং এগুলো তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
ভালো ব্র্যান্ডের পাওয়ার ব্যাংক কেনা দরকার কারণ, ভেতরে যে ব্যাটারি থাকে আর আপনি হয়তো জানেন যে ব্যাটারির সাথে কি কি হতে পারে।
ব্যাটারিতে আগুন লেগে যেতে পারে, ফুলে যেতে পারে। যদি আপনি ভালো ব্র্যান্ডের, ভালো কোয়ালিটির পাওয়ার ব্যাংক না কেনেন তাহলে এসব হতে পারে। আর পাওয়ার ব্যাংকে তো বেশি ক্যাপাসিটির ব্যাটারি থাকে, এটা ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে, কোন ক্যাপাসিটির পাওয়ার ব্যাংক কেনা উচিত?
এখন তো 5,000mAh থেকে শুরু করে 50,000mAh পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। আপনার কি 50,000mAh এর পাওয়ার ব্যাংক কেনা উচিত? না! প্রয়োজন নেই। ১ বার অথবা ২ বার আপনার ফোনকে ফুল চার্জ করতে পারবে এমন পাওয়ার ব্যাংক কিনুন। যেমন, 3,500mAh – 4,000mAh এর ব্যাটারি যদি আপনার ফোনের হয় তাহলে আপনার 8,000mAh – 10,000mAh এর পাওয়ার ব্যাংক কেনাই ভালো। এর থেকেও যদি কম নেন তাতেও সমস্যা নাই।
ক্যাপাসিটির ব্যাপারে আরেকটা কথা আপনার জেনে রাখা দরকার যে, মনে করুন- আপনার ফোনের ব্যাটারির ক্যাপাসিটি 4,000mAh আর আপনি কিনলেন 10,000mAh এর একটি পাওয়ার ব্যাংক। এর মানে এই না যে 4,000+4,000=8,000 আর বাকি 2,000mAh দিয়ে 10,000mAh ক্যাপাসিটি আপনি পাবেন। বিষয়টা এরকম না।
কারণ এগুলো থিওরটিক্যাল ক্যাপাসিটির হয়ে থাকে। আপনি যদি ১০ হাজার এমএইচ এর পাওয়ার ব্যাংক কেনেন তাহলে আপনি সেটার ৩ ভাগের ২ ভাগই ব্যবহার করতে বা ক্যাপাসিটি পাবেন। ১০,০০০ এমএইচ এর পাওয়ার ব্যাংক এর আউটপুট পাবেন প্রায় ৬,৫০০ থেকে ৭,০০০ এমএইচ পর্যন্তই।
মানে যদি আপনার ফোনের ব্যাটারির ক্যাপাসিটি ৩,৫০০ এমএইচ এর হয় তো আপনি ১০,০০০ এমএইচ এর পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে ৩,৫০০+৩,৫০০ ২ বার ফুল চার্জ করতে পারবেন। পুরো ১০,০০০ এমএইচ পাবেন না। আর এই কম পাওয়ার বিষয়টি শুধু যে পাওয়ার ব্যাংক এ আছে তা না, মেমোরি কার্ডে, ফোনের ইন্টার্নাল স্টোরেজ, ফোনের ব়্যামেও একই অবস্থা। কেন যে কম দেওয়া হয় সেটা নির্মাতারাই ভালো জানেন।
এখন গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে যে বেশিরভাগ পাওয়ার ব্যাংক এ একটাই পোর্ট দেওয়া হয়। একটা USB type A যেটা দিয়ে আপনি পাওয়ার ব্যাংক কে চার্জ করবেন, আর আউটপুট পোর্ট একটাই হয়। এরকম পাওয়ার ব্যাংক কেনার দরকার নাই। কমপক্ষে দুইটা পোর্টযুক্ত পাওয়ার ব্যাংক কিনুন।
যেন দুইটা ডিভাইস আপনি একসাথে চার্জ করতে পারেন। এখনকার বেশিরভাগ পাওয়ার ব্যাংক এই একটা ইনপুট আর দুইটা আউটপুট পোর্ট দেওয়া থাকে।
কিন্তু এসবও ক্যামন হওয়া লাগবে? একটা তো USB type A যেটা সব পাওয়ার ব্যাংক এই থাকে। আরেকটা হলো USB type C থাকা প্রয়োজন। USB type C তাড়াতাড়ি পাওয়ার দিতে পারে। তো USB type A আর USB type C এর কমপক্ষে এই ২ টা পোর্ট থাকা প্রয়োজন।
