বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের সার্ভার হ্যাক করে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। বিকাশের সার্ভার হ্যাকের ঘটনায় রোববার রাতে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে বিকাশের সার্ভার হ্যাক করে অর্থ জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই বলেই দাবি করেন প্রতিষ্ঠান কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম।
বিকাশের সার্ভার হ্যাকের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- খোরশেদ (২৫), আবুল বাশার (৩০), মো. আরিফুর রহমান (৩০), মো. ইকবাল হোসেন অপু (২৪) ও মো. হামিদুর রহমান ওরফে তুষার (৩৮)। ২৭ রোববার আগস্ট রামপুরা বনশ্রী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে অবৈধ বিকাশ সিম, ইলেক্ট্রনিক মডেম ও অ্যাপ্লিকেশন উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা ইন্টারনেট প্রযুক্তির সহায়তায় কম্পিউটার হ্যাক করে। হ্যাকাররা ৯ আগস্ট বিকাল ৩টা থেকে ৬টার মধ্যে অবৈধ রেজিস্ট্রেশনকৃত ৯০টি সিমের প্রত্যেকটি থেকে ১৫ হাজার টাকা করে মোট ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা সরিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করেছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ইউসুফ আলী জানান, এই চক্রটি বিকাশের সার্ভার হ্যাক করে। নিজেদের নামে কেনা সিমে বিভিন্ন অংকের টাকা স্থানান্তর করে। বিষয়টি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা বিকাশ থেকে টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আটককৃত ব্যক্তিরা কয়েকজনের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে অন্তত ১৩ লাখ টাকা সরিয়ে নিয়েছে। এর আগে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে দশ কোটি ডলার চুরির ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছিলো বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার বড় অংশ এখনো উদ্ধার করতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিকাশ লিমিটেডের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পিআর শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম গণমাধ্যমকে বলেছেন, এমন কিছু আসলে ঘটেনি এবং ঘটা সম্ভবও নয়। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অতি উচ্চমানের। তিনি জানান তাদের কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে বা ভিন্ন সিম ব্যবহার করে জালিয়াতির চেষ্টা করা হলে তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সেই অ্যাকাউন্ট বা সিম বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু তাহলে কিছুদিন পরপরই বিকাশের মতো এতো বড় একটি মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ আসছে কেন? জবাবে শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, এজেন্টদের কাছে থাকা কিছু ব্যক্তি কৌশলে পিন নম্বর জেনে বা ফোন পরিবর্তন করে দিয়ে জালিয়াতি করে। এটি প্রতিরোধে এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
ডালিম বলেন, প্রতিবার ঈদকে সামনে রেখে প্রতারক চক্রের এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়। তাই সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে বলেন তিনি। কিন্তু এর প্রতিরোধে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডালিম বলেন, আমরা নিয়মিত গ্রাহক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করছি। বিকাশের বিষয়ে সন্দেহজনক কোনো কিছু চোখে পড়লে তা সাথে সাথে তাদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে জানানোর জন্য তিনি অনুরোধ করেন।