আর এটা যেহেতু পাওয়ার ব্যাংক এটার ভেতরে ব্যাটারি থাকে, আর চার্জিং বেশি করে ভেতরে নেয় এবং বাইরে দেয়। তো এটাও বিল্ড কোয়ালিটিও ভালো হওয়া উচিত। ABS Plastic ভালোই, অথবা Aluminium এর কেসিং ও ভালো।
এখন মার্কেটে ওয়্যারলেস চার্জিং এর পাওয়ার ব্যাংক ও এসে গেছে। এটাতে চার্জ করা খুব সহজ হয়ে যায়। এগুলোর দাম বেশি হয়, কিন্তু যদি আপনার ফোন ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট করে তাহলে তার লাগানো/খোলার ঝামেলা ছাড়াই চার্জ করতে পারবেন। শুধু ফোন পাওয়ার ব্যাংক এর ওপর রেখে দিলেই চার্জ হতে শুরু করবে।
ফাস্ট চার্জিং এর বিষয়েও খেয়াল রাখবেন। এখনকার প্রায় বেশিরভাগ ফোনগুলোতেই ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। আপনি যে পাওয়ার ব্যাংক কিনবেন সেটাতে ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করা দরকার। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ! কারণ, যদি ৩-৪ ঘন্টা চার্জ হতেই সময় লাগে তাহলে লাভ কি ? আপনার ফোন যদি দেড় ঘন্টায় ৭০%/৮০%/৯০% পর্যন্ত চার্জ হয় তাহলে খুব ভালো।
শুধু এটাই না পাওয়ার ব্যাংক এর ২ টা পোর্টেই ফাস্ট পাওয়ার ডেলিভারি হওয়া বেশি প্রয়োজন। বিশেষ করে এই যে পাওয়ার ব্যাংক ১০/২০ হাজার এমএইচ এর, এগুলোর ইনপুটই যদি স্লো হয়, এই পাওয়ার ব্যাংক গুলোতে চার্জ হতেই যদি ৭/৮ ঘন্টা লাগে তাহলে আপনিই ভাবুন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফলাফল পাবেন কিনা?!
আপনার পাওয়ার ব্যাংকেও যেন ফাস্ট চার্জিং হয় এই বিষয়টা নিশ্চিত করে তবেই পাওয়ার ব্যাংক কিনবেন।
এসব ছাড়াও ২ ধরনের পাওয়ার ব্যাংক আছে। যেগুলোর ভেতরের ব্যাটারি↓
★ Li-ion (Lithium ion) Battery
★ Li-po (Lithium polymer) Battery
Li-ion Battery স্মার্টফোনগুলোতে দেওয়া হয়। কিন্তু আপনি Li-po Battery যুক্ত পাওয়ার ব্যাংক কেনার চেষ্টা করবেন। কারণ, Li-po ব্যাটারি বেশি সময় চলে। আর Li-ion ব্যাটারি ১-২ বছর পর ফুলে যায়, কিন্তু Li-po ব্যাটারিতে এরকম হয়না। তাই চেষ্টা করবেন Li-po ব্যাটারি আছে এরকম পাওয়ার ব্যাংক কেনার।
আর এসবের লেয়ারস এর ওপরেও খেয়াল রাখবেন। ১২ লেয়ারস, ১৩ লেয়ারস ইত্যাদি থাকে যেন ভেতরের ছোট ছোট কম্পোনেন্ট একটা আরেকটার সাথে লেগে কোনো সমস্যা না হয়। এইজন্য প্রোটেকশন প্রয়োজন হয়।
হ্যাঁ! পাওয়ার ব্যাংক কিনতে গেলেও এইসব বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত যেন আপনি ঠকে না যান। “যেখানে ভালো – সেখানে চলো!” যদি আপনি এই বিষয়ে গুলো খেয়াল করে পাওয়ার ব্যাংক কেনেন তাহলে আপনি ভালো মানের পাওয়ার ব্যাংক পাবেন।
°°°
এই পোষ্ট এতটুকুই ! এতক্ষণ সময় নিয়ে Trickbd.com এ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবাই, আল্লাহ হাফেজ। ?